“The rise and rise of giant oil and tech companies, with their campaign contributions, commercial lobbying, predictive data harvesting and surveillance capitalism, has lent a certain urgency to old questions: How are we to cope with the power and perils of multinational corporations and how can a nation-state protect itself and its citizens from corporate excess?”প্রশ্নটা আমার নয়, প্রসিদ্ধ ইতিহাসবিদ William Darlrymple এ প্রশ্ন তুলেছেন ইতিহাসের সারমর্ম ঘেঁটে।
একই ভাবে ১২ বছর আগে তৎকালীন IMF বা ইন্টারন্যাশনাল মনেটরি ফান্ডের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে ল্যাটিন আমেরিকার বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ডেভিসন বুথু এক চিঠি লেখেন।
তিনি এই দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করবার সময় নিজ কর্মের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে ভেতরের নানা অভিজ্ঞতা প্রকাশ শুরু করেন। পদত্যাগের পর আইএমএফ প্রধানের কাছে তিনি এক চিঠিতে লেখেন, ‘আজকে আমি আইএমএফ থেকে ১২ বছর পর পদত্যাগ করলাম, মাঠ পর্যায়ে ১০০০ দিন কাজ করার পর, তোমার দেওয়া ওষুধ এবং চাতুরিভরা নানা কৌশল ল্যাটিন আমেরিকা, ক্যারিবিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের কাছে ফেরী করার পর আমার এই পদত্যাগ। আমার কাছে এই পদত্যাগ হল অমূল্য এক স্বাধীনতা, এটি হল আমার হাত পরিষ্কার করার প্রথম ধাপ, যে হাতে আমার দিব্যচোখে আমি দেখি লক্ষ দরিদ্র ও ক্ষুধার্ত মানুষের রক্ত। এই রক্ত এত বেশি যে, তা দিয়ে নদী তৈরি হতে পারে। এটা শুকিয়েও চলে যায় না, দখল করে আমার পুরোটাকে; মাঝেমধ্যে আমার মনে হয় তোমার নামে আমি যা করেছি তার ক্লেদ মুছে ফেলার মতো কোন সাবান এই দুনিয়ায় নেই।’ বলাইবাহুল্য, এই চিঠির খবর আন্তর্জাতিক কোন সংবাদমাধ্যমে ঠাঁই পায়নি।
যে কারণে এই দুটি বিষয়ের অবতারণা তা হল বহুজাতিকদের পৃথিবী জোড়া আজকের লুন্ঠন ও অবহেলিত জনস্বাস্থ্য।
এবার jumpcut-এ চলে আসুন ২০২০র ভারতে। প্রথম দৃশ্য, গোটা দেশে এই সময়ে করোনা রোগে ব্যবহৃত হয় বলে একটি এন্টিভাইরাল ওষুধ Remdesivir ও Tocilizumab যার দাম ৫৫০০ টাকা প্রতি ভায়ালের দাম, তা বিক্রি হচ্ছে ৫০০০০ থেকে ৬০০০০ টাকায়।
দ্বিতীয় দৃশ্য, বেসরকারি এক হসপিটাল একজন প্রগতিশীল চিকিৎসকের করোনা চিকিৎসার দরুন নাকি ১৮ লক্ষ টাকা বিল করেছে এবং উনি মারা গেছেন। বহু পরিবার ঘটিবাটি বেচেও দেনা চোকাতে পারছে না। রোগী বিল দিতে না পেরে আত্মহত্যা করতে চেষ্টা করছেন।
তৃতীয় দৃশ্য, হিমাচল প্রদেশের ডিজিটাল ভিশন বলে একটি কোম্পানির কলুষিত (contaminated) কাশির সিরাপ খেয়ে জম্মু কাশ্মীরে একজন ও হরিয়ানার একজন শিশু মারা গেছে কিডনি failure হয়ে। Diethylene glycol বলে একটি বৃক্কের জন্য হানিকারক উপাদান থাকায় ২ বছরের শিশুর কিডনি অকেজো হয়ে পড়ে ও মারা যায়।
চতুর্থ দৃশ্য, বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি ঝাঁপিয়ে পড়েছে তাদের ওষুধ ভারতীয় করোনা রোগীর ওপর trial দেওয়ার জন্য যাতে অনুমোদন পাওয়া যায়। Mylan বলে একটি কোম্পানি হেপাটাইটিস সি র ওষুধ Sofosbuvir আরেকটি ওষুধ Declatasvir এর সাথে ব্যবহার করবে বলে দাবি করলেও DCGI সম্পূর্ণ অনুমতি দেয় নি কারণ বিশ্বে কোথাও খুব একটা trial হয় নি।
কি সম্পর্ক ডেভিসন বুথুর বহু বছর আগের চিঠির সাথে আজকের দৃশ্যাবলির?
” Medicine is broken. We like to imagine that it’s based on evidence and the results of fair tests. In reality, those tests are often profoundly flawed. We like to imagine that doctors are familiar with the research literature surrounding a drug, when in reality much of the research is hidden from them by drug companies. We like to imagine that doctors are impartially educated, when in reality much of their education is funded by industry. We like to imagine that regulators let only effective drugs onto the market, when in reality they approve hopeless drugs, with data on side effects casually withheld from doctors and patients.” ডঃ Ben Goldacre এর “Bad Pharma” বইটির সম্পর্কে লিখতে গিয়ে এই কথাগুলো লেখা হয়েছে। আজকের সময় মানুষের স্বাস্থ্য বলতে শুধু রোগসম্বন্ধীয় স্বাস্থ্যের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু সামগ্রিক জনস্বাস্থ্য ও সরকারের ভূমিকা অনুচ্চারিত। বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিগুলোর উত্থানের সময় যে ভূমিকা ছিল তা পুরোপুরি পাল্টে গেল পরবর্তী সময়ে।
চিকিৎসার বা ওষুধের গবেষণা থেকে শুরু করে নতুন ওষুধের ট্রায়াল বা ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া, ক্ষতিকর হানিকারক প্রভাব, সব তথ্য তাদের কব্জায়। সরকারের অংশগ্রহণ তারা কমিয়ে দিয়ে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। বিশিষ্ট চিকিৎসক ও এ বিষয়ে অন্যতম প্রতিবাদী মুখ মার্সিয়া এঞ্জেল তার বই TheTruth about Drug Companies: How They Deceive Us and What to Do about It (Marcia Angell) -তে এও লিখছেন আগে এই কোম্পানিগুলো রোগের জন্য ওষুধ তৈরি করত আর এখন তাদের ওষুধের মত করে রোগকে প্রমোট করছে।
আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণ্য ঘাতক হিসাবে হিটলারকে চিনি। যারা তার গ্যাস চেম্বারে গ্যাস সরবরাহ করে কোটি ডলার মুনাফা লুটল তাদের কি বলবেন? হ্যাঁ I I G Farben ছিল ওই সময়ে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ রাসায়নিক ও ভেষজ শিল্পগোষ্ঠী যা তৎকালীন ৬টি সবচেয়ে বড় কোম্পানি মিলে করেছিল। আগফা (Agfa), বায়ার (Bayer), হেক্সট (Hoechst), BASF সহ আরো দুটি কোম্পানি ১৯২৫ সালে তৈরি করে এই conglomerate। এর ৩৩০০০০ শ্রমিকের অর্ধেক ছিল বিভিন্ন নাজি concentration ক্যাম্পের থেকে যার আবার ৩০০০০ জন এসেছিলেন কুখ্যাত Auschwitz থেকে। যে কোম্পানিতে বিজ্ঞানী গেরহাদ ডোমাক ১৯৩৯ সালে এন্টিব্যাক্টেরিয়াল prontocil আবিষ্কার করে নোবেল পেয়েছেন সেই গোষ্ঠী হিটলারের সবচেয়ে বড় সাহায্যদাতার অন্যতম। এরাই Zyklon B নামক অসম্ভব বিষাক্ত গ্যাস সরবরাহ করত উক্ত ক্যাম্পগুলোতে যাতে ১ মিলিয়নের ওপর মানুষ মারা যান গ্যাস চেম্বারে। নূরেমবুর্গে এদের বিচার হলেও পরে আমেরিকার সাহায্যে মুক্ত হয়। এরা এই ক্যাম্পগুলোতে বন্দীদের বিশেষ করে Auschwitz এ ২০ নম্বর ব্লকে মহিলা হাসপাতালে মহিলাদের শরীরে বিভিন্ন রোগজীবাণু ঢুকিয়ে তারপর বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করত। এতে অকাতরে বহু নিরীহ বন্দি মারা যেত। এসব অপরাধের সাথে অর্জন করত বিপুল মুনাফা। ইতিহাসের পাতায় পাতায় এদের অপকর্ম ছড়ানো কিন্তু কোনদিন প্রচার পায় নি।
এরা দেশে দেশে সরকার তৈরি বা ফেলতে অবৈধভাবে পতন (Coup D’e’tat) ঘটায়। Anglo Persia কোম্পানি ১৯৫৩ সালে বা ইন্টারন্যাশনাল পোস্ট এন্ড টেলিগ্রাফ কোম্পানি এমনভাবে চিলিতে সালভাদর আলেন্দের সরকার ফেলেছিল।
তথ্যসূত্র:
1.https://www.wonderslist.com/10-popular-companies-profited-nazis/
2. Government’s Policies and Growth of Pharmaceutical Industry in India 1947-2018 :A Review Discussion Paper, Prasanta Kumar Ghosh, published by RIS (Research and Information System for developing Countries)
3. Federation of Medical and Sales Representatives’ Associations of India, news and conference documents, Patna 2019
4. শ্যামল চক্রবর্তী, ঐতিহ্য উত্তরাধিকার ও বিজ্ঞানী প্রফুল্ল চন্দ্র, সাহিত্য সংসদ প্রকাশিত, দ্বিতীয় মুদ্রণ ২০১১ সাল।
5. অসুস্থ ওষুধের জগত, Association of Health Service Doctors, ও West Bengal Medical and Sales Representatives Union, লেখক ডাঃ তাপস সেন শ্রী অমিতাভ গুহ, ২০০৮
6. পেটেন্ট কাহিনী আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে,
লেখক অংশুতোষ খাঁ ও শ্যামল চক্রবর্তী,
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ, আগস্ট ২০০৬
7. প্রাচীন ভারতে শল্য চিকিৎসা, লেখক দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, মৌলবাদ ও বিজ্ঞান পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ
8. সাবধান জীবাণুরা নিকটেই আছে! মৃত্যুঞ্জয়প্রসাদ গুহ, জ্ঞান বিচিত্রা প্রকাশনী, জানুয়ারি ২০০৬
9. Pharmaceutical Industry in India wikipedia
10. বিশ্বায়ন ভাবনা দুর্ভাবনা, সম্পাদক অমিয় বাগচী অমিতাভ গুহ, ২০০২, প্রকাশক ন্যাশনাল বুক এজেন্সি
11. The 21 st Century Pharmaceutical and Biotech Sector, Robin ওয়ালশ
12. সবার জন্য নয় ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা dw.
13. National Family Health Survey65(NFHS-4) Ministry of Health and Family Welfare 2015-16
14. What are APIs and How They Threaten India’s Status of a ‘Pharmacy of the World, Himani Chandna, The print 26 th February ,2020
15 .The Health Workforce in India
Human Resources for Health Observer – Issue No. 16 WHO
16. Emergence of Pharmaceutical Science and Industry: 1870-1930 Chemical and Engineering News, vol.83, issue 25
(চলবে)