Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

স্কুলের গল্প ৩: লালুর কীর্তি

279864135_4827028987406938_92095683516781382_n
Dr. Aindril Bhowmik

Dr. Aindril Bhowmik

Medicine specialist
My Other Posts
  • May 13, 2022
  • 9:02 am
  • No Comments
লালু বলল, “বলত দেখি তাড়াতাড়ি… উট উঁচু, উটকা পিঠ উঁচু।”
আমি বললাম, “উট উঁচু, উটকা পিঠ উঁচু। উচ উঁচু, উটকা পিটুচু। উচুচু… উটকা পিচুচু…”
“থাম, তোর দৌড় বোঝা গেছে। মাত্র তিনবারেই চুচু করতে আরম্ভ করেছিস। জানিস এটা আমি একদমে সাতারো বার বলেছিলাম। একদম নির্ভুল।”
আমি বললাম, “বাজে বকিস নে, এমনিতেই আমার মন মেজাজ ভাল নেই।”
কথা হচ্ছিল মধ্যমগ্রাম হাই স্কুলের নাইন ‘ডি’ সেকশানের ঠিক বাইরে। ‘ডি’ সেকশানে পড়ে যত ফেল করা ছাত্র। ভূগোলের স্যার কমলবাবু আমাদের তিনজনকে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছেন। তিনজন বলতে আমাকে, লালুকে, আর নেপালকে। আমাদের অপরাধ আমরা পড়া পারিনি। তার সাথে ভূগোল বইও আনিনি।
অন্য দুজনের তুলনায় আমার মনটা একটু বেশী খারাপ। কারণ লালু আর নেপালকে তিনি শুধু বের করে দিয়েছেন। কিন্তু আমাকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার আগে তাঁর বিখ্যাত মধুমোড়া প্রয়োগ করেছেন। দুই আঙুলের ফাঁকে পেটের চামড়া ধরে একদম তিনশ ষাট ডিগ্রি ঘুরিয়েছেন। বাপরে… এখনও পেটের চামড়া লংকা বাটার মত জ্বলছে।
মধুমোড়া খাওয়া উচিৎ ছিল নেপালের আর লালুর। ওরা তো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টাই করে নি। আমি তো তাও উত্তর দিতে চেষ্টা করেছিলাম।
কমলবাবু আমায় প্রশ্ন করেছিলেন, “শুকতারা আসলে কি?”
আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করে উত্তর দিয়েছিলাম, “স্যার শুকতারা হল ছোটদের একটি পত্রিকা, যাতে বাঁটুল দি গ্রেট, হাঁদা ভোঁদা এইসব থাকে।”
কমলবাবু আমার দিকে খানিকক্ষণ চেয়ে থেকে বললেন, “গর্দভ। শুকতারা আসলে নক্ষত্র নয়, এটি একটি গ্রহ। তুই এরকম আর একটি গ্রহের নাম বলতে পারবি?”
চুপ থাকতেই চেয়েছিলাম। মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল, “স্যার, আনন্দমেলা।”
কমলবাবু হঠাৎ ক্ষেপে গেলেন। চিৎকার শুরু করলেন, “অ্যাঁ… ইয়ার্কি মারছ… অ্যাঁ, শিক্ষকের সাথে ইয়ার্কি। আয়… এদিকে আয়…মজা দেখাচ্ছি।”
তার পরের ইতিহাস গোপন থাকাই শ্রেয়। সে খুব করুণ রসের ইতিহাস।
স্যার আরও একজনকে বার করে দিলেন। সত্য, আমাদের ইস্কুলের ফুটবল টিমের গোলকিপার।
সত্যকে দেখে নেপাল খুব খুশি হল। নেপাল ফুটবল টিমের এক নম্বর স্ট্রাইকার। এতক্ষণও একটা কাগজের বলে শট মারা প্র্যাকটিস করছিল।
সত্যকে দেখে বলল, “তুই বারান্দা থেকে নেমে ঘাসের উপর দাঁড়া। আমি শট করছি। কোমর হাইটের উপর করব। ডাইভ দিস না কিন্তু। প্রচুর ভাঙা ইটের টুকরো রয়েছে।”
ওদের দিকে চেয়ে লালু একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। তারপর বলল, “ইস্‌, স্যার যদি ব্যাগটা সমেত ক্লাস থেকে বের করে দিত। জলের ট্যাঙ্কির অটোম্যাটিক অ্যালার্ম তৈরীর একটা হেব্বি আইডিয়া মাথায় এসেছে।”
লালু আমাদের মধ্যমগ্রাম হাই স্কুলের নাইন ডি সেকশানের এক ইউনিক প্রতিভা। মাঝে মাঝেই নিত্য নতুন জিনিস বানিয়ে সকলকে চমকে দিচ্ছে। ওর ভাল নাম চঞ্চল। কিন্তু সেই নাম অনেকেই জানে না। স্যাররা পর্যন্ত ওকে লালু বলে ডাকেন। ওর ব্যাগ সবসময় আজব আজব জিনিসে ভর্তি। স্ক্রু ড্রাইভার থেকে মেয়েদের মাথার ক্লিপ কোনোটাই বাকি নেই। ওর বক্তব্য, “কখন কি আবিষ্কারের পরিকল্পনা মাথায় আসে ঠিক নেই। তখন কি মালপত্র খুঁজতে বের হব? বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার অনেকটা কবিতা লেখার মত। একবার ভাব চটকে গেলে আর ফেরত আসে না।”
খানিকক্ষণ মনমরা মুখে চুপ থাকার পরে লালু বলল, “পদা একটা নেমকহারাম।”
আমি বললাম, “কেন পদা কি করল?”
“ও আমাদের প্রিয় স্যার হারাধনবাবুকে অপমান করেছে।”
আমি বাস্তবিকই অবাক হলাম। হারাধনবাবু আবার প্রিয় হলেন কি করে? কানমলা দিয়ে দিয়ে তিনি লালুর কানকে প্রায় খরগোসের কান বানিয়ে দিয়েছেন। আর প্রদীপ্ত কি করেই বা স্যারকে অপমান করল?
প্রদীপ্ত খুবই শান্ত শিষ্ট ছেলে। কথাও কম বলে। ওর একটাই শখ। সেটা ওর চুল নিয়ে। ওর চুল প্রায় ঘাড় ছুঁয়েছে। দুই কান চুলের তলায় ঢাকা পরেছে। এক একদিন এক একরকম ভাবে চুল আঁচড়ে আসে। সিঁথি কোনও দিন ডান দিকে, কোনও দিন বাঁ দিকে। আজ আবার মাঝখান দিয়ে সিঁথি করেছে।
আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাল, “একিরে পদা, মেয়েদের মত মাঝখান দিয়ে সিঁথে করেছিস কেন?”
পদা কপালের থেকে হাত দিয়ে চুল সরিয়ে বলেছিল, “এটা হ’ল এক রকমের চুলের স্টাইল। একে বলে বাবরি চুল।”
আমি বলেছিলাম, “ঠিক বলছিস তো? যারা রাস পূর্ণিমার সময় অষ্টপ্রহর কীর্তন করে ঘুমের বারোটা বাজায় তাদের এরকম চুল দেখেছি।”
পদা পকেট থেকে একটা চিরুনী বার করে মাথাটা আঁচড়ে নিয়ে বলেছিল, “তুই কিস্যু জানিস নে। এটাই এখন লেটেস্ট স্টাইল। হেব্বি চলছে।”
লালু উদাস মুখে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল। বললুম, “কি দেখছিস?”
লালু বলল, “জানিস, প্রচীন কালে সূর্য দেখে লোকেরা সময় বলে দিতে পারত।”
আমি বললাম, “এটা প্রাচীন কাল নয়। সময় দেখার জন্য এখন ঘড়ি পাওয়া যায়। তাই আমি ঐ নিয়ে মাথা ঘামাতে ইচ্ছুক নই। কিন্তু তুই আগে বল, কি করে পদা হারাধনবাবুকে অপমান করল?”
“হারাধনবাবু গত এক মাস ধরে ওকে চুল কাটতে বলছেন। কিন্তু পদার কোন ভ্রূক্ষেপই নেই। এভাবে একজন শিক্ষকের কথার অমান্য করা মানে তাকে যে অপমান করা সেই বোধটুকু নিশ্চয়ই তোর আছে।”
আমি বললাম, “কিন্তু কথা না শোনার জন্য হারাধনবাবুতো মনের সুখে পদার দুই কান মলে মলে গরম শিঙাড়া বানিয়ে দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে আমারতো মনে হয় এ ব্যপারে আমাদের আর কারও মাথা না ঘামানোই ভাল। তাছাড়া দেখ, হারাধনবাবু যদি পদার কান নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে আমাদের কানগুলো একটু বিশ্রাম পায়।”
লালুর দিকে তাকিয়ে মনে হল ও আমার কথা আদৌ শুনছে না। ও মন্ত্রমুগ্ধের মত জানলার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি বললাম, “কি হল?”
ইংরাজীতে ফেল করা লালু বলল, “এ মিরাকেল আইডিয়া।”
লালুর মুখে ইংরাজী শুনে বুঝলাম নিশ্চয়ই ওর মাথায় দুধর্ষ আবিষ্কারের পরিকল্পনা এসেছে। বললাম, “এবারে কি বানাবি?”
“হুঁ হুঁ… দেখতে পাবি।”
পরের ক্লাস হারাধনবাবুর। উনি ভৌতবিজ্ঞান পড়ান। এসব ভুতুড়ে বিজ্ঞান কি করে লোকে মনে রাখে ভগবান জানেন।
হারাধনবাবু অণু পরমাণু পড়াচ্ছেন। শেষ বেঞ্চে আমি, লালু আর গণেশ বসেছি। লালু ফিসফিস করে বলল, “শুধু প্রার্থনা কর পদাকে যেন প্রথমেই পড়া না ধরে।”
প্রথমে ধরলেই তো ভাল। প্রদীপ্ত ভৌত বিজ্ঞানের ভৌটুকুও জানেনা। তাছাড়া ওর বাবরি চুলের দিকে নজর পড়লে স্যার ওকে নিয়েই ক্লাসের অর্ধেক সময় কাটিয়ে দেবেন। সেক্ষেত্রে পদা শহীদ হয়ে আমাদের হারাধনবাবুর হাত থেকে রক্ষা করবে।
গণেশ আমার পাশে বসে খাতায় কি যেন লিখছে। জিজ্ঞাসা করলাম, “এতো মনোযোগ দিয়ে কি লিখছিস?”
“কবিতা।”
“কবিতা, তাই নাকি? দেখি, দেখি…” বলে লালু আমার ঘাড়ের উপর দিয়ে প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়ল গণেশের খাতার উপর। এবং যা অবশ্যম্ভাবী ছিল, তাই হল। হারাধনবাবু লালুর দিকে তাকিয়ে আঙুল নাচিয়ে বললেন, “এই যে লাস্ট বেঞ্চ। তুমি এত ছট ফট করছ কেন?”
লালু মাথা নীচু করে দাঁড়াল। বলল, “স্যার, গণেশ কবিতা লিখছিল। আমি সেটা দেখছিলাম।”
“কবিতা? অ্যাঁ…” হারাধনবাবু চমৎকৃত হলেন। “তোমাদের কি মনে হয় এটা সাহিত্যের ক্লাস চলছে… অন্যদের কি মত? তুই দাঁড়া।” স্যারের আঙুল এবার গণেশের দিকে।
গণেশ লালুর দিকে একবার কড়া দৃষ্টিপাত করে উঠে দাঁড়াল। হারাধনবাবু বললেন, “পড়, কি কবিতা লিখেছিস।”
গণেশ পড়তে আরম্ভ করল,
“অণু আর পরমাণু অতিশয় সূক্ষ্ণ,
এই নিয়ে তাহাদের মনে আছে দুঃখ।
দুজনেতে কমপ্লান খেয়ে রোজ সকালে,
ফুলে হল ফুটবল দেখে যাও সকলে।
বেশীক্ষণ রহিল না আনন্দের রেশ,
দুই বেলা লাথি খেয়ে প্রাণ হল শেষ।”
সমস্ত ক্লাস নিস্তব্ধ। ঝড়ের আশংকায়। তার মধ্যে লালু হঠাৎ বলে উঠল, “স্যার, কবিতাটা ভালই হয়েছে। কিন্তু ঐ সকালের সাথে সকলের মিলটা ভালো লাগছে না।”
“আয়, আয় এদিকে আয়। তোদের কবিতা লেখা শিখিয়ে দিচ্ছি।” হুংকার দিয়ে উঠলেন হারাধনবাবু।
বিষণ্ণ মুখে গণেশ আর লালু স্যারের কাছে গেল। গনেশ মাঝে মাঝেই আগুনে দৃষ্টিতে লালুর দিকে তাকাচ্ছে। আর লালু যেন কিছুই হয়নি এমন মুখ করে জানলার দিকে চেয়ে আছে।
হারাধনবাবু দুহাতে দুজনের কান ধরলেন। এবার দুজনের কানের অস্থি… সরি তরুণাস্থি না ভাঙা পর্যন্ত স্যার কান ছাড়বেন না। দুজনের মুখে যত যন্ত্রণার ছাপ পড়ছে স্যারের মুখটা তত প্রসন্ন হয়ে উঠছে।
হঠাৎ পরপর অনেকগুলি ঘটনা ঘটল। প্রদীপ্ত “আগুন… আগুন…” বলে চেঁচিয়ে উঠল। দেখলাম ওর সাধের চুলে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। ওর পেছনে সত্য থাবড়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। পাশ থেকে পরিমল ওয়াটার বোতলের পুরো জল প্রদীপ্তর মাথায় ঢেলে দিল।
স্যার হকচকিয়ে দুজনের কান ছেড়ে দিয়েছেন। ঘরের বাতাসে চুল পোড়ার কটুগন্ধ ভাসছে। প্রদীপ্ত জলে ভিজে চুপচুপ করছে। মাথার পেছনের চুল আগুনের তাপে ঝলসে গুটিয়ে গেছে। ওর মুখ দেখে মনে হচ্ছে এখুনি ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলবে।
হারাধনবাবু একটু সামলে নিয়ে চিৎকার করলেন, “কে প্রদীপ্তর চুলে আগুন ধরিয়েছে। কে…? ওর ঠিক পেছনে কে বসেছিল?”
সত্য উঠে দাঁড়াল। বলল, “স্যার, বিশ্বাস করুন। আমি কিছু করিনি।”
স্যার বললেন, “তাহলে কে করেছে? নিজে নিজে আগুন ধরে গেছে? তোর নাম সত্যব্রত। আর তুই নিজেই মিথ্যে বলছিস।”
সত্য দৃঢ় গলায় বলল, “আমি করিনি স্যার। আমি বরঞ্চ আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি।”
হারাধনবাবু বললেন, “দাঁড়া, হেডস্যারকে ডাকি। তাহলেই যেই করে থাকিস, মজা টের পাবি।”
হেডস্যার নারাণবাবু পরিস্থিতি বুঝতে সামান্য সময় নিলেন। তারপর বললেন, “ছ্যামড়াটাকে সার্চ কর।”
সত্যের পকেট থেকে অর্ধেক প্যাকেট বিড়ি আর একটা দেশলাই পাওয়া গেল। হেডস্যার বললেন, “সত্য, তোরে আমি স্কুল থেকে, ফুটবল টিম থেকে বার করে দেব। ছিছি… তুই সুব্রত কাপে খেলা প্লেয়ার। তুই কিনা পকেটে বিড়ি নিয়ে ঘুরছিস। জানিস, বিড়ি খেলে তোর দমের অবস্থা কি হবে? এক পা দৌড়াবি আর কুত্তার মত জিভ বের করে হাঁপাবি। ছি ছি, নিজের বন্ধুর চুলে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছিস। কদিন বাদে তো তোর ইচ্ছে হবে শিক্ষকদের চুলেও আগুন লাগাই। দুষ্টু গরুর চাইতে শূন্য গোয়াল ভালো। তোকে মারবোও না, পেটাবোও না। শুধু ব্যাগটা নিয়ে চুপচাপ ক্লাস থেকে বের হয়ে যা। আর এ মুখো হবিনা।”
সত্য ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলল। ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল, “স্যার, আমি সত্যি বলছি, মা কালী বলছি, মারাদোনার নামে শপথ করে বলছি আমি পদার চুলে আগুন ধরাইনি।”
লালু হঠাৎ বলে উঠল, “স্যার, সত্য কিন্তু সত্যি কথাই বলছে। পদার চুলে ও আগুন ধরায় নি। আগুন ধরিয়েছি আমি।”
হারাধনবাবু বললেন, “কি যাতা বলছিস। সে সময় তো তোর কান আমার হাতের মধ্যে ছিল। তুই ছিলি আমার কাছে। তুই আগুন লাগাবি কি করে?”
লালু বলল, “কি করে লাগিয়েছি বলব না। কিন্তু আমিই লাগিয়েছি এটা সত্যি। এটুকু বলতে পারি যে পদ্ধতিতে লাগিয়েছি সেটা আপনিই শিখিয়েছেন।”
হেডস্যার বললেন, “সেকি হারাধন, তুই আজকাল ছাত্তরদের চুলে আগুন লাগানো শেখাচ্ছিস নাকি?”
হারাধনবাবু লালুকে বললেন, “উল্টো পাল্টা বকিস না। সব কিছু খুলে বল।”
লালু বলল, “স্যার, আমি কিছুতেই বলব না। অনেক বুদ্ধি খটিয়ে এটা আমার নতুন আবিষ্কার।”
তারপর খোঁজাখুঁজি আরম্ভ হল। লালুর ব্যাগ থেকে জিনিস পত্র বের করা হল। বই খাতা কিছু নেই। শুধু একটা নোট বই আর পেন্সিল আছে। তাছাড়া নানা রকম জিনিস পত্রে ব্যাগ ভর্তি। নানা রকম ইলেকট্রিক সার্কিট, একাধিক ব্যাটারি, ডজন খানেক সেফটিপিন, গার্ডার, ছোটো ছুরি, কাঁচি, নাট বল্টু, কম্পাস কি নেই ব্যাগের ভেতরে। এমনকি একটা কৌটোর মধ্যে তিনটে জ্যান্ত আরশোলাও পাওয়া গেল।
খোঁজ চলছে। হেড স্যার যেখানে প্রদীপ্ত বসেছে সেখানে গেলেন। ভালো করে দেখলেন। জল মুছে সেখানটায় বসলেন। তারপর পিছন ঘুরে চারদিক ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলেন। জানলার দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকলেন।
অবশেষে হেডস্যার জিনিসটা আবিষ্কার করলেন। জানলার গ্রিলের সাথে একটা আতস কাঁচ বাঁধা। এর জন্যই লালু বাইরে থাকার সময় একবার সূর্যের দিকে আর একবার জানলার দিকে তাকাচ্ছিল। হিসাব করছিল, আতস কাঁচটা কোথায় বাঁধলে সূর্যের আলো প্রদীপ্তর চুলের উপর ফোকাস হবে।
সে যাত্রা হেডস্যার লালুকে আগাপাশ তলা পিটিয়ে ছেড়ে দিলেন। লালু পরে বলেছিল, “বিদেশ হলে আমায় মাথায় করে রাখত। এদেশে জন্মে পদাঘাতই শুধু পেলাম।”
প্রদীপ্ত আর কোনও দিন চুল নিয়ে স্টাইল দেখাতে যায়নি। এরপর থেকে প্রতিমাসে ও চুলে কদমছাট দিত। সত্য এখন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। সেনাবাহিনীর ফুটবল দলের গোলকিপার।
ছবি আমার আঁকা নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির আঁকা। ?
PrevPreviousইন্টারন্যাশনাল নার্সেস ডে
Nextমাত্র ৩ টে টিপস মানলে সুস্থ সন্তান হবেNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

ডক্টরস’ ডে-তে কিছু ভাবনা-চিন্তা

July 3, 2022 No Comments

আজ ডক্টর্স ডে। ডাক্তারদের নিয়ে ভালো ভালো কথা বলার দিন। ডাক্তারবাবুদেরও নিজেদের মহান ভেবে আত্মপ্রসাদ লাভের দিন। দুটিই বাড়াবাড়ি এবং ভ্রান্ত। কেননা, স্রেফ একটি বিশেষ

কেন? প্রথমাংশ: ছ’তলার রহস্য

July 3, 2022 No Comments

~এক~ হাতের বইটা নামিয়ে রেখে মিহির গুপ্ত দেওয়ালের ঘড়ির দিকে তাকালেন। পৌনে একটা। ঘরে একটাই রিডিং ল্যাম্পের আলো। নিভিয়ে দিলেন। বাইরে ঝিমঝিমে অন্ধকার। শহর হলে

মেডিক্যাল কলেজের ইতিহাস (২য় পর্ব) – ১৮৬০ পরবর্তী সময়কাল

July 3, 2022 No Comments

ষষ্ঠ অধ্যায় – মেডিক্যাল শিক্ষার অন্দরমহলে নারীর প্রবেশ প্রিন্সিপাল ডি. বি. স্মিথের পেশ করা ১৮৭২-৭৩ শিক্ষাবর্ষের রিপোর্টের শুরুতে খবর দেওয়া হল – কেমিস্ট্রি ও মেডিক্যাল

যেখানের কথা বলতে হয় ফিসফিস করে

July 2, 2022 No Comments

মাঝবয়সী, ৪০-৪৫ বছরের মানুষ। কাজ করতে গেলে ভয়, বাইরে বেরোলে ভয়, বেশি মানুষ দেখলে ভয়, একা থাকলে ভয়। তার সঙ্গে জুড়ে আছে অনেকদিন ধরে চলতে

কাল যেমন ছিলাম আজও তেমনই আছি,……অতি সাধারণ একজন খেটে খাওয়া মানুষ।

July 2, 2022 No Comments

লিখব না, লিখব না করেও লিখে ফেললাম। আজ এক ডাক্তার বন্ধু’র দেয়ালে এই চমৎকার লাইনগুলো দেখার পরে না লিখে পারলাম না। বন্ধুটি আবেদন করছে: “বুকে

সাম্প্রতিক পোস্ট

ডক্টরস’ ডে-তে কিছু ভাবনা-চিন্তা

Dr. Bishan Basu July 3, 2022

কেন? প্রথমাংশ: ছ’তলার রহস্য

Dr. Aniruddha Deb July 3, 2022

মেডিক্যাল কলেজের ইতিহাস (২য় পর্ব) – ১৮৬০ পরবর্তী সময়কাল

Dr. Jayanta Bhattacharya July 3, 2022

যেখানের কথা বলতে হয় ফিসফিস করে

Dr. Aniket Chatterjee July 2, 2022

কাল যেমন ছিলাম আজও তেমনই আছি,……অতি সাধারণ একজন খেটে খাওয়া মানুষ।

Dr. Samudra Sengupta July 2, 2022

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

399651
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।