অনেক দিন ধরে বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গুণ কীর্তন শুনতে শুনতে কান পচে গেছে। কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করার পর এবার সময় এসেছে কিছু কড়া সত্যিকথা বলার ও শোনার। বাইপাসের ধারের চারটে কর্পোরেট হাসপাতাল দিয়ে বোঝা যাবে না যে বাজার অর্থনীতি নির্ভর বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কী করুণ ভাবে, নির্লজ্জ ভাবে সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ভর করে টিঁকে আছে অর্থনীতির ভাষায় যাকে বলে রেন্ট সিকিং। গ্রামে বা মফস্বলের বড় সরকারি হাসপাতালে এনাস্থেটিস্ট যোগ দিলে তবে তাকে কেন্দ্র করে নার্সিং হোম তৈরি হয় আর চলে।
সরকারি হাসপাতালগুলোর বাথরুম যদি একটু পরিষ্কার রাখতে পারা যেত, একটু সময়, একটু পার্সোনালাইজড কেয়ার দিতে পারা যেত, একটু ভালো ব্যবহার – তাহলে বেসরকারির দল দু দিনে চাটি বাটি গোটাতে বাধ্য হত। পুরোপুরি সরকারি ব্যবস্থা চালানো যে শুধু প্রয়োজনীয় নয়, সেটা বাস্তবও বটে সেটা জোর গলায় বলার সময় হয়ে এসেছে।
গোটা জাতির সুস্বাস্থ্যের বিষয়ে বেসরকারি ব্যবস্থার অবদান সামান্য, নেগলিজিবল। Primary কেয়ার ও জনস্বাস্থ্যের পেছনে তাদের এক পয়সার অবদান নেই। Secondary তে সামান্য, চারটে লেটেস্ট গ্যাজেট বসিয়ে বারফটটাই। Tertiary তে বড়োলোকের গাধা ছেলেপুলের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ ছাড়া অবদান শূন্য। এই বেসরকারি ব্যবস্থা তুলে দিলে কারুর কিস্যু এসে যাবে না।
সরকার অর্থ বরাদ্দ বাড়ান, আরো মানব সম্পদ, আরো পরিকাঠামো, ভালো আর্থিক প্যাকেজ, আরো যন্ত্রপাতি, ওষুধ পত্র দিন স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীদের হাতে তারপরে দেখুন তারা বেসরকারিদের ঘোল খাইয়ে ছেড়ে দিতে পারে কি না। চ্যালেঞ্জ রইল ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক ভাবে আমাদের স্বাস্থ্য দপ্তরের টিমের পক্ষ থেকে। স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিতে সবাই সোচ্চার হন। স্বাস্থ্যকে আলু পটলের মতো পণ্য বানানো যাবে না। আমার আপনার করের টাকায় চলছে। ওটা আমাদের অধিকার।