প্রতিবাদ করার অধিকার কোনো মানুষ, গোষ্ঠী বা দলের একচেটিয়া নয়। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার এবং সেই প্রতিবাদকে নৈতিক সমর্থন করার অধিকার সব মানুষের আছে। প্রতিবেশী দেশে, সে দেশের সংখ্যালঘু মানুষজনের ওপর লাগাতার ঘটে যাওয়া অন্যায় অবিচার যা সাম্প্রতিক সময়ে এক অন্য মাত্রায় চলে গেছে, তার প্রতিবাদে অনেককেই সরব হতে দেখছি। ভালো লাগছে। কিন্তু অন্যের সুরে সুর মেলানোর আগে একটিবার দেখে নেওয়া দরকার যে প্রতিবাদীটি আসলে কে, কি তার উদ্দেশ্য বিধেয়।
যারা আসলে সিলেক্টিভ প্রতিবাদী, যারা বেছে বেছে ইস্যুতে প্রতিবাদের সুর তোলেন সেই ধান্দাবাজরা এই অশান্ত সময়টাতে জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করলেই তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। এটা মাথায় রাখুন যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জন্য কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছি আর নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের চোখ দিয়ে জল ঝরানোর মতো আচরণ করছি এটাই হল আমাদের দেশের হিন্দু মৌলবাদীদের বৈশিষ্ট্য। এটা আবার বাংলাদেশের মুসলিম মৌলবাদীদেরও বৈশিষ্ট্য। তারাও একই রকম দোগলা পনায় পটু। নিজের দেশে হিন্দুদের চোখের পানি ফেলায় আর গুজরাটের মুসলিম নিধনের নিন্দা করে।
পৃথিবী জুড়ে একমাত্র কমিউনিস্ট পার্টি হল সেই দল যারা সমস্ত দেশেই সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদ করে। দেশের গুজরাটে আর বিদেশের চট্টগ্রামে যথা ক্রমে মুসলিম ও হিন্দু নির্যাতনের একই ভাষায় ভঙ্গিতে ধিক্কার জানাতে অভ্যস্ত। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন, নিপীড়ন নিয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর এর সাম্প্রতিক বিবৃতি কমিউনিস্ট পার্টির এই অবিচল অবস্থানের সাক্ষ্য দেয়। এই অবস্থান নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন কালে কমিউনিস্টরা সেই দেশের মৌলবাদীদের যাবতীয় বৌদ্ধিক ও শারীরিক আক্রমণের শিকার এটাই আমরা দেখেছি বারেবারে। ইন্দোনেশিয়ায় এইসব প্রতিক্রিয়ার শক্তির হাতে কমিউনিস্ট নিধনের নৃশংস ইতিহাস আমরা কেউ ভুলে যেন না যাই।
উদার অর্থনীতির বিশ্বায়নের গালভরা বুলির আড়ালে আমরা আসলে সবাই সেই শ্রেণীবিভক্ত সমাজের নয়া উপনিবেশবাদী সমাজ ব্যবস্থায় বাস করছি। আদবানি আর আজমের পাতানো লড়াই এ মেতে থাকতে গিয়ে লক্ষ্য করতে ভুলেই যাবেন যে কুমিরের কান্না কেঁদে ফেলা এই স্বঘোষিত হিন্দু রক্ষকরা এবং তাদের সরকার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আসলে কিছুই করবে না কারণ তাহলে তাদের বন্ধু আদানি গ্রুপের বাংলাদেশের কাছে বকেয়া ২৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া ডুবে যেতে পারে।
মেহনতি মানুষের ঐক্যের মধ্যে চির ফাটল ধরাতেই মৌলবাদী আক্রমণগুলো আসলে তাই আদানি বান্ধব শাসক শ্রেণীদের হাতিয়ার ছাড়া কিছুই নয়। এই কৌশলকে পরাস্ত করতে পারে কেবল মেহনতি মানুষের মজবুত অটুট ঐক্য। দুনিয়ার মজদুর এক হোক, মৌলবাদ নিপাত যাক।
লাস্ট প্যারা দারুণ সঠিক ও সর্বৈব।
খেটে খাওয়া মানুষের ধর্ম একটাই শ্রম ও বিশ্বস্ততা।
লেখাটায় সুবিধাবাদীদের খোলস ছিঁড়ে নেবে।✊️💕