যে অভয়ার মা-বাবাকে পুলিশ পয়সা দিয়ে মুখ বন্ধ করতে চায়, মুখ বন্ধ না হলে আবার পয়সা নেওয়ার কথা চেপে যেতে বাধ্য করে, সেই মা-বাবার মেয়েকে স্বাস্থ্য ভবনের দুষ্টচক্র যে দমাতে পারেনি সেটাই স্বাভাবিক। সেই অসম লড়াইতে অভয়া হেরে গেছে হয়তো, কিন্তু যে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে গেছে, সেই আগুনে এই সরকাররূপী রাক্ষস জ্বলেপুড়ে ছাই হবে। আজ অভয়ার জন্য যে একতা আমাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে এবং যে ঘটনাক্রম হয়ে চলেছে- তাতে আমরা বেশ বুঝতে পারছি পাঁচটা সৎ লোক এক হলে এবং অন্তত একটা সৎ মিডিয়া সেটা কভার করলে সমাজের খোলনলচে বদলে ফেলতে এক মিনিটও লাগে না।
এই যেমন ধরুন আজ সকাল থেকে বিভিন্ন কলেজের বাইরে ভুঁইফোড় কিছু ক্যাম্প গড়ে উঠেছে- সহায়তা কেন্দ্র হিসেবে। চটিচাটা বর্তমান কাগজ তাদের হাতে- তাতে লেখা কর্মবিরতির ২৭দিন- ৬৫০০ অস্ত্রোপচার ক্যানসেল। সেই কাগজ দেখিয়ে সরকারি হাসপাতালের রোগীদের বকলমে বেসরকারি হাসপাতালে পাচার করার কাজ করছিলেন সকাল থেকেই। তাদের নাকি কে.এম.সি. থেকে বসানো হয়েছে এবং সুপারের অনুমতিও নেওয়া আছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের থেকে জানা গেল এরকম কোন অনুমতিপত্র তাঁরা দেননি, পুরোটাই মৌখিক আলোচনার স্তরে ছিল, বাকিটা ধোঁয়াশা। এরপর ডেপুটি সুপার স্যারকে সঙ্গে নিয়ে চাপ দিতেই বেরোলো তাঁরা কিছু জানেন না, তাঁদের বসতে বলেছে তাই তাঁরা বসেছেন। একটু পর তাঁদের হয়ে কথা বলতে এলেন একজন মহারথী- যাঁকে দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন কোন রঙের। পরিচয় জিগ্যেস করতেই ডায়াগনোসিস কনফার্ম- তিনি তৃণমূলের ব্লক প্রেসিডেন্ট এবং লোকাল কাউন্সিলরের স্বামী। কোনোভাবেই তাঁর সঙ্গে এই ক্যাম্পের ব্যাপারে আলোচনা করা যায়না বলে তাঁকে বিদায় দেওয়া হলো। কিন্তু যে দল, সরকারি হাসপাতালের রোগীদের জন্য চোখের জলে টেমস নদী অব্দি ভাসিয়ে দেয়, তাঁদের দলের লোকেরা সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী পাচার করে কীভাবে বোঝা গেল না।
তারপর এলো পুলিশ, তারাও কিছু জানেনা। তারপর এলো তাদের একধাপ উপরের অফিসার- তার কাছেও কোনো নোটিশ নেই। অবশেষে তারাই ক্যাম্প উঠিয়ে দিল হার মেনে। চারিদিকে আওয়াজ উঠলো- we want JUSTICE…
আমরা এক অদ্ভুত সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। চারিদিকে দুষ্টচক্র যেভাবে নগ্ন হচ্ছে, যেভাবে মানুষ রুখে দাঁড়ানোর শক্তি খুঁজে পাচ্ছে, অবাক লাগছে। আমার এই সময় কার্ডিওলজির শেষ ক’মাস পড়াশোনা ঝালিয়ে নেওয়ার কথা, থিসিস লেখার কথা- তা না করে কী করে বেড়াচ্ছি জানিনা। তবে যাই করছি, সন্তুষ্টি হচ্ছে একটা। কোথাও যেন বিশাল একটা কিছু পরিবর্তনের সুর বাজছে… আর এসব কিছুর জন্য দায়ী একজনই- অভয়া
আমি প্রার্থনা করবো ওর মা-বাবাকে যেন কেন্দ্রীয় সুরক্ষা দেওয়া হয়, এই অপদার্থ জোচ্চোর মিথ্যাবাদী ব্যভিচারী ঠগ পুলিশের হাতে ওরা আদৌ সুরক্ষিত নয়।।
চমৎকার 🌹
Very nice