চন্দ্রযানের সফল অবতরণ নিয়ে প্রায় সবরকম ন্যারেটিভ, মিম, টুইট ইত্যাদি হয়ে যাওয়ার পরেও দুটো কথা জানানোর ইচ্ছে হল। তথ্যসূত্র এক বন্ধু যে ইসরোতে কর্মরত (নাম বলা যাবে না সহজবোধ্য কারণে)। উচ্ছাসের জোয়ার সরে গেলে কঠোর রুক্ষ বাস্তবের পলিমাটিতে দাঁড়িয়ে আজ ফোন করে জানতে চেয়েছিলাম, কেমন লাগছে। বন্ধু কাম ঈষৎ জুনিয়র সেই ইঞ্জিনিয়ার ছেলেটি যা জানালো সেটা খানিকটা এই রকম। বললো যে আমাদের এখানে আর পাঁচটা সরকারি কাজের জায়গায় যে ধরনের গোলমেলে ব্যাপার-স্যপার থাকে তার সবগুলোই আছে। আমলাতন্ত্র, দীর্ঘসূত্রিতা, বসের খামোকা বস গিরি, সহকর্মীদের ব্যাক বাইটিং ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেকেই চাকরি ছেড়ে চলে যায়। আমার বন্ধুটি যায়নি। কেন যায়নি এর উত্তরে বললো যে, ওর খুব ইচ্ছে ছিল এমন একটা প্রজেক্টের সাথে জড়িয়ে থাকে যাতে দেশের জন্য কিছু করা যায়, দেশের নাম উজ্জ্বল করা যায়। তাই সরকারি যাবতীয় অবহেলা অনাদর সহ্য করেও ও লেগে ছিল। ও জোর দিয়ে বললো যে সামান্য টাকায় এই প্রজেক্টের জন্য বরাদ্দ হয়েছে সেগুলো বিদেশের কোনো প্রজেক্টের কর্মীরা ভাবতেও পারবে না। সব বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে ওই টাকায় এই প্রজেক্টটা সফল হল সেটাই ওর কাছে খুব আশ্চর্য্যের বিষয়। বললো, দাদা, বিশ্বাস করতে পারছি না, একটা ঘোরের মধ্যে আছি। আজ মনে হচ্ছে বেসরকারি সংস্থায় বেশি মাইনের অফার, বিদেশ চলে যাওয়ার অফার ছেড়ে দিয়ে কোনো বোকার মতো কাজ করিনি। কি দাদা বলো আমি কি বোকামি করেছি?
উত্তরে এটাই বললাম যে, ভাই তোদের মতো বোকা মানুষরা বেঁচে থাক, তোদের জন্যই তো কাল কত শত মানুষ ভারতবাসী হিসেবে আনন্দ ফুর্তি করে নিল। জীবনে দেশের জন্য কিছুই করেনি, তারাও করে নিল। তোর মতো বোকা ভারতের ঘরে ঘরে জন্ম নিক। এই তো সবে শুরু। মরবার আগে একবার দেখে যেতে চাই মঙ্গলে মহাকাশ যান পাঠাচ্ছে আমার গরীব ভারতবর্ষ। ভালো থাকিস।
“হতে পারি দীন তবু নহি মোরা হীন”