ওখানে যাবেন না মহামতি,
আর যেখানেই যান,
যুযুধান দু দলের মাঝে পড়ে আপনার জন্মের থান,
স্তব্ধ, যেমন থাকে কবর শ্মশান।
ওখানে যাবেন না দোহাই,
যতই বিশ্ব জুড়ে ক্ষমা ভরা ক্যারলের বন্দনা গাই,
ওরই অদূরে আজ শবেদের ডাঁই,
কেউ বোম, কেউ বা বুলেটে গেছে যুদ্ধের কোল্যাটারালে, রক্তের ছিটে লেগে প্রতিটা দেওয়ালে,
এইখানে ক্ষমা নেই আজ, ছিলো না অতীতে,
থাকবেও না কোনো আগামীর কালে।
কুও ভাদিস হে মহান?
চলেছেন কোনদিকে, আলোর মানুষ?
শুধু তো আপনি নন,
এইখানে সমকাল বয়ে চলে ক্রুশ,
ইজরায়েলি, ফিলিস্তিনি, আরবীয় ..
নারকীয় হত্যার ধিকি চলে তুষ,
এক দেশে কমে তো আরেক দেশের বুকে দাউদাউ শিখা,
ক্ষমা ও শান্তি শুধু মায়া-মরীচিকা,
পাঁচ হাজার পেরিয়েছে শিশুদের শব, তবু সেই বিভীষিকা
থামানোর দম নেই ইউ এন-এ কারো,
আমেরিকা চুপিচুপি চোখ টিপে বলে দেয় মেরে নাও যতদিন পারো,
কেউ আটকাবে না। আঁধার ক্রমশ আরো গাঢ়..
‘ফাদার ফরগিভ দেম! ‘
দেম মানে কারা, সেটা বলুন না যিশু !
ওই যারা সন্ত্রাসী মারবার অজুহাতে
অক্লেশে মেরে ফেলে শিশু,
অজস্র নির্দোষ লাশ দেখে
যুদ্ধ থামাতে তবু যারা পিপুফিশু,
তাদের?
রক্তপিপাসু যত দেশের প্রধান,
নিজের বাছাকে যারা বিদেশে লালন
করে প্রজাদের অনন্ত যুদ্ধে পাঠান,
তাঁদেরও প্রাপ্য ক্ষমা? বলুন মহান,
যোসেফ আর মেরীরই মতো
আজ অসহায় গৃহ-ছেঁড়া মানুষের ঢল,
কাচিয়েকুচিয়ে নিয়ে শেষ সম্বল,
রাজার আদেশে ওরা ঠাসাঠাসি চিলতে জমিতে
উত্তর দক্ষিণ করেছে বদল,
আশা ছিলো,
ঘরবাড়ি চেনা পাড়া পার্ক আর পথ ছেড়ে গেলে
অন্তত প্রাণটা থাকবে।
তাতে পানি ঢেলে দিয়ে বোমারু বিমান আসে সকালে বিকেলে,
স্প্লিন্টার ক্ষত বুকে বুড়ো বাপ অসহায় দেখে,
সামনেই গুলি খেলো মেয়ে বউ ছেলে।
আগে যত মরতো মানুষ, একটা বোমায় মরে তার চেয়ে শ’গুণ বেশি,
যে ভূমি পৃথিবীর শুধু,
দ্বেষ দিয়ে তাতে দেশ কেটে চলে রেষারেষি,
কোন জমি কার নামে হবে, ঠিক করে শাসকের পেশী।
যে যত মানুষ মারে, সে তত সভ্যলোক, ততই প্রগতি,
মানুষের চেয়ে বেশি কে আর করতে পারে মানুষের ক্ষতি।
ক্ষমা? ভালোবাসা? এই কাঁটাতার যুগে সেসব যে দুর্লভ অতি।
জন্মের স্থান জুড়ে শিশুদের লাশ,
বিষিয়ে গিয়েছে বাতাস,
ওখানে এখন স্রেফ যুদ্ধের বাস।
ওইখানে গেলে আর ফিরবেন না। যাবেন না, দোহাই মহামতি।