যদি প্রশ্ন করো,
রাত্রির অন্ধকারে
যে মেয়েটা ধর্ষিত হয়ে খুন হলো
সে আমার কে?
আমি বলি,
সবকিছু ছেড়ে দি যদিও,
সেও ছিল মানুষ সন্ততি ,
আমি মানুষ সন্তান।
(যে মানুষ মুখ তার
ঢাকে না মুখোশে!)
মানুষ মানুষে মিলে আত্মীয় হয়
দেওয়া নেওয়া হিসাবের আগে।
তাই যারা মানুষ তাদের
মানুষের কথা ভালো লাগে।
যদি প্রশ্ন করো,
তোমার কি খোয়া গেছে কিছু?
মানসম্ভ্রম মর্যাদা?
না যদি, তাহলে
চিৎকার করো কেন আকাশ ফাটিয়ে
সুবিচার প্রত্যাশা করে,
বিচার যে দেবে তাঁর কাছে?
আমি বলি,
ব্যক্তিগত ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে
হাপিত্যেশ করে মরা চেয়ে,
যাদের বুকের খাঁচা ভেঙে যায়
সাথীদের আর্ত হাহা রবে-
আমি সে দলেই এক তুচ্ছ প্রতিনিধি।
আমার আমিত্ববোধ নাই।
বদলে বুকের পাশে
যে সাথীর মৃতদেহ পুড়ে শুয়ে থাকে।
সে আমারও ছাই।
যদি প্রশ্ন করো,
যশ খ্যাতি প্রতিপত্তি সবই,
তোমাকে তো দিয়েছে সমাজ।
তবু কেন তুচ্ছ অজুহাতে,
জীবনের এক কোনে
চিলতে জমি নিয়ে পড়ে থাকা
নিথর মানুষ সন্ততি,
পাঁজরে বাজায় মিছে কাড়া ও নাকাড়া!
তবে ফের সোচ্চারে বলি,
শব হয়ে পড়ে থাকা মানুষেরা
নয় তুচ্ছ,
নয় অজুহাত।
তাদের আসন এই
বিশাল হৃদয় জুড়ে পাতা।
নয় এক কোণে।
যার রক্ত চলাচল,
যার শ্বাসবায়ু গেছে থেমে।
শ্বাপদ শিকারে।
মনুষ্যত্ব আছে যার,
সে যতই তুচ্ছ হোক তবু
তার কথা তোলে,
প্রশ্ন করে যায় বারে বারে।
যদি প্রশ্ন করো
সমুদ্রে, ঝঞ্ঝায়,
তীব্র স্রোত আর উচ্ছ্বাসে
কতই তো প্রাণ যায় উড়ে,
খড়কুটো হয়ে,
তাতে কি জগতে বলো
কিচ্ছু আসে যায়?
এক তুচ্ছ প্রাণ!
আমি বলি,
যা যায়, তা আমাদের যায়,
যারা মানুষ সন্তান।
অন্য কারও নয়।
মুখোশ আড়ালে যারা
মানুষের ভিড়ে মিশে
শমনের মতো বসে থাকে।
আমাদের ক্ষতি ব্যক্তিগত।
বুকের কলিজা থেকে
অলিন্দটা ছিঁড়ে গেলে
যত তীব্র কষ্ট হয় তত।
কখনও কি মশাল দেখেছ?
যে মশাল প্রতিবাদে জ্বলে?
গলিত আগুন হয়ে
নিজেকে পোড়ায় যবে,
এ কথা কি কোনওদিনও ভাবে?
“কেবল আমার চারিদিক জুড়ে
ছেয়ে থাক আমায় নিঃস্ব করা জ্যোতি?
বাকি সব থাক অন্ধকারে?”
কখনও শোনোনি?
মৌলিক অধিকার বঞ্চিত
বিপন্ন কোনও মানুষ প্রজাতি –
সামনে যে দরজা মেলে,
সেই দরজাতে কড়া নাড়ে?
দেওয়ালে ঠেকেছে পিঠ,
আজ এ বিনাশকালে
ভাববার সাধ গেছে চলে,
তথাকথিতের ঢঙে
কে আপন আর কে বা পর।
হৃদয়ে উঠলে বেজে
যুদ্ধের হাহাকার রব,
কালসিটে পড়া মন তাই শুধু বলে
আর জি কর।
আর জি কর।
২০.০৮.২০২৪










