ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসা চলাকালীন হঠাৎ করে রক্তের গ্লুকোজ খুব কমে যেতে পারে এবং তার ফলে জটিল অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। একে বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া। সাধারণত রক্তের গ্লুকোজ ৭০ মিগ্রা/ডেসিলিটার-এর কম হলে উপসর্গ দেখা দেয়।
উপসর্গ
• মাথা ঘোরা
• হতচকিত অবস্থা
• মাথা ধরা
• খিদে পাওয়া
• বুক ধড়ফড় করা
• ঘামা
• ক্লান্তি বোধ
• শরীর কাঁপতে থাকা
• ভয়
এগুলি উপেক্ষা করলে মনঃসংযোগের ক্ষমতা হারানো, জিভ এবং মুখ অসার হয়ে যাওয়া, জ্ঞান হারানো বা কোমাতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমন কি তার থেকে মৃত্যুও হতে পারে। বার বার বা অনেকক্ষণ ধরে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে মস্তিষ্কের অপরিবর্তনীয় ক্ষতি হতে পারে।
কারণ
• বেশী ওষুধ বা ইনসুলিন নেওয়া
• সময়মত খাবার না খাওয়া
• কম খাবার খাওয়া
• নিয়মের বাইরে বেশী এক্সারসাইজ করা
• উষ্ণ আবহাওয়া
• বেশী মদ্যপান করা
• কিডনির সমস্যা
এড়ানোর উপায়
• ঠিক সময় মত খাওয়াদাওয়া করা
• চিকিৎসকের নির্দেশমতো ব্যায়াম করা
• সঠিক পরিমাণ ইনসুলিন এবং ওষুধ নেওয়া
• পকেটে সবসময়ে চিনি যুক্ত খাবার রাখা
• রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়মিত মেপে দেখা
যাদের বারবার হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়েছে, তাদের বড়িতে একটি গ্লুকোমিটার যন্ত্র রাখা খুবই জরুরী। এটির সাহায্যে খুব সহজেই বোঝা সম্ভব দিনের কোন সময়ে রক্তে গ্লুকোজ কত থাকছে।
চিকিৎসা
• হাইপোগ্লাইসেমিয়ার উপসর্গ দেখা দিলে সম্ভব হলে সাথে সাথে গ্লুকোমিটারের সাহায্যে রক্তের গ্লুকোজ দেখা উচিৎ
• হাই গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স খাবার যেমন গ্লুকোজ, চিনি, বাতাসা, লজেন্স, ভাত ইত্যাদি খেতে হবে।
• মিষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়ার মিনিট পনেরো পরে, রক্তে কতটা শর্করা আছে দেখা উচিত। তখনো ৭০ মিগ্রা/ ডেসিলি-এর কম থাকলে, আরও খাবার খেতে হবে।
• সংজ্ঞা হারালে রোগীকে সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বা বাড়িতেই ডেক্সট্রোজ স্যালাইন চালানো দরকার।
• অজ্ঞান রোগীদের ক্ষেত্রে গ্লুকাগন ইনজেকশনও ভালো কাজ করে।
• রোগীর রক্তের ক্রিয়েটিনিনও মাপার দরকার। কারণ কিডনির সমস্যা থাকলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া দীর্ঘস্থায়ী হয় ও বারবার হয়।