An Initiative of Swasthyer Britto society

  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close

প্যানডেমিক ডায়েরি ১৩ নাটক : ষষ্ঠী

IMG_20200601_214244
Dr. Dolonchampa Dasgupta

Dr. Dolonchampa Dasgupta

Chest Physician, Novelist
My Other Posts
  • June 2, 2020
  • 8:59 am
  • One Comment

চরিত্র: পাঁচটি।

দৃশ্য ১
======

শ্বশুর: ( গুন গুন করে রবীন্দ্রসংগীতের সুরে) এই করেছ ভালো করোনা হে, করোনা হে, এই করেছ ভালো। এমনিভাবে জামাই ষষ্ঠী প্রোগ্রামে জল ঢালো …

শাশুড়ি: কী বকবক করছ আপনমনে? কটা কাপ ধুতে দিলাম রান্নাঘরে গিয়ে আর বেরোতে চাইছ না। লক্ষ্মণ তো ভাল ঠেকছে না। ওগো শুনছো?

শ্বশুর: ( দৌড়ে এসে) কী হল? এমনভাবে চেঁচাচ্ছ যেন করোনা তোমার গলা টিপে ধরেছে।

শাশুড়ি: ( সন্দেহের চোখে) তুমি কী চাইছ বল তো? আমি জলদি জলদি ফুটে যাই?

শ্বশুর: দুত্তোর, বাজেকথা বলো কেন? আজ একদম ফুটলে চলবে না। ফুটবল দেখব রাতে। চা ফুটিয়ে রাখবে ফ্লাস্কে।

শাশুড়ি: ( কপালে ভুরু তুলে)  ফুটবল? কোন অলপ্পেয়ে এই লকডাউনে খেলাধুলো করছে? খালি আমাকে দিয়ে চাকরানি গিরির মতলব।

শ্বশুর: শুধু তো চা ই করে দিতে বলেছি। কাপ মাজলাম উইদাউট ব্রেকিং হ্যান্ডেল।

শাশুড়ি: তা জামাইষষ্ঠী হ্যান্ডেল করবে কীভাবে শুনি? খালি গুল মারা। বল খেলা হচ্ছে অমুক তমুক!

শ্বশুর: ঐ দ্যাখো, বিশ্বাস হচ্ছে না? তোমার সিরিয়ালের টাইমে নয় গো। রাত আটটায়। জার্মানির ফার্স্ট ডিভিশন ফুটবল প্রিমিয়ার লীগ বুন্দেসলিগা। আহা হা কী দারুণ দল। বায়ার্ন মিউনিখ বনাম ডোর্টমুন্ড।

শাশুড়ি: ( রান্নাঘর থেকে চেঁচিয়ে ) মাছের মুন্ডু খায়না সৌমিক।

শ্বশুর: কী সব প্লেয়ার। লেবানডোস্কি, মুলার, নয়ার, কুটিনহো।

শাশুড়ি: কুটিল? সে তো তুমি। প্রতিবার জামাইষষ্ঠীতে আমার বাবাকে দিয়ে ব্যাগ ব্যাগ বাজার করিয়ে মাকে দিয়ে রান্না করিয়ে গান্ডেপিন্ডে গিলেছ।

শ্বশুর: ( স্বগতোক্তি) কানটা গেছে। একদিক দিয়ে ভালোই। হে হে।

শাশুড়ি: ( কাছে এসে ) বলি জামাইষষ্ঠীর বাজার করবে কি করবে না ?

শ্বশুর: আরে ভাল মাল পাচ্ছি কোথায়। লকডাউনে কচি পাঁঠা নেই, টাটকা ভেটকি নেই। আম, লিচু কিচ্ছু ভালো মিলছে না। মলের মাল সব বাসি।

শাশুড়ি: ( চোখ পাকিয়ে) ডাবল মাস্ক আর সানগ্লাস পরে বাজারে যাও। তালপাতার পাখায় বটপাতা, অশথপাতা, খেজুর, করমচা আর একটা গোটা ফল, ধরো আম একটা, চাইই চাই।

শ্বশুর: ( স্বগতোক্তি) হুঃ এমনভাবে বলছে যেন মার্কেটে ল্যান্ড করলেই কেউ সাজিয়ে আমার হাতে বরণডালা ধরিয়ে দেবে।
( জোরে চেঁচিয়ে ) বলছি কীভাবে আসবে ওরা সেটা ভেবেছ?

শাশুড়ি: কেন , আজ তো সব একটু আলগা। রাস্তায় গাড়ি চলছে। মিষ্টির দোকান খোলা না ?

শ্বশুর: আমার পকেটও আলগা। সব উড়ে গেছে এই ক’দিনে। সামনের মাস থেকে মাইনে কাটবে তা জানো? কর্পোরেট সেক্টরের লোকেদের ফুল থেকে হাফ প্যান্টালুন!

শাশুড়ি: এই শোনো, তুমি কী চাও বলো তো? বছরে একটা করে ষষ্ঠী।

শ্বশুর: অনলাইনে ষষ্ঠী করে ফেলো গিন্নি। মোবাইলে অর্ডার দিয়ে দাও, ওরা ঘরে বসে ডেলিভারি পেয়ে যাবে। সৌমিক কী ভাল খায় তা তো জানোই। বিরিয়ানি, মাটন কষা এভরিথিং পাবে।

শাশুড়ি: তুমি কি পাগল? জানো দিল্লিতে একটা ডেলিভারি বয়ের পজিটিভ বেরিয়েছিল। তারপর যাদের খাবার দেওয়া হয়েছিল সব কটাকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছে।

শ্বশুর: ( স্বগতোক্তি) এই প্ল্যানটাও ভেস্তে গেল। ( চেঁচিয়ে) তাহলে তুমি কী চাও আমি গিয়ে নিয়ে আসি ওদের বহরমপুর থেকে ?

শাশুড়ি: ( সুর নরম করে) আহা, তাই বলেছি নাকি। এই খারাপ টাইমে আমি তোমাকে অদ্দূর যেতেই দেব না। ষষ্ঠীর কৃপা একটা বড় ব্যাপার বোঝো না? জন্মের ছ’দিনের মাথায় আঁতুড়ঘরেই নবজাতকের কল্যাণে ষষ্ঠীপুজোর চল আছে জানো তো?

শ্বশুর: আরে, সেসব তো ছিল কারণ টিটেনাস, পোলিও, ডিপথেরিয়ার ওষুধ ছিলনা তাই। এখন তো ভ্যাকসিন এসেছে। শিশুমৃত্যুর হার অনেক কম। কেন, দীপা কি আবার ক্যারি করছে?

শাশুড়ি: বালাই ষাট, শিশুমৃত্যু এসব অলক্ষুনে কথা বলবে না তো। তুমিও বাইরে বেরোবে না।

শ্বশুর: (স্বগতোক্তি) মাছের মাথার বদলে আমার মাথাটাই চিবাও তাহলে।

শাশুড়ি: দাঁড়াও, সৌমিককে ফোন করি।

জামাই: হ্যালো, মাম্মি? বলুন

শাশুড়ি: তোমরা ভাল আছ তো বাবা? শোনো ষষ্ঠীর দিন কিন্তু আসা চাইই চাই। দীপাণ্বিতা আর দুষ্টু মিষ্টু সব্বাইকে নিয়ে।

জামাই: মাম্মি, আমার তো কোনও প্রবলেম নেই। (গলা নামিয়ে) তবে আপনার মেয়েকে বলবেন না, এখানে অনেক পজিটিভ বেরিয়েছে। জানলে আমাকে বেরোতেই দেবে না।

শাশুড়ি: ওমা! সে কী? আমরা তো তোমাদের মতো বাঙাল নই। ঘটি। আমাদের মধ্যে চন্দনষষ্ঠী, অরণ্যষষ্ঠী, দুর্গাষষ্ঠী, স্কন্দষ্ষঠী, শীতলষষ্ঠী আর অক্ষয়ষষ্ঠী হয়।

জামাই: ( স্বগতোক্তি) অক্ষয়কুমার আবার কোত্থেকে এল? প্রধানমন্ত্রীর নতুন ষষ্ঠীরপ্ল্যান নাকি? মিত্রোঁ …

শাশুড়ি: দীপাকে বরং ফোনটা দাও। আমি তোমার মাথায় পাখার গঙ্গাজল না দেওয়া অবধি শান্তি পাবনা।

জামাই: ( চেঁচানোর ভঙ্গিতে মৃদু স্বরে) দীপা, এই দীপা!
(গলা খাদে নামিয়ে) মা ও তো শাওয়ার খুলে চান করছে। শুনতে পাবে না। আমি বলি কী আপনি বরং আমার একটা ফটোতে গঙ্গাজল ছিটিয়ে ইয়ে করে দিন।

শাশুড়ি: ছি ছি বাবা, এসব বলতে নেই। ফটোতে কেন, আমি নাহয় গঙ্গা জলের বদলে তোমাকে স্যানিটাইজার ছিটিয়ে দেব।

জামাই: গঙ্গাজল এখন খুব পরিষ্কার মা। দূষণ একদম নেই। সব কলকারখানা বন্ধ।
(স্বগতোক্তি) আমারও এক্সপেনডিচার বন্ধ।

মেয়ে:   ( দূর থেকে) হানি, মায়ের জন্য ঢাকাই জামদানি কিনব কিন্তু এবার।

জামাই: মাম্মি, আমার ইনকামিং শেষ।

শাশুড়ি: অ্যাঁ?

জামাই: মানে ফোনের। ঘাবড়াবেন না, দীপা বাথরুম থেকে বেরোলেই ওকে বলব।

মেয়ে:  (কাছে এসে) কে গো?

জামাই: কোভিড।

মেয়ে:  (আঁতকে উঠে) কী বললে?

জামাই:  (স্বগতোক্তি) যাতায়াত নিয়ে গাড়ির পেট্রল দু হাজার, শাড়ি পাঁচ হাজার, মিষ্টি পাঁচশো, তারপর আবার শ্বশুরের জন্য কিছু তো খসবেই। আদরের মেয়ে কী আবদার করেন বাবার জন্য!

মেয়ে: ডিয়ার হোয়াই আর ইউ সাইলেন্ট? আমি দেখেছি যখনই তুমি চুপ তখনই যত বাজে ফন্দি। মাকে একটা কল করব, দাঁড়াও। জামাইষষ্ঠীর পাখার হাওয়ায় সব উড়ে যাবে আমফানের মতো।

জামাই: তোমার ফোনে ইনকামিং শেষ।

মেয়ে: ভরোনি?

জামাই: তোমার বাবাকে বলো না ভরে দিতে।

মেয়ে: তুমি না একদম একটা একটা …

জামাই: ইডিয়ট ।

মেয়ে: আমি কিন্তু যাবই। বাপিকে এখনই ফোন করছি তোমার ফোন থেকে।

জামাই:  ( দৌড়ে গিয়ে ফোনটা একহাতে তুলে) একদম না। যদি তুমি ফোন করো তাহলে, তাহলে

মেয়ে: (খপ করে ফোনটা কেড়ে নিয়ে) কী তাহলে শুনি?

জামাই: মাই প্ল্যান ইজ, ইফ আই হ্যাভ টু অ্যাটেন্ড দিজ টাইম, আই উইল বি আ …

মেয়ে: থামলে কেন বলো?

জামাই: একদম পার্মানেন্ট সেটলমেন্ট লাইক লর্ড ডালহৌসি।

মেয়ে:  ( বড় বড় চোখ করে) মানে?

জামাই: ঘরজামাই হয়ে যাব।

মেয়ে: (কান্নার সুরে) ও মা এ কার হাতে দিলে গো, কী লজ্জা ছি ছি! বাবার বাড়িতে ঘরজামাই থাকবে লজ্জা করে না?

জামাই: (ভাবলেশহীন মুখে) নেভার। এভরিথিং ইজ ফেয়ার ইন লাভ অ্যান্ড ওয়ার।

মেয়ে: লাভ? এই তোমার ভালবাসা? এই ক্রাইসিসের মার্কেটে আমার মাম্মি, পাপার উপর একদম টর্চার কোরোনা।

জামাই: এটাই তো সুযোগ। পায়ের উপর পা দিয়ে বসে খাব আর মার্কেজের মতো একটা উপন্যাস লিখব। ‘ লাভ ইন দ্য টাইম অফ করোনা’।

দৃশ্য ২
=======

শাশুড়ি: কী বিচ্ছিরি কান্ড বলতো, এসিটা গড়বড় করছে। এদিকে ওরা আসবে।

শ্বশুর: কোন ঘরের এসি?।

শাশুড়ি: ( চোখ কটমট করে) কোন ঘর আবার? ডাইনিং রুম। খাওয়া দাওয়া তো ওখানেই হবে।

শ্বশুর: ( স্বগতোক্তি) এসিহীন মেনু – আমডাল, উচ্ছেভাজা, এঁচড়, রুইমাছের ঝোল, চাটনি, দই, রসগোল্লা, হিমসাগর আম। বড়জোর প্যান ফর্টি আর জেলুসিল।

শাশুড়ি: মেকানিকের ফোন নম্বরটা দাও তো। তুমি যা ল্যাদসকান্তি। চুপ মেরে কী মতলব ভাঁজছ কে জানে!

শ্বশুর: (স্বগতোক্তি) এসি ওয়ালা মেনু – লুচি, ছোলার ডাল, বেগুণভাজা, দেরাদুন রাইস, সর্ষে ইলিশ, ভেটকি পাতুরি, কাতলার কালিয়া, মাটন কষা, আমপান্না, রসমালাই, তালশাঁস সন্দেশ। সন্ধ্যায় স্কচ উইথ রোস্টেড কাজু।

শাশুড়ি: জানো আজ আমারও মা বাবার জন্য খুব মন কেমন করছে।

শ্বশুর: শোনো, এসি মেকানিককে এখন ডেকোনা। কে জানে বাইরের লোক কার কী রোগ আছে !

শাশুড়ি: সৌমিক বলল, ওদের পাড়ায় নাকি অনেক পজিটিভ।

শ্বশুর: সে কী? তাহলে তো ওদের এখন না বেরনোই ভাল।

শাশুড়ি: যেই বললাম, অমনি রাজি হয়ে গেলে অ্যাঁ? কঞ্জুস একটা। হাড়কিপটে।

শ্বশুর: মোটেই না। তুমিই তো বললে, বাবা মায়ের জন্য ডিপ্রেসড। যাবে নাকি নবদ্বীপ?

শাশুড়ি: নবদ্বীপের জামাইষষ্ঠী মানে মা তো জামাই বরণ করবেই মহাপ্রভু চৈতন্যকে। বছরের অন্য দিনে তিনি ধামের প্রভু শুধু জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীতে তিনি জামাই। ঘরের মেয়ে বিষ্ণুপ্রিয়ার স্বামী।

শ্বশুর: আচ্ছা, তোমাদের এই রীতি কদ্দিন ধরে চলছে?

শাশুড়ি: প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে শুরু। বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর ভাই মাধবাচার্যের অধস্তন তৃতীয় পুরুষ থেকে।

শ্বশুর: তোমার মা কি মন্দিরে থাকবেন?

শাশুড়ি: অবশ্যই । মহাপ্রভুর জামাইষষ্ঠী বলে কথা। মেনুতে কী থাকে জানো, কচুশাক, মোচা, শুক্তো। তাছাড়া বিভিন্ন তরকারি, ধোঁকার ডালনা, লাউ , চালকুমড়ো। আসলে মহাপ্রভু তো মাটির দেবতা ছিলেন না। মানুষের নায়ক। ওঁকে সন্তান মনে করে অনেকেই ‘ষাটের বাতাসা’ দেন। দাঁড়াও মাকে একটা ফোন করি।

শ্বশুর: হ্যাঁ, আগে দেখে নাও ওঁরা ঠিক আছেন কিনা। আমি গেলে কিন্তু শুধু উইকেন্ড নয়, পুরো সপ্তাহ কাটাব। তোমাদের আমবাগানের আম পাড়িয়েছে শালাবাবু? জিজ্ঞাসা করো তো।

শাশুড়ি: (জ্বলন্ত দৃষ্টিতে) নোলা সকসক করছে। বুড়ো হয়েও লোভ গেলনা। কত বছর হল সে খেয়াল আছে?

শ্বশুর: (নিরাসক্ত দৃষ্টিতে) ওল্ড ইজ গোল্ড। আমার কথা নয়। আপ্তবাক্য। তুমি ফোন করবে?

শাশুড়ি: (স্বগতোক্তি) হাভাতেপানার শেষ নেই।

শ্বশুর: (ফোনে চেঁচিয়ে)  মা, কেমন আছেন?

শ্বশুরের শাশুড়ি: বাবাজীবন তুমি? বাহ বাহ। এইমাত্র তোমাদের কথা ভাবছিলাম। আমার নাতজামাই, নাতনি সব ভাল আছে তো?

শ্বশুর: সবাই ভাল আছে। আপনার মেয়ে, নাতনি, নাতজামাই, পুতিরা। ভাল কথা, বাবামশায় কেমন আছেন?

শ্বশুরের শাশুড়ি: আমরা সবাই ভাল আছি বাবা। শুধু এক হপ্তা বিদ্যুত ছিল না।

শ্বশুর: সে কী ?

শ্বশুরের শাশুড়ি: ও আমাদের অভ্যেস আছে। কারেন্টের ব্যাপার তো হালে এসেছে। আমাদের তো ছোট থেকেই লোডশেডিং, অন্ধকার। কারেন্ট না থাকলেও খুব একটা অসুবিধে হয়না। হারিকেন জ্বেলে কাজ করি।

শ্বশুর: তা ইয়ে আপনার মেয়ে বলছিল, যাবে মানে কারেন্ট যখন এসেছে। আর আপনি তো আমক্ষীর দারুন বানান। এখনও আপনার কতো এনার্জি, পঁচাত্তর বছর হল।

শ্বশুরের শাশুড়ি: হ্যাঁ গো বাবাজীবন, ধামেশ্বর মহাপ্রভুকে ঐ আমক্ষীর দিয়ে ভোগ দিতাম কিনা। বাংলা ছাড়া কোথাও এমন পাবেনা। দেবতাকে জামাইবরণ। তোমাকেও সেটাই প্রসাদ দিয়ে এসেছি এদ্দিন।

শ্বশুর: (মাথা চুলকিয়ে) তা এবছর করছেন নাকি ?

শ্বশুরের শাশুড়ি: না বাবা, এবছর তোমার শ্বশুর বলল পাঁচ ঘর লোক মোট কুড়ি জনকে খাওয়াতে। আমিও তাই আর ষষ্ঠীপুজোর হাঙ্গামাতে যাচ্ছি না। মানুষই তো সব বলো। চৈতন্য মহাপ্রভুও তাই বলেছিলেন।

শ্বশুর:  ( হতভম্ব) ওহ আচ্ছা ।

শ্বশুরের শাশুড়ি: তাছাড়া তোমরাও এখন বেরিওনা খুব দরকার ছাড়া।

শ্বশুর: (বিপ বিপ আওয়াজ মোবাইলে) এখন ছাড়লাম মা। মনে হয় আমার জামাই বাবাজী ফোন করছে।
(স্বগতোক্তি) ঠিক ধরেছি। নিশ্চয়ই আসবে সে ব্যাটাচ্ছেলে।

জামাই: বাবা , আমরা আর এবছর যাচ্ছি না। আপনার জন্য একটা টিউবর্গ স্ট্রং, সিঙ্গল মল্ট নেবো ভেবেছিলাম কিন্তু…

শ্বশুর: (চকচকে চোখে) কিনে ফেললে? এহে কতো খরচ। এমনিই মন্দা চলছে এখন এসব কেনার কী দরকার? (স্বগতোক্তি) হুঃ খালি শ্বশুরের কামাই খাবে জামাই!

জামাই: (গলা ঝেড়ে) নাহ্ বাবা। সত্যিই এখানে কেউ কেউ করোনা পজিটিভ। দেখুন রোগ তো হতেই পারে। এটা তো কারোর দোষ নয়। আজ অন্যের হচ্ছে, কাল আমারও হতে পারে। আমি ভাবছি ত্রাণ টানে ক্যাশ টাকা না ঢেলে অ্যাটলিস্ট এদের একটা ফ্যামিলির লাঞ্চ, ডিনারের দায়িত্ব নিয়ে নি। অন্তত এক সপ্তাহ। কাজের কাজ হবে।

শ্বশুর: (উৎফুল্ল স্বরে) বাহ সৌমিক। আমি এদ্দিন জানতাম জন, জামাই, ভাগনা। কেউ নয়কো আপনা। এখন কিন্তু মনে হচ্ছে তোমার মতো বড়মনের মানুষ আমার সবথেকে আপন। তুমি তো শুধু জামাই নও , লাইক মাই সন।

জামাই: বাবা , মাকে বলবেন এবছর তো কিছু দেওয়া হলনা। আগামী বছর ডাবল গিফট দেব। আপনার মেয়ে গোঁসা করেছে, ঢাকাই জামদানি কিনিনি বলে ।

শ্বশুর: (নিচু স্বরে) বাদ দাও তো। তোমার শাশুড়ির ওয়ারড্রোব ভর্তি শাড়ি। তুমি আমার লিস্টটা বরং বাড়িও। ইয়ের। আর হ্যাঁ, মুখে মাস্ক বেঁধে রেখো।

জামাই: (নিচু স্বরে) সে আপনার মেয়েকে বিয়ে করার পর থেকেই বাঁধা আছে। এদ্দিন আপনারা দেখতে পেতেন না। এখন দেখতে পাচ্ছেন।

শ্বশুর: দুষ্টু ছেলে। ষষ্ঠীর কৃপা হোক।

জামাই: সুস্থ থাকুন আপনারা। (চেঁচিয়ে) আসছে বছর আবার হবে।

PrevPreviousকরোনা,সামাজিক ক্ষতির দায় কে মেটাবে!
Nextআমাদের কথাNext

One Response

  1. প্রদীপ কুমার দাশগুপ্ত says:
    June 4, 2020 at 10:56 am

    খুব সুন্দর লিখেছেন। একদম ঠিক সময়ের জন্য উপযুক্ত লেখা। এইরকম আরো কিছু লিখতে হবে। ধন্যবাদ।

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত পোস্ট

কোভিড টীকাকরণ নিয়ে উঠে আসা বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে

January 19, 2021 No Comments

গতকাল থেকে ভারতে শুরু হয়েছে কোভিড এর টীকাকরণ। স্পষ্টতোই এই নিয়ে নানা confusion তৈরি হয়েছে, এবং এটা সঠিক যে তার কিছু সঙ্গত কারণও আছে। সাধারণ

করোনা ক্লিনিকে ডা সায়ন্তন ব্যানার্জী ৩

January 19, 2021 No Comments

করোনা টীকা কখন নেওয়া যাবে না?

January 19, 2021 2 Comments

কোন কোন ক্ষেত্রে কোভিড ভ্যাক্সিন নেওয়া যাবে না অথবা নেওয়া উচিত নয় তার সাম্প্রতিকতম নির্দেশিকা এখানে আলোচনা করবো। এর আগের পোস্টে যেগুলো contraindication হিসাবে বলেছিলাম

মারীর দেশে আলো হোক ভালো হোক

January 18, 2021 No Comments

দিনমাহাত্ম্যে বিশ্বাস নেই। তবু আজকের দিনটা সবদিক থেকে উজ্জ্বল দিন। সকালের রাউন্ডের সময় কেন জানিনা মনে হ’ল চিৎকার চেঁচামেচি তুলনায় অনেক কম। বেশ একটা শান্ত

কোভিভ ভ্যাকসিন কিছু প্রশ্ন কিছু জবাব-

January 18, 2021 No Comments

ভারত একটা গণতান্ত্রিক দেশ। টিকা নেয়া না নেয়া নিজস্ব ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আমি স্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে নিজে নিয়েছি এবং অন্যদের নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি, গুজবে কান না

সাম্প্রতিক পোস্ট

কোভিড টীকাকরণ নিয়ে উঠে আসা বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে

Dr. Tathagata Ghosh January 19, 2021

করোনা ক্লিনিকে ডা সায়ন্তন ব্যানার্জী ৩

Dr. Sayantan Banerjee January 19, 2021

করোনা টীকা কখন নেওয়া যাবে না?

Dr. Kaushik Mandal January 19, 2021

মারীর দেশে আলো হোক ভালো হোক

Dr. Soumyakanti Panda January 18, 2021

কোভিভ ভ্যাকসিন কিছু প্রশ্ন কিছু জবাব-

Dr. Samudra Sengupta January 18, 2021

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

290794
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।