Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

‘অভয়া’, তুমি ঘুমোও সাথী – আমরা প্রহর জাগি

Oplus_0
Dr. Jayanta Bhattacharya

Dr. Jayanta Bhattacharya

General physician
My Other Posts
  • September 4, 2024
  • 6:48 am
  • 5 Comments

(২.০৮.২০২৪-এ কলকাতার পুলিস কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবীতে রাজপথে রাত জেগেছে জুনিয়র ডাক্তারেরা)

শুরুর কথা

“নেকড়ে-ওজর মৃত্যু এল

মৃত্যুরই গান গা –

মায়ের চোখে বাপের চোখে দু-তিনটে গঙ্গা।

দূর্বাতে তাররক্ত লেগে

সহস্র সঙ্গী

জাগে ধক্ ধক্, যজ্ঞে ঢালে

সহস্র মণ ঘি…

নিভন্ত এই চুল্লিতে বোন আগুন ফলেছে!” (“যমুনাবতী”, শঙ্খ ঘোষ)

এই মুহূর্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খবর সন্দীপ ঘোষ সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছে – তবে আরজি কর-এর তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় নয়, আর্থিক দুর্নীতির মামলায়। আন্দোলনকারীদের বয়ানে “নৈতিক জয়” হল। তবে আরও অনেক পথ যাওয়া বাকি। আরও অনেক ক্রিমিনাল ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের গ্রেফতারি না হওয়া অব্দি, আমার ধারণা, এ আন্দোলন চলবে।

এ আন্দোলনের এক অর্থে ইতিহাস-সৃষ্টিকারী এবং সমাজতত্বে ভাবনার উপাদান সরবরাহ করার মতো বিষয় হল – আমরা প্রায় সবস্ময়ই রাষ্ট্রের বা শাসকদলের তৈরি করা অ্যাজেন্ডার প্রতিক্রিয়া জানাই। সে অর্থে আমাদের তথা জনসমাজেরর প্রতিক্রিয়া চরিত্রের বিচারে অনুবর্তী বা reactive। কিন্তু এ আন্দোলন এমন এক পরিস্থিতি ও সন্ধিক্ষণের জন্ম দিয়েছে যা শাসকদলকে (এবং কিছু পরিমাণে রাষ্ট্রকেও) দিশেহারা করে দিয়েছে। হয়তো বা প্রথমবারের জন্য প্রায় এক মাস ধরে একটি আন্দোলন চলছে যা স্ব-উদ্যোগী অগ্রবর্তী আন্দোলন, যাকে আমরা বলি proactive movement। কুর্ণিশ, আন্দোলনকারী সন্তানসম জুনিয়র ডাক্তারদের এবং এদের সহযোগী সমস্ত ডাক্তারসমাজকে!

আজ ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। ‘অভয়া’র নৃশংসতম ধর্ষণ ও খুনের পরে ২৪ দিন দিন অতিক্রান্ত। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন এবং কর্মবিরতি এখনও চলছে। কারণ? আজ অবধি ‘নিরপেক্ষ’ তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই আমাদের কাছে তদন্তের অগ্রগতির ব্যাপারে সামান্যতম রূপোলী রেখাও রাখতে পারছিল না। গতকাল আংশিক ‘ব্রেকথ্রু’ হয়েছে। ভরসা রাখি, পরের ধাপগুলোও এগোনো যাবে।

জুনিয়র ডাক্তারদের এবং পশ্চিমবঙ্গের আন্দোলনরত ও সহানুভূতিশীল ডাক্তার সমাজের খুব নির্দিষ্ট ৫ দফা দাবী রয়েছে – (১) যারা ‘অভয়া’র ধর্ষণ, খুন এবং প্রমাণ লোপাটের মতো ঘৃণ্যতম কাজের সাথে যুক্ত সেসমস্ত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, (২) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যারা এই নারকীয় ঘটনার সাথে যুক্ত তাদের সবাইকে চিহ্নিত করতে হবে, এবং আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে এখুনি স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে বরখাস্ত করতে হবে, (৩) কলকাতার পুলিস কমিশনারকে তার চূড়ান্ত অপদার্থতার জন্য পদত্যাগ করতে হবে, (৪) কোনরকম রাজনৈতিক ভয় ছাড়া (প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কিংবা বাইরে থেকে) ছাত্র এবং ডাক্তারদের গণতান্তান্ত্রিক পরিবেশ অধিকার ও পরিবেশ সুরখিত করতে হবে, এবং (৫) পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যথোপযুক্ত নিরাপত্তা এবং সমস্ত ধরনের স্বাস্থ্যকর্মীর সভ্যভাবে কাজ করার জন্য হেলথকেয়ারের সুযোগসুবিধা সুনিশ্চিত করতে হবে। সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারিতে একটি দাবী কেবল পূরণ হল। বাকি দাবীগুলো এখনও অধরা। এরপরেও আমরা চাইব, পৃথিবীতে আলো আসুক, ন্যায়বিচার ফিরে আসুক।

আন্দোলনের নজরকাড়া কিছু বৈশিষ্ট্য

“চেতাবনি ছিল ঠিক, তুমি-আমি লক্ষ্যই করিনি

কার ছিল কতখানি দায়

আমরা সময় বুঝে ঝোপে ঝোপে সরে গেছি শৃগালের মতো

আত্মপতনের বীজ লক্ষ্যই করিনি…

লোকে ভুলে যতে চায়, সহজেই ভোলে।” (“আরুণি উদ্দালক”, শঙ্খ ঘোষ)

কিন্তু এ আন্দোলনের ক্ষেত্রে ভোলেনি। ৯ আগস্ট সকালের আলো ফোটার অপেক্ষায়। কিন্তু সবার ক্ষেত্রে জীবন একইরকম হয়না। ৩১ বছর বয়সী এক ডাক্তারি পড়ুয়া তরুণীরও হয়নি। ও সারাদিনের ডিউটির শেষে রাতের খাবার খেয়ে চেস্ট ডিপার্টমেন্টের সেমিনার রুমে বিশ্রামের জন্য একাই শুয়েছিল। সম্ভবত ৩ থেকে ৪ জন পশু (৫ জনও হতে পারে, এমনকি যে দলে আরেকজন নারী চিকিৎসকও থাকতে পারে) ওকে গণধর্ষণ করে তারপরে বর্ণনাতীত হিংস্রতায় হত্যা করে। যেরকম নৃশংসভাবে ২য় বর্ষের পোস্টগ্র্যাজুয়েট এই তরুণীকে হাসপাতালের মধ্যে শেষ রাতে  গণধর্ষণ করে চরমতম বীভৎসতার সাথে হত্যা করা হয়েছে সে ঘটনা সম্ভবত এক অর্থে “নির্ভয়া” বা “হাথরাস”-এর ঘটনাকেও ছাপিয়ে গেছে। কলকাতা শহরের বুকে একটি প্রথমসারির হাসপাতালের মধ্যে যে এ ঘটনা যে ঘটতে পারে, সম্ভবত ভারতের ইতিহাসেও বিরল – অন্তত আমার জানা নেই। কারণ? মোটিভ কী? ও কী কলেজের এমন কিছু নারকীয় কার্যকলাপ জেনে ফেলেছিল যে জন্য এই পরিণতি?

প্রথমত, আমার মধ্য-ষাট অতিক্রান্ত জীবনে য়াজ অব্দি দেখিনি, পার্টি নিয়ন্ত্রণের বাইরে একেবারে অহিংস এবং সুদৃঢ় এরকম আন্দোলন যা সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে রাস্তায় নামিয়েছে আভ্যন্তরীণ প্রেরণায়। সময়ের সাথে সাথে দুর্বল হবার পরিবর্তে আন্দোলন আরও শক্তি সঞ্চয় করেছে। এখানে কোন পার্টি প্রভাব নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই। কোন ঝাণ্ডা নেই, কোন ‘আগুন ঝরানো’ পার্টিজান শ্লোগান নেই। এ এক ঐতিহাসিক সময় যখন ভারতের সমাজে তৃতীয় পরিসর তথা নাগরিক পরিসরের নতুন ইতিহাস তৈরি হল। কুর্ণিশ আন্দোলনকারীদের!

দ্বিতীয়ত, নারীরা এক নিজস্ব স্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল এক শক্তি হিসেবে এ আন্দোলনের সহযোগী শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। হাজারে হাজারে নারী প্রশ্ন তুলেছে – কেন নারী হবার জন্য আমাকে অতিরিক্ত সুরক্ষা দিতে হবে? কিসের সুরক্ষা? আমার দেহের এবং জীবনের সুরক্ষা?

কেন এই “পবিত্র” পুরুষ-নিয়ন্ত্রিত সমাজ আমার সুরক্ষা সুরক্ষিত করতে ব্যর্থ হবে বারংবার?

উত্তর দিতে হবে, কেন আমাদের বেলাতেই কেবল সুরক্ষার প্রসঙ্গ আসবে?

কেন আমাদের সামাজিক মানসিকতা আমাকে নিজের চারিত্র্যলক্ষ্মণ নিয়ে বাঁচা একজন “মানুষ” হিসেবে গ্রহণ করবেনা? কেন?

আর কত ধর্ষণ, হত্যা, রক্তাক্ত শরীর আর ছিন্নভিন্ন দেহ দেখতে চায় “সমাজ”? ঠিক কতটা দেখলে তৃপ্তি হবে সমাজের চোখের, মনের, ধর্ষকামিতার?

আপনারা “ফাঁসী” কিংবা “এনকাউন্টার” কিংবা “রাজনৈতিক যোগ” নিয়ে কথা বলুন, বলতে থাকুন। কিন্তু এ প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন না? এই “ইতরের দেশ” কী সভ্য হবে? উত্তর কী কেবল বাতাসেই ভেসে বেড়াবে?

আমরা যে বুকভরে বাতাসও নিতে পারিনা মরে যাবার সময়ে। আমাদের কথা ৩৬৫ দিনে একবার ভাবুন – কারো ফুটফুটে মেয়ে, সক্ষম যুবতী কিংবা গৃহবধু, কামদুনির পড়ুয়া মেয়েটি কিংবা পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডের যুবতী। নির্ভয়া, কাশ্মীমেরর বাচ্চা মেয়ে আসিফা, হাথরাস, তারও আগে ২০০৪ সালে মণিপুরের মনোরমা – ধর্ষণ এবং নৃশংসভাবে খুন হবার মিছিল চলছে। এখন অব্দি সর্বশেষ সংযোজন আর জি করের ডাক্তার মেয়েটি।

অন্য কারো পরিচয়ে আমাদের চিনবেন না। আমাদের পরিচয়ে আমাদের চিনতে হবে। চিনতেই হবে।

আমাদের বিবশ হয়ে যাওয়া সামাজিক বোধকে এভাবে আর কোন স্মরণীয়কালে আর কোন আন্দোলন বিদ্ধ করেনি। এও এক অভূতপূর্ব ঘটনা।

তৃতীয়ত,

“অগ্নিবর্ণ সংগ্রামের পথে প্রতীক্ষায়

এক দ্বিতীয় বসন্ত। আর

গলিতনখ পৃথিবীতে আমরা রেখে যাব সংক্রামক স্বাস্থ্যের উল্লাস।

ততদিন আত্মরক্ষার প্রাচীর হোক

প্রত্যেক শরীরের ভগাংশ।” (নির্বাচনিক”, সুভাষ মুখোপাধ্যায়)

আরজি করের ঘটনা এখানে শেষ হয়ে যায়নি। এর প্রতিবাদে “ইতরের দেশে” বাস করা RG Kar-এর জুনিয়র ডাক্তারেরা পবিত্র ক্রোধ থেকে তীব্র আন্দোলন শুরু করে পরদিন সকাল থেকেই। এতে যুক্ত হয়েছে ডাক্তারদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম, ডাক্তারদের জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম, কলকাতা শহরের প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ, পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলার মেডিক্যাল কলেজ, ভারতের নামী ডাক্তারি প্রতিষ্ঠানগুলো – দিল্লীর এইমস, চণ্ডীগরের পিজিআই, বিএইচইউ, তামিলনাড়ুর একাধিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান, গুজরাত রাজস্থান

মহারাষ্ট্র দিল্লী পাটনা সহ ভারতের প্রায় সব প্রান্তের ডাক্তারদের সংগঠন। এমনকি সর্বভারতীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনও অংশগ্রহণ করেছে।

এ দেশ ছাড়িয়ে এ প্রতিবাদের ঢেউ পৌঁছচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে – অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড থেকে আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশেও। এমনকি গার্ডিয়ান বা বিবিসি-র মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমও এসমস্ত খবর প্রকাশ করেছে। ফলে আমি নতুন কথা এখনো অব্দি কিছু বলিনি – শুধু ইতিহাসকে আরেকবার স্মরণ করানো ছাড়া। তবে গতকালের (১৫.০৮.২০২৪) নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর মতো প্রভাবশালী সংবাদপত্রের খবরটি নজরে আসার মতো – “Medic’s Killing Fuels Protests and Walkouts in India”। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে – “Outrage among doctors has also continued to build, with many government hospitals suspending all but emergency treatment as medical workers protest to demand better protection from such violence.” হ্যাঁ, এটাই ঘটছে।

ল্যান্সেট-এর মতো মান্য মেডিক্যাল জার্নাল-এ ২৪ আগস্ট, ২০২৪-এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে “Rape and murder of doctor sparks outrage in India” শিরোনামে। সমধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল-এ। এরকম আন্তর্জাতিক চাপের একটা দেশীয় প্রভাব তো থাকবেই। ফলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এবং সিবিআই তদন্ত। কোথায় যাবে ‘অভয়া’-র সাথীরা? কার কাছে বিচার চাইবে? কোথায় যাবে সাধারণ মানুষ – কার কাছে সমাধান খুঁজবে? এরকম সময়ে জলকে ঘোলা করে রাজনৈতিক মুনাফার মাছ ধরার খেলা শুরু হয়েছে।

পঞ্চমত, আমাদের কাছে একটি উদ্বেগের বিষয় হল, গণধর্ষণ এবং বীভৎসতম খুনের মামলা সরে যাচ্ছে সন্দীপ ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানির আর্থিক দুর্নীতির নিকৃষ্ট স্বরূপ উদ্ঘাটনের দিকে। মামলা এবং আমাদের দাবীর মূল ভরকেন্দ্র সরে যাচ্ছে। আমাদের দাবী তো খুব সরল – আমরা বিচার চাই (We Want Justice) এবং চাই নারীদের সামাজিক সুরক্ষা সুনিশ্চিত হোক।
আর্থিক দুর্নীতি এবং পাপের পাহাড় নিয়ে তদন্ত চলুক। কিন্তু প্রথমে সমাধান হোক – ধর্ষণকারীরা কে কে, খুনি কে বা কারা?

আমাদের বেদনা

যেসব রোগীরা ফিরে যাচ্ছে বলে খবরের কাগজে ছবি এবং খবর বেরোচ্ছে, সেসব রোগিদের কাছে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু আমাদের তরফে জানানোর – জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবরিতিতে থাকলেও, আন্দোলন চালিয়ে গেলেও ইমার্জেন্সি এবং আউটডোর চালু আছে। ভর্তি হওয়া রোগিদের দেখছেন সিনিয়র ডাক্তাররা। জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ না দিলেও বাইরে সমান্তরাল আউটডোর চলছে। ফলে সংবাদমাধ্যমের খবরের ওপরে নির্ভর না করে আপনারা নিজেরা অভিজ্ঞতা নিন।

নতুন করে শুরু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায় ডাক্তারদের “অভয়া” ক্লিনিক – রোগীদের চিকিৎসা দেবার জন্য। শুরু হয়েছে টেলিমেডিসিন পরিষেবা।

আপনাদের আমরা কষ্ট বা যন্ত্রণা দিতে চাইনা। কিন্তু আপনাদের বাড়ির মেয়েটির দিকে তাকান। আমাদের অসহায় অবস্থা এবং আমাদের ওপরে লাগাতার নির্যাতনের কথা ভাবুন।

আমরা আবার ফিরে আসছি – খুব শীগগিরই।

আমাদের শেষ কথা – নতুন করে আবার ভাবুন

রাজনৈতিক দল এবং ঝান্ডা ছাড়া মানুষের বিশুদ্ধ আবেগ এবং পবিত্র ক্রোধকে রাষ্ট্র সবসময় ভয় পায়। চায়, একে বারংবার সহিংস হবার পথে ঠেলে দিতে। সফল না হলে একে প্রশমিত করার জন্য গণতন্ত্রের তথাকথিত চারটি স্তম্ভই কাজ করে – বিভিন্ন স্তরে, বিভিন্ন মাত্রায়। সে কাজ করা শুরু হয়েছে, এবং করবেও। আমাদের রাস্তা ধর্ণায় বসে থাকা, পথে নেমে বন্ধু এবং সাথীকে চিনে নেওয়া। নাগরিক সমাজের বিপুল অংশগ্রহণ আমাদের নতুন ‘Human Bondage’ তৈরি করেছে। অজানা অচেনা প্রত্যন্ত গ্রামের প্রান্তিক অঞ্চলের

মানুষ এ আন্দোলনের সাথে জুড়ে যাচ্ছে। আড়ে-বহরে “অভয়া”-র জন্য বিচার চাওয়ার অবয়ব ক্রমাগত বড়ো হচ্ছে।, দীর্ঘ হচ্ছে।

আমাদের কাছে অজানা শিশু-কিশোর-কিশোরী-যুবক-যুবতী-মাস্টার মশাই-দিদিমণি-দাদা-বৌদি-ভাইদের আমরা জড়িয়ে ধরছি – যেন আরও বেঁধে বেঁধে থাকতে পারি আমরা।
বিশ্বখ্যাত সঙ্গীত Imagine-এর গায়ক এবং লেখক জন লেনন ১৯৬০-এর দশকের উত্তাল সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিলেন – “When it gets down to having to use violence, then you are playing the system’s game. The establishment will irritate you – pull your beard, flick your face – to make you fight. Because once they’ve got you violent, then they know how to handle you. The only thing they don’t know how to handle is non-violence and humor.”

হ্যাঁ, রাষ্ট্র হিংস্রতাবর্জিত মাটি কামড়ে পড়ে থাকা আন্দোলনের যথেষ্ট মোকাবিলা করার পদ্ধতি এখনও ভালোভাবে শেখেনি – পুলিস, গুণ্ডা, বুলেট এবং লাঠির ব্যবহার ছাড়া। এরা কৌতুকও গ্রহণ করতে পারেনা। এখানে আমরা চার্লি চ্যাপলিনকে স্মরণ করে কৌতুকে পর্যুদস্ত করার কাজ শুরু করতে পারি। দাবী না মেটা পর্যন্ত আমাদের ফিরে আসার জন্য পাড়ে কোন নৌকো বাঁধা নেই – No Boat to Return।

আপনারা সবাই আসুন, পাশে থাকুন,  বেঁধে বেঁধে থাকুন, আমাদের ফিরে আসতে সাহায্য করার জন্য।

আরেকটি কথাও পাঠকেরা ভেবে দেখবেন। শহরের এই বড়ো হাসপাতালগুলোর ওপরে এত চাপ কেন? কোথায় গেল আমাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং জনসাস্থ্যের প্রানবন্ত উপস্থিতি?

জনস্বাস্থ্যের দর্শন একটি ভিন্ন অবস্থান। এটা কোন মেডিক্যাল শিক্ষার বুদবুদের বাজার নয় বা এখানে কোন লুকনো শিক্ষাক্রম নেই। এখানে সবকিছুই অবারিত খোলা এবং পরস্পরের প্রতি দায়বদ্ধ। নিজের নিজের সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্মীয় বিশ্বাস, দৈনন্দিন জীবন-চর্যা এবং সর্বোপরি পড়শি-চেতনা ধরে আছে ভারতের মতো আরো বহু দেশের অসমসত্ত্ব বিপুল জনসমস্টিকে। এই বিশেষ অবস্থান বুঝতে না পারলে মেডিক্যাল কলেজের প্রশিক্ষণ শেষ করা মাত্র জনস্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী চিকিৎসক হয়ে ওঠা যায় না। মুক্ত বাজারের অর্থনৈতিক ও সামাজিক দর্শন, বিশেষ করে এর উপজাত social psyche, এ দুয়ের প্রভেদ মুছে দিতে বদ্ধ পরিকর।

দানবীয় বহুজাতিক কোম্পানী এবং হিংস্রতম, আগ্রাসী কর্পোরেট পুঁজির কাছে মানুষ শব্দটির ততক্ষণই মূল্য আছে যতক্ষণ সে মুনাফা দিতে পারে। এজন্য ব্যক্তির ব্যক্তিসত্তা, দেহ ও মন থেকে অসুস্থতাকে বিযুক্ত করে দেখে কেবলমাত্র অসুখের জন্য সমস্ত ওষুধ ও প্রযুক্তি তৈরি হয়ে চলছে সর্বোচ্চ মুনাফার জন্য, মেডিক্যাল শিক্ষাক্রমও বিপুল্ভাবে প্রভাবিত হয়।

ফলে এ আন্দোলন হয়তো প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং জনস্বাস্থ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার পথে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হয়ে উঠতে পারে।

PrevPreviousআমরা কেমন বিচার চাই?
Nextএ পুলিশ কেমন পুলিশ….Next
5 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
5 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Suchetana Majumder
Suchetana Majumder
8 months ago

লালবাজার এ সেদিন না গেলে জানতাম না গোলাপ গান আর শৃঙ্খলা দিয়ে সব শৃঙ্খল কে জয় করা যায়।

আর সাধারন মানুষ যেভাবে সাহায্য করেছে তা বলার নয়

0
Reply
Sourav Kumar Bera
Sourav Kumar Bera
8 months ago

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লেখা আপনার ।
লেখাতে আরো অনেক বিষয় জানতে পারলাম. ।
অনেক অভিনন্দন এবং প্রনাম 🙏🙏🙏

0
Reply
Commander Dipankar Goswami
Commander Dipankar Goswami
8 months ago

খুব ভালো লিখেছিস। But every time I read your article about this gruesome incident my eyes get moist and a somber feeling swathe me over and I question myself, “why on earth we the human beings, the only sapient creature in this world, could be so inhuman?” It is very difficult for me to explain anyone about the state of my mind. Abhaya was of my daughter’s age, and I feel that I have lost a daughter. Whatever I have read about her achievements thus far and her aims in life move me so deeply that I become very emotional. Where are we living, are we really homosapien that we boast about? Is there any difference between the stray dogs which mauled an elderly woman few days back, somewhere in UP?

We need a societal revolution and that has to come from the youth of our country; nobody else can do it. Our youth first has to accept that we are born in a unidimensional world; there is no difference between men and women. It is only the biological set up of our body makes us different from each other and that is primarily for sustainability as human beings and it has to start from the homes. Parents have to play the crucial & cardinal role to bring the changes in the mindset of our progeny. Once again, a very thought provoking article.

0
Reply
Dipankar Ghosh
Dipankar Ghosh
5 months ago

পৃথিবীতে অরাজনৈতিক কিছুই নেই।
শুধু বলা যায় ভোট বিযুক্ত রাজনীতি।
তাই ভোটভিখারি দলগুলো সব মড়াকান্না জুড়েছে।
যখন তাদের আদর্শের মুখোশের রং গ্যাছে চটে,গণদেবতা মুখ ফিরিয়েছে, তখন তাদের জম্বুকডাক উচ্চকিত। উপনির্বাচনে হেরে গেলাম।
এই আন্দোলন যে কতো বড়ো একটা তৃতীয় পরিসর তৈরি করলো সেটা বোঝার ক্ষমতা “রাজনৈতিক” দলগুলোর নেই।
একটা সময় ছিলো দাম্পত্য কলহেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ঘটতো,আজ তৈরি হলো সাধারণ মানুষের বলার মঞ্চ।

0
Reply
সুকুমার ভট্টাচার্য‍্য
সুকুমার ভট্টাচার্য‍্য
5 months ago

বহুদিন পরে এমন সংগঠিত, অহিংস, মানবিক, অরাজনৈতিক প্রতিবাদের সাক্ষী হলাম আমরা। বক্তব‍্য পেশে কখনও অশোভনতা দেখায় নি এই নবীন ডাক্তাররা । তাই তো সমাজের বহু মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছেন ওদের সমর্থনে । ওরা বুঝিয়েছে সেবা দেওয়ার দায়িত্ব যেমন ওদের আছে, ওদেরও নিরাপত্তা ও পরিবেশ পাওয়ার অধিকার আছে ।
আন্দোলনের সাফল‍্য অনেকটাই হয়েছে। না পাওয়া এখনও বেশ কিছু দাবি আছে। তবে ওরা কিন্তু পথ দেখিয়েছে। কুর্ণিশ জানাই ওদের ।

0
Reply

সম্পর্কিত পোস্ট

হাসপাতালের জার্নাল: পাপী পেটের কেচ্ছা

May 18, 2025 1 Comment

দশচক্রে ভগবান ভূত একটা প্রচলিত বাগধারা। উল্টোটাও কখনও ঘটে। সাক্ষী আমি নিজেই। ঘটনা প্রায় পঞ্চাশ বছর আগের। বলি শুনুন। আমার বাবাকে একদা ভর্তি করেছিলাম সার্জারি

স্বাস্থ্যের সত্যি মিথ্যে ৮: কুলেখাড়া শাকের খাদ্যগুণ

May 18, 2025 No Comments

আগে যে সব খাদ্যকে হেলাফেলার দৃষ্টিতে দেখা হতো, ইদানীং সে সব খাদ্য আবার মানুষের খাদ্য তালিকায় ফেরত আসছে। শুধু ফেরত আসছে তাই নয়, একেবারে হই

ভাষা সন্ত্রাসী মানুষের বন্ধুত্ব আমার সত্যিই দরকার নেই

May 18, 2025 2 Comments

অনেক বছর আগে, একবার এক সদ্য কিশোরকে নিয়ে তার মা দেখাতে এসে বললো,’ডাক্তারবাবু, আপনি একটু বারণ করুন তো, ও খুব খারাপ ভাষা ব্যবহার করছে, স্কুল

যেখানে দেখিবে চোর

May 17, 2025 No Comments

যেখানে দেখিবে চোর… দেখিবে পশ্চাতে ওর ঠিকঠাক আছে কি না লজ্জাবস্ত্রখানি। নাকি ঘোমটা দিতে গিয়ে… উন্মুক্ত হয়েছে ইয়ে চোর রাণী ছুঁড়ে দিচ্ছে ভাতা-র আট আনি।

অন্ধকারের দিকে

May 17, 2025 No Comments

টিভিতে একটা চেনা বিজ্ঞাপন, মেয়ের কলেজে অ‍্যাডমিশন ,খরচ ভীষণ .. হঠাৎ করেই মনে পড়ে যায়, টাকা তো রয়েছে এক জায়গায়, অমুক ব‍্যাংকে জমার খাতায় পড়ে

সাম্প্রতিক পোস্ট

হাসপাতালের জার্নাল: পাপী পেটের কেচ্ছা

Dr. Arunachal Datta Choudhury May 18, 2025

স্বাস্থ্যের সত্যি মিথ্যে ৮: কুলেখাড়া শাকের খাদ্যগুণ

Dr. Aindril Bhowmik May 18, 2025

ভাষা সন্ত্রাসী মানুষের বন্ধুত্ব আমার সত্যিই দরকার নেই

Dr. Amit Pan May 18, 2025

যেখানে দেখিবে চোর

Dr. Arunachal Datta Choudhury May 17, 2025

অন্ধকারের দিকে

Arya Tirtha May 17, 2025

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

554968
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]