একটি সহজ প্রশ্ন: প্রীতি জিন্টাকে আপনার ভালো লাগে কেন?
(যাদের ভালো লাগে না, তারা জবাব না দিলেও চলবে)। অবশ্যই অনেকে সুন্দর মুখশ্রী, অভিনয়- এসব বলবেন।
কিন্তু সবচেয়ে বড় যেটা কারণ সেটি হলো- প্রীতি জিন্টার গালের টোল। ওই দুই গালের দুই টোলে ভালোবাসার ট্যাক্স দেননি, অথচ প্রীতি জিন্টাকে ভালোবেসেছেন, এমন মিথ্যাবাদী পুরুষ পাওয়া কঠিন!
শুধু প্রীতি জিন্টা নয় বা তার টোল প্রিয় ভক্ত নয়, বহু প্রেমিক প্রেমিকার গালের টোলে ট্যাক্স দিয়েছেন। স্বীকার না করলেও এটি সত্যি।
টোল আর হাসি… আজীবন জেল আর সাতদিনের ফাঁসি!
এবং গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি- এটি মেয়েদেরই বেশি থাকে!!
যাকগে- এই নিয়ে একটুখানি বিজ্ঞান চর্চা করার শখ হলো বলে লিখতে বসলাম।
আমাদের মুখমন্ডলে বেশ কিছু পেশী আছে। সেই পেশীগুলোর সংকোচন প্রসারণ ঘটিয়েই আমরা নানারকম অভিব্যক্তি প্রকাশ করি। হাসি কান্না রাগ মুখ ফোলানো- সবই। কখনো কখনো এক বা একাধিক পেশী একত্রে কাজ করে।
ধরুন, আপনি আপনার প্রিয়জনের খিলখিলিয়ে দাঁত কেলানো দেখতে চান। কাতুকুতু থেকে জোকস্- যেকোনও উপায় নিতে পারেন তার জন্য – কোন পাপ হবে না, গ্যারান্টি।
আপনার প্রিয়জন কি করবে?
মুখের চারপাশের পেশীর সংকোচন কমিয়ে অন্য পেশীর সংকোচন ঘটিয়ে ঠোঁটের কোনাগুলোকে তুলে দেবে। ব্যস … আপনি দাঁত দেখে নিলেন!
এই হাসির অনুষঙ্গ ধরেই বলি- কারো গালে টোল থাকলে হাসির মাহাত্ম্যই পাল্টে যায়। এমনিতে যদি বা টোল নজরে নাও পড়ে, হাসলে তো টোল পড়বেই।
এর কারণ কি?
জাইগোম্যাটিকাস মেজর আর মাইনর বলে দু’খানা পেশী আছে আমাদের, যারা ঠোঁটের কোনা থেকে কোনাকুনি চোখের নিচের দিকটায়।
এই যে মেজর নামের পেশীটির কথা বললাম- এই মেজরই পাতেন টোলের ফাঁদ। এনার জন্মগত একটি ভ্যারিয়েশনের ফলে ইনি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যান। এবং এনার চাদর যে fascial layer, তিনি দুই ভাগের মাঝখানে এসে উপরের চামড়াকেও জুড়ে দেন নিজের সঙ্গে। আর যেই না দাঁত কেলানোর সময় হলো – দুই ভাগ সংকুচিত হলো, মাঝখানের গ্যাপে চামড়ায় পড়লো টান। হয়ে গেল ট্যাক্স ফ্রি টোল!!
একে ইংরেজিতে বলে facial dimple বা fovea buccalis.
সঙ্গের ছবিটি দেখলেই বোঝা যাবে – মেজর কোথায় থাকেন আর টোল কোথায় পাতা।
একবার ভাবুন তো- এই সামান্য একটি ভ্যারিয়েশনের জন্য একজন মানুষের সৌন্দর্য কি রকম ভাবে পাল্টে যায়!!
তবে হ্যাঁ – এসব পড়ে নিয়ে অমনি কারো টোলে ট্যাক্স দিতে যাবেন না।
আজকাল বহু মেয়েরা মেজরের ফেক টোল পেতে বসে আছে!
কি করে?
তাহলে শুনুন – সৌন্দর্যের জন্য এই টোল এখন সার্জিক্যাল অপারেশন দ্বারা তৈরি করে নেয় অনেকে। বড় কোন ব্যাপার নয়। ছোট্ট দুটো সেলাই চামড়ার নিচে! আর সেই ফাঁদে আপনাকেও হয়তো সেলাই করে দিল কেউ … টোল এ!! 
থাক এই অব্দি। জাইগোম্যাটিকাস মেজরের টোল দেখে টোটলা হবার আগে জানা থাক –
টোল এর ফাঁদ পাতা ভুবনে …
অতএব,ট্যাক্স দিয়ে ফতুর হবার আগে সাধু সাবধান।