আকাঙ্ক্ষা ছিল ডক্টর নর্মান বেথুন বা দ্বারকানাথ কোটনিসের মত মানুষের মুক্তির সংগ্রামে চিকিৎসক প্রধানত সার্জেনের ভূমিকা পালন করা। পোস্ট গ্রেজুয়েশন করবো না আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। দক্ষতা অর্জনের জন্য জেনারেল সার্জারী, পিডিয়েট্রিক সার্জারি আর ইউরোলজিতে হাউস জব করা। তারপর কাজের জায়গার খোঁজ। চীনের মুক্তিযুদ্ধের মত মুক্তিযুদ্ধ খুঁজে পাওয়া গেল না। নিকারাগুযায় দালাল সরকারকে সরিয়ে সবে সান্দিনিস্তা সরকার ক্ষমতায় এসেছে। সে দেশে চিকিৎসক চিকিৎসাকর্মীর প্রয়োজন। নয়া দিল্লিতে তাদের এক প্রতিনিধির খবর পাওয়া গেল। তাকে চিঠি লিখে জানালাম আমি সে দেশে কাজ করতে চাই। উত্তর পাওয়া গেল না।
পশ্চিমবঙ্গে সে সময় কাজ করছিলেন যেসব সমাজ পরিবর্তনকামী রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী তাদের সঙ্গে কথা বললাম। সুবিধা হল না। সর্বক্ষণের রাজনৈতিক কর্মী হলে হয়তো হতো, আমার যে চাহিদা ছিল আন্দোলনের সঙ্গে থেকে ডাক্তারি করা।
সুযোগ এলো ভোপালে গ্যাস পীড়িতদের আন্দোলনে জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার। সেখানে বিষ গ্যাসের প্রতিষেধক সোডিয়াম সায়োসালফেট গ্যাস পীড়িত দের শিরায় লাগানোই ছিল একমাত্র কাজ। কয়েক মাস ছিলাম সেখানে। সেখানেই পরিচয় এক নতুন ধারার শ্রমিক আন্দোলনের নেতা শংকর গুহ নিয়োগীর সঙ্গে।
ছত্তিশগড় তখন মধ্যপ্রদেশের সাতটা জেলা নিয়ে। দুর্গ জেলার দল্লি রাজহরা ভিলাই ইস্পাত কারখানার প্রধান লোহা খনি। সেখানকার ঠিকাদারি খনি শ্রমিকেরা ১৯৭৭ সালে গড়ে তুলেছিল এক নতুন ধরনের ইউনিয়ন ছত্তিশগড় মাইন্স শ্রমিক সংঘ, কেবল বেতন বৃদ্ধি, বোনাস আর চার্জশিটের জবাব লেখা যে ইউনিয়নের কাজ নয়, শ্রমিক জীবনের ২৪ ঘন্টা নিয়ে তার কাজ, কাজের সময় ৮ ঘন্টা নিয়ে নয়। শ্রমিকের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, পরিবেশ, নারী মুক্তি, অন্যান্য শ্রেণীর সঙ্গে সম্পর্ক—সবকিছুই ছিল সেই ইউনিয়নের কর্মসূচিতে।
স্বাস্থ্য আন্দোলনের শুরু ১৯৮১ তে সাফাই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। প্রথম যে তিনজন চিকিৎসক এই আন্দোলনে যোগ দেন তাদের মধ্যে ডাক্তার বিনায়ক সেন, ডাক্তার আশীষ কুমার কুন্ডু ছাড়া ছিলেন ডাক্তার পবিত্র গুহ, মেডিকেল কলেজের প্রাক্তনী, মেডিকেল কলেজ ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস’ অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক। ১৯৮৩ র ৩রা জুন ১৯৭৭ এর শহীদদের স্মৃতিতে যখন শহীদ হাসপাতাল স্থাপিত হল, তারপর চিকিৎসক হিসেবে যোগদান ডাক্তার শৈবাল জানা এবং ডাক্তার চঞ্চলা সমাজদার। শৈবালদা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এবং চঞ্চলাদি মেডিকেল কলেজ ডিএসএ র সদস্য।
শহীদ হাসপাতালের কাজ কিছুটা হলেও জানা ছিল, একটা আকর্ষণও ছিল। সেই হাসপাতালে যোগ দিই ১৯৮৬ এর ডিসেম্বরে।
কলেজে থাকতে পড়াশোনা বিশেষ করিনি। ইন্টার্নশিপ মন দিয়ে করেছিলাম, আর হাউসস্টাফশিপের প্রায় দুই বছর। হাতের কাজ শিখেছিলাম ভালোই, যদিও কার্যকারণ জানতাম না অনেক ক্ষেত্রেই।
হাসপাতালে যোগ দেওয়ার পর আমার দায়িত্ব পড়ে সার্জারি করার, প্রথম দিন থেকেই আমার আন্ডারে রোগী ভর্তি হতে থাকে। কাকে কি করব তা বলার জন্য আরএমও, রেসিডেন্ট সার্জেন বা ভিজিটিং নেই। পড়াশোনা শুরু করতে হলো।
দুবেলা আউটডোর, সকাল সাড়ে নটা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা, আবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। সকালে আউটডোর শুরুর আগে সবাই মিলে ইনডোরে রাউন্ড দেওয়া, সন্ধ্যাবেলা আউটডোর শেষে আরেকবার রাউন্ড। তখন আমরা পাঁচজন ডাক্তার, সবাই মিলে একসঙ্গে রাউন্ড দিতাম, একে অন্যের রোগী নিয়ে আলোচনা করতাম। অপারেশন থাকলে সকালে আটটা থেকে, ইমারজেন্সি অপারেশন অবশ্য যেকোনো সময়।
থাকতাম হাসপাতালের পাশেই একটা বাড়িতে, তিনটে ঘর—একটাতে আমি, মাঝখানেরটায় আশীষদা ও চঞ্চলাদি, শেষেরটায় শৈবালদা। দুবেলা ভাত ডাল আসতো ইউনিয়নের মেস থেকে। বাকি কিছু আমরা রান্না করে নিতাম। একেক দিন একেকজনের রান্নার দায়িত্ব। একটা কমন ফান্ড থেকে খরচ করা হতো। ব্যবস্থাটা অনেকটা কমিউনের মত।
পাঁচজনের মধ্যে বিনায়কদা তখন হাসপাতালে কাজ করে না, ইউনিয়নের সর্বক্ষণের কর্মী প্রায়। আশীষদাও মাঝে মাঝে ইউনিয়নের কাজ করে।
আমার দুপুরের সময়টা কাটানো মুশকিল হত। একটা নতুন নেশা শুরু হল। হাসপাতালের পিছনের টিলা পেরিয়ে পেছনের মহল্লায় এক ভিডিও হলে হিন্দি সিনেমা দেখা। সে সময় বোফর্স কেলেঙ্কারিতে অমিতাভ বচ্চনের যুক্ত থাকার অভিযোগে ইউনিয়ন অমিতাভ বচ্চনকে বয়কট করেছে। শহরের একমাত্র সিনেমা হল অমিতাভর সিনেমা দেখানোয় শ্রমিকরা সে হলে যান না। রমরমা ছিল ভিডিও হলগুলোর।
কিন্তু কেবল ডাক্তারি করার জন্য তো ছত্তিশগড়ে যাইনি। মাঝে মাঝে সুযোগ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়তাম একশনে। মারামারি লেগেছে, আমাদের লোকেদের পক্ষে লড়তে চলে যাওয়া। বড়ো আগুন লেগেছে, একা চলে যাওয়া। বাহাদুরি দেখানোর চেষ্টা। এরকম করতে গেলেই বাধা আসতো নিয়োগীর কাছ থেকে। ক্ষুব্ধ হতাম।
ক্ষোভ বেড়ে চলায় একদিন কথা বলতে বসলাম নিয়োগীর সঙ্গে। উনি বোঝালেন বিপ্লবী মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীদের কর্তব্য। তা নেতৃত্ব দেওয়া নয়, বরং শিক্ষকের ভূমিকা পালন করা। সমাজ পরিবর্তনের বিজ্ঞানে শ্রমিকদের শিক্ষিত করা, নিজের বিষয়ে (আমার ক্ষেত্রে যেমন চিকিৎসা বিজ্ঞান) মানুষকে শিক্ষিত করা।
পছন্দমত কাজ শুরু হলো ডাক্তারি ছাড়া। শ্রমিক নেতাদের স্টাডি সার্কেল নেওয়া, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ, শহীদ হাসপাতালের দেওয়াল পত্রিকা স্বাস্থ্য সঙ্গবারির দায়িত্ব। তারপর প্রতি দুই মাসে সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা গুলোর উপর বুকলেট বার করা লোক স্বাস্থ্য শিক্ষামালা নামে। লোকশিক্ষা গ্রন্থমালায় সমাজ বিজ্ঞানের নানান বিষয়, অতীত সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে ছোট ছোট বুকলেট প্রকাশ।
আশীষদা কলকাতা ফিরে আসে ১৯৮৭-র শুরুতে, তারপর বিনায়কদা, শেষে চঞ্চলাদি। হাসপাতালে ডাক্তারের সংখ্যা কমে দুই, আবার ইউনিয়নের কাজের লোকও কমেছে। এই অবস্থায় ছত্তিশগড় মাইন্স শ্রমিক সংঘ ও ছত্তিশড় মুক্তি মোর্চার কাজ করার ও সুযোগ এলো। অন্য সংগঠনের সঙ্গে চিঠিপত্র আদান প্রদানের কাজ, সংগঠনের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করা।
১৯৯০ এ এক ঐতিহাসিক শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল ছত্তিশগড়ের তিনটে জেলায় প্রায় ৩০ টি কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে, জীবনধারণের উপযোগী বেতন ও সংগঠিত হওয়ার অধিকারের জন্য। ভিলাই শ্রমিক আন্দোলন নামে পরিচিত। এই আন্দোলন শুরু করার আগে এলাকায় সংগঠনের পরিচিতি প্রয়োজন ছিল। তাই ১৯৮৯ এর লোকসভা নির্বাচন ও ১৯৯০ এর বিধানসভা নির্বাচনে বেশ কয়েকটি আসনে প্রার্থী দেয় ছত্তিশগড় মুক্তি মোর্চা। সংসদীয় রাজনীতিতে বিশ্বাসী না হয়েও সেই নির্বাচনগুলোতে ম্যানেজারের দায়িত্ব এসে পড়ে আমার ওপর।
আর ১৯৯০ এ ভিলাই শ্রমিক আন্দোলন শুরু হওয়ার পর বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দিতে ভারতের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালেখি। শ্রমিক আন্দোলন দমন করার জন্য কারখানা থেকে শ্রমিকদের নিষ্কাশন, গুন্ডা ও পুলিশ দিয়ে তাদের উপর আক্রমণ, শ্রমিক হত্যা—এসবের পর বিনা বিচারে শঙ্কর গুহ নিয়োগীকে জেলে আটকে রাখা হয় ১৯৯১ এর ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল দুই মাস। আন্দোলনের চাপে নিয়োগী জেল থেকে ছাড়া পান। এরপর দুর্গ জেলার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ দেন নিয়োগী ছত্তিশগড়ের পাঁচটি জেলায় ঢুকতে পারবেন না, যে পাঁচটিতে তার সংগঠন ও আন্দোলন আছে। বলা বাহুল্য এই আদেশ কার্যকর হয়নি। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি এক বিশাল শ্রমিক প্রতিনিধি দলকে নিয়ে নিয়োগী, নয়া দিল্লি যান রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। রাজ্যে তখন বিজেপি সরকার কেন্দ্রে কংগ্রেস। সে সময় এখনকার মত অডিও ভিসুয়াল সংবাদ মাধ্যম ছিল না, নয়া দিল্লিতে শ্রমিকদের এই প্রদর্শন দেশের সংবাদ মাধ্যমে আন্দোলনের খবর নিয়ে আসে।
আর নয়া দিল্লি থেকে ফিরে আসার কিছুদিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে কারখানা মালিকের পোষা আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান নিয়োগী।
নিয়োগী শহীদ হওয়ার পর ছত্তিশগড় মুক্তি মোর্চার এক কেন্দ্রীয় নির্ণায়ক সমিতি তৈরি হয় তিন বুদ্ধিজীবী, পাঁচ শ্রমিক নেতা ও এক যুবনেতাকে নিয়ে। হঠাৎ করে তার হত্যা হলে কিভাবে সংগঠনকে সামাল দেওয়া যায়, তা নিয়োগী বলে গিয়েছিলেন লুকোনো একটি মাইক্রোক্যাসেট-এ।
আমরা সামাল দিতে পারিনি। বিতর্ক শুরু হয় আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি নিয়ে। একটি বক্তব্য উঠে আসতে থাকে–নয়া অর্থনীতির তুফানের মধ্যে গণআন্দোলনের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা যায় না, যেমন করেই হোক কারখানায় ফিরতে হবে মালিকের পায়ে ধরে হোক অথবা দালাল ইউনিয়নের সদস্য হয়ে। বলা বাহুল্য এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছিলাম আমরা কয়েকজন। আরেকটা বিতর্ক শুরু হল সংগঠন গণতন্ত্রের পথে চলবে নাকি সংগঠনের এগিয়ে থাকা কয়েক জন নেতা সিদ্ধান্ত নেবে। আমি ছিলাম সংগঠনে গণতন্ত্রের পক্ষে।
ভিলাই শ্রমিক আন্দোলন চলছিল। সেই আন্দোলন পরিচালনা নিয়ে ও মতপার্থক্য হতে থাকে। ১৯৯২ এর ১লা জুলাই পুলিশের গুলিতে শহীদ হলেন ১৬ জন শ্রমজীবী মানুষ। নেতাদের কয়েকজন জেলবন্দী হলেন কয়েকজন আত্মগোপনে। কেন্দ্রীয় নির্ণায়ক সমিতির সবাই মিলে মিটিং করা অসম্ভব হয়ে গেল। এর সুযোগ নিয়েছিল নেতৃত্বের সেই অংশটা যারা গণতন্ত্রের বিপক্ষে ছিল। বিরোধীদের মিটিং এ ডাকা বন্ধ হয়ে গেল।
আমাদের শহীদ হাসপাতাল ছিল ছত্তিশগড় মুক্তি মোর্চার হেডকোয়ার্টার দল্লি-রাজহরায় আর আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র ভিলাই ৯১ কিলোমিটার দূরে। শ্রমিকদের মধ্যে শ্রেণী সংগ্রামের কথা গণতন্ত্রের কথা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাদের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। আমরা শহীদ হাসপাতালের একটা শাখা খুললাম ভিলাইতে। আমি আর শৈবালদা এক সপ্তাহ ছাড়া ছাড়া এক সপ্তাহ করে ভিলাইতে থাকতাম। আমাদের মতের স্বপক্ষে সংগঠনের সদস্য অনেকে জড়ো হতে লাগলো। এভাবেই চলল ১৯৯৪ অব্দি।
দল্লি-রাজহরা ছিল ভারতের একমাত্র বড় লোহা খনি যাকে সরকার পুরোপুরি মেকানাইজড করতে পারেনি। ১৯৭৯ থেকে আন্দোলন করে শ্রমিক ইউনিয়ন জুলাই ইস্পাত প্রকল্পের ম্যানেজমেন্টকে বাধ্য করেছিল সেমি-মেকানাইজেশনের প্রস্তাব মেনে নিতে।
পূর্ণ মেকানাইজেশন মানে শ্রমিকদের ছাটাই, বিদেশি মেশিনের পেছনে খরচ, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং এলাকার অর্থনীতি বেকারির জন্য বিপর্যস্ত হয়ে যাওয়া। বিপরীতে সেমি মেকানাইজেশনে শ্রমিক ছাটাই হয় না, মেশিন ব্যবহৃত হয় মানুষের জন্য বিপদজনক উৎপাদন প্রক্রিয়া গুলোর জন্য, উৎপাদন খরচ থাকে কম, এলাকার অর্থনীতি অটুট থাকে।
১৯৯৪ এর মাঝামাঝি ছত্তিশগড় মাইন্স শ্রমিক সংঘের দালাল নেতাদের একাংশ ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে চুক্তি করে খনিকে ছেড়ে দেয় মেকানাইজেশনের জন্য। শহীদ হাসপাতালে চিকিৎসকরা এই মেকানাইজেশনের বিরোধিতা করেন, বিরোধিতায় সামনে থাকার জন্য প্রথমে সাসপেন্ডেড এবং তারপর বহিষ্কৃত হই আমি। আমার সঙ্গে সংগঠন থেকে বেরিয়ে আসেন উল্লেখযোগ্য একটা অংশ।
তারপর মাস ছয়েক আমার ভিলাইতে থাকা। নতুন একটা ক্লিনিক চালানো, মাসে একটা করে পত্রিকা বার করা, নতুন সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে সভা সমিতি। কিন্তু আমি সফল হইনি।
মেডিকেল কলেজ ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট’স অ্যাসোসিয়েশনে আমি ছিলাম দ্বিতীয় সারির নেতা। আর শ্রমিক আন্দোলন বা রাজনৈতিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা শূন্য।
ফিরে আসি পশ্চিমবঙ্গে ১৯৯৫ এর জানুয়ারি মাসে। যুক্ত হই হাওড়া জেলার উলুবেরিয়া মহকুমার কানোরিয়া জুট মিলের শ্রমিক আন্দোলন। তারপর শ্রমিক কৃষক মৈত্রী স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপনা, শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ গঠন… যার গল্প অনেকেরই জানা।
ছত্তিশগড়ে আমরা হাসপাতালে চাকরি করতাম এমনটা নয়। আমরা ছিলাম স্বাস্থ্য আন্দোলনের, কিছুটা শ্রমিক আন্দোলনের ও রাজনৈতিক আন্দোলনের সর্বক্ষণের কর্মী। সংগঠন থেকে জীবনধারণের জন্য আমরা যে অর্থ পেতাম সেটাকে বেতন না বলে ভাতা বলাই সমীচীন।
ফিরে এসেছিলাম ২৮ বছর আগে। তারপর যে পথে চলেছি সেখানে আমার পাথেয় থেকেছে ছত্তিশগড় আন্দোলনের শিক্ষা।
১২ই আগস্ট, ২০২৩ মেডিকাল কলেজ ডেমোক্রাটিক স্টুডেন্টস’ এসোশিয়েসন দ্বারা প্রকাশিত ‘আমাদের কথা’-য় প্রথম মুদ্রিত।