অনেকদিন কারো বাড়িতে যাওয়া হয় না।
দরজা খটখটিয়ে হুট করে গিয়ে বলা হয় না,
ভাবলাম, আজ জমিয়ে মুখোমুখি আড্ডা দিই।
আমার বাড়িতেও কোনো চেনা বন্ধু এসে হঠাৎ করে বলে না,
কী রে শ্লা,
কোনো খোঁজখবর নেই, নে নে বেগুনি পেঁয়াজি আনা,
আজ হেবি গপ্পো হবে।
বসার ঘরের সোফাগুলো শুধু পুলিশ পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে এলে,
অথবা কোনো বীমা এজেন্টের সোনার ভবিষ্যৎ বর্ণনা নৈর্ব্যক্তিক মুখে শোনার জন্য ব্যবহৃত হয়।
এই প্রতি মোবাইলে ওটিটি আর স্পটিফাইয়ের যুগে,
বাড়ির লোকেরাও ওখানে বসে আর গল্প করি না।
আড্ডাগুলো এখন গেট-টুগেদার হয়ে গেছে,
কোনো ক্লাবে বা মলে গুছিয়ে গেলাস নিয়ে বসা,
কারোর বাড়িতে নিতান্তই যদি বসা হয়,
সে এত আড়ষ্ট আড়ম্বর,
যে ফিরতিপথে বুঝতে পারি মনে কোনো স্মৃতি দানা বাঁধেনি।
এই ঘন ঘন নিচুঘাড় মোবাইল-দর্শন আর
অনবরত অকারণ নেটসার্ফিংএর অভ্যাসের মধ্যিখানে,
মাঝে মাঝে মনে হয়,
নিয়ম করে যদি দিনের একটা সময়ে সব নেটওয়ার্ক অফ হয়ে যেতো,
শূন্য এক-এর সম্মোহনী জগৎ থেকে
হঠাৎ ফিরে আসতাম
ফোনহীন রূপরসগন্ধের পৃথিবীতে,
যেখানে মানুষের সাথে কথা বলতে গেলে তার কাছে যেতে হয়,
যেখানে গুগল বা জুম মিট নেই,
চায়ের দোকান আছে,
চিলতে রোয়াক আছে
আর আছে গমগমে কথা ভরা গায়ে গায়ে ঠেসে বসা বৈঠকখানা..
লোডশেডিংয়ের পরে আলো আসবার হোওও চিৎকারের মতো,
সপ্তাহে একদিন হাপিত্যেশে থাকা চিত্রহারের মতো,
বহু মাস পরে হওয়া টানটান উত্তেজনা ভরা আড়াইশো টার্গেট ওয়ান ডে ম্যাচের মতো,
হারিয়ে গিয়েছে সেই সোনালী ঠিকানা।
নেটওয়ার্ক চলে গেলে সে ফিরবে না..