Groin pain অর্থাৎ কুঁচকিতে ব্যথা বিভিন্ন অস্থি সম্পর্কিত ও অন্যান্য কারণে হতে পারে। শরীরে পেটের সাথে পায়ের সংযোগস্থলের সামনের দিকের অংশকে কুঁচকি বলে। সুতরাং তলপেট, কাঁকাল (pelvis), অন্ডকোষ অথবা যোনিদ্বারের আশপাশ, কিডনি ও মূত্রস্থলী এবং উরুর উপরের অংশ থেকে ব্যথা কুঁচকির ব্যথা হিসেবে দেখা দিতে পারে।
সবচেয়ে বেশী যে কারণে কুঁচকিতে ব্যথা হয় তা হল উরুর সমস্যা। উরুর উপরের অংশের মাংসপেশী, বিশেষতঃ ‘অ্যাডাকটর পেশী’-তে স্ট্রেন হলে কুঁচকিতে ব্যথা হতে পারে। ফুটবলার, অ্যাথলিট, হকি খেলোয়াড়দের এই রকম মাস্ল স্ট্রেন মাঝেমধ্যেই হয়ে থাকে। এছাড়াও উরুর হাড়ের উপরের অংশে চোট, ইনফেশন, টিউমার থেকে এই ধরণের কুঁচকিতে ব্যথা হতে পারে।
এরপরে আসছে হিপ জয়েন্ট। হিপ জয়েন্টে হাড়ে চোট, হাড় ভাঙা, তরুনাস্থি (Cartilage)-তে চোট, আর্থ্রাইটিস, অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস (ankylosing spondylitis) ইত্যাদি হলে কুঁচকিতে সেই ব্যথা অনুভূত হয়। হিপ জয়েন্টের ভিতরে ফিমার হাড়ের গোলাকৃতি মাথাটার রক্ত সঞ্চালন কমে গিয়ে হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হলে (Avascular necrosis) কুঁচকিতে ব্যথা হতে পারে।
তলপেটে হার্নিয়া হলে কখনো কখনো তা থেকে কুঁচকিতে ব্যথা হতে পারে। অ্যাপেন্ডিসাইটিস, ডিম্বাশয়ে সিষ্ট (ovarian cyst), পেলভিসে infection , অন্ডকোষ ও তার আশেপাশের সমস্যা, বিশেষতঃ অন্ডকোষ অস্বাভাবিক ভাবে ঘুরে যাওয়া
(testicular torsion) বা ফুলে যাওয়া- এসব ক্ষেত্রেও কুঁচকিতে প্রচন্ড ব্যথা হয়। যোনিদ্বার বা তার আশেপাশের সমস্যা হলে সেই ব্যথাও কুঁচকির ব্যথা হিসেবে দেখা দেয়।
প্রস্রাবে সংক্রমন (infection), কিডনি, ইউরেটর বা মূত্রস্থলী-তে পাথর(stone) বা টিউমার হলে সেই ব্যথা সংবাহিত হয়ে কুঁচকিতে চলে আসার সম্ভাবনা থাকে।
লিম্ফ গ্রন্থি (lymph node) বড় হওয়া বা সংক্রমিত (infected) হওয়া কুঁচকির ব্যথার অন্যতম কারণ।
সমাধান
কুঁচকির ব্যথার সহজ কিছু ক্ষেত্রে প্রথম দুয়েকদিন ব্যথার ওষুধ, বিশ্রাম, বরফ লাগানো ইত্যাদি করা যেতে পারে। কিন্তু তাতে কাজ না হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসক রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কুঁচকির ব্যথার কারণ খুঁজে বের করে সেইমত চিকিৎসা করবেন।
কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেমন কুঁচকির ব্যথার সাথে সাথে কুঁচকিতে যদি ফোলা থাকে, ব্যথা প্রচন্ড হয়, জায়গাটাতে ঝিন্ঝিন্ ভাব বা অবশ হয়ে যাওয়া হয়,সঙ্গে যদি জ্বর আসে, যদি বড় কোনো চোট লাগে, রোগী যদি দাঁড়াতে বা পা ঘোরাতে না পারে- তাহলে সেসব ক্ষেত্রে একটুও দেরী না করে রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অথবা রোগীকে হাসপাতালে বা চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।