কলকাতা শহরের ভেতরে এবং শহরতলির অলিগলিতে হাজার হাজার প্যাথলজি ল্যাবরেটরি গজিয়ে উঠেছিল বা উঠেছে বা উঠবেও, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্বাস্হ্য বিভাগের সরকারী অনুমোদন সহ বা স্বাস্হ্য বিভাগের দেওয়া সরকারি অনুমোদন ছাড়াই। রাজ্য সরকারের স্বাস্হ্য বিভাগ, এই প্যাথলজি ল্যাবরেটরীগুলোর চালাবার জন্য ক্লিনিকাল লাইসেন্সের অনুমোদন দেয় একজন প্যাথলজি সাবজেক্ট নিয়ে পাস করা ডিপ্লোমাধারি বা এমডি প্যাথলজি ডিগ্রি আছে এমন কোনো ডাক্তারের নামে (ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের লাইসেন্স এবং তার কম করে এমবিবিএস ডিগ্রি পাস করবার পরে, এন এম সি দ্বারা স্বীকৃত প্যাথলজির ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট এর ওপরে ভিত্তি করে)। এখানে মনে রাখা দরকার যে ভারতবর্ষের বাইরের এমডি প্যাথলজি ডিগ্রি বা এফ্ আর সি পি ডিপ্লোমা ইন প্যাথলজি (১৯৭৬ সালের পরে অর্জিত) কিন্তু এন এম সি দ্বারা স্বীকৃত প্যাথলজি ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা নয়। এই আস্থা নিয়ে লাইসেন্স দেওয়া হয় যে ওই ল্যাবরেটরীগুলোর সমস্ত সার্ভিস (রিপোর্ট) সেই ডাক্তারই দেবেন অথবা তাঁরই তত্বাবধানে তাঁর দ্বারা নিযুক্ত মেডিকেল প্যাথলজি নিয়ে পাস করা কোন ডাক্তার দেবেন। কোন পাস করা বা পাস না করা টেকনিশিয়ান বা কোন বিজনেস বা ম্যানেজমেন্ট লোকের ওপরে ভিত্তি করে কোন ল্যাবরেটরির লাইসেন্সই দেওয়া হয় না প্যাথলজি ল্যাব চালানোর জন্য।
কিন্ত সত্যি কথা হলো, বাস্তবে কটাই বা ল্যাবরেটরীর সার্ভিসেস দেওয়া হয় প্যাথলজিস্টের উপস্থিতিতে করা কাজের ভিত্তিতে? এটা একেবারেই সত্যি কথা যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অলিগলিতে যত না প্যাথলজি ল্যাবরেটরি আছে তার পাঁচ ভাগের একভাগেও এমডি প্যাথলজি ডিগ্রিধারি বা ডি সি পি পাস করা প্যাথলজিস্ট নেই। তাই বেশিরভাগ প্যাথলজি ল্যাবরেটরীগুলোই চলে ডি এম এল টি/ পুরনো ডি এল টি/ বা নতুন বি এস সি ল্যাবটেকনোলজি পাস করা অথবা পাস না করা কিন্ত কোনো ভাবে কাজ জানা টেকনিশিয়ানদের ওপরে ভিত্তি করেই। এটাই বাস্তব। বিশেষভাবে সাবডিভিশন বা গ্রামেগঞ্জে।
এখন প্যাথলজির ল্যাবরেটরিগুলোতে কি করে কাজ হয়, কি কি কাজ হয় এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষের তো বটেই, চিকিৎসা পেশার অন্য বিভাগের মানুষেরও ধারণাটা হয়ত বা খুবই কম। আমরা ভাবি, প্যাথলজি ল্যাবরেটরীতে টেস্ট টিউবে কেমিক্যাল ঢেলে অথবা মাইক্রোস্কোপের তলায় রোগীর মল (stool), মুত্র (urine), কফ (sputum), রক্ত (blood) বা জীবাণু দেখে পরীক্ষা হয়। ছোট ল্যাবরেটরিতে সেটা অল্প শিক্ষিত কর্মী (যেমন কোনো ডি এম এল টি পাস/ ডি এল টি) করা বা পাস না করা কর্মী দ্বারা ) করেন আর বড় বড় ল্যাবরেটরীতে কোনো প্যাথলজির বিশেষজ্ঞ এমডি ডাক্তার এই কাজ গুলো করেন। ব্যাপারটা কিন্তু একেবারেই সেরকম নয়।
বর্তমানে প্যাথলজি ল্যাবরেটরির সার্ভিসেসগুলোকে কয়েক ভাগে ভাগ করা হয় একটা বড় ল্যাবরেটরিতে। যেমন
১) ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি বিভাগ -: এর মধ্যে পরে মল, মূত্র, রক্ত এবং কফ (এ এফ বি)-এর সাধারণ ভাবে রুটিন পরীক্ষা করা হয়। এর জন্য কিন্তু ভালো ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ানর (ডি এম এল টি/ ডি এল টি/ নতুন বি এস সি ল্যাব টেকনোলজি পাস করা) দিয়েই এই কাজ গুলো করানো হয়। সেটা বড় ল্যাবরেটরি হোক বা ছোটল্যাবরেটরিতে যাই হোক না কেন। যখন টেকনিশিয়ান কোনো কিছু না বুঝতে পারেন মাইক্রোস্কোপের তলায় তখনই ওনারা পাস করা ডাক্তার প্যাথলজিস্ট (ডি সি পি অথবা এম ডি প্যাথলজি পাস করা) যদি আদৌ সেই ল্যাবে থাকেন তাঁকে দেখিয়ে নেন! বিশেষ করে মালারিয়া জীবাণু বা রক্তে যদি কোনো এবনরমাল কোষ থাকে।
২) এফ এন এ সি এই পরীক্ষাটা সাধারণ ল্যাবরেটরিতেই করা যেতে পারে। এটা একটা সূঁচ ফুটিয়ে ১০ সিসি সিরিঞ্জ দিয়ে কোনো টিউমার থেকে (শরীরের উপরিতলের বা শরীরের ভেতরের থাকা) সাধারণ ভাবে বা USG বা CT গাইডেড, রস বাইরে টেনে এনে একটা স্লাইডে স্প্রেড করে তারপরে সেটা বিভিন্ন রং করে মাইক্রোস্কোপের নিচে দেখা হয়। এটা কিন্ত কোন টেকনিশিয়ানই করতে পারেন না আইনত এবং তাঁদের শেখানো হয় না। এটার জন্য দরকার এম ডি প্যাথলজি পাস করা বা কম করে ডি সি পি পাস করা ডাক্তার। রস টানার সময় সাথে থাকবেন অবশ্যই একজন রেডিওলজিস্ট যদি USG বা CT বা MRI গাইডেড এফ্ এন এ সি করতে হয়। এই পরীক্ষাটা করা হয় যাতে দ্রুত একদিনের বা দুদিনের মধ্যে বলে দেওয়া যায় যে টিউমারটা ক্যান্সার (খারাপ) না ক্যান্সার নয় (ভালো)।
৩) বায়োপসি–এটা একমাত্র একজন এমডি (প্যাথলজি) পাস করা ডাক্তারই করতে পারেন এবং সেই রিপোর্টটা সই করতে পারেন । একজন ডি সি পি পাস করা ডাক্তার দশ বছর ধরে একটানা সরকার দ্বারা স্বীকৃত বা এন এ বি এল দ্বারা স্বীকৃত প্যাথলজি ল্যাবরেটরীতে কাজ করবার পরেই সেই রিপোর্টে সই করে ছাড়তে পারেন যদি ওনারা নিজে দেখেন।
8) সাইটোলজি বিভাগ -: এই বিভাগে বডি ফ্লুইডস যেমন পেটের ভেতরে বা বুকের ভেতরে জমা জল, কফ, মস্তিষ্কের তরল (সিএসএফ), বা ইউরিন এ কোনো ক্যান্সার সেল আছে কি নেই সেটা দেখা হয়। এই কাজটাও কোন টেকনিশিয়ান করতে পারেন না (স্লাইডটা ঠিক মত রং করে তৈরি করে দেওয়া ছাড়া) বা রিপোর্ট করতে পারেন না। একমাত্র প্যাথলজিতে এমডি বা ডি সি পি পাস করা ডাক্তারই করতে পারেন।
৫) ইম্মুনোপ্যাথলজি এবং ইম্মুনোফ্লুরোসেন্স বিভাগ – এই বিভাগে বিশেষ বিশেষ ভাবে পরীক্ষা করা হয় কোনো বায়োপসি টিস্যুতে/ বোনম্যারোতে / কিডনির বায়োপসিতে/ লিভার টিস্যুর বায়োপসিতে/ স্কিন বায়োপসিতে/ ব্রেইন টিস্যুর বায়োপসিতে বা এফ্ এন এ সি বা সাইটোলজি ফ্লুইডে একটি বা একাধিক প্যানেল মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি দিয়ে। এই টেস্টগুলো সাধারণ মানুষের জন্য প্রাইভেট ল্যাবগুলোতে অনেক ব্যয়বহুল। এর জন্য প্রয়োজন অনেক বছর ধরে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান এবং বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এমডি প্যাথলজির ডাক্তার এবং বিশেষ বিশেষ উচ্চ মানের মাইক্রোস্কোপ (আই এফ্ মাইক্রোস্কোপ) যা একমাত্র শহরের খুব বড় মাপের প্রাইভেট ল্যাবেই থাকে বা মেডিক্যাল কলেজেগুলোতে থাকে।
৬) মলিকিউলার প্যাথলজি -: এটা যদিও পশ্চিমবঙ্গে খুবই কম মেডিক্যাল কলেজে এবং হাতে গোনা দুই একটা কলকাতা শহরের প্রাইভেট ল্যাবরেটরীতে আছে , তবে এটা কিন্তু এখন খুবই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিশেষ করে বিভিন্ন ক্যান্সার চিকিৎসায় ডায়াগনোসিস, টার্গেটেড থেরাপি এবং চিকিৎসার পরে প্রগ্নসিস জানবার জন্য। এই বিভাগে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত টেকনিশিয়ান বা প্যাথলজির ডাক্তার কলকাতা শহরে একদমই নেই বললেই চলে।
৭) হেমাটোপ্যাথলজি -: এটা রক্তের কোনো অসুখের জন্য পরীক্ষার বিভাগ। মেডিক্যাল কলেজগুলো ছাড়া খুব কম প্রাইভেট ল্যাবরেটরী আছে কলকাতা শহরে যাঁরা এই বিষয়ে সমস্ত রকম পরীক্ষা করে উঠতে পারবেন এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এমডি প্যাথলজি ডাক্তারও হাতে গোনা কলকাতা শহরেই।
৮) মাইক্রোবায়োলজি
৯) সেরোলজি বিভাগ-: এখানে অনেক ধরনের টেস্ট করা হয় যেমন সমস্ত রকম জীবাণুর কালচার এবং জীবাণুর অ্যান্টিবায়োটিক সেনসিটিভিটি (রক্ত, কফ, পেচ্ছাব, মল)
১০) ভাইরোলজি বিভাগ এবং ফাঙ্গাস বিভাগ
৮,৯,১০ বিভাগের রিপোর্টের জন্য দরকার কোনো এমডি পাস করা মাইক্রোবায়োলজি ডাক্তার বা ডি সি পি করা ডাক্তার বা মেডিক্যাল মাইক্রোবায়োলজিতে পি এইচ ডি করা লোক ।
১১) আধুনিক নানারকম যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ বিভাগ (যেমন দুই তিনটে করে অটো অ্যানালাইজার, ফ্লেমফোটোমেট্রি, ইলেকট্রোলাইট অ্যানালাইজার, স্পেকট্রাফটো মিটার, ইমিউনএসে অটোঅ্যানালাইজার, HPLC, Nephlometer, অটোসেলকাউন্টার, অটো স্টেইনের, বেকমান culture কাউন্টার, অটো হরমোন অ্যানালাইজার)
এর মতই প্যাথলজির লাবের আর একটা বিভাগ হলো biochemistry বা আধুনিক নাম ল্যাবরেটরী মেডিসিন বিভাগ -: এই বিভাগে বিভিন্ন লেভেলের কর্মী এবং তাঁদের উপরে থাকেন ল্যাবরেটরি মেডিসিনে এমডি করা বা প্যাথলজিতে এমডি করা ডাক্তারবাবু দ্বারা পরিচালিত একটি গোটা টিম। এই টিমে রক্ত যিনি নেন তাঁর থেকে শুরু করে প্রশিক্ষিত ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্ট এবং মেডিক্যাল ট্রানস্ক্রিপশনিস্ট, ডাক্তার প্রত্যেকের আলাদা আলাদা নির্দিষ্ট এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে।
অধিকাংশ রুটিন রক্তের টেস্ট এখন অটো এনালাইজার বা উপরে উল্লেখিত স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে হয়। কিন্তু এই যন্ত্রগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটা দেখার জন্য ভালো ভাবে প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান, বিশেষজ্ঞ এমডি প্যাথলজি বা এমডি ল্যাব মেডিসিন ডাক্তার এবং ‘কন্ট্রোল’ ইত্যাদির প্রয়োজন।
সাধারণ বুদ্ধিতে আমরা ভাবি, একটি টেস্টকে বারবার করে করলেই সেটি ঠিক রেজাল্ট দিয়েছে কিনা সেটা বোঝা যায়। আসলে কিন্ত তা নয়। যে মেশিনটা ভুল রেজাল্ট দিচ্ছে সে বারবার একই ভুল রেজাল্ট দিতে পারে। সেই জন্য নির্দিষ্ট রেজাল্ট জানা আছে এমন কন্ট্রোল মেটিরিয়ালের প্রয়োজন (স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল)। আর এই কন্ট্রোলের রেজাল্ট ক্রমশ সঠিক রেজাল্ট থেকে সরে যাচ্ছে কিনা সেটা বিভিন্ন স্ট্যাটিস্টিকাল ফর্মুলার মাধ্যমে নির্ণয় করেন এমডি বিশেষজ্ঞরা (এটাকে বলা হয় standardization অফ মেশিন যেটা প্রতিদিন করতে হয়)। এই ল্যাবরেটরি মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা সাধারণত রুটিন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি, রুটিন হেমাটোলজি, রুটিন মাইক্রোবায়োলজি টেস্ট এবং পরিপূর্ণ ভাবে মেডিকেল বায়োকেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টে কাজ করে তারপর এমডি ল্যাবরেটরী মেডিসিনে ডিগ্রি অর্জন করেন এবং একই সাথে বায়োকেমিস্ট্রি এবং কোনো হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টার সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরী সামলান।
প্যাথলজির ল্যাবরেটরির এই এগারোটা বিভাগের মধ্যে হিস্টোপ্যাথলজি বা বায়োপসি, এফ্ এন এ সি, সাইটোলজি হেমাটোলজি বিভাগ এখনো অনেকটা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিজস্ব প্রতিদিনের ব্যক্তিগত পড়াশুনো রেফারেন্স বই নিয়ে, স্কিল, অভিজ্ঞতা এবং সাবজেক্টের জ্ঞানের উপরে পুরোপুরি ভাবে নির্ভরশীল। তাঁরা এফ এন এ সি বা বায়োপসির রং করা স্লাইডের মাধ্যমে নির্ণয় করেন মাইক্রোস্কোপের তলায় রেখে যে একটি টিউমার ভাল (বেনাইন) না খারাপ (ম্যালিগন্যান্ট) । ম্যালিগন্যান্ট হলে কী ধরনের malignancy সেটা তার ডায়াগনোসিস। ভালো হলে অপারেশন বা ওষুধের দরকার আছে কিনা, কী ধরনের চিকিৎসা হওয়া উচিত আর খারাপ (ম্যালিগন্যান্ট) হলে কতটা খারাপ সেটা, বা কী কী চিকিৎসার মাধ্যমে কতটা উন্নতি হওয়া সম্ভব। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারটি কতটা ছড়িয়ে পড়েছে শরীরের ভেতরে। কতো দিন বাঁচানো সম্ভব এইসব রোগীদের এবং চিকিৎসা কী করা দরকার ।
কিন্তু অন্যান্য ব্লাড টেস্টও সঠিকভাবে করার গুরুত্ব অপরিসীম। একজনের টেস্ট অন্যজনের রিপোর্টে যাওয়া আটকানোর জন্য বড় বড় ল্যাবরেটরিগুলো বারকোড সিস্টেম ব্যবহার করে। এবং টাইপে ভুল এড়ানোর জন্য ইন্টারফেসিং বা অটো এনালাইজার থেকে সরাসরি রিপোর্ট করার সফট্ওয়ারে রেজাল্ট চলে যাওয়ার ব্যবস্থাও আছে। স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর ঠিক করা থাকে, যে মেশিন কোন ধরনের ইঙ্গিত দিলে পেশেন্টের রিপোর্ট করা বন্ধ করে মেশিনকে আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।
এত আধুনিক ব্যবস্থা সত্ত্বেও প্রতিটি টেস্টের সঠিকভাবে হিস্ট্রি বা ক্লিনিক্যাল ইনফর্মেশনের গুরুত্ব অপরিসীম যেটা প্রায় সময়ই ডাক্তারবাবুরা দেন না । এবং শুধু আধুনিক মেশিন নয়, দরকার মেশিন, টেকনোলজিস্ট এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের টিমের মধ্যে সঠিক সমন্বয়।
এই প্রত্যেকটা স্টেপে সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে কিনা, সেটা দেখার জন্য ভালো সংস্থাগুলি চেষ্টা করে কোনো স্বাধীন এবং স্বনামধন্য সংস্থার মাধ্যমে নিজের ল্যাবরেটরীতে অডিট করানোর, যাতে ভুলত্রুটি শুধরে নিয়ে আরো ভালো কাজ করা যায়। এরই পোশাকি নাম অ্যাক্রিডিটেশন। ভারতে সেটি প্রধানত দেয় ন্যাশনাল অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড অফ টেস্টিং এন্ড ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরিস বা সংক্ষেপে এন এ বি এল।
সবশেষে বলবো, ল্যাবরেটরি রিপোর্ট শুধু কতগুলি সংখ্যা নয়। সেটি আপনার চিকিৎসা যে ডাক্তারবাবু করছেন তাঁকে রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করার এবং কী চিকিৎসা দেওয়া উচিত সেটা ঠিক করবার একটি সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। ভালো ল্যাবরেটরির উদ্দেশ্য হচ্ছে, সঠিক সময়ে সঠিক রিপোর্ট এবং তার ইন্টারপ্রিটেশন বা গুরুত্ব জানিয়ে রোগ নির্ণয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করা। এবং এমার্জেন্সি রিপোর্ট বা এ্যাবনরমাল রিপোর্ট, যার তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা দরকার, সেটি অন্য টেস্টের আগে করা এবং আগে জানানো।
স্বাস্থ্যপরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকটি চিকিৎসক এবং কর্মী, আমরা যেন ভুলে না যাই যে রোগীকে আরো ভালো পরিষেবা দেওয়াই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: ডা সুকান্ত চক্রবর্তী, বায়োপ্সি বিশেষজ্ঞ, এন এ বি এল লিড এসেসর।