মোবাইল আমাদের মত খুপরিজীবী চিকিৎসকদের কাছে অভিশাপ বিশেষ। এক কন্সটিপিটেড মহিলাকে ফোনে বলেছিলাম “সফটোভ্যাক” খেতে। তিনি তিনদিন ধরে ক্রমাগত শক্ত ভাত খেয়ে খুপরিতে এসে আমার বাপ বাপান্ত করে গেছিলেন। গালি শুনতে শুনতে আমার এয়সা হাসি পাচ্ছিল, ভাগ্যিস মাস্ক পরে ছিলাম!!
মাস্কে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও আরও অনেক কিছু আটকায়। এক ডায়াবেটিস রোগীকে বলেছিলাম, ‘ওষুধ খেয়ে একমাস পরে ফাস্টিং সুগারটা করে আনুন।’
ভদ্রলোক বললেন, ‘ডাক্তারবাবু, শুধু ফার্স্টিং করলেই হবে? সেকেন্ডিং সুগারটা করার দরকার নেই?’ মাস্ক আবার বাঁচিয়ে দিল।
আমি চিররুগ্ন সর্দি-কাশিতে ভোগা বদ্যি। লকডাউনের পর থেকে আমার সর্দি-কাশি একেবারেই কমে গেছে। সম্ভবত সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকায়।
কিন্তু সেসব তো নেহাত গৌণ সুবিধা। কিছু বিরক্তিকর রোগী থাকেন- যাঁদের নিয়মিত গ্যাস মাথায় উঠে, প্রেসারের ওষুধ বন্ধ করে হোমিওপ্যাথি খান এবং শরীর কেন সুস্থ হচ্ছে না তাই নিয়ে ঘ্যান ঘ্যান করেন। মাস্কের আড়ালে তাঁদের ইচ্ছেমতো জিভ ভ্যাংচানো যায়। এতোদিন গালাগালি দিয়ে যে প্রাণের আরাম পাইনি, জিভ ভেংচে সেই আরাম পাচ্ছি।
ভ্যাকসিন পেয়ে গেলেও, করোনা চলে গেলেও আমি তাই মাস্ক ছাড়ছি না। দাড়িও কাটছি না। সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকলে দাড়ি গোঁফ কাটার সময়টা বাঁচে।