An Initiative of Swasthyer Britto society

  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close

ডা দেবব্রত সেন স্মরণে

WhatsApp Image 2020-07-25 at 17.25.33
Dr. Arunachal Datta Choudhury

Dr. Arunachal Datta Choudhury

Medicine specialist
My Other Posts
  • July 28, 2020
  • 7:27 am
  • 9 Comments

আমার ‘স্যার’ চলে গেছিলেন ২০১৬য়
________

আমার স্যার চলে গেলেন। আজ শুধু তাঁর কথা। ডাঃ দেবব্রত সেন। প্রফেসর ডি সেন। দেবু সেন। এমবিবিএস, ডিটিসিডি, ডাবল এমআরসিপি। মেডিকেল কলেজের উজ্জ্বল ছাত্রদের একজন। কিন্তু এ’সব তো তাঁর পোশাকি পরিচয়। আর্তজন (আর ছাত্ররাও) জানত, উনি দেবতা সেন। হ্যাঁ, মমতায় ভালবাসায় মেধায় ও জ্ঞানে স্যার তেমনই ছিলেন। আমরা মানে মুর্খ ভক্তরা আড়ালে বলতাম শনিঠাকুর। মুখ দিয়ে যদি কোনও ডায়াগনোসিস, ভালোমন্দ যা হোক, বেরিয়ে গেল, অন্যথা হবার জো নেই। প্রায় সংস্কারের মত দাঁড়িয়ে গেছিল আমাদের মনে। আমার সহপাঠী ঘনিষ্ঠ বন্ধু Amitabhaর বাবার শরীর খারাপ হল। তেমন মারাত্মক কিছু না। স্যারকে দেখাতে বললেন, ভাল লাগছে না। বেরিয়াম মিল করানো হল। নর্মাল ছবি। স্যার কিন্তু ছবি দেখে আরও গম্ভীর। তখন কলকাতায় এন্ডোস্কোপি সবে শুরু হয়েছে। ডাঃ জালান। রায় বেরোল স্টমাকের ক্যান্সার। ছ’মাসের মধ্যে আমার কলকাতার আশ্রয়, সেই প্রিয় মানুষ, শ্রী বিজয় ভট্টাচার্য চলে গেলেন। এই রকম অসংখ্যবার তাঁর ডায়াগনোসিস আমাদের চমকে দিত। রোগীর জন্য, মানুষের জন্য এমন মমতা সারা জীবনে দ্বিতীয় কারুর মধ্যে দেখিনি।

মেদিনীপুর, বহরমপুর, জলপাইগুড়ি, চাকরি সূত্রে যে’খানে পোস্টিং হয়েছে, সে’খানেই মানুষের চোখে দেবতা হয়ে উঠতে পেরেছিলেন এই মমতা ভালোবাসা বিছিয়ে। প্রত্যেক জায়গাতেই চেম্বারে চাপ হত খুব। সাহিত্যিক দেবেশ রায় একবার অধুনা লুপ্ত “শারদীয় অমৃত’’তে স্যারকে নিয়ে একটা উপন্যাস লিখেছিলেন। তা’তে জলপাইগুড়ির প্রেক্ষাপটে স্যারের চেম্বারে রোগীদের ভিড়ের খুব ভালো ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন ।

জলপাইগুড়ির সম্পন্ন মানুষেরা সেই কালে কলকাতায় আসতেন বড় রোগব্যাধি হলে। কলকাতায় থাকা তাঁদের পরিচিত কাউকে দিয়ে বা অন্য কোনও ভাবে তথাকথিত বড় ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া হত। বলাই বাহুল্য, সাথে সাথে পাওয়া যেত না সেই সব মহার্ঘ অ্যাপয়েন্টমেন্ট। এই যে দেরি হত এটাই ছিল সেই সম্পন্ন মানুষদের স্ট্যাটাস সিম্বল। এদিকে স্যার ছিলেন হাসপাতাল অন্ত প্রাণ। সকাল সন্ধ্যার রাউন্ডতো আছেই, তার সাথে আরও বহুবার যেতেন রোগীর পাশে অশেষ উৎকণ্ঠায়, রোগ বুঝবার আর সারাবার জন্য। হাসপাতালের বেড থেকে পেশেন্ট ভাগিয়ে চেম্বারে নিয়ে যাওয়া দুরস্থান, চেম্বারে তাঁকে পাওয়াই ছিল ভাগ্যের ব্যাপার। নাম লিখিয়ে ডেট নিতে হত কাজেই। সেই সম্পন্ন মানুষরাও বেশ ভালো সুযোগ হিসেবে নিলেন এই ঘটনাটাকে। তাঁদের স্ট্যাটাসের জন্য প্রয়োজন ছিল লাইন দিয়ে ডেট নিয়ে দেখাতে হয় এমন ডাক্তারের। সেই জন্যেই তো কলকাতা যাওয়া। জলপাইগুড়িতেই যদি সেই লাইন দিয়ে ডেট নিয়ে দেখানোর সুব্যবস্থা পাওয়া যায়, তবে সেই সুবিধা না নেবার কোনও মানে হয় না।

শুনেছিলাম জলাতঙ্ক আক্রান্তকে নিজে স্ট্রেচারে তুলতে গিয়ে তাঁকে সেই সময়ে চালু চোদ্দোটা প্রাণান্তকর ইনজেকশন নিতে হয়েছিল একদা। এই স্যারই আবার টিচিংএ পিজিতে এসে, যে হেতু নন-প্র্যাকটিসিং পোস্ট, কোনও প্রাইভেট প্র্যাকটিস করলেন না। সেই প্র্যাকটিস আবার শুরু হবে রিটায়ার করার পর। নতুন করে শুরু করা সেই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের গল্পও বর্ণময়। ফিজ, শেষ অবধিও তাঁর কৃতি ছাত্রদের অনেকের চাইতে কম। অন্যরা অর্জুন হলেও আমি ছিলাম একলব্য। স্যারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার চেষ্টাও করিনি। তিনি কিন্তু মনে রেখেছিলেন। মনে রাখার ধরণটাও অদ্ভুত। বললেই বোঝা যাবে। একবার আমার পাঠানো এক পেশেন্টকে কিছুতেই দেখবেন না। কী ব্যাপার? না, ‘অতদিন ধরে অরুণাচলকে কী শেখালাম, যে সেই এত সহজ কেসও আমার কাছে রেফার করে?’

অবুঝ স্যারকে বোঝাই কী করে, যে মফসসলের এই অধম চিকিৎসক রোগীর চাহিদাতেই রেফার করতে বাধ্য হয়েছে।

স্যারের সল্ট লেকের বাসায়, রোগীদের কাছ থেকেই শুনেছি, দেখানোর পদ্ধতিটা ছিল কিছুটা অন্যরকম। সকালে আটটা নাগাদ ফোন করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হত। পেশেন্ট পিছু একঘণ্টার স্লট। আমার এক রোগী বিকেল চারটেতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট। পৌঁছেছেন একটু দেরিতে, মানে চারটে বেজে দশ নাগাদ। স্যার নাকি তাঁকে বলেছিলেন বেজায় হা হুতাশ করে, ‘ইস, এত দেরি করে এলেন, আমি দশ দশটা মিনিট কম দেখতে বাধ্য হলাম।’ দিনে চেম্বারে দেড়শ’টা করে পেশেন্ট দেখা আমার সহকর্মীরা ভাবতেও পারবে না, এ হেন আপশোষের কথা। খুঁটিয়ে হিস্ট্রি নিয়ে, ক্লিনিক্যাল একজামিনেশন করে, পুরনো কাগজপত্র থাকলে তা’ দেখে, প্রেসক্রিপশনে সব কিছু লিপিবদ্ধ করেও শান্তি পেতেন না। এক জাবদা খাতায় নাম তারিখ দিয়ে তুলে রাখতেন সব। বলা তো যায় না, রোগী যদি কোনও কারণে কাগজ হারিয়ে ফেলে!

স্যারের বন্ধু আর ভাইএর মত ছিলেন আমার আর এক শিক্ষক, ডাঃ প্রণব চৌধুরী। তিনি মারা গেছেন বেশ কয়েকবছর আগে। তাঁর কাছে শোনা, তাঁদের ছাত্রাবস্থায় দেবব্রত আর প্রণব কলকাতার চার মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন ওয়ার্ডে কোন বেডে কোন ইন্টারেস্টিং কেস রয়েছে দেখে বেড়াতেন অক্লান্ত। আর জি কর থেকে পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল অবধি অবলীলায় হেঁটে চলে যেতেন মুড়ি বাদাম চিবোতে চিবোতে। কেস দেখবার আর শেখবার লোভে। সেই সব বেড নাম্বার লেখা থাকত তাঁদের পকেট ডায়রিতে।

‘মোটর নিউরন ডিজিজ খুঁজছ?’ পকেট ঘেঁটে ডায়রি বার করে হদিশ দিতেন সমসাময়িক উৎসাহী কাউকে, ‘উম্‌ম্‌… চলে যাও মেডিকাল কলেজে মতিলাল শীল ওয়ার্ডে ছেচল্লিশ তা না হলে এনআরএস মেডিসিনের পাঁচ নম্বর ফিমেল নইলে ন্যাশনালের একশ সতের নম্বর বেডে। আমি আর প্রণব গত দুদিনে দেখে এসেছি সব ক’জনকে। তবে ন্যাশনালের কেসটার ফাইন্ডিং বেশি। যাবার আগে ভালো করে পড়ে নিয়ো। আর মেডিক্যালের পেশেন্ট হয় তো ছুটি হয়ে যাবে আজকালের মধ্যে।’
এখনকার এমসিকিউ মুখস্তর যুগে এই কাণ্ড কেউ ভাবতে পারে?

মেধার সাথে পরিশ্রম আর অনুসন্ধিৎসা যোগ করলে কী দাঁড়ায় তার উদাহরণ ছিলেন এঁরা।

টুকরো টুকরো কত ঘটনাই যে খেয়াল পড়ছে। একদিন রেফার্ড কেসের ডাক এসেছে অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ড থেকে। আর্জেন্ট লেখা। স্যার আউটডোরে। সাথে আমি। রওনা হলেন আমাকে নিয়ে। গিয়ে দেখা গেল তেমন জরুরি কিছু না। কুড়ি বছর আগে টিবি হয়েছিল। বুকের এক্স-রে তে তার পুরনো দাগ এসেছে সামান্য। এক্ষুনি করণীয় কিছু নেই। তবু রেফার। ডাক্তারি কথ্য ভাষায় যাকে বলে ‘ছুঁইয়ে রাখা’। বেড হেড টিকিটে দেখা গেল একজন হাউসস্টাফ এই রেফারটি লিখেছে। স্যার যখন তাকে ডেকে বললেন, ‘আর্জেন্ট লিখেছ বলে ব্যস্ত আউটডোর ছেড়ে আমাকে আসতে হল’, সে তো হতভম্ব। নিজের ঘাড় থেকে দায়িত্বের বোঝা নামাতে এই আর্জেন্ট লেখাটাই দস্তুর। তাকে সে’রকমই শেখানো হয়েছে।

হাসপাতালে ঢুকতেন সকাল সাড়ে আটটায়। ঘড়ি মেলানো যেত। এরপর রাউন্ড, আউটডোর, রেফার্ড কেস দেখা, আমাদের পড়ানো, এই সব নানান কাজ সেরে বিকেল চারটেতে স্যারের সেকেন্ড রাউন্ড। দিদির ক্যান্টিনে খেতাম আমরা। সেখানের দিদিরা জানতেন চেস্টের চারটে ছেলে দেরি করে আসবে। খাবার রেখে দিতে হবে।

ছাত্রদের মধ্যে জ্যোতিষ্ক যেমন ছিল অনেক, তেমনই আমার মত অলস নিরুদ্যমি মেধাহীন দু’চারজনও জুটেছিলাম। স্যারের কিন্তু আমাদের নিয়ে উদ্যমের কোনও ঘাটতি ছিল না। রোজ দুপুরে ম্যারাথন আউটডোরের পর আমাদের নিয়ে বসতেন স্যার। হয় তো হ্যারিসন অথবা অন্য কোনও টেক্সট বই, নইলে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল যাতে ওয়ার্ডে ভর্তি কোনও রোগীর যে রোগ তার বিবরণ। স্যার প্রায়শই ডাক্তারদের সেই আপ্ত বাক্য মনে করিয়ে দিতেন, ‘হোয়াট ইয়োর মাইন্ড ডাসন্‌ট নো ইয়োর আইজ ক্যানট সি’। তার মধ্যেই ‘অ্যাই অরুণাচল চোখ ছোট হয়ে আসছে। ঘুমিয়ে পোড়ো না।’ তাঁকে তো আর বলা যায় না। অনেকক্ষণ ধরেই আমি বসে বসে ঘুমোচ্ছি। স্যার ভাবতেই পারেন না আউটডোর চলাকালীনও আজ একবার ঘুমের ঢেউ এসেছিল। আমি টয়লেটে গিয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে পাঁচ মিনিট ঘুমিয়ে এসেছি।

চেনা শোনা তথাকথিত ক্যাচ কেস, স্টাফের মেসোমশাই, রাজনৈতিক নেতার চিরকুট আউটডোরে এলে আগে দেখে দেওয়া স্যারের ধাতে ছিল না। কতবার দেখেছি, খুব ডাকাবুকো অন্য ডিপার্টমেন্টের কোনও মাস্টারমশাইএর হাত থেকে সাথে আনা রোগীর টিকিট একদম শেষে রেখে জিজ্ঞেস করেছেন স্মিত মুখে, ‘দেরি হবে বেশ, আপনি কি ততক্ষণ শুধু শুধু অপেক্ষা করবেন? কোনও দরকার নেই।’ মহম্মদ ইসমাইল সিপিআইএমের ডাকসাইটে নেতা, তখন এমএলএ না এমপি, বাইরের বেঞ্চে বসে আছেন টিকিট জমা দিয়ে। স্যারের ওপর অচলা ভক্তি। যত দেরিই হোক, দেখিয়ে ফিরবেন। আজকের মেরুদণ্ডহীন সুপার বা ভিজিটিং যাঁরা ক্ষমতাবান কারওর চিরকুট দেখলে ভয়ে আইসক্রিমের মত গলে যান, তাঁরা ভাবতেও পারেন না সত্যিকারের সততার দাপট কাকে বলে।

বাড়াবাড়ি রকমের কথা বলতেন কিছু কিছু। ‘একটা ওষুধ যদি দিয়েছ তবে তুমি রোগ ধরতে পেরেছ। দু’টো দিলে, ইউ আর ইন এ ডায়লেমা। আর তিনটে ওষুধ মানে তুমি কিছুই ধরতে পারোনি।’ আমার এক সহকর্মী, বারাসতের বিরাট প্র্যাকটিশনার, ওষুধ লেখেন দশটা থেকে বাইশ তেইশটা। এই সব প্রেসক্রিপশন দেখলে স্যার কী বলতেন কে জানে। স্যার শেখাতেন, রোগীর ইতিহাস ঠিকমত জানতে পারলে পরিভাষায় যাকে বলে ‘হিস্ট্রি টেকিং’ , অধিকাংশ রোগের ডায়াগনোসিস হয়ে যায়। আর বাকিটুকুর জন্য লাগে ক্লিনিক্যাল একজামিনেশন। মানে ইন্সপেকশন, প্যালপেশন, পারকাশন আর অসকালটেশনে বাকিটুকু। খুব সামান্য অংশ পড়ে থাকে যাদের ইনভেস্টিগেশন করে রোগ ধরতে হবে। সিনিয়র শিবদা’ বলত ‘প্রত্যেকটা কেস নিজে হাজার দু’হাজারটা করে দেখেছেন। তাই রোগীর মুখের ভাঁজ দেখলে রোগ ধরে ফেলেন।’ সত্যিই তাই। মাঝে মাঝে অলৌকিক মনে হত তাঁর সে সব ডায়াগনোসিস।

সেই অলৌকিক এক গল্প বলে শেষ করি।

উনিশশ’ সাতাশি সালের ঘটনা। তখন হাসপাতালে হাউসস্টাফ আন্দোলনে স্বাভাবিক কাজকর্ম মোটামুটি স্তব্ধ। বেলা দেড়টা নাগাদ এমারজেন্সিতে এক রোগী ঢুকল। বয়েস বছর বারো।অজ্ঞান। সাথে নাক ডাকার মত শব্দ… আমাদের ভাষায় স্ট্রাইডর। সহজ ডায়াগনোসিস, আপার এয়ার ওয়েতে ফরেন বডি অবস্ট্রাকশন। ই এন টির আরএমও কে কল বুক দেওয়া হল। যদি ফরেন বডি বার করে আনা যায়।

স্ট্রাইকের বাজারে কোথায় কে! এ দিকে রোগীর অবস্থা যখন তখন। কী করা? এমারজেন্সীর ডাক্তার বুদ্ধি বার করলেন। চেস্টে ভর্তি করে দেওয়া যাক। ওরা ডিপার্টমেন্টে অনেকক্ষণ থাকে।

সেদিন ছিল আমাদের আর এক স্যার ডাঃ ডি এন সিনহার অ্যাডমিশন ডে। বেলা তিনটে নাগাদ ডাঃ সিনহা রাউন্ডে এসে রোগীর বিবরণ শুনে, হতাশ ভাবে বললেন, ‘কি আর করা। আগামী কাল সকাল সকাল রেফার লিখে ই এন টি সার্জন এনে দেখিয়ো, মানে ততক্ষণ যদি বাঁচে’।

স্যার এলেন বেলা চারটে নাগাদ। উনি খালি নিজের রোগীই নয়, সব রোগীকেই দেখতেন। এই বাচ্চাটার কাছে এসে, সব শুনে, নাকটা কুকুরের(স্যারের কাছে ক্ষমা চাইছি) মত তুলে কী যেন শুঁকলেন বার কতক। তারপর আমার একদা সিনিয়ার হাউসস্টাফ, আলোচ্য সময়ে আরএমও আলোকদা’কে বললেন, ‘আলোক, এর প্যান্টটা খোলো তো’। প্যান্ট খোলা হল। ফাইমোসিস। পেচ্ছাপের জায়গাটা… ডাক্তারির ভাষায় যাকে বলে পিনহোল মিয়েটাস। স্যার ব্যাখ্যা করলেন, ‘পেচ্ছাপ আটকে ইউরিমিয়া হয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে। ওর নিঃশ্বাসের থেকে অ্যাসিডোটিক স্মেল পেলাম এই জন্যেই। চট করে ওপরের তলায় ডায়ালিসিস ইউনিটে পাঠাও। এখুনি ডায়ালিসিস করতে হবে।’

পরদিন রাউণ্ডে ডাঃ সিনহা দুঃখিত ভাবে জিজ্ঞেস করলেন,’কী, কতক্ষণ পরে মারা গেল?’। আসলে চিনতেই পারেননি। ডায়ালিসিসে সুস্থ হয়ে সে তো তখন বেডে বসে পাঁউরুটি কলা খাচ্ছে।

আশ্চর্য হয়ে ভাবি, আমরা সবাই ডাক্তার। কই কেউই তো রোগের সেই গন্ধ বুঝতে পারিনি। সেই দাদা আড়ালে মন্তব্য করেছিলেন শুধু, ‘হবে নাই বা কেন? দু’হাজারটা অমন গন্ধ শুঁকেছিলেন যে আগে’।

এই এতদিন বাদেও গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে স্যারের আলোয় আলো হয়ে ওঠা সেই সব অলৌকিক দিনের কথা ভাবলে।

PrevPreviousCorona Pandemic and the State Dilemma (Part – 4)
Nextকরোনা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলিNext

9 Responses

  1. Anirban Biswas says:
    July 28, 2020 at 8:46 pm

    দারুন লিখেছ অরুনাচল দা। আমার একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার না করলেই নয়।
    স্যার রিটায়ার করার পর প্র্যাকটিস করেন। আমার একটি কেসকে স্যারের কাছে রেফার করেছি। রুগী কিছুদিন পর আমার কাছে ফেরত এলেন। স্যারের প্রেসক্রিপশন দেখলাম। মানে ওটা দেখার মত জিনিস কিনা।
    পেশেন্ট বললেন,’স্যার,আপনাকেই দেখাতে বললেন’
    তারপর একটু ইতস্তত করে বললেন ‘ উনি আরো একটা কথাও বলেছেন ! ‘
    আমি ‘ কি বলেছেন?’
    ‘মানে ইয়ে.. বললেন যে অনির্বাণকে বলবেন,রোজ দুপাতা করে ইংরেজি হাতের লেখা লিখতে। ওর হাতের লেখা এত বাজে ! ওর হাতের লেখা ভালো করা দরকার’

    Reply
    1. mahua Pait says:
      August 4, 2020 at 3:45 pm

      অসাধারণ মহান আক্ষরিক অর্থে একজন মানবদরদী ডাক্তারের সম্পর্কে জানলাম । বর্তমান যুগের পরিস্থিতিতে ডাক্তারি পাঠরত ছাত্রদের এই মহান চিকিৎসক সম্পর্কে জ্ঞাত করা উচিৎ । এমন ডাক্তার আর আমরা পাবো না ।

      Reply
  2. Debatri says:
    July 28, 2020 at 8:54 pm

    Asadharan… Onar proti janai amar sosroddho pronam

    Reply
  3. Kasturi Roy says:
    July 29, 2020 at 12:12 am

    সাক্ষাত ভগবান এঁরাই। সব ডাক্তারবাবুরা কেন এমন হন না!!

    Reply
  4. Partha Das says:
    July 29, 2020 at 12:29 am

    ভগবানের গল্প শুনলাম।

    Reply
  5. Partha Das says:
    July 29, 2020 at 12:33 am

    আরো ঘটনা থাকলে লিখবেন। আমি রোজকার পাঠক।

    Reply
  6. Suman Ray says:
    July 29, 2020 at 9:36 am

    This is outstanding!!

    Reply
  7. Sumita Hazra says:
    July 29, 2020 at 5:52 pm

    প্রণম্য মানুষ, ভগবানের মতো, ওনার সম্বন্ধে আরো জানার ইচ্ছা রইলো

    Reply
  8. Dr. Sekhares Ghosal says:
    August 2, 2020 at 4:14 pm

    Arunachal er lekhati osadharon. Amar soubhagyo hoechilo onake amar babake dekhanor.Jothariti dirgho opekshar por uni dekhlen. Xrays plate dekhe chele doctor shune daklen ebong radiotherapy te achi shune bollen bhoy nei tomar babar cancer hoyni, nischinto hoe firechilum.
    Pore salt lake er barite amar bhognipoti keo dekhiye nischinto hoechilum.
    Sotti bhogoban. Orokom clinical eye khub kom dekha jay.

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত পোস্ট

মারীর দেশে আলো হোক ভালো হোক

January 18, 2021 No Comments

দিনমাহাত্ম্যে বিশ্বাস নেই। তবু আজকের দিনটা সবদিক থেকে উজ্জ্বল দিন। সকালের রাউন্ডের সময় কেন জানিনা মনে হ’ল চিৎকার চেঁচামেচি তুলনায় অনেক কম। বেশ একটা শান্ত

কোভিভ ভ্যাকসিন কিছু প্রশ্ন কিছু জবাব-

January 18, 2021 No Comments

ভারত একটা গণতান্ত্রিক দেশ। টিকা নেয়া না নেয়া নিজস্ব ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আমি স্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে নিজে নিয়েছি এবং অন্যদের নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি, গুজবে কান না

করোনা ক্লিনিকে ডা সায়ন্তন ব্যানার্জী ২

January 18, 2021 No Comments

করোনা ক্লিনিকে ডা সায়ন্তন ব্যানার্জী ১

January 17, 2021 No Comments

দিনলিপিঃ খেলা শেষ?

January 17, 2021 No Comments

১৫ই জানুয়ারী, ২০২১ কাল ১৬ ই জানুয়ারী, শনিবার। সাড়ম্বরে ঠান্ডা ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে চলেছে বহুচর্চিত ভ্যাক্সিনের দল। দেশ জুড়ে ড্রাই রান সম্পন্ন হয়ে এখন

সাম্প্রতিক পোস্ট

মারীর দেশে আলো হোক ভালো হোক

Dr. Soumyakanti Panda January 18, 2021

কোভিভ ভ্যাকসিন কিছু প্রশ্ন কিছু জবাব-

Dr. Samudra Sengupta January 18, 2021

করোনা ক্লিনিকে ডা সায়ন্তন ব্যানার্জী ২

Dr. Sayantan Banerjee January 18, 2021

করোনা ক্লিনিকে ডা সায়ন্তন ব্যানার্জী ১

Dr. Sayantan Banerjee January 17, 2021

দিনলিপিঃ খেলা শেষ?

Dr. Parthapratim Gupta January 17, 2021

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

290413
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।