গতকাল থেকে ভারতে শুরু হয়েছে কোভিড এর টীকাকরণ। স্পষ্টতোই এই নিয়ে নানা confusion তৈরি হয়েছে, এবং এটা সঠিক যে তার কিছু সঙ্গত কারণও আছে।
সাধারণ মানুষের মনে যে মূল চিন্তাগুলি আছে, তা মোটামুটি এইরকম।
১) খুব দ্রুত তৈরি হওয়া এই vaccine গুলো আদৌ কতটা কাজের?
২) ট্রায়াল কম হওয়ার ফলে এদের ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই থাকার সম্ভাবনা কতটা?
৩) সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কোভ্যাক্সিন এর ফেজ থ্রি ট্রায়াল ছাড়া পারমিট পেয়েছে, ফলে এই vaccine নেওয়া অনুচিত।
৪) Vaccine নিয়ে দেশে রাজনীতি করা হচ্ছে / vaccine একটি বহুজাতিক ব্যবসা, আসলে বর্তমান পরিস্থিতিতে vaccine এর কোন দরকার নেই।
৫) দেশের বেশিরভাগ মানুষ অজান্তেই করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, ফলে herd immunity তৈরি হয়ে গেছে, আর vaccine এর প্রয়োজন নেই।
পৃথিবীতে শেষ major pandemic হয়েছিল 1918 তে , spanish flu নামে পরিচিত মহামারীতে সারা পৃথিবীতে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। সেই সময়ে এই রোগের বিরুদ্ধে কোন কার্যকর ওষুধ বা vaccine বানানো সম্ভব হয় নি। সাধারণ মানুষের মধ্যে Herd immunity তৈরি হওয়ার মাধ্যমে এই মহামারী শেষ হয়।
ফলে খুব সহজেই বোঝা যায় যে এবারের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। নানা ধরনের ওষুধ, চিকিৎসা পরিকাঠামো ও জীবনদায়ী যন্ত্রপাতি (antiviral ও অন্যান্য medicine, ventilator, pulse oximeter, ICU) ব্যবহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে অতিদ্রুত বানানো হয়েছে vaccine, যা তৈরি করা হয়েছে মাত্র এক বছরের মধ্যে, যেখানে এর আগের রেকর্ড ছিল চার বছর।
দ্রুত কাজ করা মানেই হলো ট্রায়ালের কিছু পর্যায়ের সময়সীমা কমিয়ে আনা, ফলে টীকার নিরাপত্তা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই নানা প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু এটাও মনে রাখা প্রয়োজন যে আমরা এক্ষেত্রে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে চলেছি, মানুষের সভ্যতার ইতিহাসে এইভাবে pandemic এর মোকাবিলা করার কোন precedence নেই, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সমস্ত সিদ্ধান্ত নতুন, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ এই ক্ষেত্রে নেই।
কোভিড এর একটি বড় সমস্যা হলো যে রোগাক্রান্ত মানুষের শরীরে কয়েকমাস পরেই antibody আর পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও ভাইরাসের বিরুদ্ধে antibody ছাড়াও অন্য defense mechanism থাকে, (যেমন T cell mediated immunity), কিন্তু তা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর, তা আমাদের এখনও জানা নেই। বরং যেভাবে ইউরোপ ও আমেরিকায় সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ (second wave) আছড়ে পড়েছে, তাতে সন্দেহ হয় যে কয়েকমাস পরে হয়তো herd immunity এর লেভেল খানিকটা কমে এসেছিল।
এই অবস্থায় immunity তৈরির আর একটি উপায় হলো vaccination। এক্ষেত্রে সুবিধা হলো vaccine virus এর যেহেতু রোগ সংক্রমণ ক্ষমতা নেই, (live attenuated/ inactivated/ killed virus), তা একাধিকবার দেওয়া যায় ও শরীরে immunity boost করা সম্ভব।
পুরো দেশের দিক দিয়ে যদি ভাবি, তাহলে এই কাজটা করতে হবে আমাদের দেশে second wave আসার আগে, অর্থাৎ সামনের তিনচার মাসের মধ্যে, কারণ ঐ সময়কালের মধ্যে আমাদের herd immunity কমে আসবে।
এটা বুঝতে অসুবিধা হয় না যে ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে যদি একটা সময়সীমার মধ্যে vaccination করতে হয়, তাহলে vaccine trial দ্রুত সারা ছাড়া উপায় নেই। এর ফলে ঝুঁকি থেকে যায় অবশ্যই, কিন্তু সেই ঝুঁকি সারা দেশে দ্বিতীয় ঢেউয়ের ফলে যে সংক্রমণ ও মৃত্যু হতে পারে, তার থেকে অবশ্যই কম বলে আমাদের অনেকের মত।
এখানে আমি কখনোই বলবো না যে এই পদ্ধতি নিশ্চিতভাবে সঠিক পদ্ধতি। vaccination এর ফলে যে কারো কোন সমস্যা হবে না, এটা কোন মানুষের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু risk vs benefit বিশ্লেষণ করে আমাদের মনে হচ্ছে যে এই মুহূর্তে আর কোন উপায় অবশিষ্ট নেই। এই সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা, তা বলবে ভবিষ্যত। যদি ভারতকে ইউরোপ ও আমেরিকার মতো কোভিডের second wave এর তীব্র সংক্রমণ, মৃত্যু ও অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়তে না হয়, তবেই বলবো টীকাকরণ সফল হয়েছে।
ছোট্ট এলি যখন বড়ো হবে, তখন……..
ছোট্ট “এলি” এক প্রতিবাদী চরিত্র। এখন সে তাঁর মিষ্টি টিন এজের পরিসরে। আরও যখন ছোট ছিল ,তখন থেকেই সে পৃথিবীর পরিবেশ নিয়ে ভাবছে। শুধু ভাবছে