বিজ্ঞান কথাটার খুব সুন্দর একটা সংজ্ঞা আমার জানা আছে।
Q. What is Science? এক কথায় বলো বিজ্ঞান কাকে বলে?
উত্তরটা হল, ক্ষুদ্রতম আধারে বৃহত্তম তথ্য। অথবা আবিষ্কৃত বস্তু। Maximum information in minimum space.
অর্থাৎ বিজ্ঞান যতই এগোবে, ততই দেখা যাবে জিনিস সাইজে ছোট হচ্ছে। সেই চাকা আবিষ্কার থেকে এর শুরু। চাকা আমাদের গতির সময়কে ছোট করেছিল। যেমন, সূচনালগ্নে একসময় একটা কম্পিউটার রাখতেই একটা বিশাল হলঘর দরকার হয়েছিল, এখন সেটা তোমার হাতের তালুতে। তোমার মোবাইল ফোন এখন তোমার ব্যাঙ্ক, টাকা, রেকর্ড প্লেয়ার, সিনেমাহল, ক্যামেরা, টর্চলাইট, ক্যালকুলেটর, বৈঠকখানা, আলমারি ও আরো কত কী! বোধহয় হার্টবিটটাও। ওটা হারালে হার্টও ভুলভাল বিট দিতে থাকে।
পড়াশোনার কথা ভাবো। তিরিশ বছর আগের I to XI class এর সিলেবাস কোয়ান্টিটির তুলনায় এখনকার ক্লাস ওয়ান টু ইলেভেন বা টুয়েলভ সিলেবাস অনেক বড়। ব্রেনের সাইজ কিন্তু একই থাকছে। কোথাও পড়েছিলাম, আমাদের মগজ নামের যে হার্ড ডিস্কটা মাথায় ইন্সটল করা আছে, এখনো পর্যন্ত তার সিক্স পার্সেন্ট ফাংশন করছে। সময় যত এগোবে, এর ফাংশনিং এরিয়া বাড়তে থাকবে। প্রসেসর বা মাথার RAMটাও আরো উন্নত ভার্সনে পরিবর্তিত হতে থাকবে। কাজেই পড়াশোনার চাপ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে বলে কিছু নেই। ওটা চিরদিনই একই ডায়মেনশনে থেকে যাবে। সায়েন্স তাই বলছে।
অপরাধী সত্যেন্দ্র ধরা পড়ছিল না, সাইবার কাফেতে গিয়েছিল রেলের টিকিট কাটতে। টাকা পয়সা কম পড়ে যাওয়ায় এক মুহূর্তের জন্য মোবাইলটা অন করে একজনকে ফোন করেছিল। জাস্ট দুমিনিটের মধ্যেই পুলিশ চলে আসে সেই সাইবার কাফেতে। খেল খতম। নেটওয়ার্ক এতটাই সজাগ।
মনে করো এক বিরাট মাকড়সার জাল, তার কাছাকাছিই পোকামাকড় উড়ছে। যে মুহূর্তেই পোকাটা জালে এসে পড়লো, ব্যাস, আর রেহাই নেই। অষ্টভুজ এসে তাকে শেষ করবে এবার।
আচ্ছা, স্কুলে তো সবাই পড়েছে জীব ও জড়ের পার্থক্য। জীবিত পদার্থ একের পর এক কোষ দিয়ে সাজানো, সেই কোষের ভেতরে রয়েছে সূক্ষ্ম মুভমেন্ট। সেটাই জীবন। ন্যানোজীবনও বলা যেতে পারে। এত এত সেলুলার ন্যানোজীবন একত্রে করে একটা আস্ত প্রাণী বা উদ্ভিদ সৃষ্ট হয়ে আমাদের জগৎ তৈরি হয়েছে।। আমরা নিজেরাও তাই, তারই অংশ।
এই আইডিয়াটা কাজে লাগানো যায় না?
এই যে প্রাণী বা উদ্ভিদকোষের ভেতরে প্রবহমান সাইটোপ্লাজম প্রোটোপ্লাজমের ন্যানোজীবন, এইরকম ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সেন্সর তৈরি করে প্রতিটি পাঁচশো এবং দুইহাজার টাকার নোটের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে হবে। এই অতিক্ষুদ্র সেন্সরগুলো তখন এক জায়গায় যদি একটি নির্দিষ্ট সংখ্যায়, ধরো পাঁচ হাজার পিস দুইহাজার টাকার নোট জমা হয়, তখন তারা একটা হাইফাই মাকড়সার জালে বিপ বিপ করতে করতে আটকা পড়ে যাবে। আর মাস্টারমাইণ্ড মাকড়সা (গরমেন্ট) তার ন্যাশন্যাল ইনফরমেটিক্স নেটওয়ার্কে দেখতে পেয়ে যাবে কোথায় গিয়ে টাকাগুলো একত্রিত হয়ে সিগন্যালটা দিচ্ছে। লোকেশন ফিক্স করতে তখন জাস্ট ফ্র্যাকশন অফ আ সেকেণ্ড।
এতে লাভ হচ্ছে যে, পাবলিক সেক্ষেত্রে ক্যাশে কালো টাকা বেশি করে জমাতে আর পারবে না। সিগন্যালিং Threshold টা মিনিমাম একটা লেভেলে, ঐ পঞ্চাশ লাখ বা এক কোটির না হয় থাকলো। ১০০ টাকার নোটে আর কতই বা জমাবে? লুকোনোর জন্য তখন বিরাট জায়গা দরকার হবে। তাই ওটাতে সেন্সর না দিলেও চলবে। ইডি ফিডির অত হ্যাপা করাটাই উঠে যাবে। কতখানি সরকারী খর্চা কমে যাবে ভাবতেই আনন্দ হচ্ছে।
এর একটা মুশকিল হল, জনগণের ফোকটে এন্টারটেইনড হওয়ার সুবিধেটা থাকছে না। এই যে ক’দিন আগে টুইটারে ফেসবুকে আমরা টাকার পাহাড় চাক্ষুষ করলাম, সেটা আম পাবলিক খুব মিস করবে। মালটা যেই জমাক, আমাদের তো দেখেও আনন্দ, দুদিন সোশাল মিডিয়ায় খিল্লি করে তারপর ভুলে গিয়েও আনন্দ।
এরকম একটা ফ্যান্টাস্টিক আইডিয়া মনে হয় না কদর পাবে। কারণ দেশটা চালাচ্ছে রাজনৈতিক নেতারা। তারা কি আর নিজের পায়ে কুড়ুল মারবার মত পলিসি পাশ করাবে ঐ দুই গৃহে? কারা যেন সবাই মিলে একই ‘রা’ দেয়?