২০২৪ সালে, পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপ ক্রমশই বাড়ছে। ডেঙ্গুর কারণ কী? কি ভাবেই বা, প্রতিরোধ করবেন ডেঙ্গুর বারবাড়ন্ত আর সাবধানতা কী কী নেওয়া উচিত ডেঙ্গুর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসেই টোটাল ডেঙ্গি কেস পশ্চিমবঙ্গে ২০২২ ও ২০২৩ সালের থেকে যদিও তুলনামুলক ভাবে যদিও এখনও কম তবুও কেস সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। ডেঙ্গি জ্বরের সময় হল বছরের জুলাই মাস থেকে নভেম্বর মাস। আজ ২৬ জুলাই পর্যন্ত যে ১,০০৫ টি ডেঙ্গি জ্বর পশ্চিমবঙ্গে রিপোর্টেড হয়েছে সেগুলোর পকেট এইরকম: উত্তর ২৪ পরগনাতে ২৬৮ টা কেস, মুর্শিদাবাদে-২২৪, হুগলিতে-১১৮, কোলকাতাতে-১৫২, মালদাতে ২৩০। সবে শুরু হয়েছে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়া। এখনও চার মাস কম করে বাকী আছে। ২০২২ সালে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু কেস ছিলো মাত্র ২৩৯ টা অথচ ২০২২ এর অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহেই সেটা বেড়ে ২০,০০০ হয়েছিল। আর ২০২৩ সালে সংখ্যাটা ছিল ৭৬,০০০। সুতরাং এই বছরে যে ডেঙ্গু কম হচ্ছে সেটা কিন্তু বলা যাবে না।
২০২২ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সারা ভারত বর্ষে ছিলো প্রায় ২,৩০,০০০ কেস। পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা ছিল ২০২৩ সালে ছিলো ৭৬,০০০/ । মারা গেছে এবছরে এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ১ জন শিশু যখন ২০২৩ সালে ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু সংখ্যা ছিলো ৩০ জন। ডেঙ্গুর সময় কাল কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে: জুলাই থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত। শীত কালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অনেক কমে যায়
ডেঙ্গুর মশা পশ্চিম বঙ্গে আগে ছিল ades egipti কিন্তু পশ্চিম বঙ্গে এখন সেটা হয়েছে ades albopictus
পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গি ভাইরাস এর সেরোটাইপ ও এইরকম ভাবে চেঞ্জ হয়েছে । ২০১৫ সালে (৬৩.৫ %) ডেঙ্গু কেস ছিলো DNEV টাইপ ৩ দিয়ে
২০১৬ সালে( ৫২.৭% কেস ছিল) DNEV টাইপ ১ দিয়ে। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে যথাক্রমে (৭৩.৪৭%) DNEV টাইপ ৩ দিয়ে। ২০১৯ সালে ছিল(৪৭.১৫%) DNEV টাইপ ২ । এর অর্থ হলো ডেঙ্গু ভাইরাস এর সেরোটাইপ প্রায় প্রতি বছর চেঞ্জ হচ্ছে। অর্থাৎ ডেঙ্গু ভাইরাস তার জিনগত পরিবর্তন করছে।
আমরা যদি একটু পেছনে যাই তাহলে ডেঙ্গু পশ্চিমবঙ্গে ২০২২ এর অক্টোবর প্রায় প্রতিদিনই ৮০০ থেকে ৯০০ পজিটিভ কেস রিপোর্টেড হয়েছিল সেটা মনে আছে আমার। ভারতবর্ষের অন্যান্য সব রাজ্যের তুলনায়, ২০২২ সালে বোধহয় পশ্চিমবঙ্গেই সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গির কেস দেখা গেছিল । ২০২২ এর ৩১ জুলাই পর্যন্ত, মাত্র যেখানে ২৩৯ টা পজেটিভ কেস ছিল, ২০২২ এর ২৬ সেপ্টেম্বর এ সেটা বেড়ে হয়েছিল ১৫,০০০ কেস এবং প্রতি সপ্তাহে কেস ছিলো তখন গড় নাম্বারে ১,৮৫৪ ।
কলকাতা , নর্থ – ২৪ পরগনা , হাওড়া, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, শিলিগুড়ি,এবং দার্জিলিং সবচেয়ে বেশি এফেক্ট করে ডেঙ্গুতে সেটা মনে রাখা দরকার। কলকাতা শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ডেঙ্গি হয় ভবানীপুর, চেটলা, কালীঘাট, আলিপুর, নিউআলিপুর, যোধপুর পার্ক,গলফগ্রীন, ঢাকুরিয়া, যাদবপুর, গড়িয়া, বাঘা যতীন, ইএম বাই পাস ।
কারণ কী প্রায় প্রতি বছরেই এতো বেশী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হবার?
আমার ( লেখক) মনে হয় , ঠিকঠাকমতো স্যানিটেশন এর অভাব, ড্রেনেজ সিস্টেম বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফল, বৃষ্টির জল জমে ( বিশেষ করে প্রোমোটারদের তৈরি নতুন নতুন ফ্ল্যাট বাড়ি এবং হাইরাইস বিল্ডিংয়ের চারপাশে জমা জল বৃষ্টির পরে), আনপ্লানেড শহর ও শহরতলী গড়ে ওঠা, পুরসভা , মিউনিসিপ্যালিটি বা পঞ্চায়েতগুলো থেকে ঠিকঠাকমতো নজরদারি না চালানো, যাতে বৃষ্টির জল জমে না থাকে, যেখানে মানুষ বসবাস করে এবং বসতি বাড়িতে বা আশেপাশে কোথাও এমন কি বাথরুমে, টবে যাতে জমা জল মানুষরা না রাখেন ( রাখলেই হয় ফাইন করা বা শাস্তি দেওয়া সেই বাড়ির গৃকর্ত্রীকে বা গৃহকর্তাকে) ,শহরে বা শহরতলিতে খাটাল এবং ক্যাটলশেড রাখা এবং মশামারার এন্টিলার্ভা স্প্রে না করা, ব্লিচিং পাউডার, ডি ডি টি না ছড়ানো সময়মত এবং যেখানে ডেঙ্গু ধরা পড়ছে । অল্পসল্প বৃষ্টি হওয়া দুর্গা পুজোর আগে, ভারী টানা বৃষ্টি না হওয়া ও বোধ করি সেটাও একটা কারণ । ২০১৫ -২০১৭ সালেও আমার মনেপড়ে, পশ্চিমবঙ্গে খুব বাড়বাড়ন্ত হয়েছিল ডেঙ্গুজ্বরের দেল্লী, পাঞ্জাব , এবং হরিয়ানা থেকেও বেশি । ২০১৮ ,২০১৯ তে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমলেও ( আমার কাছে ২০২০ , ২০২১এর ডাটা নেই তাই ওই বছরের হিসেব বলতে পারলাম না ) ২০২২ সালে পজেটিভ কেস সংখ্যর নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ কিন্তু পাঞ্জাবের পরেই দ্বিতীয় স্থানে ছিলো।
একটা বড় প্রশ্ন হলো ডেঙ্গুজ্বর কী শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই বাড়ছে? না ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যেও বাড়ছে? যেমন ২০২২ এই কর্ণাটক ( ৫৩৯২ কেস), তামিনাড়ুতে ( ৩৩৯৬ কেস) ,তেলেঙ্গানা ( ১৯৬০ কেস), মহারাষ্ট্রতে (২৯২৭ কেস), অন্ধ্র প্রদেশে (২৩০৯ কেস), কেরালা (২০০৭ কেস), ওড়িশাতে
( ১৭৪৫ কেস), ছত্রিশগড় ( ১৪৪৮ কেস) ,গুজরাটে (১২১২ কেস), দেল্লীতে (৩০০ কেস) উত্তরপ্রদশে ( 2200) কেস হয়েছে, (২০২২ এর ৫ অক্টোবের পর্যন্ত হিসাবে)।
ডেঙ্গু ভাইরাসটা কি রকমের ভাইরাস?
ডেঙ্গু ভাইরাস ( DNEV) একটা সিঙ্গেল স্ট্রান্ড RNA ভাইরাস, ফ্লাভি ভাইরাস গ্রুপের, আর্ভো ভাইরাস। এর ফ্যামিলি হলো ফ্লাভিভিরীদি, এটা একটা স্ফেরিকাল বা গোলাকার আকৃতির ভাইরাস।এই ভাইরাসের ব্যাস ৫০ ন্যানো মিটার। এই ভাইরাসের ১) ভাইরাল জেনোম আছে ২) ক্যাপসিদ প্রোটিন আছে ৩) আছে এনভেলাপ প্রোটিন, যেগুলোর মধ্যে ইম্পর্ট্যান্ট বা খুব প্রয়োজনীয় হলো “ই প্রোটিন “এবং ” এম প্রোটিন”, যে গুলো এই ভাইরাসটাকে মানব কোষের ভেতরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে ৪) আর আছে অনেকগুলো নন স্ট্রাকচারাল প্রোটিন(NS) যেমন
NS 1 ,Ns2,Ns3,Ns4,Ns5 যারা ভাইরাসটাকে মানবশরীরের কোষের মধ্যে তাদের বংসবৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও NS প্রোটিন গুলো আমাদের ইমিউন সিস্টেমএর টি লিম্ফোসাইট সেল রেসপন্স করায়, যাতে ভাইরাসটা মারা যায়। তাই এই NS1 প্রোটিনের এন্টিজেন এবং অ্যান্টিবডি IGg এবং IGM Mac Elisa পদ্ধতিতে ডিটেক্ট করেই ডেঙ্গু ভাইরাল ফিভার হয়েছে কিনা বোঝা যায়। এটা মনেরাখা দরকার যে IGM অ্যান্টিবডির titer বোঝায় রিসেন্ট ডেঙ্গু ইনফেকশন এবং IGg অ্যান্টিবডি পূর্বের ইনফেকশনকে বোঝাবে। ডেঙ্গু ভাইরাস ৫ রকমের সেরোটাইপ হয়। DNEV 1 থেকে DNEV 5 পর্যন্ত। তবে ভারত বর্ষে DNEV 5 সেরোটাইপ যতদূর জানি এখনও পাওয়া যায় নি। এই চারটি সেরোটাইপ এর মধ্যে যেকোনো তিনটি সেরোটাইপ একইসঙ্গে কোনো এন্দেমিক জায়গায় থাকতেই পারে এবং যদিও এরা antigenically প্রায় একইরকম, এরা কিন্তু একে অন্যের জন্য ক্রস প্রটেকশন দেয় তবে খুবই কম সময়ের জন্য। মাত্র কয়েক মাসের জন্য। কিন্তু যে সেরোটাইপ দিয়ে একবার ইনফেকশন হয় সেই সেরোটাইপে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় সেটা কিন্তু লাইফ লং ইমিউনিটি দেয় সেই সেরোটাইপ এর জন্য । এটার যেমন ভালো দিক আছে, তেমনি খারাপ দিক ও আছে। যদি কোন ব্যক্তি অন্য আরেকটা সেরোটাইপ দিয়ে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হন, তবে সেই ডেঙ্গুফিভার ওনার ক্ষেত্রে খুবই মারাত্বক টাইপের ডেঙ্গু হবে এবং সহজেই সেই ব্যক্তি ডেঙ্গুর ক্রিটিক্যাল ফেস এ চলে যাবেন । পশ্চিমবঙ্গের মধ্যেই, দক্ষিণবঙ্গে সাধারণত DNV2 এবং DNV3 এবং উত্তরবঙ্গে DNV 1 সেরোটাইপ পাওয়া যায় । ডেঙ্গু ভাইরাস কিন্ত ক্রস ইমিউনিটি তৈরি করে ইয়েলোফিভার ভাইরাস, জাপানিজ এন্নকেফালিতিস ভাইরাস এবং WN ভাইরাস এর সাথেও। পশ্চিমবঙ্গে ২০২২,২০২৩ এর সেরোটাইপ ছিল DNEV3। তবে ২০২৩ বছরের স্ট্রেন এ কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য দেখা গেছিল যেগুলো থেকে সাবধান থাকার দরকার, যেমন ১) তেমন ভাবে কিন্তু প্লেটলেট কাউন্ট কমায় নি যেমন নাকি অন্যবার গুলোতে দেখা যেত ২) বেশ কিছু ডেঙ্গু আক্রান্ত লোকজন হঠাৎ করেই অল্পদিনের মাথায় ডেঙ্গু শক সিনড্রোম ( DSS) এ চলে যাচ্ছিলো এবং তাদের সেপসিস হচ্ছিলো এবং মাল্টি অর্গান ফেল করছিল ৩) মাক্রফেজ অ্যাক্টিভেশন সিনড্রোম ও খুব cytokine স্ট্রম হয়েছে (কভিদ- ১৯ এর মত ) সঙ্গে ক্যাপলিলারি দামেজ বা লিকেজ ৪) DSS দের দ্রুত অক্সিজেন লেভেলও ড্রপ করছে এবং ভেন্টিলেশনে দিতে হয়েছিল অনেককে।
ডেঙ্গু কিন্ত মশা বাহিত রোগ
ডেঙ্গু একটা মশা বাহিত রোগ। Aedes aegypti এবং Aedes Albopictus এই দুটো মশার কামড় দিয়েই রোগটা ছড়াবে। পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় শ্রেণীর মশার মাধ্যমে এই রোগ আসছে। এই মশাগুলো দিনের বেলায় , ভোর রাতে এবং ভোরের বেলায় কামড়ায়। এদের গায়ে এবং পায়ে সাদা সাদা দাগ থাকে এবং এরা ফ্রেশ জলেতে ডিম পারে। সদ্য জমা বৃষ্টির জলে ডিম পারে এবং সেই ডিম থেকে লার্ভা এবং পরে মশা তৈরি হয়। সুতরাং ডেঙ্গু থেকে সত্যিই বাঁচতে গেলে রাতে মশারী টাঙিয়ে ঘুমোতে হবেই, দিনের বেলাতেও ফুলহাতা জামা,ফুলপ্যান্ট, বুড়ো, অ্যাডাল্ট ছেলেরা এবং বাচ্চারা পড়বে। মেয়েরা শাড়ি ব্লাউজ পড়বেন এমন ভাবে যাতে ওনাদের শরীর সম্পূর্ণ ঢাকা থাকে এবং মশা শরীরে চামড়ায় কামড়াতে না পারে। এর চেয়েও বড়হলো মশা যাতে জন্মাতেই না পারে আশেপাশে সেটাকে নিশ্চিত করা। সুতরাং ফ্রেশ জল বা কোনো রকম জল জমিয়ে রাখা যাবেই না বাথরুমে, বাড়ির টবে, ফুলদানিতে ,প্লাস্টিকে, টিনের পাত্রে । বৃষ্টির জল যাতে না জমে থাকে ফেলে দেওয়া বা জমিয়ে রাখা গাড়ির টায়ার, ডাবের খোলা, পুতুল , খেলনা এইসব জিনিসে। বাড়িতে প্রতিদিন জমিয়ে রাখা বালতির বা বেসিনের জল ফেলে দিতে হবে বাথরুমে। বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। পুরসভাগুলো ড্রেন গুলিতে অন্টিলার্ভা স্প্রে, কেরোসিন তেল , বা ডিডিটি ইত্যাদি স্প্রে করবেন , পুরসভার লোকেরা ভিজিলেন্স করবেন বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে যে কেউ জমা জল রেখেছেন কিনা। যদি কেউ জল জমিয়ে রাখেন তবে ফাইন করবেন বা শাস্তি দেবেন।
ডেঙ্গুর লক্ষণ কী কী?
ডেঙ্গুর কোনো লক্ষণ থাকতে পারে সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরের মত সিম্পটম দিয়ে শুরু করে আবার ডেঙ্গুর কোনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে। যদি কোনো লক্ষণ না থাকে তবে তাকে ( asymptomatic ডেঙ্গু বা seroconverted ডেঙ্গু বলা হয় এবং এঁরা ডেঙ্গু ভাইরাসের ইনফেকশন হবার প্রধান সোর্স হয়ে থাকেন) আর symptomatic ডেঙ্গু, যেটা হাই জ্বর দিয়ে শুরু হয় এবং কম করে তিনটে ফেজে গিয়ে শেষ হয়। অনেক সময়ই সামান্য ডেঙ্গু জ্বর, ডেঙ্গু হেমরেজিক ফিভার ( DHF) বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম ( DSS) এ চলে যায় এবং ব্যক্তির মৃত্যু ঘটায় মাল্টি অর্গান ফেল করিয়ে।
ডেঙ্গুর ইনকুবেসন সময়টা ৫ থেকে ৭ দিন। ৯০% ডেঙ্গুর জ্বর কিন্তূ নিজে নিজেই সেরে যায়। যত দুশ্চিন্তা আর ভয় ১০% ডেঙ্গু কেস নিয়েই। সাধারণত ডেঙ্গুর লক্ষণ গুলো এইরকম হয়।হঠাৎ করেই ধুম জ্বর ( ১০৩ বা ১০৪ ডিগ্রী) হওয়া , মাথা ব্যাথা, *চোখের মণির ভেতরে ব্যথা ( রেট্রো অরবিটাল পেন) ,* হাড়ের ভেতরে বা গাটে গাঁটে বাথ্যা ( এটা কিন্তু চিকেনগুনিয়াতেও হয়) , গায়ে হাতে, পায়ের মাসলে ব্যথা, বমি বমি ভাব , পেটখারাপ ও পাতলা পায়খানা, চামড়ার বা মুকাউস মেমব্রেন বা মুখের ভেতরে *লালচে ফুসকুড়ি ( rash) বেরোনো। এই লক্ষণ গুলো ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যেই হয়। তবে এই সময়টা অন্য কোনো কারণে জ্বর হচ্ছে কিনা, যেমন সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা, রেসপিরেটরি ভাইরাস দিয়ে, অন্য ভাইরাল জ্বর, কভিদ ১৯ ( omicron দিয়ে) , মালারিয়া, চিকেনগুনিয়া এগুলো কেও মাথায় রাখা উচিত। সেই জন্যই ডেঙ্গু সন্দেহ হলে ল্যাবরেটরি টেস্ট কমকরে ডেঙ্গুর জন্য এবং মালারিয়ার জন্য করিয়ে নেওয়া ভীষণ দরকার। NS1 antigen test তাই খুব দরকারী ম্যাক ELISA পদ্ধতিতে করা একটা টেস্ট । রেপিড NS1 টেস্টের তেমন গুরুত্ব নেই , যদি ম্যাক Elisa NS1 Antigen করবার সুযোগ না থাকে একমাত্র তখনই রেপিড টেস্ট করা যেতে পারে। এ ছাড়াও NS1 IgG এবং IGM অ্যান্টিবডির জন্য সেরোলজি টেস্ট করাও যেতে পারে। NS1 এর জন্য তৈরি হওয়া IGM অ্যান্টিবডি বেশী থাকলে রিসেন্ট ইনফেকশন ধরা হয়। এটা ডেঙ্গু জ্বরের তিন দিন পরেই পজিটিভ হয় তার আগে করলে নেগেটিভ রেজাল্ট আসতে পারে । NS1 এন্টিজেন পজিটিভ হয় কিন্তূ প্রথম দিনেই। কনফার্মেশন এর টেস্ট RT PCR বা ভাইরাল কালচার, DNEV সেরোটাইপ জানবার জন্য দরকার যা অনেক ল্যাবরেটরিতেই করা সম্ভব নয় এবং খুব ব্যায়বহুল টেস্ট। সামান্য একটা স্ক্রিনিং টেস্ট ও করা যেতে পারে। এর নাম টুর্নিকেট টেস্ট। প্লেটলেট কাউন্ট এবং hematocrit PCV( HCT) করা দরকার । ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার হচ্ছে কিনা সেটা বোঝার জন্য সাধারণ ভাবে টুনিকেট টেস্ট করেই ধরা যেতে পারে। ( ব্লাড প্রেসার মাপার জন্য কাফটা হাতের কনুই এর ওপরে জড়িয়ে , সিস্টোলিক এবং ডায়স্টলিক প্রেশার এর মাঝে প্রেসার রেখে ,৫ মিনিট প্রেসার ধরে রেখে, যদি হাতের চামড়ার নিচে দশ বা তার বেশি পেটিকিয়াল বা
পারপিইউরিক ব্লিডিং স্পট দেখা যায় তবেই টেস্টটা পজিটিভ ধরা হবে ) । এটাকে তাই ডেঙ্গুর জন্য স্ক্রিনিং টেস্টও বলা হয়। ডেঙ্গু একবার ডায়াগনোসিস হলে, লক্ষ রাখা দরকার এই ৭ -৮ দিনের মধ্যে রোগীর কোথাথেকে কোনোভাবেই রক্তক্ষরণ হচ্ছে কিনা। সেটা চামড়ার নিচে পেটিকিয়াল বা পারপিইউরিক(purpuric) স্পট হিসেবে, বা চোখের নিচে বা নাক দিয়ে, বা কফের সঙ্গে সামান্য রক্ত যেতে পারে, স্টমাক থেকে ব্লিডিং হতে পারে, পিচ কালো স্টিকি পায়খানা হতে পারে ( melaena বলা হয় ), মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিকের রক্ত ক্ষরণ বেশি পরিমাণে হতে পারে, যোনি মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে পারে, পেচ্ছাব করার সময় রক্ত বেরহলে পেচ্ছাবের রং লাল হতে পারে ( rare) । এই লক্ষণগুলো দেখা গেলেই রোগীকে কিন্তু কাছাকাছি কোন হাসপাতালে ভর্তি করতেই হবে। মনে রাখতে হবে প্লেটলেট কাউন্ট এবং প্লেটলেট এর কাজ করবার ক্ষমতা দুটোই কমে যায় ডেঙ্গু ফিভার হলে। কখনো বা দ্রুত কমে কারুর ক্ষেত্রে বা কখনো ধীরে ধীরে কমে। তাই রোজই একবার প্লেটলেট কাউন্ট আর হেমাতোক্রিত ( hct) করানো দরকার কোনো বিশ্বাসযোগ্য ল্যাবরেটরি থেকে। প্লেটলেট কাউন্ট ( মডিফাইড নিউবার কাউন্টিং চেম্বারে দেখা মাইক্রোস্কোপ এর নিচে) ৩০ থেকে ৪০ হাজারে নেমে গেলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা অতি আবশ্যক। প্লেটলেট কাউন্ট ২০,০০০ এ নেমে গেলে প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন দিতেই হবে। না হলে বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনাল ব্লিডিং হবে। মাথার ব্রেইনের ভেতরেও ব্লিডিং হবে এবং রোগী মারা যাবেই। তেমনি ভাবেই যদি hematocrit এর পিসিভি বা প্যাকড সেল ভলিউম যদি ক্রমশ বাড়তে থাকে ( base লাইনের ২০% এর ওপরে তা হলে বুঝতে হবে রক্তের প্লাজমা বের হয়ে যাচ্ছে রক্ত নালির থেকে বাইরের টিস্যু স্পেস এ) ৩০ % থেকে ৪০% base লাইনের ওপরে HCT বা পিসিভি কিন্ত ইন্ডিকেটর অফ ক্রিটিক্যাল ফেস। আগেই বলেছি ৯০% ডেঙ্গু জ্বরের পেশেন্ট ভালো হয়ে যায় নিজের থেকেই যদি ডায়াগনোসিস এর পরে জ্বরের জন্য শুধু প্যারাসিটামল ট্যাবলেট আর প্রচুর ইলেক্ট্রোলাইট মেশানো জল বা ফলের রস খাওয়া যায়। অ্যাসপিরিন , ইকোস্পিরিন বা NSID জাতীয় বা ক্লোপিদাগ্রল ( রক্ত পাতলা রাখার কোন ওষুধ) কিন্তু দেওয়া যাবে না কোনোভাবেই এইসময় একমাত্র প্যারাসিটামল ছাড়া। সঙ্গে প্রচুর জল খেতে হবে বা ফলের রস।
ডেঙ্গু ডায়াগনোসিস
Mac ELISA টেস্ট ফর NS 1 এন্টিজেন সবচেয়ে আগে পজিটিভ হয় virimia পিরিয়ড এ পজিটিভ হয়ে যায়। তাই প্রথম দিনেই পজেটিভ হয়। এটার পজেটিভ হওয়া মনে ডেঙ্গু হয়েছে।
এটা তাই অন্য কারণে জ্বর, যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা , RSV ভাইরাস বা এডিনো ভাইরাস, covid 19 ভাইরাস বা ম্যালেরিয়া ba chikungunya বা leptospira ইনফেকশন বা টাইফাস জ্বর এদের থেকে আলাদা করতে পারবেন।
আন্টি ডেঙ্গু স্পেসিফিক IgM ও IgG টেস্ট বাই ম্যাক elisa মেথড
IgM Elisa পজিটিভ হয় মানে রিসেন্ট ডেঙ্গু ভাইরাস ইনফেকশন আর IgG পজিটিভ মানে পুরোনো বা আগের কোনো ইনফেকশন । IgM কিন্তু তিন থেকে 4
চার দিনের মধ্যে তৈরি হয় কারুর কারুর ক্ষেত্রে সেটা ৭ দিনে পজিটিভ হয় এবং প্রায় ৩ মাস থাকে রোগীর রক্তে ।এটা surest টেস্ট। IgG Elisa টেস্ট ব্যবহার করা হয় জানতে যে রোগ টা প্রাইমারি না সেকেন্ডারি ডেঙ্গু। এছাড়াও পূর্বে ইনফেকশন ছিল কিনা সেটা জানতে ব্যবহার করা হয়।
RT PCR টেস্ট
এই পরীক্ষাটা সাধারণ মানুষের জন্য মোটেও নয়। এটা ভাইরাসের সেরোটাইপ ডিটেক্ট করতে ব্যবহার করা হয়।
রেপিড ডিটেকশন কিট টেস্ট ( RPDT)
এটা বাজারে কিনতে পাওয়া কিট টেস্ট। করতে ১৫_২০ মিনিট সময় লাগে। এটা Ns 1এন্টিজেন IGM Elisa কিন্ত এটার সেনসিটিভিটি এবং স্পেসিফিসিটি খুবই কম। WHO বলেছে এতে ফলস নেগেটিভ হতেই পারে ডেঙ্গু ভাইরাস শরীরে থাকলে। তাই আমার মত এটা ব্যবহার করা উচিত নয় একদমই।
এছাড়াও প্লেটলেট কাউন্ট, হিমোগ্লোবিন লেভেল হেমাটোক্রিট, প্রতি দিনই করা দরকার বিশেষ করে প্লেটলেট কাউন্ট। 10,000 /মিলি লিটার এর নিচে নেমে গেলে ভেতরের অর্গান গুলোতে ব্লিডিং হতে পারে। তাই প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন করতে হয়।
APTT এবং fibrinogen লেভেল টেস্ট জানতে coagulopathy হচ্ছে কিনা।
এছাড়া প্রয়োজন মত লিভার ফাংশন টেস্ট(বিলিরুবিন, SGOT ,SGPT Alkaline phosphatase) ,কিডনি ফাংশন টেস্ট ( urea, creatinine,EGFR)
ECG
Chest x ray বুকে কোনো জল জমেছে কিনা জানতে
ডেঙ্গু রোগীর স্টেজ গুলো এইরকম
১) ডেঙ্গু জ্বর সাধারণ বা undifferentiated ডেঙ্গু
২) সিভিয়ার ডেঙ্গু রোগী
A) ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার স্টেজ ১_৪.। তিন আর চার নম্বর স্টেজে গেলে খুব খারাপ হবে জীবন নিয়ে টানাটানি হতে পারে । ইন্টারনাল ব্লিডিং কোথায় হচ্ছে তার ওপরে সেটা নির্ভর শীল
B) ডেঙ্গি শক সিনড্রোম আগে বলা হয়েছে
C) ডেঙ্গু সাথে লিভার, কিডনি ফেইলিওর বা হার্ট কে ইফেক্ট করেছে ( কার্ডিয়াক )বা লাং কে ইফেক্ট করেছে বা ব্রেইন involvement পিত্ত থলির ইনফেকশন হতে পারে হতে পারে প্যানক্রিয়াস এর মধ্যে ব্লিডিং । এটা কে বলে এক্সটেন্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম।
ডেঙ্গুর Warning sign কি কি? যখন হাসপাতালে ভর্তি করতেই হবে রোগীকে
বারে বারে বমি হওয়া। ডেঙ্গু জ্বরের রোগীরলাং বা প্লুরাল ক্যাভিটি তে জল জমা ও স্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হলে।
যদি মাইনর ব্লিডিং হয় কোনো জায়গা থেকে।
পেটের বা বুকে জল জমে গেলে x-ray তে।
পেটে হঠাৎ করে ব্যথা বা অস্বস্তি বোধ করে।
বুক ধরফর করা বা শ্বাস কষ্ট হওয়া।
পেচ্ছাব কমে গে…
হুঁ হুঁ করে বা দ্রুত যদি রক্তে প্লেটলেট কমে যায়।
ব্লাড প্রেসার যদি কমে যায়।
পালস ভলিউম যদি কমে যা।
হাত পা হঠাৎ করে ঠাণ্ডা হয়ে গেলে।
তখন কিন্তু রোগী কে বাড়িতে রাখা যাবে না। নিকটর্বতী হাসপাতালে ভর্তি করতেই হবে
এটা মনে রাখা দরকার যে ১০% ডেঙ্গু কেস ক্রিটিক্যাল ফেস ( DHF বা DSS) এ চলে যেতেই পারে এবং সে ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটাতে পারে যদি সঠিক চিকিৎসা না হয়। তাই ডেঞ্জার সাইন বা লক্ষণগুলো জানা দরকার সাধারণ মানুষের ১) ব্লিডিং-: নাক দিয়ে, চোখের ভেতরে, কাশির সঙ্গে ,রক্ত বমি, কালো পায়খানা, রক্ত পায়খানা, পেচ্ছাব লাল হওয়া বা মহিলাদের বেশি পরিমাণ মাসিক হওয়া ২) প্রথম ৭ দিনের পরে দ্বিতীয় বার জ্বর আসলে ৩) রোগীর বুক ধড়ফড় করলে ৪) রোগীর শ্বাস কষ্ট হলে ৫) রোগীর অস্বাভাবিক বেশি অলসতা লাগলে ৬) রোগীর মধ্যে অস্থিরতা থাকলে ৭) হঠাৎ করে রোগীর ব্যবহারে পরিবর্তন দেখলে ৮) তিনবারের বেশি বমি হলে ৯) পেচ্ছাবের পরিমাণ কমে গেলে ১০) পালস প্রেসার কমে গেলে ১১) লিভারটা বড় হয়ে গেলে এবং লিভারে বাথ্যা হলে ১২) দ্রুত প্লেটলেট কমতে থাকলে।
রিকভারি ফেজ ডেঙ্গুর
এরপরেই আসে রিকভারি ফেস। যদি ডেঙ্গুর রোগী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ক্রিটিক্যাল ফেজ থেকে বেরিয়ে আসে তবেই আস্তে আস্তে বাইরে বেরিয়ে যাওয়া, রক্ত নালির ক্যাপিলারর বাইরের টিস্যু থেকে প্লাজমা এবং ফ্লুইড যা নাকি একসময় বেরিয়ে গেছিলো, সেগুলো শরীর আবারও রক্ত নালির ভেতরে শোষণ করতে শুরু করে । রোগীও তখন নিজেকে কিছুটা ভালো বোধ করতে শুরু করে। Hematocrit ( HCT/ পিসিভি ) কমতে শুরু করে এবং স্থিতিশীলও হয় একসময়। যদিও সেইসময়টা কিছু কিছু রোগীর পেটিচিয়াল স্পট বা purpuric স্পট থেকে যায় চামড়ার নিচে। সেই জন্যই বলা হয় ,” সাদা দ্বীপ লালচে সমুদ্রের মধ্যে”। অনেকে এইসময় চুলকানি ( pruritus ) বা কম হার্ট বিট ( bradycardia) এবং ইসিজি তে পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। এই সময়ে যে জটিলতা হতে পারে সেগুলোর মধ্যে মারাত্বক হল প্লুরাল এফফিউশন বা ফুসফুসে জল জমা বা পালমোনারি ইডিমা। এই পালমোনারি ইডিমার মূল কারণ যদি বেশি আই ভি ফ্লুইড দেওয়া হয়। তখন বুকের ফোট করা , লিভার ফাংশন টেস্ট করা কিডনী ফাংশন টেস্ট করা জরুরি।
ডেঙ্গু শক সিনড্রোম
ডেঙ্গু ফিভারে দুই রকমের শক হতে পারে
১) কম্পেনসাতেড বা ক্ষতিপূরণের জন্য শকঃ- এই ধরনের শকে রোগীর সিস্টোলিক ব্লাড প্রেসার নরমাল থাকলেও হার্টবিট দ্রুত হয় সঙ্গে দ্রুত শ্বাস নেয় রোগী কোনো রকম চেষ্টা না করেই। রোগীর হাত পা ঠাণ্ডা থাকে ( কারণ ক্যাপিলারি পূর্ণ করবার সময় বেশি লাগে যেটা নর্মাল ২ সেকেন্ড এর কম সেটা 2 মিনিট সময় নেয়, ফলে পালস প্রেসার ২০ mm পারদ এর নিচে চলে যায়। এই শক যাতে না হয় সেইজন্য রোগীর ডিহাইড্রেশন করেক্ট করতে হয় আই ভি ফ্লুইড চালিয়ে ঠিক মত। বাড়িতে ঠিকঠাকমতো ইলেক্ট্রোলাইট মেশানো জল(ORS) প্রচুর খেলে বা ফলের রস খেলে বা ডাবের জল বা ভাতের ফ্যান খেলে এই জটিলতা আটকানো যেতে পারে।
২)হাইপোটেনসিভ ডেঙ্গু শকঃ-এই ধরনের শক, কম্পেনসাতেড শক যখন খারাপ অবস্থার দিকে মোড় নেয় তখনই হয়। এতে রোগীর প্রতি মিনিটে শ্বাস প্রশ্বাস এর গতি, হৃদ্দন্দনের গতি এগুলো বাড়তে থাকে, ডিপ ঘন ঘন শ্বাস ( কুস্মাল শ্বাস) , হাত পা শুধু ঠাণ্ডাই হওয়া নয় আঠালো ,রক্ত শূন্য এবং মত্তেলড দেখায়। সিস্টোলিক এবং ডাইস্টলিক ব্লাড প্রেসার অনেকটাই কমে যায় এবং রোগীর মেন্টাল স্ট্যাটাস এর দ্রুত পরিবর্তন হয়। এই সময় রোগীর লিভার, কিডনি, ব্রেইন, ও হার্ট কে ইফেক্ট করতে পারে। ব্রেইন এ এন্সফালোপ্যথি, এন্সফালিটিস, মেনেনযাইটিস ,ব্রেইন এর ভেতরে ব্লিডিং, গুলেন বেরি সিনড্রোম, পলিনিউরোপ্যথি ,হৃদস্পন্দনের পরিবহন ডিফেক্ট, myocarditis, pericarditis, ফুসফুসের ARDS, পালমোনারি edema কিডনি ফেইলিওর লিভার ফেইলিওর এগুলো হয় এবং রোগী ভেন্টিলেশনে গিয়ে মারা যেতে পারে যদি না ঠিক মত চিকিৎসা করা হয় চিকিৎসার সরকারি বেধে দেওয়া প্রটোকল অনুসারে। চিকিৎসা করবার জন্য রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের সরকারী প্রটোকল প্রতিবছর বের করা হয়। আছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগের ও প্রটোকল । কোন স্টেজ এ কি কি দেখত হবে , কী কী ল্যাবরেটরি টেস্ট করতে হবে কোন স্টেজে, কি ভাবে ম্যানেজমেন্ট করতে হবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের। সেটা ঠিকমত ফলো করলেই ( সব লেখা আছে পুংখানু পুংখ ভাবে) অনেক মৃত্যু আটকানো যায়। প্রাইভেট হসপিটাল আর নার্সিং হোম গুলো রোগীর পার্টি থেকে পয়সা লোটার জন্য বা তাদের বিজনেস এর জন্য অনেক দুনম্বরি প্র্যাক্টিস করে ডেঙ্গু নিয়ে তাদের নিজস্ব প্রটোকল বা বিদেশের থেকে আনা প্রটোকল বলে চালিয়ে , বিশেষ করে ঘণ্টা ঘণ্টায় HCT,প্লেটলেট কাউন্ট, এবং হাজারো টেস্ট করিয়ে বা প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন এর ব্যাপারে বা DSS এর ক্ষেত্রে।