ভয় পাওয়ানো আর ভয় পাওয়া সত্যিই ভারী অদ্ভুত এক ব্যাপার। বহু ভেবে চিন্তেও কোনো তল পাইনি।
Maiori forsan cum timore sententiam in me fertis quam ego accipiam
কার্ডিনাল বেলারমাইনের দাবি হেলায় উড়িয়ে দিয়ে ব্রুনো নিজের মতবাদকে প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করলেন বিখ্যাত দার্শনিক, বিজ্ঞানী ও যুক্তিবাদী ইতালীয় জিওরদানো ব্রুনো।
১৭ই ফেব্রুয়ারি, ১৬০০ সাল সেন্ট্রাল রোমান মার্কেট স্কোয়ারে ব্রুনোকে উলঙ্গ করে মাথা নীচে পা ওপরে করে ঝুলিয়ে দেওয়া হল। মাথার তলায় পাতা চ্যালাকাঠের টুকরোর পাঁজায় ধরিয়ে দেওয়া হল আগুন। চিতাভস্ম বিসর্জিত হল টাইবার এর জলে। “শয়তানি শব্দ” উচ্চারণ করা ব্রুনোর সেই “জিভটাকে কয়েদ” করে রাখতে চেয়েছিল যাজক পুরোহিত তন্ত্র। যুগে যুগে ক্ষমতার কারবারিরা তাই চেয়ে এসেছে – যুক্তিবাদের, প্রতিবাদের শব্দ উচ্চারণ করা জিভটাকে কয়েদ করে রাখা। এর আগে ২০শে আগস্ট পোপ ক্লেমেন্ট মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করলেন। বিচারকদের উদ্দেশ্যে ব্রুনোর স্পর্ধিত ঘোষণা ছিল “Maiori forsan … আপনারা বোধহয় আমার চেয়েও বেশি ভয় পাচ্ছেন এই সাজা ঘোষণা করতে”
এই ভাবে ভয় দেখিয়ে সত্যিকে উচ্চারণ করা আটকানো যায়? একজন ব্রুনো মারা গেলে কতজন জিওরদানো ব্রুনো জন্ম নেয়? কে কাকে ভয় পায়? বেশি ভয় পায়? আমাদের ভয় দেখাতে আসা মানুষগুলো নিজেরাই সবচেয়ে ভীতু এটা যদি আমরা মনে রাখতে পারতাম!
আজ বিশ্ব ব্রুনো দিবসে সব ভীতু মানুষদের পক্ষ থেকে সাহসীদের জানাই অনেক শুভেচ্ছা। কোনো একদিন আমরাও ব্রুনো হয়ে উঠবো। আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে একটা করে ব্রুনো লুকিয়ে আছে আমরা কেবল সেটা জানি না।