——-
খুব সকালে ভোট দিয়ে এলাম। সাড়ে ছটায় ভোটকেন্দ্রের সামনে সাইকেল থেকে নেমে দেখলাম গুটিকতক মানুষ অপেক্ষায় – কখন সাতটা বাজবে আর ভোটকেন্দ্রের দরজা খুলবে! বুথ খালি দেখে বাড়ি থেকে গিন্নীকে ডেকে ভোটের লাইনে দাঁড়ালাম। নতুন উপশহর। নতুন প্রতিবেশীর দল। কিছু বাঙালি। বেশ কিছু অবাঙালি।
সুন্দর গোছানো শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থা।ভোটের লাইনে আমার ঠিক পিছনে দাঁড়িয়ে এক অবাঙালি মধ্যবয়স্ক। ভদ্রলোক। সবার সাথে গল্প জুড়ে দিয়েছেন। এমনকি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তাকর্মীদের সাথেও। কথায় কথায় আমাকে বললেন, ‘ইয়ে সব ইলেকশনমে বহুত খর্চা হোতে হ্যায়। সারা দেশ মে কিতনা ষ্টাফ, কিতনা বন্দোবস্ত করনা পড়তা হ্যায়। ইতনা খরচা নেহি করনা চাহিয়ে।’
কলকাতার হিন্দীভাষীরা হিন্দীতে কথা বললেও আমি বাংলায় উত্তর দিই। বললাম, ‘কিভাবে সেটা সম্ভব?’
‘একহি বার ইলেকশন হোগা। বাকি সব বন্ধ।’
‘আচ্ছা আপনি ঘুম থেকে উঠে কি করেন রোজ?’
‘মুখ ধুই। চায়ে পি।’
‘তারপর?’
‘বাথরুমমে যাই।’
‘বাথরুমে গিয়ে পায়খানা-পেচ্ছাপ করেন তো?’
‘হাঁ, পটি-উটি করি।’
‘এই যে আপনি পটি, মানে পায়খানা করেন, আমরা সবাই করি। করে তো টয়লেট থেকে বেরিয়ে আসি। তারপর এইসব ময়লা সাফ করতে, সিউয়ারেজ প্ল্যন্টে নিয়ে গিয়ে প্রসেস করতে সরকারের, মিউনিসিপ্যালিটির কিন্তু অনেক টাকা খরচা হয়!’
‘খরচা হোবে। তো, কি করা যাবে?’
‘কেন? আসুন, আমরা সবাই পায়খানা করা বন্ধ করে দিই। তাহলেই সরকারের অনেক টাকা বেঁচে যাবে।’
‘সেটা কি কোরে হোবে?’
‘কেন, এই তো আপনি বললেন- খরচ কমানোর জন্য ইলেকশন বন্ধ করে দিতে। খরচ কমানোর জন্য পায়খানা
মানে ইয়ে, পটি করাও বন্ধ করে দিন।’
‘আরে পটি করা তো এসেনসিয়াল!’
‘ইলেকশন-টাও এসেনসিয়াল, বুঝলেন?’