কলকাতা বা শহরতলীর বাসিন্দা হলে দিন ও রাতের যে কোনও একটা সময়, অবশ্যই, অতি অবশ্যই, দশ মিনিটের জন্য হলেও, স্বাস্থ্যভবনের সামনে থেকে ঘুরে আসুন। বাড়ি যদি দূরে হয়, তা-ও, কষ্ট করে হলেও, একটা আস্ত দিন বরাদ্দ করতে হলেও, একবার এসে ঘুরে যান। গেলেই বুঝবেন কেন যেতে বলছি – আর ওখানে গিয়ে খানিকক্ষণ দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতাটা এমনই, যে, যিনি যাননি, আমার কলমের সাধ্য নেই তাঁকে লিখে বোঝানোর – অতএব সে নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি না।
তবে এবারে কিঞ্চিৎ অপ্রাসঙ্গিক একটি কথা। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সঙ্গে বা পাশে থাকা সিনিয়র ডাক্তারদের তরফে সিনিয়র ডাক্তারদের প্রসঙ্গে একটা কথা। অপ্রাসঙ্গিক, কেননা আন্দোলনটা জুনিয়র ডাক্তারদের, আর কথাটা আমাদের মতো সিনিয়রদের নিয়ে।
তো আন্দোলনের সবই ভালো, কিন্তু যে কথাটা না বললেই নয় – মানে যে কথাটা এতদিন বলব বলব করেও পলিটিকালি কারেক্ট থাকার দুর্দমনীয় তাড়নায় বলে উঠতে পারিনি – ইন ফ্যাক্ট, এখনও হয়ত বলাটা ঠিক নয়, কিন্তু, সত্যি বলতে কি, না বলে পারছি না… ধুত্তোর! ধানাইপানাই ছেড়ে কথাটা বলেই ফেলি!
ঘোড়াদের এই সম্মিলিত দৌড়ের সুযোগে যে কিছু নিখাদ খচ্চরও এই তালে ভিড়ে গা মিশিয়ে দিয়ে ঘোড়া সাজার চেষ্টা করে চলেছে, বলতে চাইছিলাম তাদের কথা।
এই ধান্দাবাজি নিয়ে হাল্কা বিরক্তি ছিলই – আস্তে আস্তে সেটা পরিণত হচ্ছিল গা রি রি করায় – তবে বৌদ্ধদর্শন পড়ে ক্রমশ নিজেকে দ্বেষমুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছি, তদুপরি উত্তরবঙ্গ লবির শাসনকালে সরকারি চাকরি করে চলেছি, সুতরাং আমার মধ্যে ধৈর্যের কিঞ্চিৎ ঘাটতি আছে বলে যে জনশ্রুতি, তা নিছকই অপবাদ – কিন্তু শেষমেশ মনে হলো, আর কিছু না, নিছক জনকল্যাণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির স্বার্থেই এই বিষয়টা সবার দৃষ্টিগোচর করা জরুরি।
কেননা, এতদিন সরকারি দলের সমর্থক থাকার পর যাঁরা আস্তে আস্তে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করছেন – যাঁরা বিশ্বাস করছেন, যে, এই ঘটনার পর, এবং এই ঘটনার পর সরকারের আচরণ দেখার পরও সরকারি দলের পক্ষে থাকাটা মনুষ্যজনোচিত নয় – তাঁরা অবশ্যই স্বাগত।
কিন্তু বিশেষ এক প্রজাতিকে দেখছি, যাঁরা এতদিন উত্তরবঙ্গ লবির হয়ে খেলছিলেন – অন্তত গা-ঘষাঘষি করে আখের গোছাচ্ছিলেন তো বটেই – আজ আচমকা বলতে শুরু করেছেন, যে, এতদিন তাঁরাও ছিলেন নির্যাতিত শোষিত-বঞ্চিত নিপীড়িত – আমার কথাটা মূলত তাঁদের নিয়েই।
এঁদের মধ্যেও দুটো শ্রেণী আছে। একটি শ্রেণীতে পড়বেন রামপুরহাট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষা করবী বড়াল-এর মতো লোকজন। যিনি কিনা গতবছরই জানিয়েছিলেন, যে, অভীক দে বিরূপাক্ষ বিশ্বাস প্রমুখ তাঁর শিক্ষকস্বরূপ – এঁদের কাছ থেকে তিনি ‘লিডারশিপ কোয়ালিটি’ ইত্যাদির শিক্ষা নিয়ে থাকেন – এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বহু অনাচার তিনি নিজে করেছেন ও অবাধে ঘটতে দিয়েছেন – আর আজ তিনিই বলছেন, যে, প্রশাসন চালাতে গিয়ে তাঁকে মাঝেমধ্যে চাপের মুখে নতিস্বীকার করতে হয়েছে। করবীদেবীর নাম করে নিন্দে করলাম বটে, কিন্তু বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের প্রশাসকদের একটা বড় অংশই এই গোত্রের।
আর দ্বিতীয় শ্রেণীটি, অন্তত আমার চোখে, প্রথম শ্রেণীভুক্তদের তুলনায় হয়ত কম বিপজ্জনক, কিন্তু ঢের বেশি গা-ঘিনঘিনে। ইন ফ্যাক্ট, গতকাল টিভি-তে এই শ্রেণীভুক্ত একজনকে দেখেই – স্রেফ বিরক্তি আর ঘেন্নায় – এত কথা লিখে ফেললাম। মাফ করবেন, এখানে আর ভদ্রলোকের নাম করছি না। তিনি উত্তরবঙ্গের একটি মেডিকেল কলেজে শিক্ষকতা করতেন। প্রাতঃস্মরণীয় শ্রী সুশান্ত রায় মহাশয়ের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে বিস্তর তৈলমর্দন করার সুবাদে তিনি স্বাস্থ্যভবনে প্রশাসক হিসেবে বদলি হয়ে আসেন। সেখানে তিনি চুরি-চিটিংবাজি-দুর্নীতি করেছিলেন বলে শুনিনি (বললামই তো, এঁরা কম বিপজ্জনক), কিন্তু দুর্নীতিবাজদের তেল মেরে ক্ষমতার ওম পোয়াতেন ভরপুর (এ-ও বলেছি, এঁদের দেখলে সত্যিই গা-ঘিনঘিন করে)…
তো গতকাল টিভি-তে দেখলাম, ইনি বীরদর্পে বলছেন, উত্তরবঙ্গ লবি-র অনাচারের প্রতিবাদ করেছিলেন বলেই তাঁকে অন্যায়ভাবে বদলি করে দেওয়া হয়েছিল, কতশত অবিচারের শিকার হতে হয়েছিল…
তো সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের একটি গল্পের সংলাপ অনুসরণ করে বলা যায় : ওফ্, কী বলল! চোখে xx জল এসে যায়!!
যাক গে! আঁধার রাতে বন্ধুর পথ ধরে আলোর সন্ধান – যাত্রা তো সহজ নয়। রাস্তায় কলার খোসা কাঁটা পাঁক মলমূত্র সবই থাকবে। একটু দেখেশুনে পা না ফেললেই নয়!
CBI should arrest immediately Binit Goyel and Mamata Banerjee in connection with tampering of evidence and HENIOUS RAPE and MURDER of our SISTER AVHAYA at R.G.Kar Hospital on August 9th. 2024 .