ভেবে দেখলাম, সব আধুনিক চিকিৎসকদেরই এই বাজারে পেশা পাল্টে নেয়া উচিত!না হলেও অন্ততঃ অ্যাডেড কোয়ালিফিকেশন হিসেবে অন্য কোন ডিগ্রী রাখা উচিত। তার উপর যদি সেই পেশা হয় দেশের বিখ্যাত ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করা জ্যোতিষ শাস্ত্র বিশারদ চিকিৎসক এর, জিভ লকলক না করে পারে?
সংক্ষেপে ডাক্তার কাম জ্যোতিষ-এর দু’একটি পেশাগত সুবিধা বলছি:
১. ধরা যাক, সবচেয়ে বড় রোগের কথা। গ্যাস!
হঠাৎ পেছন দিয়ে না বেরিয়ে শোঁ শোঁ করে মাথার দিকে উঠছে। কোন ওষুধে কাজ হচ্ছে না। সোজা বলে দিলেই হলো – বেস্পতির হঠাৎ ভীমরতি হয়েছে! বাট ক্লিভেজ-এ চার রতি টোপাজ ঝুলিয়ে নিন অমুক জুয়েলার্স থেকে! না হলে পোখরাজ!
২. ধরুন, রোগীর হয়েছে ক্যান্সার! ওষুধ কেনার ক্ষ্যামতা নাই। সরকারি কেমোথেরাপি অমিল। রোগী দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। অ্যানিমিয়ায় মৃতপ্রায়, বিড়ালের চোখের মতো সাদা চোখ! বেড়ালের চোখ থুড়ি ক্যাটস আই ঝুলিয়ে দিন গাজরের মতো!
৩. ধরা যাক, রোগীর অসুখ বন্ধ্যাত্ব বা ধ্বজভঙ্গ।
কোনভাবেই সন্তান এলো না! বংশরক্ষার তাগিদে
গাফিলতির তত্ত্ব নিয়ে এসে আপনাকে রামধোলাই দেবে জনতা! সোজা ওঁং বলে বসে পড়ুন চক্র নিয়ে! বলুন, চ্যাংড়া শনির কক্ষপথ পরিবর্তন করতে হবে! বউয়ের শনি হলে তিনরাত্তির ছ’রতি ইন্দ্রনীল অথবা পুলক মণি আর বরের শনি হলে সিমফাইসিস পিউবিসের উপর এমিথিস্ট অথবা শুক্রের জন্য জারকন!
আমি মোটামুটি এক পাতা পড়ে বিকট সাধনা করে নিয়েছি ইতিমধ্যেই! সবটা তো আর বলা যাবে না। তাছাড়া সঠিক গ্রহরত্ন বাছাইয়ের একটা আলাদা ক্যালি আছে। হঠাৎ যদি হালাল সার্টিফিকেট ছাড়া গোমেদের বদলে শুয়োরের চর্বি দিয়ে ফেলেন, পুরো ধম্মো নিয়ে টানাটানি লেগে যাবে! তখন কিন্তু প্রকৃষ্ট বাল থুড়ি প্রবাল এর দ্বীপসুদ্ধ তুলে আনলেও রেহাই পাবেন না!
যাকগে, আমার কথা বিশ্বাস হলে জলদি IGNOU-এ ভর্তি হোন, না হলে ডাক্তার হয়েই থাকুন!
আপনাদের কোষ্ঠী বিচার করে যা দেখলুম, তাতে সবারই প্রায় রাহু কেতুসহ নবগ্রহ দোষ আছে। অষ্টধাতুর আংটি ছাড়া উপায় নেই!
ভাবুন আর আমার খুশির গান শুনুন।
মনে পড়ে রুবি রায়
জানালায় তোমাকে
একদিন হীরা বলে ডেকেছি
আজ হায় নীলা রায়
ডেকে বলো চুনিকেই
ফিরোজা তোমায় আগে দেখেছি!!
দেখলেন তো, গ্রহরত্ন বাছাইয়ের সময় ঠিকঠাক রতি শাস্ত্রের জ্ঞান না থাকলে কি কেলেঙ্কারি হয়??
এতো সাধনার পরেও আমারই রুবির সঙ্গে পুলক মণির মিক্সচার করতে গিয়েই এই হাল হয়েছে!!
আপনাদের তো সামনে পান্না ঝুলিয়ে আন্না হাজারের মতো অষ্টাবক্র মুনির সাধনা করতে হবে! ?