নেতা যত ওপরে ওঠেন, তত তিনি সর্বজ্ঞ হয়ে দাঁড়ান।
রহস্যময় হয়ে ওঠে তার শিক্ষাদীক্ষার ইতিহাস,
ছোটোবেলা ও যুবাকাল নিয়ে তৈরি হয় অলৌকিক উপাখ্যান,
নেতা যত ওপরে ওঠেন, তত তাঁর মুখে ফোটে দেবতা-আভাস।
জ্ঞান আর বিজ্ঞান নিয়ত শুধরায় নিজেকেই
অর্থাৎ মেনে নেয়, আগের জানাতে ছিলো ত্রুটি
রাজনীতি জানে, কখনো আগের ভুল মেনে নিতে নেই,
যা করেছে তাই ঠিক, না বললে ময়দান থেকে তার ছুটি।
সুতরাং মই বেয়ে নেতা যত চড়েন শিখরে
তত তার কথামালা ধর্মের বাণী হয় স্তাবকের ঠোঁটে
দৈবাৎ কেউ যদি আমতা আমতা করে তার ভুল ধরে
কত সে তুচ্ছ প্রাণী , ট্রোলেরা প্রমাণ করে ছাড়ে একজোটে।
নেতা যত ওপরে ওঠেন, ততই নিজেকে ভাবেন গোটা দেশ
তার ধারণাটাই মানুষের মতামত, বাকিদের বিভাজক ছক
তাঁর থেকে শুরু হয়ে দেশের সমস্ত কিছু তাঁরই সীমানা দিয়ে শেষ ,
ইতিহাস ভূগোল সাহিত্য বিজ্ঞান, সবই তাঁর ভৃত্য নিছক।
তাঁর কথা দিয়ে সাজে স্কুল সিলেবাস, ছবি থাকে সব হোর্ডিংএ,
আশিস-ধন্য হয়ে তবেই এগোতে পারে মেলা খেলা কারবার সভা
তাঁর থেকে যুগ শুরু , তাই গেয়ে ফোঁকা হয় অতীতের শিঙে
যত বিকৃতি হোক তথ্য ও সত্যের, নত হওয়া স্তম্ভেরা বোবা।
তারপর, হাওয়া দেয়। মোরগের মুখ ঘুরে যায় বিপরীতে।
মই ভেঙে নেতা যান সড়সড় নিচে, ফের গায়ে লাগে ধুলোমাটি
দেওয়ালেরা রঙ বদলায়, কটাদিন লাগে শুধু ছবি মুছে দিতে,
প্রমাণিত হতে থাকে তাঁর যত দেওয়া বাণী আদতে সে ভাটই।
নবীন বাতাসে দেশ নতুন সর্বজ্ঞ পায় একেবারে ফ্রী-তে
ভক্ত প্রচার করে এতদিন পরে লোক পেয়ে গেছে ঈশ্বর খাঁটি।
বিরক্ত সময় উল্টায় পুনরায় সাত-বাসি কাহিনীর প্রথম পাতাটি।