মানসিক অসুখগুলোকে আমরা আজকেও ঠিক বুঝতে পারি না…. টিভিতে, ওয়েব সিরিজ এও মানসিক অসুখ নিয়ে অনেক ভীতি, অনেক ভুল ধারণা তৈরী করে রাখা হয়েছে… এর ফলে মানসিক অসুখ, মানসিক রোগ ও তার চিকিৎসা যেন একটা অন্ধকার আবর্তে পরে রয়েছে।
আর নিজেদের মানসিক অসুখ হলে…? আমরা অস্বীকার করি, আমরা লুকিয়ে রাখি, আমরা চিকিৎসা নিতে চাই না… আমরা ভয় পাই, “লোকে কি ভাববে “!
কারণ টিভিতে, সিনেমায়, সিরিজে মানসিক রোগীদের শুধুই thriller সিনেমার psychopath হিসেবে দেখানো হয়েছে, কিন্তু মানসিক সমস্যা যে আর পাঁচটা অসুখের মতোই একটা অসুখ! যেখানে কিছু মানুষের অবসাদ হয়, কিছু মানুষের অতিরিক্ত উদ্বেগ, কারোর obsession… আমাদের সমাজে এখনো মনে করা হয় মানসিক রোগী মানেই ভারসাম্যহীন, হিংস্র… হোমিসাইডাল… অথচ পরিসংখ্যান বলছে এমনকি schizophrenia রুগীরাও যত না বেশি homicidal, তার চেয়ে অনেক বেশি suicidal!
মানসিক অসুখ আসলেই শারীরিক অন্যান্য অসুখের মতোই একটা অসুখ… ব্রেইনের কিছু অস্বাভাবিকতার জন্য এই অসুখগুলি হয়… ঠিক যেমন আমাদের শরীরে ইন্সুলিনের অভাবে ডায়াবেটিস হয়, সেভাবেই ব্রেইনে বা মস্তিষ্কে serotonin নামক একটি রাসায়নিক পদার্থের অভাবে, অবসাদ হতে পারে…! সেভাবে দেখতে গেলে কিন্তু ডায়াবেটিস আর ডিপ্রেশনের কোনো ফারাক নেই… অথচ আমরা ডায়াবেটিসের ওষুধ খাচ্ছি যত সহজে বলতে পারি, ডিপ্রেশনের ওষুধ খাচ্ছি বলতে আমরা সংকোচ করি! কারণ লোকে তো জানেই “ঘরে ঘরে ডায়াবেটিস “, কিন্তু কেউ বলছে না, “ঘরে ঘরে ডিপ্রেশনও!”
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্ট বলছে ২০২০ থেকে ২০২১ সালে আত্মহত্যা বেড়েছে ৭.২ শতাংশ… ১.৬৪ লক্ষ মানুষ ২০২১ সালে আত্মহত্যা করেছেন… আর এই আত্মহত্যার পিছনে ৯০-৯৫% ক্ষেত্রেই কোনো না কোনো মানসিক অসুখ রয়েছে…. যে মানসিক অসুখের চিকিৎসা সম্ভব….! মানসিক অসুখ নিয়ে আমাদের সমাজের এই স্টিগমা চিকিৎসার পথে অন্যতম অন্তরায়….!
আমাদের বুঝতে হবে মানসিক অসুখ আর পাঁচটা অসুখের মতোই একটা অসুখ, যার চিকিৎসা রয়েছে, অনেক ওষুধ রয়েছে, psychotherapy রয়েছে…
আজকের দিনে মানসিক অসুখের আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে অথচ আমাদের মনে আমাদের দেখানো সিনেমা, সাহিত্য যে ছবিটা গড়ে তুলেছে, তা হলো অস্বাস্থ্যকর মানসিক asylum, সেখানে রুগীকে বেঁধে রেখে, মাথায় “shock” দেয়া হচ্ছে …. যে দৃশ্যের সঙ্গে বাস্তবের সাথে কোনো মিল নেই…. এ দৃশ্য শুধুই ভীতি প্রদর্শন করে, মানসিক রোগের চিকিৎসা নিয়ে জনমানসে ভুল বার্তা দেয়… সমাজে বিভিন্ন শিল্প, সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের এই বিষয় নিয়ে আরেকটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন…
আজকের দিনে মানসিক অসুখের জন্য অনেক ওষুধ আছে, যেগুলো কিন্তু মানুষকে ঘুম পাড়িয়ে রাখার জন্য নয়, মানসিক চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য কিন্তু মানুষকে একটা “productive ” জীবনে ফিরিয়ে আনা… ওষুধের সাথে সাথে রয়েছে psychotherapy, রয়েছে neuromodulation পদ্ধতি যেগুলোর একটা ECT বা যেটাকে আমরা ওই “shock দেওয়া ” বলে জানি, কিন্তু সেটাও আজকের দিনে অনেক উন্নত, আধুনিক ও মানবিকভাবেই প্রয়োগ করা হয়, টিভিতে দেখানো দৃশ্যর মতন হাত-পা-মুখ বেঁধে কোথাও মানুষের মাথায় “shock ” দেওয়া হয়না!
সমাজের সর্বস্তরে প্রতিদিন মানসিক রোগ ও তার চিকিৎসা নিয়ে যে অন্ধকার ছবি দেখানো হয়, তার সঙ্গে বাস্তবের অনেক ফারাক… আর পাঁচটা অসুখের মতোই মানসিক অসুখের চিকিৎসা হয়, চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক মানুষের জীবন ছন্দে ফেরে… আমাদের শুধু চিকিৎসা করাতে যেতে হবে, আমাদের শুধু প্রিয়জনের মনের অসুখের গুরুত্ব বুঝতে হবে, তার চিকিৎসা করাতে হবে… কোনো লজ্জা নয়, কোনো সংকোচ নয়, তাহলেই হয়তো আমরা অনেকগুলো জীবন বাঁচাতে পারবো।
#breakthestigma #mentalhealthday
DEAR DIDI / Dr Arunima mam – I AM LUCKY TO BE A FOLLOWER 👣 OF YOUR ✍️ WRITING & CONCEPTS & KNOWLEDGE – FROM ur follower DR.samsur rahaman – এইভাবে আমাদের জ্ঞ্যান প্রদান করুন . Thank you