দোষটা কার্তিকের নয়, দোষটা আমাদের মানসিকতার।
প্রিয়াঙ্কার লেখাটা পড়লেই তা পরিষ্কার হবে। সাবাশ প্রিয়াঙ্কা।
তিন বছর আগে, আমাদের দরজায় কার্তিক পড়েছিল, ঠাকুর হিসেবে না হলেও ওভাবে সুন্দর একটা মূর্তি ফেলে রাখতে পারিনি। ততোদিনে কার্তিক ফেলার এই রীতের মর্মাথটা জানতামও না। আমি জানতাম চাষীরা জমিতে চাষের আগে এই পুজো করেন, যাতে ফলন ভালো হয়। যাইহোক্,উর্বর জমির মালিকরা হয়তো পারেন, সন্তানের প্রতিরূপ কর্তিকের পরিণতি না ভেবে, ফেলে রাখতে, কিন্তু আমি ঘরে না এনে পারিনি। এই নিয়ে চার বছর, আর পাঁচ জনের মতো ঠাকুরঘরে উঁনি বিদ্যমান। যাঁরা অতো ভালোবেসে দিয়েছিলেন তাঁদের বলছি,পরিণতি-প্রায় সাতবছর ধরে লড়াই আর এই বছরে IVF first transfer fail আমি এসব বলতে ভয়ও পাই না, অন্ধ ভক্তিও নেই, তাই নাঃ কার্তিক বাবাজীবনের এতে কোনো হাত নেই–সবটাই বিজ্ঞান।
সময় এগোয়,মানসিকতা না।
তাই আগে এই প্রসঙ্গে যা বলেছিলাম,আবার ও তাই বলছি–
কোনো দম্পতি বিয়ের পর বেশ কিছু বছর নিঃসন্তান থাকলে বাকিদের কি?
হয়তো তাঁরা ইচ্ছাকৃতই চান না তাই নেই বা তাঁদের সাংসারিক জটিলতা আছে তাই তাঁরা আনতে চান না বা তাঁরা হয়তো মনে করেন তাঁরা আরো একটু গুছিয়ে নিয়ে তবেই তাঁদের নতুন জীবন শুরু করবেন যাতে তাঁদের কোল আলো করে যে আসবে তাকে আরো আরো সাচ্ছন্দে মনের মতো করে বড়ো করতে পারেন।।
অনেক কিছুই তো হতে পারে।।
কিন্তু প্রায় সবার আজ কাল অদ্ভুৎ স্বভাব দেখা যায় যাকে বলে এখনকার ট্রেন্ড,জোর করে উপযাজক হয়ে এসে খুব কাছের মানুষ এরম একটা ভাব করে হাড়ির খবর জানার চেষ্টা, জানতে পারুন নাই পারুন শেষে তাতে প্রশ্নচিহ্ন বসান। আর নিজের মতো ভেবে নেওয়া। আর তারই একধরনের ফল প্রকাশ পায় এই কার্তিক ফেলা হঠাৎ দেখা হলে ডেকে খুব বিনয়ের সাথে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়া।।
যাঁরা এতো উদারতা দেখান দয়া করে ভাবুন, সবসময় যা ভাবেন বা করেন ঠিক না ও হতে পরে। মানুষের অনেক রকম সমস্যা থাকতে পারে। নিঃসন্তান মানেই বন্ধ্যাত্ব গ্রাস করা নয়। আর যদি বন্ধ্যাত্বই হয় আর সেটা আপনারা জানেনই তাহলে তো সহমর্মী হতে না পারেন এমন কিছু নাটুকে বেদনা প্রকাশ নাই বা করলেন যাতে মানসিক যন্ত্রনা এতো বেড়ে যায়।
আর সবশেষে একটা কথা “আমার সন্তান হোক না হোক আপনাদের কি? হলে মানুষ করে তুলতে সাহায্য করবেন না অমানুষ হচ্ছে দেখলে গসিপের টপিক্ পাবেন। আর না হলেই বা কি করবেন? শুভ অনুষ্ঠান হলে সেই তালিকা থেকে বাদ দেবেন না নিজের সন্তানকে আমার দুঃখ ঘোচাতে দেবেন?”
আমি যাঁকে আমার ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করার অধিকার দিচ্ছি দয়া করে তাঁরাই করুন। বাকিরা সমস্যা মেটাতে না পারলে বাড়াবেন না।।
আর কার্তিকের (ঠাকুর) এতো ক্ষমতা থাকলে এতো দিনে সব আই ভি এফ ক্লিনিক বন্ধ হয়ে যেতো।।