লড়াই করতে করতে শেখা। একটা সিস্টেমকে ভীষণ ওপর থেকে দেখতেই সাধারণত আমরা অভ্যস্ত থাকি। কিন্তু একটা মুভমেন্ট আমাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় কোনো একটা সিস্টেমের একেবারে রুটে। জানা বোঝা বাড়ে আর তার সাথে সাথেই বাড়ে ফিরে যাওয়ার তাগিদ। মেডিকেল কলেজের এই আন্দোলন এমন কিছু কথা তুলেছে যা বহুবছর কোন স্বাস্থ্য আন্দোলনের কথা ছিল না।
সবার জন্যে স্বাস্থ্য। সেটা কী? যে আসলে এই স্বাস্থ্যব্যবস্থা সরকারের তরফ থেকে তার নাগরিককে দেওয়া তার অবলিগেশন, বেসরকারিকরণ করে নয়। কোভিড আমাদের সবাইকে কান ধরে শিখিয়ে যাচ্ছে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার গুরুত্ব।কোভিড আমাদের সাথে থাকবে কিন্তু তার ভিরুলেন্স কমবে,কিন্তু স্বাস্থ্যব্যবস্থার খোলনলচে বদলে একটা নতুন উন্নত বৈজ্ঞানিক মডেল বানানো, জিডিপির একটা বড় অংশ স্বাস্থ্যখাতে দেওয়া, মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো এবং সর্বোপরি যে রেফারেল সিস্টেম অন্তত এই রাজ্যে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে তার পুনরুদ্ধার যে কতটা আবশ্যিক তা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাচ্ছে। আর আসে ডাক্তার রোগীর সম্পর্ক। আমার মনে হয় এই সম্পর্ক ভেঙে পড়া সম্ভবই নয়। আমার বিশ্বাস তা ভেঙে পড়েনি কোনদিনই। একটা নতুন স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্যে ডাক্তার রোগীকে একসাথেই লড়তে হবে। ছিনিয়ে আনতে হবে সরকারের কাছ থেকে আমাদের অধিকার। মেডিকেল কলেজের আন্দোলন এইসব কথাই বারবার বলে গেছে।
আসে এভিডেন্স বেসড মেডিসিন প্র্যাক্টিশ আর র্যাশনাল প্র্যাক্টিশ এর কথা। এরও সামঞ্জস্য আনার কথা আমাদের ভাবতে হবে। আসলে এই আন্দোলন এক নতুন স্বাস্থ্য আন্দোলন, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর জন্যে ডাক্তার রোগীর একসাথে লড়াই করার হতে পারে একেবারে প্রথম ধাপ।
বৃষ্টি হচ্ছে ৮৮,কলেজ স্ট্রিটে। রাত জাগছি আমরা! এক নতুন স্বাস্থ্যব্যবস্থার দাবীতে।
আমি এবং আমার মত বহু সাধারণ মানুষ আপনাদের আন্দোলনকে সমর্থন করে। করোনা আমাদের প্রতি মূহুর্তে বুঝিয়ে দিচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কত পিছিয়ে আছে। শুধু করোনা নিয়ে পড়ে থেকে ডাক্তারী ছাত্রদের ও জুনিয়র ডাক্তারদের শিক্ষা ও গবেষণায় পিছিয়ে দিলে আমরাই অভিজ্ঞ ও যোগ্য চিকিৎসক থেকে বঞ্চিত হবে। আবার সাধারণ মানুষ এখন অন্য চিকিৎসা ঠিকমত পাচ্ছে না। সরকারের এই দিকটা দেখা উচিত। পরিকাঠামো ও পরিকল্পনা ছাড়া মহমারির সঙ্গে লড়াই অস্ত্র ছাড়া যুদ্ধ জয়।