যে ভয়টা ছিল, তাই হল–কোভিড -১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ প্রবল বেগে আছড়ে পড়ল সারা দেশে। ছাড় পায়নি পশ্চিমবঙ্গও। গত দুই সপ্তাহ ধরে সংক্রমণের গ্রাফ খাড়া উপর দিকে উঠছিল। এই পরিস্থিতিতে আরও ভয়ের–কোভিডের টিকা এবং গণ টিকাকরণের বিরুদ্ধে প্রচারের ফলে জনসাধারণের বিভ্রান্তি।
একটা নতুন রোগ, তাকে প্রতিরোধ করার জন্য আবিষ্কৃত নতুন টিকা, তা নিয়ে সংশয় বা অবিশ্বাস’ থাকতেই পারে। সত্যে পৌঁছানোর জন্য যথাযথ তথ্যসূত্রে পৌঁছানো দরকার, অবৈজ্ঞানিক তত্ত্ব আর কুযুক্তির আশ্রয় নিলেই সর্বনাশ, সর্বনাশ জনসাধারণের।
যাঁরা টিকা নিয়েছেন তাঁদের নিয়ে চিন্তা কম। দুশ্চিন্তা তাঁদের নিয়ে যাঁদের সংক্রমণের ফলে গুরুতর রোগ হওয়ার সম্ভাবনা, অথচ যাঁরা টিকা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত–ভাবছেন টিকা নেবো কি নেবো না। এঁদের অনেকেই হয়তো টিকা বিরোধী প্রচারের শিকার।
দুর্ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসুন। এখনও অবধি সারা পৃথিবীর গবেষণা থেকে জানা গেছে করোনার টিকা মূলত নিরাপদ। টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গুরুতর রোগের ঝুঁকি অনেক বেশি।
টিকার কার্যকারিতা এবং পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দুই নিয়েই গবেষণা চলছে সারা পৃথিবীতে। যে কোন টিকাই যেখান থেকে শুরু হয়, সেখান থেকে নিয়ে তার দীর্ঘ যাত্রাপথে উন্নত থেকে উন্নততর হতে থাকে। তার মানে এটা নয় যে শুরুর টিকাতে কোন খামতি ছিল। করোনা ছাড়াও অনেক রোগের টিকা বাজারে আছে, যেগুলো নিয়ম মেনে প্রতিনিয়ত উন্নততর হচ্ছে। এমনটাই হচ্ছে করোনার টিকা নিয়েও।
আমাদের দেশে এ মুহূর্তে যে দুটি করোনার টিকা লাগানো হচ্ছে–কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাকসিন, সে দুটি ওষুধ মহানির্দেশকের কাছ থেকে জরুরীকালীন সীমাবদ্ধ ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে। অতি সম্প্রতি ডা রেড্ডিজ ল্যাবরেটরী একই রকম অনুমোদন পেল স্পুটনিক ফাইভ নামক করোনার টিকা তৈরির। রেস্ট্রিক্টেড এমার্জেন্সি ইউজ অথোরাইজেশন মানে টিকাগুলিতে কোন খামতি রয়েছে এমনটা নয়।
টিকা নিয়ে ভিন্নমতের আদান-প্রদান চলতেই পারে, কেউ টিকার বিরুদ্ধে কথা বলতেই পারেন। সেই আদান-প্রদান যথাযথ যুক্তির ভিত্তিতে হওয়া উচিত।
সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মত সংগঠনগুলির উচিত বিরুদ্ধবাদীদের প্রশ্নগুলির সঠিক ভাবে উত্তর দেওয়া। সেখানে অস্বচ্ছতার জায়গা থাকা উচিত নয়।
জনসাধারণের কাছে আমাদের আবেদন রোগ সংক্রমণকে আটকানোর জন্য মাস্কের যথাযথ ব্যবহার করুন এবং গুরুতর রোগের হাত থেকে বাঁচবার জন্য, করোনা জনিত মৃত্যুর সংখ্যা কম করার জন্য টিকা নিন। করোনাজনিত রোগের দ্বিতীয় ঢেউ থেকে বাঁচবার জন্য আজকের দিনে এছাড়া আর বিকল্প পথ নেই।
আমার salbutamol ও terbutaline এ অ্যালার্জি আছে। টিকা নেওয়া যাবে। জানাবেন প্লিজ।