মাতৃভাষা শুধু একটু ভালোবাসা চায় । আমরা যারা ডাক্তারির সঙ্গে একটু আধটু বাংলায় লেখালেখি করি, কেউ বাংলা গান, কেউ বাংলা নাটক, কেউ সম্পাদনা —-একুশে ফেব্রুয়ারী এলাম কলকাতায় সুবর্ণ বণিক সমাজ হলে। “ডক্টরস ডায়ালগ”-এর ডাকে। ডাক্তার ও রোগীর মাঝখানের ব্যবধান কমানোর উদ্দেশ্যে নানারকম লেখা নিয়ে ডক্টরস ডায়ালগ ওয়েব ম্যাগ ২০২০ সালের পয়লা জানুয়ারী প্রথম পাতা খুলেছিল, এখন পাঠক সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিনলাখ!
অনেক কাছের বন্ধু, ভাই, বোন, প্রিয় কবি, লেখক, গাইয়ে — উত্তরবঙ্গ দক্ষিণবঙ্গ –পুরো পশ্চিমবঙ্গের এক পেশা এক নেশার সবার সঙ্গে একসঙ্গে দেখা হলে যা হয়–তুমুল একটা ব্যাপার!
একদিন কিছু হাসিমুখ ছবি কিছু হুল্লোড় ঠিকই–বহুবছর ধরে কিন্তু বছরে প্রায় তিনশো দিন, আমাদের এই জটলা পেশার পরে রাত জেগে লিখে চলেছি বাংলায় ডাক্তারি পরিভাষা, বাংলায় রোগ, স্বাস্থ্য, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস, স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে –অসুখবিসুখ, স্বাস্থ্যের বৃত্তে পত্রিকায়, ইদানীং ডক্টরস ডায়ালগে।
মুহূর্তের মধ্যে সমকালীন সমস্যা নিয়ে আশ্চর্য কবিতা লেখে ডাঃ তীর্থঙ্কর ভাই (আর্যতীর্থ) –ওকে মুগ্ধতা জানাই। বহুবছর ধরে মনছোঁয়া কবিতা লিখে চলেছেন অরুণাচলদা –প্রণাম দাদা প্রণাম। আদরের বোন দোলনচাঁপার বইপ্রকাশ — তা তা থৈ থৈ কি আনন্দ। কলেজের ছোট্ট ভাইটি দীপঙ্কর এখন লেখক, গায়ক, বুড়ো সেজে থাকে–কতবছর পর দেখা।
ভয়ানক কঠিন আর রাগী প্রবন্ধ লেখে বিষাণ বসু –যে লেখা আমাদের চিন্তার মোড় একশো আশি ডিগ্রি ঘুরিয়ে দেয় –সে আবার আজকের সমকালীন স্বাস্থ্যনীতি সম্পর্কে আলোচনার মডারেটর। বকুনি খাবার ভয়ে ছিলাম –আদতে আমাদের প্রিয় ভাই বিষাণ বড্ড ভালো।
গায়ক ভাই ডাঃ অনির্বাণ দত্ত বহরমপুর মেডিকেল কলেজে ছাত্র পড়ায় কিন্তু আসলে তিনি শিল্পী, খাঁটি গায়ক। তাঁর হাতে গীটার উঠলেই কি ম্যাজিক তৈরি হয় যাঁরা শোনেননি এখনো ইউটিউবে শুনে নেবেন।
আমাদের সেলেব ভাই ডাঃ কৌশিক লাহিড়ী — বিশ্বজোড়া খ্যাতি, পোলার বিয়ার ও পেঙ্গুইন একসঙ্গে যাঁর অটোগ্রাফ চায় –তিনি বই উদ্বোধন করলেন, সুন্দর বক্তব্য রাখলেন। আরো কতজনের সঙ্গে দেখা, আড্ডা, চা সিঙাড়া।
আমরা তো অতিথ হয়ে গিয়ে শুধু আনন্দটুকু চেটেপুটে নিলাম, আমাদের পুণ্যদা –ডাঃ পুণ্যব্রত গুণ আর বন্ধু ডাঃ জয়ন্ত দাস খেটেখুটে পুরো অনুষ্ঠানটা দাঁড় করালেন।
ডাঃ ঐন্দ্রিল ভৌমিক আর শ্রদ্ধার মানুষ পুণ্যদার সম্পাদনায় ৫১ জনের লেখা নিয়ে ভাষা দিবসে প্রকাশিত হল “ডক্টরস ডায়েরী”। প্রণতি প্রকাশনা। আমারও একটা লেখা আছে। যারা লিখেছি সবাই কলমের একটা সোনার নিব পেলাম —
তোমার চরণে প্রণতি জানাই বাংলাভাষা।