❤️ ভালোবাসাই আমাদের ধর্ম। তাই গণেশ পুজো, হনুমান পুজোর সাথে ‘বেলেন্টাইন’ পুজোকেও আমরা আপন করে নিই। আমাদের কম বয়সে এগুলো ছিল না। নিউ এম্পায়ার থেকে একটু দূরে একটা আর্চিস-এর দোকান ছিল। দুরু দুরু বুকে কার্ড কিনতে যেতাম। কার্ডের ভিতরের লেখাটা পছন্দ হলে পিছনের দামটা দেখতাম, তারপর আবার যেখানে ছিল সেখানেই রেখে দিতাম। আমার মধ্যবিত্ত প্রেম। তখন গোলাপ বলতে রজনীগন্ধার মালার মাঝে, মা-কাকিমার খোঁপাতে বা বরযাত্রীর বুকপকেটে। মেয়ে বন্ধুকে দিতে হয় জানতাম না। আগে বুকে ব্যথা বললে বন্ধুরা বলতো, চল মাল খাই, এখন বুকে ব্যথা বললে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হাজির হয়। বয়েস যখন কম ছিল যার সঙ্গে ডেট করতাম, বুড়ো বয়েসে সে এখন বউ হয়ে আমায় অ্যাকোমো- ডেট করছে।
ভালোবাসা দেখানোর তরিকা পাল্টায়, ভালোবাসার লোকেরা পাল্টায় না।
ভ্যালেন্টাইনস ডে যে কোনো দিন হতে পারে,অন্যরকমও হতে পারে। তিন বছর আগেও কেউ এই দিন গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়েছিল, তার ভালোবাসার লোকের ওপর। জাতীয় পতাকায় মোড়া দেহে। ১৪ ফেব্রুয়ারি আমরা যেন পুলওয়ামাকে না ভুলি। ভালোবাসা হারাবার দিন। চল্লিশটা গোলাপ অকালে ঝরে গেছিলো।
আবার ভালবাসার কোনো দিন হয় না।তাই যে বৃদ্ধ বিবাহবার্ষিকীর দিনে পাশের বালিশটার ওপর গোলাপ ফুল রেখে, চোখ বন্ধ করে শুঁকতে চান সেই জবাকুসুমের গন্ধ, যে বৃদ্ধা উল বুনতে বুনতে তার পাশে বসা আলঝাইমার আক্রান্ত স্বামীকে শোনান তার প্রিয় গান,
পৃথিবীর কেউ ভালোতো বাসেনা
এ পৃথিবী ভালো বাসিতে জানে না
যেথা আছে শুধু ভালো বাসা বাসি
সেথা যেতে প্রাণ চায় মা।
আমার সাধ না মিটিল, আশা না পুরিলো…
সেদিনই তাদের ভ্যালেন্টাইনস ডে। আসল জীবনে ভালোবাসা শুধু গোলাপে নেই, ভালবাসা কাঁটাতেও আছে।
ছবি : Jayanta Biswas
❤️❤️