An Initiative of Swasthyer Britto society

  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close

পৃথিবীটাকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর মাষ্টার প্ল্যান? পাগলে কিনা বলে!

IMG-20200331-WA0004
Dr. Suman Roy

Dr. Suman Roy

Medical Teacher
My Other Posts
  • May 3, 2020
  • 8:25 am
  • One Comment

ইলেকট্রোমেডিল্যাবরেটরি 
আজ ২০৭১ সালের ৩-রা সেপ্টেম্বর।
দিনটা শনিবার।
Work Assignment গুলো শেষ করে বাড়ীর বাইরে এলেন CX45208.

ছেলে DQ12119 এখনও আটকে Digi-Learning রুমে। ওর বয়স বছর সতেরো। বাড়িতে ওরা মা ওকে মিঙ্কি বলে ডাকলেও, ছেলেকে তিনি অফিসিয়াল নামে-ই ডাকেন, DQ12119 (DQ-one-two-one-one-nine).

শরীরটা একটু খারাপ লাগছে। মাথাটা চক্কর দিচ্ছে। CX45208-এর বয়স এখন ৬৮ বছর। একটা হেলথ-রোড-পারমিট বানাতে হবে। শরীরটা চেক-আপ করাতে Electro-medi-lab এ যেতে হবে আগামীকাল।

ছেলে DQ12119 গতকাল একটা কোড জেনারেট করেছিল স্বাস্থ্য-পরীক্ষা করানোর জন্য। ঐ কোড দিলে, তবেই রাস্তায় বেরোনোর ইলেকট্রনিক-পাস পাওয়া যাবে। নইলে রাস্তায় ৫০০ মিটার অন্তর যে অটো-গেট লাগানো আছে, তা খুলবে না।

ছেলের Digi-Learning ক্লাস কখন শেষ হবে কে জানে! অপেক্ষা করছেন CX45208. এ-বাড়ীর দোতলায় ওর ক্লাস রুম। ছোট ঘর। পুরো স্কুলটাই এখন ওই ঘরে। Monitor, speaker, camera, sensor, microphone সব সরকার থেকে বসিয়ে দিয়ে গেছে। দেওয়াল জোড়া screen. ওখানেই ওদের সব পড়াশোনা, শিক্ষা-দীক্ষা।

২৪ ঘন্টা অনলাইন পড়াশোনা চলছে। যা’র যখন সময়, সেই সময়ে সে নিজের পড়াশোনা করে নিচ্ছে। টাইট সিকিউরিটি। পরীক্ষাও হয় ওই ঘরে বসেই। ওদের কোন বই-খাতা নেই। পড়াশোনা কম্পিউটারে আবার পরীক্ষাও ওই যন্ত্রে। পরীক্ষার সময় কম্পিউটার অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যায় না। সিষ্টেম সব লক-করা থাকে। ওই কম্পিউটারে তারা study material ছাড়া অন্য কোন সাইটে ঢুকতে পারে না, অন্য কোন পার্সোনাল কাজ ওই কম্পিউটারে হয় না।

আগেকার যুগের সেই স্কুল-ঘর, স্কুল-বাড়ী, স্কুল-টাইমে রাস্তা জ্যাম করে স্কুলে যাওয়া, সেসব এখনকার দিনে আর হয় না।

সরকার প্রত্যেক বাড়ীতে Digi-Learning-Room বানিয়ে দিয়ে গেছে। বিশেষ বিশেষ কোম্পানি এইসব কাজের বরাত পায়। অভিভাবকদের এসব নিয়ে ভাবা লাগে না। সব ঐ কোম্পানির মাধ্যমে সরকারী পরিষেবা।

আসলে সরকার বলে এখন আর কিছু হয়ও না। সারা পৃথিবীতে একটাই সরকার। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর হাতেই এখন সব। আইনকানুন, ট্যাক্স আদায়, বিক্রিবাটা, নিরাপত্তা সব কিছু টেকনো-জায়েন্টদের হাতে।

সেই ২০২০ সালে কি একটা ভাইরাস এসেছিল। সেই থেকে পৃথিবীটাই বদলে গেল। টেকনোলজি পুরো মানব সভ্যতাকে গিলে নিল।

CX45208-এর মাথায় পুরোনো স্মৃতি ভর করে আসে। তখন কত আর বয়স। এই ছেলের বয়সীই হবে। সতেরো কি আঠারো। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার হওয়ার মাঝেই লক-ডাউন হয়ে গেল। ফিজিক্স -কেমিষ্ট্রি পরীক্ষা হল অনেক পরে। ভাইরাসের দাপটে মানুষ গৃহবন্দী হয়ে গেছিল। রাস্তাঘাট শুনশান। স্কুল-কলেজে বন্ধ। কল-কারাখানা বন্ধ।

সেই থেকে টেকনোলজি পুরোপুরি ভাবে সব কিছু দখল করে নিল। বিশ্বে জ্বালানী তেলের চাহিদা প্রায় শূন্যে নেমে এল। তেল-নির্ভর অর্থনীতি ভেঙে গেল। তেল নিয়ে যুদ্ধ বন্ধ হল। দরকার পড়ল না আর সেনাবাহিনীর। যুদ্ধ-বিমান তৈরী , পরমাণু বোমা নিয়ে গবেষণা বন্ধ হয়ে গেছিল ২০৫০ এর পরেই।

প্রত্যেকটা দেশে সরকারের প্রয়োজনীয়তা কমে আসল দ্রুত। কাঁটাতার, সীমানা বলে আর কিছু রইল না, বা থাকলেও গুরুত্বহীন হয়ে গেল।

নোট বা কারেন্সি বলে আর কিছুই রইল না। সারা পৃথিবীতে একটাই কারেন্সি, তা হল Unified Credit Point বা সংক্ষেপে UCP. ওই UCP পয়েন্ট যার যত বেশী, তার ক্রয় ক্ষমতা তত বেশী। কেনাকাটা, স্বাস্থ্যবিল, গ্যাসবিল, বিয়ের গিফট সবই দেওয়া হয় UCP পয়েন্ট ক্রেডিট করে। অফিস থেকে মাইনে বলতে পাওয়া যায় ঐ UCP পয়েন্ট। এবং এটা সারা পৃথিবীতে সব ধরনের মানুষের জন্য একই সিষ্টেম।

অফিস বলতে, এখন তো আর আগেকার মত অফিস যেতে হয় না, যেমন বাপ-ঠাকুর্দারা যেতেন। এখন যেমন বাচ্চারা পড়াশোনা করে বাড়ীর একটা Digi-Learning রুমে, সেরকম এখনকার অফিস গুলোও হয় বাড়ীরই একটা ছোট ঘরে। এখন আর কেউ অফিস বলে না। বলে Eco-Space. এই Eco-Space এ বসেই CX45208 এতসময় কাজ করছিলেন।

Eco-Space টা কোম্পানিই বানিয়ে দিয়ে গেছে৷ এখনকার যুগে সরকারী কর্মচারী বলে আর কিছু হয় না। সবাই কোম্পানির চাকর। ক্রীতদাস বলায় ভালো। এখন সবাই কাজ করে কোম্পানির জন্য। এখন কাজ করার জন্য, বা স্কুল কলেজে যাওয়ার জন্য লোকে বাড়ীর বাইরে বেরোয় না। সব হয় বাড়ীতে বসে।

BDO, SDO, কালেক্টরি বলে সেই তাবড় অফিসগুলো এখনও আছে বটে। তবে কর্মচারীরা সবাই কাজ করেন বাড়ীতে বসে। গাড়ী-ঘোড়া রাস্তায় এখন চলে শুধু বাণিজ্যিক কারণে। পার্সোনাল গাড়ী বলে এখন আর কিছু হয় না। বাস সার্ভিস বলে কিছু নেই। রেল-লাইনে চলে শুধু মালগাড়ী।

জেলখানা বলে কিছু নেই। কেউ কিছু অপরাধ করলে, তার id ব্লক করে দেওয়া হয়। সে অটোমেটিক বন্দী হিসাবেই জীবন কাটাতে বাধ্য হয়। তার কোথায়ও যাবার নেই। কিছু আর করারও থাকেনা।

অফিস-স্কুল-আদালত সবই তো বাড়ীতে। Eco-Space, Digi-Learning, Electeonic Legal Suit এইসব নাম এখন।

বেড়াতে যাওয়া, এমনকি বিয়ে করাও এখন পারমিট নিয়ে করতে হয়। বিয়ে করার আগে পাত্র-কনের Genetic Mapping বাধ্যতামূলক। জেনেটিক ম্যাপিং-এ যদি দেখা যায়, ভবিষ্যতে বাচ্চা-কাচ্চার অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তবে ম্যারেজ পারমিট পাওয়া যায় না। সরকারী পারমিট ছাড়াও লোকে বিয়ে করতে পারে প্রেম-ভালোবাসা করে, তবে পারমিট ছাড়া বিয়েতে অনেক সরকারী সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয়।

রাস্তাঘাট এখন শুধু বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হওয়ায়, রাস্তায় গাড়ীঘোড়া এখন অনেক কম। স্পীড অনেক বেশী। স্বাস্থ্য বা মৃত্যুজনিত কারণে কোথাও যেতে হলে রোড-পারমিট নিয়ে যেতে হয়। নইলে রাস্তার নন-কমার্সিয়াল লেনের অটোমেটিক গেটগুলো খুলবে না। গাড়ী যা আছে রাস্তায়, সবই ইলেকট্রিক। এবং বেশীরভাগই চালকবিহীন।

পুরোনো আমলের স্কুল গুলোও চলছিল ধুকপুক করতে করতে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত। তারপর একটা আইনে, সব স্কুল কলেজগুলো অন-লাইন প্লাটফর্মে চলে এলো। অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, প্রেসিডেন্সীর নাম এখন কাগজে-কলমে আর সার্টিফিকেটে থাকে। এখনকার অনেক ছেলেমেয়ে ওই সব প্রতিষ্ঠানের নাম পর্যন্ত জানে না। এখানকার লোকাল স্কুল-কলেজের বিল্ডিংগুলো কিছুদিন ব্যবহৃত হত ইনফরমেশন-সেন্টার হিসাবে। ২০৬০ এর পর থেকে ওগুলো সব অন-লাইন শপিং কোম্পানীর স্টোর রুম হিসাবে বিক্রী হয়ে গেছে জলের দরে।

ছেলের ঘরের দরজা খুলল। DQ12119 বেরিয়ে এল। “বাবা, ফুড ডেলিভারি দিয়ে গেছে? খুব ক্ষুধা পেয়েছে!”

“হ্যাঁ দিয়ে গেছে, আজ প্রোটিন-রিচ দিয়ে গেছে।”

আগেকার দিনের মত এখন আর বাড়ীতে বাড়ীতে চুল্লী জ্বালাতে দেওয়া হয় না। যে কোম্পানীতে আপনি চাকরি করবেন, সেই কোম্পানি থেকে এখন খাবার সাপ্লাই হয় পরিবারের সকলের জন্য। এক একটা এলাকায় এক একটা বড় কমিউনিটি কিচেন। সেখানে খাবারের বিশুদ্ধতার ব্যপারে খুব সচেতন সবাই। কর্মচারী অসুস্থ হলে, কোম্পানির প্রচুর লস, খরচও হয় প্রচুর স্বাস্থ্য-পরিষেবার পিছনে। তাই ক্যালোরি মেপে খাওয়া, নিয়মিত ২ ঘন্টা শরীরচর্চা।

বছর দুয়েক বাদে অবসর। এখন অবসরের বয়স ৭০ বছর।

আজ রবিবার। চৌঠা জানুয়ারী ২০৭১. আজ CX45208 যাচ্ছেন হেলথ চেক-আপে।

বাড়ী থেকে এক কিলোমিটার দূরে। রোড-পারমিট করাই ছিল। একটা ইলেকট্রনিকস এম্বুলেন্স ঠিক সকাল ৮ঃ০০ টায় বাড়ীর সামনে এসে দাঁড়ালো। বাড়ীর ইলেকট্রনিকস মেইন মনিটর স্ক্রীনে সবই দেখা যায়। বারবার নোটিফিকেশন আসে, গাড়ী কতদূর পৌঁছালো দেখা যায়। গাড়ীকে বেশী সময় ওয়েট করালে বেশী UCP কাটা যাবে মাইনে থেকে। ড্রাইভারহীন এম্বুলেন্স। গাড়ীতে উঠেই রোড পারমিটের কোড-টা টিপে দিতে হয়। গাড়ীতে উঠলেন CX45208.

চেক-আপের জন্য পরিবারের অন্য সদস্যদের যাওয়ার নিয়ম নেই। কয়েক সেকেন্ডেই গাড়ীর গতিবেগ ১০০ কিমি উঠে যায় এইসব গাড়িতে। শব্দ নেই, ধোঁয়া নেই, মানুষ নেই। পলিউশন-হীন এক সম্পূর্ণ অচেনা পৃথিবী মনে হয়। ছোট্ট বেলায় বাবার হাত ধরে ধর্মতলা, গড়িয়াহাটের ভীড়ে-ভীড়াক্কার বাজারে পূজোর আগে মার্কেটিং যাওয়ার আনন্দ, এখন সব ধূসর অতীত। এখন সব গৃহবন্দী। এখনকার ছেলেমেয়েরা এটাকেই স্বাভাবিক জানে, স্বাভাবিক মানে। ফ্যাশন নামক জিনিষটা উঠে গেছে ২০৩০-এর পর থেকেই। এরা তো বাড়ীর বাইরেই বেরোয় না, কলেজে যায় না, সিনেমা হলের গল্প এদের কাছে পুতুল-নাচের-ইতিকথা। তাই জামা-কাপড়, মেক-আপ, ফ্যাশান এদের কিছু নেই।

সপ্তাহে দুদিন ছুটি এখন, বুধ ও বৃহস্পতিবার। শনিবার ও রবিবার পুরোপুরি কাজ চলে। বিনোদন আছে ওই দুদিন। তবে যেখানেই যান না কেন, সবটাই কোম্পানি নির্দিষ্ট গাড়ী ও কোম্পানি নির্দিষ্ট মানুষের সাথে। মানুষ এখন বিয়ে-থা না করেও সসম্মানে বাচ্চার পিতা হতে পারেন, বা কোন একা নারী সন্তানের মা হতে পারেন, সসম্মানেই। বস্তুতঃ এখন সেটাই স্বাভাবিক সিষ্টেম!

গাড়ী যাওয়ার সময় অটোমেটিক-লক-গেটগুলো দ্রুততার সাথে খুলে গেল। এজন্যই রোড-পারমিটের কোড জরুরী। মিনিটখানেক পরেই নামিয়ে দিল লোকাল ইলেকট্রো-মেডি-ল্যাবের দরজায়।

আগে থেকেই CX45208-এর জন্য স্লট বুকিং ছিল। CX45208 যাওয়ার সাথে সাথেই মুখ, চোখ, আঙুলের প্রিন্ট নিয়ে পরিচয় পর্ব সারা হল। ওখানে একজন কেবল সিকিউরিটি অফিসার থাকেন। আর কেউ থাকেন না।

একটা রোবোট CX45208-কে একটা ঘরে যেতে নির্দেশ করল। ঘরের ভিতরে একটা বেড আছে। পুরোনো আমলের ICU বেড এর মত। তবে চারিদিকেই সব স্ক্যানার, ক্যামেরা, সেনসর লাগানো। এমনকি বেডখানাও একটা স্ক্যানার মেসিনের মত, কাঁচের তৈরী।  শুয়ে পড়তে হবে ওটার উপর উপুড় হয়ে। বেডটা নিজেই আবার ঘুরতে পারে। শুয়ে পড়ার পর অটোমেটিক একটা ঢাকনা নেমে এসে পুরো শরীরটাকে ঢেকে দিল। বেড-টা নিজেই কয়েকপাক ঘুরল। উপুড় হল, চিত হল। ১০ মিনিটেই রোগীর দেহের সমস্ত প্যারামিটার চেক করা হয়ে গেল। পালস্, প্রেশার, হার্ট, লাংস, ব্রেন,কিডনি, লিভার, সুগার, কোলেস্টেরল সব কিছু মেপে নিল। এখন আর পরীক্ষার জন্য সূঁচ ফুটিয়ে রক্ত নেওয়া লাগে না। শরীরের এফোঁড়-ওফোঁড় সব বিভিন্ন রকমের রশ্মি পাঠিয়ে মেপে নেয় শরীরের হাল-হকিকত। প্রত্যেকটা অংশের ছবি নিয়ে অটোমেটিক এনালাইসিস হয় কম্পিউটারে।

আপনি শুধু ১০ মিনিট ওই বিছানায় শুয়ে থাকবেন রোবো-ডক্টর-ল্যাবে। এরপর আপনার বাড়ী পৌঁছাতে দু’মিনিট টাইম লাগবে। কিন্তু তারও অনেক আগে আপনার সমস্ত রিপোর্ট পৌঁছে যাবে আপনার কম্পিউটারে আপনার ঘরে, একটা কপি যাবে আপনার কোম্পানির স্বাস্থ্য-প্রতিনিধির কাছে।

অটোমেটিক ডায়াগনোসিস হবে।

কোটি কোটি তথ্য ভরা আছে স্বাস্থ্য-কম্পিউটারে। আপনার সারাজীবনের সমস্ত তথ্য ভরা আছে কম্পিউটারে। এখন তো আর ডাক্তারি কেউ পড়েনা। এখন আগেকার MBBS সিটগুলো চেঞ্জ হয়ে গেছে Medi-Tech ইঞ্জিনিয়ারিং-য়ে। আগে যাঁরা ছিলেন ডাক্তার, এখন তাঁরাই হলেন Medi-Tech ইঞ্জিনিয়ার।

ওই যে হেলথ চেক-আপ হলো, তাতে যদি কারো কোন রোগ ধরা পড়ে, রোবো-ডক্টররা প্রেসক্রিপশন বানিয়ে দেবে। ২০৫২ সাল পর্যন্ত পুরোপুরি রোবোটের হাতে ডায়গনসিসের ভার ছেড়ে দেওয়া হয়নি। ‘৫২ সালের আগে একজন হিউম্যান ডক্টরের সিগনেচার বা ভেরিফিকেশন লাগত। কিন্তু তারপর থেকে নিখুঁত রোগনির্ণয় রোবট-ই করে আসছে। এবং তাতে ভুল ডায়াগনোসিসের পরিমাণ কমেছে বই বাড়েনি।

যদি কারো অপারেশন দরকার হয়, তাহলে রোগীর শরীরের নিখুঁত গঠনের Structural Mapping করা হয়। কোন অংশ, কতটুকু কাটা হবে, কোনটুকু বাদ যাবে, আর কিভাবে কটা লেয়ারে সেলাই হবে, কোন উপাদান দিয়ে সেলাই হবে (এখন সব পেষ্টিং), তার নিখুঁত প্রোগ্রামিং হয় কম্পিউটারে। শারীরিক এনোম্যালি থাকলেও আগে থেকে স্ক্যানারে সব ধরা পড়ে। সেই অনুযায়ী প্ল্যানিং, প্রোগ্রামিং করা হয় সুপার কম্পিউটারে।

রোগীকে অপারেশনের সময় অজ্ঞান করা হয় অটোমেটিক রোবটের মাধ্যমে। কোন মানুষ সে রোবট-কে নিয়ন্ত্রণ করে না। ইঞ্জিনিয়াররা শুধু চেক করে নেয়, রোবটের সবকিছু যন্ত্রপাতি ঠিক আছে কি না। এখন অপারেশনে ব্যথা লাগে না। কিন্তু রোগীর নড়াচড়া বন্ধ করতে অজ্ঞান করা বাধ্যতামূলক। রোগীকে পুরো ফ্রীজ করে দেওয়া হয়। আগেকার মত ছুরিকাঁচির চল নেই। আছে সব গামা-নাইফ বা ঐ জাতীয় কিছু। রক্তপাত নেই বললেই চলে। পুরো পদ্ধতি সারতে খুব কম সময় লাগে। টিউমার বা ওই জাতীয় কিছু একদম পুরো গুঁড়ো গুঁড়ো করে একটা ছোট্ট পাইপ দিয়ে শরীরের বাইরে নিয়ে আসা হয়। কাটা জায়গা সাথে সাথে রক্ত বন্ধ করার বিশেষ ব্যবস্থা আছে। অপারেশনের পরে খুব দ্রুত রোগী তার কাজে-কর্মে ফিরতে পারে। ভুল চিকিৎসা এখন আর হয় না। হলেও কাউকে দোষী সাব্যস্তও করা যায় না। সব দোষ কম্পিউটারের। কম্পিউটারকে জেল বা জরিমানা করা যায় না। এখন লোকজন সহজে অসুস্থ হতে চায় না। ফাষ্টফুড, ধূমপান করে না। নিয়মিত শরীরচর্চা করে, অসুস্থ হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে। কারণ, যন্ত্রনির্ভর চিকিৎসা প্রচণ্ড ব্যয়বহুল। কোন মানবিকতা দেখানো বা শোনানোর জায়গা নেই। ব্যাঙ্কের account-এ UCP পয়েন্ট থাকলে যন্ত্র কাজ করবে, নচেৎ করবে না। এই সম্পূর্ণ কম্পিউটার ও রোবট ভিত্তিক চিকিৎসার যে খরচ, তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বহু আগেই।

এখন পৃথিবীতে সরকার নামক জিনিষটির আর বিরাট কিছু গুরুত্ব নেই। সব টেকনোলজির দৈত্যদের হাতে। ভারতবর্ষে শেষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০৪৮ সালে।

চিকিৎসার আকাশছোঁয়া খরচ নিয়ে আর অভিযোগ জানানোর জায়গা নেই। টেক-জায়েন্টদের হয়ে কাজ করলে, তবেই ব্যাঙ্কের একাউন্টে UCP পয়েন্ট জমবে। আর UCP পয়েন্ট থাকলেই আপনার জীবনের চাকা ঘুরবে।

মানুষের এখন কোন নাম নেই। নামের বদলে সবার আছে একটা কোড নম্বর। CX45208, DQ12119 এইরকমই দুটি নম্বর। C- দিয়ে শুরু এক জনের। পরের জেনারেশনের জন্য কোড শুরু হয় D দিয়ে।

মানুষের কোন ব্যক্তি পরিচয়, ধর্ম নেই, জাত নেই, ব্রাহ্মণ্য নেই, সংরক্ষণ নেই। আছে শুধু UCP, সারা পৃথিবীর একটাই দেশ, একটাই মুদ্রা, একটাই ধর্ম, হিউম্যান। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে আর লাভ হয় না। গদিতে বসা যায় না, ব্যবসাও হয়না আর ধর্ম ভাঙিয়ে, তাই সমাজ থেকে মেকি ধর্মগুরু সব কর্পূরের মত হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। তারা এখন সাইবার সিকিউরিটি হ্যাকিং শেখে।

CX45208-এর Electronic এম্বুলেন্সে কিছু একটা যান্ত্রিক সমস্যা হয়েছে। জানলার কাঁচটা একবার উঠছে, একবার নামছে।
সে খবর অবশ্য সাথে সাথেই চলে যাচ্ছে সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুমে।

হঠাৎ রাস্তায় দেখা গেল এক পাগলকে। রাস্তায় আজকাল দুটো শ্রেণীর মানুষকে দেখা যায়। হয় শ্মশান যাত্রী, নতুবা পাগল। পাগলটা বয়সে CX45208-এর চাইতেও বেশী।

পাগল চিৎকার করে বলতে বলতে চলেছে, “আসলে সব চক্রান্ত ছিল, আসলে সব চক্রান্ত”। পাগলরা আসলে সব কিছুতেই চক্রান্তের গন্ধ পায়।

তবুও মানুষের সাথে কথা বলার লোভ সামলাতে না পেরে জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে, CX45208 একবার জিজ্ঞসা করলেন, “হেঁয়, কিসের চক্রান্ত?”

“পৃথিবীটাকে দূষণ মুক্ত করবার মাষ্টার-প্ল্যান”

“কি বলছ তুমি, হেঁয়!”

হঠাৎ একটা রোবট গাড়ী এসে পাগলটাকে ধরে নিয়ে চলে গেল।

PrevPreviousজনস্বাস্থ্য ও আমাদের অভিজ্ঞতা
Nextকরোনা ভ্যাকসিনের আর কত দেরি!Next

One Response

  1. PIJUSH KANTI PAL says:
    May 3, 2020 at 11:10 am

    খাবার কিভাবে তৈরি হয় ? ফসল কিভাবে হয়?

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত পোস্ট

দিনলিপি ২৩শে জানুয়ারী

January 28, 2021 No Comments

আমাদের দেশে ভ্যাকসিন roll-out আজ প্রায় সাত দিন হতে চলল। খুবই আশাব্যঞ্জক চিত্র ভেসে উঠছে দেশের চারিপাশে। এখনো পর্যন্ত প্রায় বারো লাখ স্বাস্থ্যকর্মীকে ভ্যাকসিন দেওয়া

রক্ত– জোগাড়, দান, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চালন

January 28, 2021 No Comments

এই দীর্ঘ ধারাবাহিক লেখাটি থেকে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাবেনঃ ১) আপনার কোনো আত্মীয়ের জন্য রক্ত লাগলে কী করবেন? ২) চিকিৎসক রক্তের প্রয়োজনের ব্যাপারে রোগীর আত্মীয়দের

সমস্ত ভারতীয় নবজাতকের জন্মের পর থাইরয়েডের পরীক্ষা কেন করা দরকার?

January 28, 2021 No Comments

ডা দোলনচাপা দাশগুপ্তের ইউটিউব চ্যানেল থেকে।

মনের অসুখ, শরীরের অসুখ ৩ঃ ডিসোসিয়েটিভ ডিসঅর্ডার

January 27, 2021 No Comments

ডাক্তার মধুবন্তী বসু বেশ নামকরা নিউরোলজিস্ট। কলেজের বন্ধুত্বের কারণে তিনি মাঝে মাঝেই পেশেন্ট রেফার করেন ডাক্তার নন্দীর কাছে। সেই সূত্রেই তাঁর কাছে কয়েক মাস হল

বইকুণ্ঠের জার্নালঃ ক্যাসিয়াস ক্লে ও সিস্টার নিবেদিতা

January 27, 2021 No Comments

অর্বাচীন দু’টি নিরীহ প্রশ্ন করি। ক্যাসিয়াস ক্লে আর সিস্টার নিবেদিতার মধ্যে মিল কোথায়? কোথায়ই বা মিলে গেছেন আমাদের মধুকবি আর অম্বরীশ দাস? প্রথমে ক্যাসিয়াস ক্লের

সাম্প্রতিক পোস্ট

দিনলিপি ২৩শে জানুয়ারী

Dr. Parthapratim Gupta January 28, 2021

রক্ত– জোগাড়, দান, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চালন

Aritra Sudan Sengupta January 28, 2021

সমস্ত ভারতীয় নবজাতকের জন্মের পর থাইরয়েডের পরীক্ষা কেন করা দরকার?

Dr. Dolonchampa Dasgupta January 28, 2021

মনের অসুখ, শরীরের অসুখ ৩ঃ ডিসোসিয়েটিভ ডিসঅর্ডার

Dr. Chandrima Naskar January 27, 2021

বইকুণ্ঠের জার্নালঃ ক্যাসিয়াস ক্লে ও সিস্টার নিবেদিতা

Dr. Arunachal Datta Choudhury January 27, 2021

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

293471
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।