আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের পাশবিক হত্যার পর কেটে গেল দশটি মাস। দুর্নীতি ষড়যন্ত্র পূর্বপরিকল্পিত ধর্ষণ ও হত্যা- কোথাও সন্দেহ বা অস্পষ্টতার জায়গা নেই। তাও বিচার অধরা কারণ তথ্য প্রমাণ লোপাট । তদন্ত প্রক্রিয়ার গতি শামুক কচ্ছপ সকলকেই হার মানিয়েছে। অনেক নাটক, অনেক ‘ফাঁসি চাই’ পোস্টার ঝুলিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে পুলিশ মন্ত্রীর লম্ফঝম্ফ, অনেক কোর্ট , অনেক উকিল, বিচারপতির হাত ঘুরে এখনও সুবিচার থেকে বঞ্চিত নিহত চিকিৎসক আর তাঁর জন্য পথে নামা, দিনের পর দিন, রাতের পর রাত জাগা চিকিৎসক ও অচিকিৎসক জনগণ। নাগরিক সমাজের একটি অংশ বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে হতাশ, তাই আন্দোলনে আস্থা হারিয়েছেন। লাইভ স্ট্রিমিং হওয়া মিটিং এ জুনিয়র ডাক্তার দের মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি- মেডিক্যাল কলেজ গুলির পরিকাঠামোগত উন্নতি , কলেজ ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসের অবসান এবং নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রীকরণ- এর একটাও রক্ষিত হয়নি তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সহ সরকারি হোমরা চোমরা কেউ লজ্জিত নয় কারণ কে না জানে লজ্জা ঘৃণা ভয় – এই তিন টি থাকলে কোন মহান কাজে ব্রতী হওয়া যায় না। লজ্জিত মানুষ! লজ্জিত বিবেকবান মানুষের প্রতিবাদী সত্তা।
এই কঠিন সময়েও আশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছে অভয়া মঞ্চ এবং জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট, এগিয়ে চলেছে অভয়ার বিচার ছিনিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি আর প্রতিবাদে প্রতিরোধে মানুষের পাশে থাকার কর্মসূচি নিয়ে। প্রতি মাসের ৯ তারিখ বিশেষ কর্মসূচি থাকে অভয়া মঞ্চ এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট (WBJDF) এর। ৯ জুন সোমবার অভয়া মঞ্চ টালা থানার সামনে বিক্ষোভ জমাত সংগঠিত করে। তথ্য প্রমাণ লোপাটে ন্যক্কার জনক ভুমিকা এই থানা ও থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের । অভয়া মঞ্চের অন্যতম দুই আহবায়ক ডক্টর তমোনাশ চৌধুরী এবং মণীষা আদক অকালপ্রয়াত চিকিৎসক এবং অভয়া আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা ডক্টর প্রলয় বসু কে স্মরণ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন। টালা থানার সামনে গার্ড রেলের সুরক্ষাবলয়। সাদা পোশাকের লোকজন গার্ড রেল সরিয়ে যাবার রাস্তা বন্ধ করতে ব্যস্ত। এই তৎপরতা দশ মাস আগে দেখা গেলে হয়ত অভয়া কে নিহত হতে হত না !
ডক্টর পবিত্র গোস্বামী, সুদেষ্ণা মন্ডল, ধৃতিমান সেনগুপ্ত এবং সুতনুকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলিষ্ঠ বক্তব্যের পর কলকাতা পুলিশের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। শ্লোগানে মুখরিত হয় থানা চত্বর। টালা থানা থেকে মিছিল উপস্থিত হয় আর জি কর হাসপাতালে, ‘Cry of the hour’ স্ট্যাচুর কাছে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য। এখানে WBJDF এর অনুষ্ঠান চলছিল সন্ধ্যা ৭ টা থেকে।
কিন্তু হাসপাতাল ততক্ষণে দুর্গের চেহারা নিয়েছে। অগণিত CISF মোতায়েন হাসপাতালের এমারজেন্সি গেটে। নিরস্ত্র শান্তিপূর্ণ মিছিল ঠেকাতে সাজ সাজ রব চারদিকে। অনাবশ্যক তর্ক বাগ বিতণ্ডা আর পুলিশের অভব্য আচরণ। খবর পেয়ে ভিতর থেকে হাসপাতাল গেটে চলে আসেন অনিকেত মাহাতো এবং অন্যান্য প্রতিবাদীরা। অভয়া মঞ্চের সদস্যদের প্রবেশাধিকার দেবার দাবি জানান। অবশেষে জয়ী হন প্রতিবাদীরা। অভয়ার আবক্ষ মূর্তির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে আর একবার শপথ নেয় অভয়া মঞ্চ– এ লড়াই বাঁচার লড়াই, এ লড়াই জিততে হবে। রাজপথ আলপথের জনসমুদ্রই একদিন অবিচারের বঞ্চনাকে পরাস্ত করে ছিনিয়ে আনবে ন্যায়বিচার ।।
সিবিআই আদৌ কি কোনও তদন্ত করেছে???
তদন্তের নামে শুধুই প্রহসন হয়েছে… সিবিআই এর এই তদন্ত টিমকে নিয়েই ভীষণ ভাবে তদন্তের প্রয়োজন.. অলিক ভাবনা তবুও বললাম…
লজ্জা লাগে কিন্ত রাষ্ট্রের তো একফোঁটাও লজ্জা থাকেনা..