একরাশ খেলনা পড়ে আছে।
একটা টেডি বিয়ার, লোমগুলো হালকা উঠে গেছে
একটা বার্বি গোছের পুতুল, পায়ে এক পাটি জুতো নেই,
দুটো ট্রাক, নড়বড়ে আটটা চাকা, সবজেটে রঙের কিছুটা উঠে গেছে,
কোনো দোকানের ঝকঝকে বাক্স থেকে বেরনো নয় বলাই বাহুল্য।
ওই টেডিটা জাপটে এক তিন বছুরে ঘুমাতো, ওটাকে হাতে টেনে ঘষটে বেরাতো ঘরময়। খুদেটা তার নাম দিয়েছিলো পাবলো।
বার্বিটা অদ্ভুতভাবে একটা পাঁচ বছরের ছেলের । ওর বোন ছিলো না, মায়ের পেটেই মারা গেছিলো নাকি,
তাই ওর বাবা সে পুতুল কিনে দিয়েছিলো। ওর নাম ছিলো স্রেফ বোনু।
ট্রাকদুটো আট বছরের যমজের। কখনো পাশাপাশি রেস হতো, কখনো ঢুঁসোঢুসি।
না , ওদের কোনো নাম ছিলো না, গাড়ির নাম আবার কেউ রাখে?
এর সাথে ছড়ানো ছিটানো ছিলো কিছু মোমের রঙ-পেনসিল,
রঙিন কাগজ, কয়েকটা ঘুড়ি, দুটো আঁকার খাতা,
একটা ঘুঁটিহীন লুডোর বোর্ড.. যে সব মণিমানিকের সন্ধান শুধু শৈশবেরা জানে,
তা দিয়ে সাজানো ছিলো ঘরটা।
ক্রীসমাসের আগের সন্ধ্যায়, সেখানে দুম করে এসে পড়লো একটা মোটাসোটা লালপোশাক লালজুতোমোজা পরা লোক,
তার বরফের মতো সাদা দাড়ি, এমনকি গোঁফ আর ভুরুও
ধবধবে সাদা,
পিঠে একটা ঝোলা, তাতে ঝলমল করছে উপহার।
লোকটা ঘরের এদিকে দেখলো। বোমায় অর্ধেক দেওয়াল ভাঙা।
ওদিকে দেখলো । বুলেটের ক্ষত যেন কোনো অর্বাচীনের টার্গেট প্র্যাকটিস।
বাকি একটা দেওয়ালে রক্তের ছোপ, আর চার নম্বরে কিছু ছেলেমানুষি ছবি , কাঠি কাঠি বাবা মা শিশুর পরিবার,
ঘরবাড়ি, গাড়ি আর..
অনেকগুলো বন্দুকওলা সেপাই।
লোকটা এদিক ওদিক দেখে মাথা নেড়ে চলে যাচ্ছিলো,
হঠাৎই পাবলো ডাকলো ‘ সান্টা!’
বোনু ডাকলো ‘ সান্টা’
মায় ট্রাকদুটোও হর্ন বাজিয়ে হেঁকে উঠলো ‘ সান্টা’!
লোকটা চমকে ঘুরতেই সবকটা খেলনা কোরাসে বলে উঠলো
‘ আমাদের নিয়ে খেলবে, এমন কিছু শিশু উপহার দাও না!’