ভয় দেখিয়ে মাথা নোয়ানো যায়নি আর জি কর মেডিকাল কলেজের দু’জন ইন্টার্নের। তাঁরা মুচলেকা দেননি, রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং অধ্যক্ষের চাপে বলেননি কলেজের বাইরের তিন চিকিৎসক নেতার উস্কানিতে তাঁরা আন্দোলন করেছিলেন।
হাইকোর্টের নির্দেশে জুনিয়ার ডাক্তাররা কাজে ফিরে যান, যদিও হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে কলেজ প্রশাসন সমস্যা (স্বচ্ছ স্টুডেন্টস’ কাউন্সিল মনোনয়ন, হোস্টেল সমস্যা, লেডিজ কমন রুম, স্বচ্ছ হাউসস্টাফশিপ নির্বাচন, ইত্যাদি) সমাধানের উদ্যোগ নেয়নি। বরং আমরা দেখি ছাত্রছাত্রী-জুনিয়ার ডাক্তারদের সমর্থনে সরব হয়েছিলেন যে বিভাগীয় প্রধান, তাঁকে ট্রান্সফার করা হয় উত্তরবঙ্গের এক জেলায় যেখানে এখনও মেডিকাল কলেজ গড়ে ওঠেনি। সহানুভূতিশীল অন্য শিক্ষকদেরও বদলি করা হয়।
শাসক দলের হুমকি ও শারীরিক নিগ্রহের মুখে, প্রশাসনের ভীতিপ্রদর্শনের সামনে অনেকেই শিরদাঁড়া নুইয়ে ফেলেন কিন্তু সবাই নোয়ান না। এমনই দু’জন এই ইন্টার্নরা। তাঁদের বাগে আনতে আননোন নম্বর থেকে ফোন আসে।
এই দু’জনের মধ্যে একজনের ইন্টার্নশিপ শেষ হয়ে গেছে, আন্দোলনের সময়কার অনুপস্থিতির জন্য অতিরিক্ত ডিউটিও তাঁর করা হয়ে গেছে, বিভাগীয় প্রধানদের সই করাও হয়ে গেছে, ইন্টার্নশিপ কমপ্লিশন সার্টিফিকেটে অধ্যক্ষের সই হয়নি। আবেদন আটকে রাখা হয়েছে কলেজ অফিসে। তার ফলে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকাল কাউন্সিলে তিনি পার্মানেন্ট রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করতে পারছেন না।
তার ওপর নতুন আক্রমণ সম্প্রতি। তাঁদের বলা হয়েছে ৭দিনের মধ্যে হোস্টেল ছাড়তে হবে, যদিও একজন ইন্টার্নশিপের ডিউটি করছেন, অন্যজন ইন্টার্নশিপ কমপ্লিশন সার্টিফিকেটের অপেক্ষায়।
আজ সময় এসেছে অন্যান্য মেডিকাল কলেজের ছাত্রছাত্রী, জুনিয়ার ডাক্তার, সিনিয়ার ডাক্তার ও পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের সরব হওয়ার। কোনভাবেই এই শিরিদাঁড়া সোজা জুনিয়ার ডাক্তারকে প্রশাসনের প্রতিহিংসাপরায়ণতার শিকার হতে দেওয়া যায় না।