লকডাউন হবে নাকি দাদা? প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলো যে লোকটা স্বরে ভয় মেখে,
তার মুখে মাস্ক ছিলো না। কালো বাদুরের মতো ঝুলছিলো একটা কান থেকে,
কাকতাড়ুয়ার মতো ভাইরাসতাড়ুয়া ভেবেছে মাস্ককে বোধহয় সে
এতদিন ধরে ।
উত্তর দিতে গিয়ে আশেপাশে দেখি। যতদূর চোখ যায় , খুব কম লোক আছে মুখে মাস্ক পরে।
কিছু তো চায়নি ওই বোকাসোকা ডাক্তারগুলো। বলেছিলো মাস্ক পরো সব নাগরিক,
( সবজান্তাগুলো নেতাদের চেয়ে বেশি জানে। ভিন্ন চারঅক্ষর লাগে বেশি স্বাভাবিক)
কেউ পরেনি। করোনিল ইত্যাদি হাবিজাবি প্রোমোট করেন দেশে মন্ত্রীমশাই,
অথচ মাস্কের আজও কোনো নিয়ামক নেই, মুখ ঢেকে রাখুক না যা ইচ্ছে তাই,
দেশের প্রধানমন্ত্রী পেট্রোল পাম্পে তাঁর ছবি দেন মুখময় গামছা পেঁচিয়ে,
সুতরাং জনগণ তা করলে দোষের কি! তারা তো ধরেই নেবে ডাক্তারগুলো বোকা-ইয়ে।
করোনা ছড়াচ্ছে যে, তার কি বিহিত হবে, এবারের কোভিডটা কত ক্ষতিকর,
তাই নিয়ে আজ কারো আগ্রহ নেই। সকলেই জেনে গেছে লুকিয়ে ফেলতে হবে ডাইরিয়া জ্বর,
নিতান্ত বাধ্য না হলে আর টি পি সি আর করাটা বস্তুত কুড়ুলে সজোরে মারা পা।
কারণ তখন সে একঘরে হবে, জীবন যাক না যাক জীবিকাটি কালো প্লাস্টিক মুড়ে ধাপা,
তলানিতে এসে ঠেকা রোজগারে সে ধাক্কা সামলানো মুশকিল। তার ওপরে ভোটচাওয়া ভিড়ে,
নেতারা প্রকারান্তরে বার্তা শোনান , যা কিছু সতর্কবাণী সরকার থেকে আসে মহামারী ঘিরে,
সব অগ্রাহ্য করা যায়। আজ বাদে কাল, তাঁদেরই কেউ গিয়ে বসবেন সরকার হয়ে,
ততদিনে যা হবার হবে। গঙ্গাযমুনা দিয়ে অবিরাম কত জল চলে যায় বয়ে,
তারই স্রোতের সাথে ভেসে যাবে মহামারী পরিসংখ্যানও। আসলে নেতারা ধনী, ভোটার গরীব,
এই বিভাজনটা দিনে দিনে বেড়ে চলে। ঐশ্বর্যবানের আছে কর্পোরেটসেবা, বাকিদের যেমন নসিব,
আল্লাহ বা রাম রাখলে থাকে, নয়তো ভোট দিয়ে মরে যায় ,
করোনা ডেঙ্গি ম্যালেরিয়া অথবা দুর্ঘটনাতে,
রাষ্ট্রের যন্ত্রে তাতে আওয়াজ ওঠে না। ভোট দিয়ে দিলে, বাকি আর কিছু নেই ভোটারের হাতে।
সুতরাং, নেতাদের অসুবিধা হলে, হবে লকডাউন । এর সাথে বিজ্ঞানের সম্পর্ক নেই কিছু,
ওনারা যেমন চান, তেমনটি হয়েছে ও হচ্ছে ,আমাদের মেনে নিতে হবে জোড়হাতে করে মাথা নিচু,
একজনও মাথা তুলে প্রশ্ন করবে না, শুধুই রাত্রে কেন অথবা শনি ও রবি কোন সে খেয়ালে ,
এইদেশে নিয়ম একটাই। সুনাগরিক হলে তা থৈ নাচতে হবে রাজাদের তালে,
ওনাদের ভালো আর মন্দতে তোমারও কপাল জেনো ওঠানামা করে।
কাজেই ওসব নিয়ে ভেবে লাভ নেই। নিজে মাস্ক পরো আর দেখে নাও লোকে যাতে পরে।
মনে রেখো, তোমার গুরুত্ব নেই রাষ্ট্রের কাছে। একলা দাঁড়িয়ে তুমি এ জ্বরের ঝড়ে।