আপনাদের চিকন কালো নরম শরীরের সাথে
আমার পাঁচ আঙুলের দাগ বসা ক্ষয়াটে শরীরের কোনো মিল নেই,
তবু বিশ্বাস করুন , আপনিই আমি ,আমিই আপনি।
পরিস্থিতি হাতের চাপে দেওয়ালে ঠুসে আমায় ঘুঁটে করেছে,
জ্বলবার সময় আপনারা আগুন দেখে ভাবেন ওটা অন্য কেউ।
আপনার দুর্ভাগ্য হলে আগামীতে এই দেওয়ালে আপনি লটকাবেন,
তারপর অদৃষ্টের হাত ঠুসে ভরে দেবে উনুনে।
ওকি! ধোয়ায় চোখ ঢাকছেন? কাশছেন? কাশবেন না , কাশি খুব বিপজ্জনক এখন, আমারও তো..
হ্যাঁ, আমারও কাশি দিয়ে শুরু, সাথে জ্বর।
একটা খবরে হলো তছনছ ঘর, রিপোর্ট যখন এলো আমি পজিটিভ।
ডাক্তার বললেন, ‘কিছু না, মাস্ক পরুন, হাত ধোবেন বারবার,
শ্বাসকষ্ট না হলে নিদান এখন শুধু ঘরে থাকবার,
একটা পালস অক্সিমিটার, থার্মোমিটার আর প্যারাসিটামল,
দুয়েকটা ভিটামিন।
লেবু দিয়ে গরম জল, আদা গোলমরিচের হাবিজাবি বাদ দিয়ে কটা দিন বিশ্রাম নিন।’
বিশ্রাম? আমার ঘুঁটে হবার খবরে চেনা পাড়া হয়ে উঠলো আস্ত গোবরডাঙা,
বাড়িওয়ালা চাইলৈন উৎখাত, পড়শিরা চাইলেন উৎপাটন,
বন্ধু স্বজন আর কেউ নেই আমার তখন।
অথচ বিশ্বাস করুন, আমি আর বাইরে যাইনি, মানে যেতে চাইনি।
কিন্তু ওষুধ আর খাবার কি বাড়ি আসে নাকি?
কেউ রাজি হয়নি, কাজেই নজর দিয়ে ফাঁকি, বেরোতেই হলো চুপিচুপি,
আপাদশিরআবৃত করে। ও গোবরবাবুগণ, জানেন কি এইভাবে কত লোকে ঘোরে?
উনুনে ঢুকবো বলে মোটামুটি যখন প্রস্তুত, তখনই দৈববাণীর মতো খবর হাজির ‘ নেগেটিভ’।
পাঁচ আঙুলের দাগ সরে গেলো, সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকলেও,
সমাজবর্জ্য হয়ে থাকবার মেয়াদ ফুরালো। পড়শি আবার হাসে,
এ রোগের হালহকিকত সব জেনে নিতে চান আজ সবাই বিশদে।
আমি তো গোবর নই, প্রাক্তন ঘুঁটে। কাজেই দিইনা কান সেই উপরোধে।