An Initiative of Swasthyer Britto society

  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close

ঝামেলি – ৫

IMG_20201118_193619
Smaran Mazumder

Smaran Mazumder

Radiologist, medical teacher
My Other Posts
  • November 24, 2020
  • 7:32 am
  • One Comment

আমার তরফে আবারো একটি স্বীকারোক্তি – মাত্র কয়েক বছর হলো ডাক্তারি করছি। অভিজ্ঞতা বলতে খুব বেশি নেই। এমনিতে খুব বেশি মিশুকে না হলেও, রোগীর সাথে বাংলা ইংরেজি হিন্দি মিলিয়ে বহুভাষী ডাক্তারি চটপটে স্মার্টনেস না দেখাতে পারলেও (আসলে সব ভাষা নিয়েই আমার বেশ ভালো রকম সমস্যা আছে। আর বৈদেশিক ভাষা হলে তো কথাই নেই!! বঙ্কিমচন্দ্রের সেই কথাটি মনে পড়ে – বাবু গল্পের। না, বৈদেশিক ভাষা শিখে দেশোদ্ধার আমার দ্বারা হবে না!!), কাউকে সম্বোধন করতে গিয়ে আপনি থেকে অজান্তেই তুমি-তে নেমে আসার সহজাত বাঙালিয়ানা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি কোনরকমে!

বহুবার ভেবে দেখেছি – আমার ব্যবহার কি আদৌ ডাক্তারসুলভ? না! আমি ঠিক বাবু গোছের ডাক্তার হতে পারলাম না!! এ আমারই দোষ। মানে কাউকে নাম ধরে ডাকা থেকে শুরু করে তুই, তুমি, আপনি, ইত্যাদি নানাবিধ মধুর সম্ভাষণ ডাক্তারি জীবনে শুনেছি। আর আমিও কিনা শেষে তুমি-তে আটকে গেলাম!!
আসলে ইংরেজিতে যত সহজে ইউ বলে ছাড় পাওয়া যায়, বাংলায় সেটা বললেই লোকজনের চোখ চিকচিক করে ওঠে – ‘এ নিশ্চিত অশিক্ষিত’!

এই ‘তুমি’ নিয়ে এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, বাইরে ও চেনা অচেনা মানুষকে হঠাৎ করে তুমি বলে ফেলি!!
বেশিরভাগ সময় খেয়াল হয় না। কিন্ত যখন খেয়াল হয়ও, ততক্ষণে তুমি বেরিয়ে যায়!!

কিন্ত অবাক ব্যাপার হলো- যে রোগীকে আমি হঠাৎ তুমি করে বলতে শুরু করেছি, সে যে বয়সেরই হোক, কখনো কেউ প্রতিবাদ অব্দি করেনি!!!

অথচ আমার মনে হয় – করা উচিত ছিল! অনেক রোগীরই বলা উচিত ছিল – ডাক্তার, ওটা তুমি নয়, আপনি হবে!!

এবার রোগীরা কেন ডাক্তারের মুখের উপর কিছু বলে না, তার নানা কারণ আছে। সে সবে ভালো মন্দ সব আছে। কারো কারো কি কানে লাগেনি কথাটা? লেগেছে!! আলবাৎ লেগেছে!!

কিন্ত সেই মানুষ গুলোও কি অবলীলায় আমার এরকম সম্বোধন ব্যবহারকে প্রশ্রয় দিয়ে চলে যান হাসিমুখে, ভাবলে অবাক না হয়ে পারি না।

ভেবে দেখেছি – এর একটা কারণ হয়তো আমার ‘তুমি’ বলার মধ্যে কোনরকম ভণিতা নেই! কাউকে হঠাৎ টোন কেটে বলার স্বর আমার কখনোই আসে না! এই সুযোগে আমি এই ‘তুমি’-কে প্রায় ইউনিভার্সাল সম্বোধন বানিয়ে ফেলেছি। নিতান্তই চেনা পরিচিত গুরুজন ছাড়া আপনি বলতে গেলেই জিভে আটকে যায়!

এমন হয়েছে যে, বয়স্ক কোন কোন রোগীও আমার এই ‘তুমি’-র চক্করে পড়ে, অনায়াসে প্রচলিত সম্বোধন ডাক্তারবাবু, আপনি ইত্যাদি ছেড়ে সোজা তুমি-তে নেমে এসেছেন!!! তারপর বাকি কথাবার্তাগুলো গাম্ভীর্যপূর্ণ কাঠখোট্টা ডাক্তারির বাইরে বেরিয়ে এসে হয়ে দাঁড়ায় ঘরোয়া আলাপ!! এমনও হয়েছে যে – কথায় কথায় চালকুমড়োর সঙ্গে ইলিশের ডিম আর আলু-পোস্তর সঙ্গে ছোট চিংড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতায় অব্দি নেমে গেছি!! হ্যাঁ রোগীর সাথেই!!

ডাক্তার হিসেবে জাতে উঠতে পারলাম না এই কারণেই বোধহয়!! অথচ বিশ্বাস করুন – মোটেই এতো কথা বলার মানুষ নই আমি।

এবার যে গপ্পো বলতে এই তুমির অবতারণা, সেখানে আসি। স্বীকারোক্তি হলো – আমি মাঝে মাঝেই রোগীদের বকে দিই!! ডাক্তার হয়ে রোগীকে বকে দেয়ার এই বদভ্যাস আমার কোত্থেকে যে এসেছে – নিজেই জানি না!
একটু বেচাল দেখলেই প্রথমে সোজা তুমিতে নেমে আসি। তারপর বকে দিই!! নিজের অজান্তেই!!

এরকমই একজনকে সেদিন হেব্বি বকেছি!! না বকে পারছিলাম না।

আমার কাজ হলো – ইউএসজি করা। বেশিরভাগ ই পেটের ইউএসজি। এবার এই বিষয়ে খানিক সাধারণ জ্ঞান শেয়ার করি – প্রথমতঃ এর জন্য পেট পরিষ্কার করতে হয়। দরকারে ওষুধ দিয়ে হলেও। কারণ, পেটে গ্যাস এবং বাকি বর্জ্য পদার্থ থাকলে, পরীক্ষা করা যায় না!! ডাক্তারের হাজারো প্রচেষ্টা এবং রোগীর মূল্যবান
টাকাটা জলে যায়!!

দ্বিতীয়তঃ এই পরীক্ষার জন্য রোগীকে বেশ খানিকটা জল খেতে হয়। জোরে প্রস্রাব পেলে, বা পাকস্থলীতে জল বেশি থাকলে কিছু অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দেখতে সুবিধে হয়।

তৃতীয়তঃ যাঁরা একটু বেশি মোটা, তাঁদের ক্ষেত্রে উপরের পদক্ষেপ দুটো গ্রহণ করতেই হবে! তাতেও অনেক সময় ভালো ভাবে পরীক্ষা করা যায় না!

চতুর্থতঃ আমরা স্ক্যান করার সময় কখনো কখনো রোগীকে বলি – পেট ফোলান বা নর্মাল রাখুন। এর কারণ কিছুই নয় – নিঃশ্বাস বা প্রশ্বাসের সময় পেটের আলাদা আলাদা কিছু জায়গা দেখার সুবিধে/অসুবিধে হয়।

বিশেষতঃ রোগীকে জল পান করানো নিয়ে সব ইউএসজি সেন্টারে একটা হইহই রইরই ব্যাপার চলতে থাকে!
সেন্টারের লোকজন রোগীকে যত পারে জল খাওয়াতে থাকে! লক্ষ্য একটাই – কোনভাবেই যেন ডাক্তার না বলে বসে – রোগীর পেটে বা মূত্রথলিতে জল নেই!! তাহলেই আবার রিপিট করতে হবে পুরো পরীক্ষা!! সময় নষ্ট! অতএব, প্রায় জোর করেই হুমকি দিয়েই জল খাওয়ানো চলতে থাকে!

আর জল বেশি খাওয়ানোর অবশ্যম্ভাবী পরিণতি কি, কম বেশি সবাই জানি আমরা! কেউই মূত্রথলি ফুল করে নিয়ে কুল হয়ে থাকতে পারেন না! কেউ পারার কথাও নয়! আর একবার প্রস্রাব করে ফেললেই – সেদিনের মত পরীক্ষা পোস্টপনড্!! অতএব চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন!!

এছাড়া ও রোগীরা যে কাজগুলো করেন, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া যাক –

প্রস্রাবের বেগ না থাকলেও বারবার বলতে থাকেন – আর পারছি না ধরে রাখতে!!

কাউকে না বলেই মূত্র বিসর্জন দিয়ে আসেন, এবং এসে অবধারিতভাবে অস্বীকার করেন!!

জল খাওয়ার কথাটি বলেন বটে, কিন্ত এক ঢোক জলও খান না!

কেউ কেউ জলের বোতলে চুমুক দিতে দিতেই বলেন – উহ। প্রস্রাব পেয়ে গেছে!! মানে ব্যাপারটা এমন যেন – জল পাকস্থলী থেকে ডিরেক্ট মূত্রথলিতে নেমে গেছে!!

কেউ এতো বেশি জল খেয়ে ফেলেন যে – ফোলা পেট নিয়ে শুতে পারেন না!

মজা করে বলি – দশ মিনিটের মধ্যে প্রেগন্যান্ট হলো কি করে!!

কেউ জল খেতে খেতে বমি করে ফেলেন!!

অনেকে তো আবার কোনরকমে দৌড়ে এসে টেবিলে শুয়ে পড়েন – ডাক্তার বাবু দেখুন দেখুন, না হলে আমার জামাকাপড়ে হয়ে যাবে!!

কারো কারো ক্ষেত্রে এটা সত্যি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডাহা মিথ্যা কথা!!

কেউ আবার জল না খাবার নানারকম অজুহাত দেন – আমি জল খেতে পারিনা / আমার জল খেলেই টয়লেট পায় / আমার প্রস্রাব হয় না / আমার জল খেলে প্রস্রাব করতে হয় ইত্যাদি ইত্যাদি!!

মানে কোনক্রমে ডাক্তার বাবু যেন পরীক্ষাটি শেষ করে দেন – রিপোর্ট যা আসে আসুক কিছু যায় আসে না!!

ইয়েস – এদের কিছুই যায় আসে না!! পরীক্ষা করানোটা এদের কাছে জাস্ট একটা ফর্মালিটি!! পরীক্ষা শেষ হলে রিপোর্ট অব্দি নেন না বহু মানুষ!!!

আমি প্রায়ই বকে দিই এদের।

সেদিন এরকম শশব্যস্ত তিতিবিরক্ত করা একজনকে তিন বার দেখার পরও প্রস্রাব পায়নি দেখে বললাম – আপনার কি টাকা পয়সা খুব বেশি আছে নাকি?

লোকটা হতচকিত হয়ে গেছে! – মানে?

– মানে আপনার টাকা পয়সা কেমন আছে??

লোকটা রেগে গেল। – মানে ? টাকা পয়সা দিয়ে কি করবেন?

কি জানি হয়তো ভেবেছে – ডাক্তার পুরো ভ্যাম্পায়ার হয়ে গেছে! এখুনি রক্ত চুষে খাবে!!

আমি মজা করার মুডে। বললাম – আগে বলুন তো কেমন আছে টাকা পয়সা?

– এটা কি ধরনের প্রশ্ন হলো? খুব বিরক্ত!

– না আসলে আমার মনে হলো আপনি বেশ টাকা পয়সার মালিক।

– কেন মনে হলো? চড়া গলা ।

আসলে দেখেও মনে হয়নি যে এই লোকটার আদৌ অতিরিক্ত টাকা পয়সা আছে!!

বললাম – আরে আমার মনে হলো! এক কাজ করুন – এতো টাকা পয়সা যখন আছেই, একটু আধটু গরীব লোককে দান করুন।

লোকটা দেখছি চোখ মুখ লাল করে তাকিয়ে আছে। – আরে ধুর মশাই! টাকা পয়সা কোথায়? খাই তো গায়ে খেটে!!

এবার আর পারলাম না। বললাম – তো এতোই যদি গায়ে খেটে খান, একটা পরীক্ষা করানোর টাকা জলে ফেলতে চান কেন?? বারবার বলছি, প্রস্রাব জমেনি! দেখা যাবে না! এবার আমি যদি লিখে দিই – রোগী কোঅপারেট করেনি, তাই ইনকমপ্লিট রিপোর্ট, কি হবে?? বলছি, এর চেয়ে টাকাটা দান করে দিলে ভালো হতো না??

যাইহোক, লোকটা এক ঘন্টা অপেক্ষা করে লজ্জিত মুখে এসে পরীক্ষা করে যাবার সময় বললো – ডাক্তার বাবু, তুমি হেব্বি মজা করতে পারো বটে!

আর যেই না তুমি-তে নেমে এসেছেন, আমিও অজান্তেই তুমি-তে নেমে এলাম। – তুমি বাবা এরপর কখনো ডাক্তারের কাছে গেলে একটু সময় নিয়ে এসো। এভাবে বিরক্ত করলে সবাই মজা করবে না কিন্ত!!

আর একটি বড় সমস্যা হলো – যেই কাউকে বলবো পেট ফোলাতে, প্রায় নব্বই শতাংশ মানুষ ফোলানোর বদলে পেট ভেতরের দিকে টেনে নেন!! নেবেনই!! না , তাঁরা বাচ্চা নয়! বাচ্চারা অনেক ভালো পেট ফোলাতে পারে। বললেই হলো – বাবু, ছোটা ভীমের মতো পেট বানাও! ব্যস!

আর কি কি করেন?

কেউ কেউ নাক মুখ চেপে ধরে শ্বাস বন্ধ করার চেষ্টা করেন! পেট ফোলে না!

কেউ কেউ দুই হাত পেটের দু’পাশে দিয়ে চাপ দিয়ে পেট ফোলাতে চেষ্টা করেন! পেট ফোলে না। বেঢপ হয়ে যায়

কেউ কেউ এটা ওটা চেষ্টা করে শেষে পেট টেনে নেন!!

কেউ কেউ জোরে জোরে শব্দ করে খুব তাড়াতাড়ি শ্বাস নিতে থাকেন।

আর হ্যাঁ, কেউ কেউ শ্বাস ধরে রাখতে রাখতে শেষ সীমায় পৌছে যান, তবু ছাড়েন না!! ছাড়তে বললেও না!!এবং শেষে হাঁপাতে থাকেন !

কেউ কেউ অবলীলায় জিজ্ঞেস করে ফেলেন – পেট ফোলায় কি করে??

হাসিও পায় মাঝে মাঝে!

মহিলা হলে মাঝে মাঝে ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করি – বাচ্চা ক’টা?

কিন্ত যথারীতি বোঝেন না!!

পুরুষ হলে মজা করে বলেই ফেলি – সেই!! সত্যি আপনার পক্ষে পেট ফোলানো অসম্ভব ব্যাপার!!

বোঝেন না!

একটা জোকস্ আছে আমাদের রেডিওলজিস্ট মহলে – রোগীকে বেশি পেট ফোলাতে বলো না! ন’মাস পর নিজে বা ওয়াইফকে ফিরে আসবে!!

যাকগে, যাঁর কথা বলছিলাম। একজন পঞ্চান্ন বছরের মহিলা। পেটের ছবি করাতে এসেছিল। দেখেই বোঝা যায় – এই ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতার প্রতিনিধি। কোন চাকচিক্য নেই। অতএব পেট এ অবৈধ ফ্যাট ও নেই !! চুপসে যাওয়া চামড়া আধপেটা খেয়ে থাকার সাক্ষী।

তাঁকে যতবার বলছি – শোনো মা, তোমাকে পেট ফোলাতে হবে। না হলে পরীক্ষা হবে না!  সে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো।

যেন আমি একটা চিড়িয়াখানার জন্ত! আর সে প্রথমবার এমন জন্তু দেখেছে!!

বাচ্চা ক’টা জিজ্ঞেস করলাম।

– চাইড্ডা।

কি নিষ্পাপ মুখ আর সহজ উত্তর! আইএসআই যদি একশো বছরও খোঁড়াখুঁড়ি করে, একটু ভণিতা পাবে না এই কথায়!!

বললাম – বাচ্চা হলে যেমন পেট হয়, তেমন করো।

মহিলা তাও বোঝেন না!

বললাম – বাবা তুমি এক এক কাজ করো। বড় বড় করে শ্বাস নাও।

মহিলা কি বুঝলেন জানি না, চুপ করে থাকলেন।

আমি নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে দেখা যায় সবকিছু। কিন্ত হচ্ছে না। বাইরে এরকম আরো রোগীদের কোলাহল বেড়ে চলেছে!

আমার স্বভাব মতোই – সব না দেখে ছাড়তে পারি না। অতএব ফের চেষ্টা। – এই যে মা শোনো, তোমাকে শ্বাস নিতে বলছি। একবারে না পারলে ধরো আর ছাড়ো!

সহকারী অধৈর্য হচ্ছে। ধমক দিলো – আরে কি হলো তোমার? স্যার কি বলছে – বোঝোনা??

মহিলা এরপর যে কাণ্ডটি করলেন – আমি হতবাক হয়ে গেলাম। হাউ হাউ করে কাঁদতে শুরু করলেন।

আমি থ! আরে কি হলো??

মহিলা ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললেন – মুই বাবা গরীব মুক্কুশুক্কু মানুষ। বুঝতি পারি না ক্যামনে শ্বাস নেয়।

এই এক কথায় -আমি সব মজা করা ছেড়ে দিয়ে চুপ করে গেলাম। যতটুকু পারলাম ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পরীক্ষা করলাম। – আচ্ছা মা এসো এবার।

কান্না দেখলে কি আমরা দুর্বল হয়ে যাই??

মহিলা চলে যাবার পর কতগুলো বিচ্ছিন্ন ভাবনা এলো মাথায়। সেগুলো এবার বলে ফেলি।

একটা জীবনের অর্ধেক-এর বেশি সময় কাটিয়ে ফেলা – সুমহান এই দেশেরই একজন মানুষ নিঃশ্বাস প্রশ্বাস কি তাই জানেন না! আরো বেশিরভাগ মানুষ জানেন না শ্বাস কিভাবে ধরতে হয়!! জানেন না – পেট কি করে ফোলাতে হয়! অথচ, একশো ত্রিশ কোটির দেশ আমাদের!! জানেন না – জল খেয়ে অপেক্ষা করতে হয় প্রস্রাব পাওয়ার জন্য!

আর সেই দেশে – হ্যাঁ সেই মহান ঐতিহ্যশালী সবচেয়ে পুরোনো সভ্যতার দেশে লড়াই চলে ধর্ম নিয়ে! সেই দেশে রাজনীতি হয় সাম্প্রদায়িক! সেই দেশে সাধারণ মানুষ কে ক্ষেপিয়ে তোলা যায় ডিম্ভাতের জন্য!! সেই দেশে ভোট হয় এইসব নাগরিকদের অধিকার নিয়ে!!

সেই দেশে সিনেমার নায়ক নায়িকারা হিরো হন অনায়াসে! তাঁদের জন্য মিছিল নামে রাজপথে রাজার তদারকিতে।

সেই দেশে আমরাও আছি! হ্যাঁ, তথাকথিত শিক্ষিতরা! ফেসবুকে আর যেখানে সেখানে বর্জ্য বিসর্জনের জন্য!!আমাদের গলার শিরা ফুলে ওঠে নিজের অধিকার আদায়ের জন্য!! বাহ্ রে বাহ্!!

জানেন, বড় ঝামেলিতে পড়েছি এই ডাক্তার হয়ে। এইসব মানুষদের নিয়ে দিন কেটে যায় রাত কেটে যায়। সমাজে অকর্মার ঢেঁকি বড় একখান নেতা মন্ত্রী বুদ্ধিজীবী হয়ে আত্মপ্রকাশ করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায় এইসব মানুষদের অসুখ বিসুখ সারানোর সাধ্যমতো চেষ্টায়।

আমাদের মতো নির্বোধ আর কেউ হয়, বলুন?? শিক্ষিত হওয়া, বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া এদেশে পাপ!!

সত্যি বলছি – এখন অবাক হতেও ভুলে যাই মাঝে মাঝে। খারাপ লাগাকে ভুলে যাই – এইসব মানুষদের দেখেই।
একটা হাসি ঝুলিয়ে রাখি গভীর এক বিপন্নতা কাটিয়ে উঠতে। পারি না। তবু নিয়মিত অন্ধকার গ্রাস করে নেয়।

সত্যি বলছি, এখন সবকিছু দেখেশুনে নিরূপায় হয়ে মাঝে মাঝে ভুলে যাই – শ্বাস নিতে!

কাতারে কাতারে এইসব মানুষদের দেখি আর হঠাৎ হঠাৎ চমকে উঠে স্বগতোক্তি করে ফেলি – ও ডাক্তার, তুমি অন্ততঃ শ্বাস নাও!!

PrevPreviousক্রসপ্যাথি, ব্রিজ কোর্স, ইত্যাদি
Nextকোভিড যোদ্ধা সন্তানকেNext

One Response

  1. Sovan Sardar says:
    November 24, 2020 at 11:58 am

    দারুন লিখেছেন।

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত পোস্ট

যদি নির্বাসন দাও

April 19, 2021 No Comments

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা

Existing resource-এর optimum utilization সবচেয়ে জরুরী

April 19, 2021 No Comments

ভারতে করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ চলছে, প্রবল ও দ্রুত গোষ্ঠী সংক্রমণ ও তার ফলে বহুসংখ্যক পজিটিভ রোগী ও হাসপাতালে বেডের অভাব। এই পরিস্থিতিতে existing resource-এর

আপনি আপনার সন্তানের মৃত‍্যুপরোয়ানা স‌ই করছেন

April 19, 2021 No Comments

ট্রিয়াজ একটি পদ্ধতির নাম এক গুলঞ্চসন্ধ‍্যায় আমাদের হাতুড়ে ফটাশের বোতলে চুমুক দিচ্ছিলেন। ফটাশ দক্ষিণ বঙ্গের ট্রেনে বিক্রি হতো। এটায় শুধুমাত্র সোডা থাকে। এখন পেটের দায়ে

অসুস্থ বোধ করছি খুব

April 18, 2021 No Comments

‘কেউ বাড়াবাড়ি করলে, জায়গায় জায়গায় শীতলখুচি হবে’-র বক্তা পার পেয়ে গেলেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। এক মহিলা নেত্রীকে টোন কেটে ব্যঙ্গ সম্বোধন করা প্রধানমন্ত্রী পার পেয়ে

ওয়ার্ক লোড

April 18, 2021 No Comments

রাত ৩ টে। -স্যার ভাগ্য ভালো। এটাই লাস্ট বেড ছিল। -‘ভাগ্য ভালো’ মানে? একে কোভিড পজিটিভ তার ওপর ব্লিডিং হচ্ছে। -ওটিতে জানিয়েছিস? -হ্যাঁ, আপনাকে ৭

সাম্প্রতিক পোস্ট

যদি নির্বাসন দাও

Dr. Chinmay Nath April 19, 2021

Existing resource-এর optimum utilization সবচেয়ে জরুরী

Dr. Tathagata Ghosh April 19, 2021

আপনি আপনার সন্তানের মৃত‍্যুপরোয়ানা স‌ই করছেন

Dr. Dipankar Ghosh April 19, 2021

অসুস্থ বোধ করছি খুব

Dr. Sukanya Bandopadhyay April 18, 2021

ওয়ার্ক লোড

Dr. Indranil Saha April 18, 2021

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

312111
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।