আমাদের মতো অভাগা দেশে অপুষ্টিজনিত রোগলক্ষণ বিস্তর চোখে পড়ে। মুখে ঘা কোনো একটি বিশেষ রোগ নয়, এটি একটি রোগলক্ষণ।
• নানা কারণে মুখে ঘা হতে পারে। এদের মধ্যে অপুষ্টি (malnutrition), রক্তাল্পতা (anaemia), এইডস্ (HIV), ভাইরাল ইনফেকশন, মধুমেহ বা ডায়াবেটিস (Diabetes), মুখের ক্যান্সার (oral cancer) অন্যতম। এছাড়া গরম খাবারে পুড়ে গেলে বা ধারালো দাঁত দিয়ে হঠাৎ জিভ/গাল কেটে গেলে বা শক্ত টুথব্রাশ দিয়ে খুঁচানো গেলে মুখে ঘা হতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা:
রক্তের সুগার (blood sugar), হিমোগ্লোবিন (haemoglobin), HIV পরীক্ষা করিয়ে নিন। একটা ইসিজি করে নিলে ভালো।
করণীয়:
১. খুব গরম খাবার খাবেন না।
২. ঝালমশলা, টক জাতীয় খাবার খাবেন না।
৩. ঠান্ডা, মিষ্টি জাতীয় খাবার খান।
৪. বিড়ি, সিগারেট বা তামাকদ্রব্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
৫. চকোলেট বা কোল্ড ড্রিংকস খাবেন না।
৬. গরম জলে নুন মিশিয়ে দিনে তিনবার করে কুলকুচি (gargle) করুন।
৭. খাবার খাওয়ার পর প্রত্যেকবার মুখ ও দাঁত ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
৮. দিনে দু’বার ব্রাশ করুন। শক্ত টুথব্রাশ মোটেই ব্যবহার করবেন না। নরম ব্রাশ দিয়ে খুব কম চাপ দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্রাশ করুন। অতিরিক্ত দাঁত মাজলে দাঁতের ক্ষয় হয়।
৯. ভালো টুথপেস্ট ব্যবহার করুন ( sodium Lauryl Sulphate থাকলে সেই টুথপেস্ট বর্জন করুন)।
১০. মধু ও হলুদ বাটা মিশিয়ে মুখে বা ঠোঁটের ঘা তে লাগিয়ে রাখতে পারেন। নারকেল তেল ও লাগানো যেতে পারে (তবে রক্ত বের হলে নয়)।
১১. জ্বালা-যন্ত্রনা বেশি থাকলে বরফ লাগাতে পারেন।
১২. যষ্টিমধু দু’কাপ জলে তিন ঘণ্টা ভিজিয়ে খান।
১৩. খিচুড়ি, ঠান্ডা দুধ, মিষ্টি ফল (যেমন: রাঙা আলু, বেদানা, আঙুর ইত্যাদি) খান।
১৪. ভালো না হলে ট্রাইঅ্যামসিনোলোন (0.1% triamcinolone) জাতীয় পেস্ট দিনে দু’-তিন বার করে লাগানো যেতে পারে।
১৫. দাঁত খুব ধারালো হয়ে থাকলে দাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
১৬. বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভিটামিন ওষুধ দরকার পড়ে না। প্রয়োজনমাফিক ডাক্তারের পরামর্শ মতো অ্যান্টিবায়োটিক বা ভিটামিন ওষুধ খান।