২৯শে মে, ২০২০
আজ ক্যাম্প হোল দক্ষিণ মহিষপুকুর অঞ্চলে। দক্ষিণ মহিষপুকুর ও ঘেরিপাড়া অঞ্চল থেকে রোগীরা দেখাতে এসেছিলেন। ১৬৪ জন রোগী দেখা হয়েছে। বেশীরভাগ অঞ্চল এখনও জলের তলায়। কাল থেকে কিছুটা জল কমতে শুরু করেছে। বেশিরভাগ পরিবার রাস্তার পাশে পলিথিনের চালায় অস্থায়ী ভাবে আছে। রামকৃষ্ণ মিশন থেকে কাল আর আজ দুদিন ৫০০ জনকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছে। প্রচুর রোগী চামড়ার সমস্যা, উদ্বেগ, অবসাদ নিয়ে এসেছেন। অনেক ক্রনিক রোগী ওষুধ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন আর্থিক সমস্যা, লকডাউনের পর ডাক্তার পাওয়ার অসুবিধে… দোকানে ওষুধের সাপ্লাইও বেশ খারাপ বলছে লোকজন। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যের অবস্থা বেশ উদ্বেগের।
কাল আমরা সকালে যাব রূপমারি অঞ্চলে। এই অঞ্চলে প্রায় একটা বড় অংশ বাঁধ ভেঙে জলের তলায়।
কিন্তু স্বাস্থ্য ক্যাম্পের পাশাপাশি সাধারণ ত্রাণ বিশেষ করে খাবার আর ত্রিপল খুব জরুরি। চালটা পাওয়া যাচ্ছে রেশনে বাকি কিছু পাওযা যাচ্ছে না।
৩০শে মে, ২০২০
আজ সকালে ক্যাম্প করা হোল হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের রূপমারি – কুমিরমারি- বাইনাড়া অঞ্চল কে কেন্দ্র করে। এর মধ্যে বাইনাড়া পুরো অঞ্চল ও কুমিরমারি ও রূপমারির আংশিক অঞল বেশ ক্ষতিগ্রস্ত এবার। আয়লাতে এই অঞ্চল খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি। স্থানীয়দের মতে আয়লার চেয়ে এবার ক্ষয় ক্ষতি অনেক বেশী। সঠিক সময়ে যথাযত ভাবে বাঁধ মেরামতি হলে এই অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হোত না। বেশিরভাগ বাড়ি জলের তলায়, অনেকের বাড়ি ভেঙে গেছে। বেশ কিছু পরিবার এখনো বড় রাস্তায় অস্থায়ী ত্রিপলের চালা করে আছেন। একই চালার তলায় মানুষ, জন্তু গাদাগাদি করে কোনক্রমে দিন কাটাচ্ছেন। সরকার থেকে এই অঞ্চলে ত্রিপল ও ৩০০ গ্রাম করে চিড়ে দিয়েছে।
রেশন ব্যবস্থা আরও খারাপ। রেশন দেওয়া হয় ৬ বা ৭ মাস ছাড়া। পরিমাণেও দুর্নীতি বেশ। এতো দেরি করে রেশন দেওয়ার জন্য ওই হিসেবের রেশন নিয়ে যাওয়া সাধারণ মানুষের পক্ষে বেশ কষ্টকর। আটা নিয়ে বাড়িতে ৬ মাস রাখা যায় না। নষ্ট হয়ে যায়। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়ে রেশন ডিলারকেই জিনিস ন্যূনতম দামে বিক্রি করে দিতে হয়। লকডাউনের পর এখনো রেশন আসে নি এই অঞ্চলে। সামনের সপ্তাহে হয়তো রেশন আসতে পারে।
আজ সকালে আমরা ১৬৫ জন রোগী দেখলাম। এই অঞ্চলে বেশীরভাগ মানুষ চামড়ায় সমস্যায় ভুগছেন। পানীয়জলের সমস্যাও বেশ। ডাইরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে শুরু করেছে।
(এই চিকিৎসাদলে আছেন ডা মৃন্ময় বেরা, ডা স্নিগ্ধা হাজরা, ডা দেবাশিস হালদার, এমসিডিএসএ-র ডা সৌম্যদীপ রক্ষিত, ডা অর্ণব সাহা এবং মেডিকাল ছাত্র আপন সামন্ত।)
সকলকে অভিনন্দন।