চিকিৎসাতে গাফিলতি নিয়ে সারাদিন হাজারটা লেখা পড়তে পাবেন। ভেন্টিলেটরের খারাপ গুণ নিয়ে হাজারটা বাজে কথা দেখতে পাবেন। চিকিৎসা কি শুধু চিকিৎসকের করে দেওয়া একটা প্রেসক্রিপশনের ওপর নির্ভরশীল? নাকি সেই উপদেশ মেনে চলাটাও একটা বড় ভূমিকা পালন করে।
ধরা যাক একটা রুগীর হাই প্রেশার আছে। ডাক্তার বাবুকে দেখানোর পর সে ওষুধ কিনে বাড়ি গেলো। কিছুদিন ওষুধ খেয়ে দেখলো প্রেশার কেমন আছে। পাড়ার চায়ের দোকানের বন্ধু পরামর্শ দিল ওষুধ বন্ধ করে দাও। এসব খেলে সারাজীবন খেয়ে যেতে হবে। রুগীর ধারণা হলো না কাকে বলে essential hypertension। সেও করলো কি দুম করে ওষুধ বন্ধ করে দিলো। এরপর দু মাস দিব্যি গেলো। এরপর রোগী ফিরে এলো মাথায় ব্যাথা করছে মাথা ঘুরছে। ইতিমধ্যে সে গ্যাস ভেবে ওষুধ খেয়েছে। এবার দেখা গেলো তার প্রেশার অনেক টাই বেশী। ডাক্তার এবারেও ওষুধ দিলেন। জানতে চাইলেন আগের ব্লাড রিপোর্ট কোথায়। রুগী বলল আসলে ওষুধ খেয়ে কেমন থাকি দেখছিলাম। অবশেষে তার ছয় মাস পর হঠাৎ মাথার মধ্যে রক্ত ক্ষরণ। রোগীর রাগ গিয়ে পড়লো ডাক্তারের ওপর। গাফিলতি কার?
আপনি ধরে নিলেন পেটের উপরে, বুকের কাছে ভারী লাগছে। ডাক্তার বলল এখুনি ই সি জি করান। আপনি ভাবলেন টাকা খাওয়ার ধান্দা। আপনি ঘুমোতে গেলেন। মাঝরাতে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলে গাফিলতি কার?
ডাক্তার অবসাদ হয়েছে বুঝে আপনার আত্মীয়কে অবসাদ কাটানোর ওষুধ দিলেন। আপনি কিছুদিন পর গিয়ে বললেন এসব নেশার জিনিস। খেলে নেশা হবে। সে অবসাদ ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিল। পরে তার সাথে একটা কোনো খারাপ ঘটনা ঘটলে গাফিলতি কার?
বৃদ্ধ বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন মাঝরাতে। মাঝের দুটো ডায়ালিসিস করাননি কারণ দীপাবলীর সেলিব্রেশন করার মাঝে আবার ডায়ালিসিস করতে না নিয়ে গিয়ে কদিন পর নিয়ে গেলে কোনো অসুবিধে হবে না আপনি এমন ধরে নিয়েছিলেন। রুগী হসপিটালে ভর্তি হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মারা গেলেন। দোষটা কার?
সম্প্রতি একটু হাসপাতালে রুগীকে কুলারের হাওয়া খাওয়াবে বলে বাড়ির লোক ভেন্টিলেটরের প্লাগ খুলে কুলারের প্লাগ লাগিয়ে দিলে রুগী মারা যায়। উল্টে বাড়ীর লোক ঝামেলা করে। বলুন তো দোষটা কার?
নিয়মিত ওষুধ না খাওয়া, সময়ে চেক আপে না যাওয়া, সময় মতো পরীক্ষা না করানো এবং এগুলোর কোনোটাই অর্থের অভাবে না, শুধু মাত্র স্বভাব দোষে করাটা আপনার বিপদ ডেকে আনে। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে না চলা ডাক্তারী গাফিলতির মতই একটি অপরাধ।
কিন্তু যাই হোক না কেন অভিযোগের তীর সবসময় থাকবে ডাক্তারের দিকেই ।
Satti katha
Satti katha