দেওয়ালির বারবেলা —
নাড়ুদের উঠোনে,
ভূতেদের সংসদী
বাজি অধিবেশনে,
সক্ষোভে প্রশ্নটি
তুলেছিল মামদো
‘মানুষের পৃথিবীতে
কেন এত শব্দ?’
পেঁচো হয় সহমত–
‘মাইরি, যা হচ্চে!
চকলেট, দোদোমা তো
দেদার বিকোচ্চে!
মাঝরাতে উৎকট
চমকানো আওয়াজে
পিলেটা পালিয়ে গেচে
যায়নিকো পাওয়া যে—‘
‘শুধু তাই?’ – নাকে কাঁদে
ফিনফিনে পেত্নি,
তুবড়ির ফুলকিতে
তনু হলো ছাঁকনি—
বডি নেই, তাই বলে
শেমিং তো যায়নি,
মাননীয় মহোদয়,
বলুন তো আপনি?’
নড়া নেড়ে সায় দেয়
মেছো শাঁকচুন্নি
দীর্ঘশ্বাসে তার
ছাতে ওঠে ঘূর্ণি।
নড়বড়ে কার্নিশে
স্পিকারের আসনে
ব্রমদেও বসেছিল
বিষণ্ণ বদনে।
মাজা করে টনটন,
বোঁচা ইঁটে খোঁচা খায় –
এই কি চেয়ার তার?
মনে মনে গজরায়।
এর চেয়ে বসা ভালো
উঠোনের মেঝেতে,
বেলগাছ উড়ে গেছে
আমপানি ঝড়েতে।
খাঁকরিয়ে বাঘা গলা,
স্পিকার নিদান দেয় —
‘যত নষ্টের গোড়া
হোমোস্যাপিয়েনরাই।
শোষণে দূষণে পৃথিবীকে
শেষ করছে,
যুদ্ধে ও দুর্যোগে
নিজেরাও মরছে।
হরেক মড়কে লাগাতার
সাফ হচ্ছে —
তবুও লজ্জা নেই,
হানাহানি চলছে!’
প্রাচীন পান্তভূত
হাজির সপরিবার
ফিকির খুঁজতেছিল
ছানাদের ঠ্যাঙাবার।
খোনাসুরে কমপ্লেন করে
‘জিরো আওয়ারে’—
‘কি যে ক’ন মহোদয়,
বোঝান তো আমারে।
মোবাইল, টিভি
খোকাখুকিদের দখলে —
ট্যাঁপাটেঁপি, ভূশন্ডী
আধুনিক সকলেই।
আমি শুধু পড়ে আছি
সুকুমারী জোছনায়—
ফাঁক আর ফাঁকি বাদে
শেখা কিছু হয় নাই।
‘হুম’ বলে গুম হয়ে
ভাবে গুরু ব্রমদেও,
এত ল্যাবা সংসদে
আছে তবে কেউ কেউ।
তাও তো সে কইছিল
বাঙালির বয়ানে,
গো-ভূতের আমদানি
“হিংস্কৃত” কয়নি।
‘এই বার শোন তবে
ভাষা অতি প্রাকৃত,
জলবৎ বুঝে যাবি,
পুরোটা বা কিঞ্চিৎ।
বজবজ নুঙ্গি ও
চম্পার হাটিতে
যতরাজ্যের বাজি বোমাদের ঘাঁটিতে,
কেলে, পেঁচো, কানাওলা
যত ভূত জুটে যা,
ল্যাসিক্স নামের দুটো বড়ি মুখে ঠুসে যা—-
পাইকারি ভাবে গিয়ে মুতে দিয়ে চলে আয়,
সেখেনের যত বাজি বারুদের বস্তায়।
যেন কারো হিসু হতে হয়না কো গলতি,
প্রত্যেক দোদোমার জ্যাবজেবে সলতে —
ক্যামনে ফাটায় দেখি এই কালীপুজোতে,
হুকুম বোঝেনি বল কোন আড়বুঝো তে?
বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে
মোতা কর রপ্ত —
যা যা সব কেটে পড়,
সেশন সমাপ্ত!’