একটা মেয়ে ঝুলছিলো, নির্বসনা দুলছিলো,
দূর গাঁয়ে নয় , রাজধানীতে,
হাসপাতালে ডিউটি দিতে,
রোগীর সেবায় জাগছিলো সে, স্রেফ সেটুকু ভুল ছিলো।
আর্জি করে পায়নি সে ঘর,
যেমন পারিস ডিউটিটা কর,
মোস্ট সিনিয়র ডাক্তারেরও সময় একই রুল ছিলো,
ঘুম কাড়া রাত, ঘাম ঝরা দিন,
এ শিক্ষাতে নেহাত রুটিন,
বাকির মতোই তাই করে মেয়ে স্বপ্ন গড়ে তুলছিলো..
ধর্ষিত আর খুন হওয়া যার মর্গেতে লাশ ফুলছিলো।
হাসপাতালে সিকিউরিটি..
থাকা উচিৎ, ছিলো না রে
আসতে যেতে সিসিটিভি..
থাকা উচিৎ, বাজেট বাড়ে,
ডিউটিতে থাক দুজন রাতে..
হওয়া উচিৎ, লোকের অভাব
আরো হাজার রকম খুঁতে ওপরমহল হাজির জবাব,
সাফাই দেওয়ার ছুতোগুলো ভীষণরকম স্থূল ছিলো,
তড়িঘড়ি করতে আড়াল স্যুইসাইডের গুল ছিলো।
হোক ডাক্তার, যেহেতু মেয়ে,
কাজেই ন্যূন পুংএর চেয়ে,
অনেক লোকের ধ্যানধারণায় তালিবানের স্কুল ছিলো
অত রাতে করছিলো কী ,সেই সওয়ালের হুল ছিলো,
রোগীর সেবা ভালোবেসে,
হাসপাতালেই জাগছিলো সে
বাড়ির থেকেও তা নিরাপদ, বিশ্বাসই যার মূল ছিলো,
নিজের কলেজ নিজের বিভাগ, ভুল কিসে একচুল ছিলো?
এইবার হবে খুব হইচই,
‘ অপরাধী খুঁজে বের করবোই’
গতানুগতিক সেই আশ্বাস,
আসবেই ঠিক, বদল না খাস,
নিয়মমাফিক বসবে কমিটি ,
প্রকাশিত হবে প্রতিবাদী চিঠি,
তারপরে সব থিতু যথারীতি,
একটি ভীতির স্থায়ী হবে স্থিতি,
ঘটনা দেখবে যখনই যে ঘুরে ,
বুঝবে প্রভাব গিয়েছে কী দূরে,
‘ আমি নিরাপদ’ সেই ধারণাকে খুন করা কুড়ুল ছিলো।
তোমার আমার বাড়ির মতো কারোর ঘরের ফুল ছিলো,
মেধার জোরে যে আগামীর স্বপ্নদুয়ার খুলছিলো…
আমার দোরে, আমার দেশে,
কার দোষে আজ লাশ হোলো সে,
ডাক্তার না নারী হওয়া, কোনখানে তার ভুল ছিলো?
কোনখানে তার ভুল ছিলো?