মেয়েদের প্রস্রাবের সংক্রমণ খুব সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। একজন পুরুষের প্রস্রাব নালিকার গড় দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ সেন্টিমিটার। সেখানে মেয়েদের প্রস্রাব নালিকার দৈর্ঘ্য মাত্র ৫ সেন্টিমিটার মতো। তাই মেয়েদের প্রস্রাবে ইনফেকশনের হার পুরুষদের তুলনায় বেশ কয়েকগুণ বেশি। তাছাড়া আমাদের দেশের সাধারণ টয়লেটের অপরিচ্ছন্ন অবস্থাও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। তার ওপর যৌনাঙ্গ পরিচ্ছন্নতার স্বাস্থ্যবিধির সঠিক কৌশল বেশিরভাগ মানুষই মেনে চলেন না।
রোগ উপসর্গ ও লক্ষণ:
১. জ্বর – প্রস্রাবে সংক্রমণ হলে সাধারণত উচ্চ মাত্রার জ্বর হয়। সঙ্গে কাঁপুনি ও হতে পারে।
২. প্রস্রাবের সময় প্রস্রাবের পথে তীব্র জ্বালা।
৩. ঘন ঘন প্রস্রাব।
৪. তলপেটে ব্যথা হতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা:
১. Urine for RE and ME (routine and microscopic examination)
2. Urine Culture with Sensitivity (সব ক্ষেত্রে প্রয়োজন নেই। বারংবার এই সমস্যার শিকার হলে তবেই দরকার পড়ে।)
৩. USG of KUB.
চিকিৎসা:
১. প্রথমত একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
২. প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন (প্রায় ৪-৫ লিটার মতো)।
৩. জলে পাতিলেবুর রস যোগ করতে পারেন।
৪. যৌনাঙ্গের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
৫. ডাক্তারের পরামর্শ মতো, প্রয়োজন হলে তবেই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খান।
প্রতিরোধ:
সংক্রমণ রুখতে যৌনাঙ্গ পরিচ্ছন্নতার সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
১. অন্তর্বাস সবসময় শুকনো রাখুন। (প্রতিবার প্রস্রাবের পরে শুকনো নরম কাপড় বা টয়লেট পেপার দিয়ে যৌনাঙ্গ মুছুন)
২. মাসিকের রক্তক্ষরণের সময়কালে প্রতি ৪-৬ ঘন্টা পরপর স্যানিটারি প্যাড পরিবর্তন করুন। (ভারী রক্তপ্রবাহের ক্ষেত্রে ৩-৪ ঘন্টা পরপর)
৩. সহবাসের পরে অতি অবশ্যই জল দিয়ে যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করুন। (এটি অভ্যাসে পরিণত করুন)
৪. যৌনাঙ্গ ধোয়ার সময় সাবান ব্যবহার করবেন না।
৫. যৌনাঙ্গে সুগন্ধিযুক্ত পণ্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
৬. নিরাপদ যৌন-অনুশীলন করুন। (যৌনক্রিয়ার সময় কোনো তৈলাক্তকর পদার্থ ব্যবহার করবেন না)
৭. যতটা সম্ভব শিথিল পোশাক পরুন। (সুতির অন্তর্বাস ব্যবহার করুন)
৮. যৌনাঙ্গ মোছার সঠিক উপায় শিখুন। (যৌনাঙ্গ সবসময় সামনের থেকে পিছনের দিকে পরিষ্কার করুন, উল্টোদিকে নয়)
৯. যৌনাঙ্গের চুল শেভ করবেন না। (চুল রোগজীবাণু প্রবেশের হাত থেকে রক্ষা করে)
সংক্ষিপ্ত এবং সঠিক ভাবে উপস্থাপিত।