আমরা আগে কিস্তিতে দেখেছি, যে ৩৫টি ধারা নিয়ে এশিয়ার আধুনিক মেডিক্যাল শিক্ষার প্রথম কলেজ ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজ (কিংবা মেডিক্যাল কলেজ, বেঙ্গল বা বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজ) তৈরির ঘোষণা করা হয়েছিল (২৮ জানুয়ারি, ১৮৩৫) তার ২১ নম্বর ধারায় বলা হয়েছিল যে কলেজে অ্যানাটমিক্যাল প্রিপারেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু ডিসেকশন করতে হবে একথা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। মজার ব্যাপার, যে স্পিরিট থেকে বেন্টিঙ্ক ইংরেজি মাধ্যমে মেডিক্যাল শিক্ষা দেবার যৌক্তিকতা বুঝতে পেরেছিলেন, সে স্পিরিট থেকেই ২৮ জানুয়ারি, ১৮৩৫-এর ঐতিহাসিক সরকারি ঘোষণার দুদিন আগে ২৬ জানুয়ারি, ১৮৩৫-এ নিজে মেডিক্যাল শিক্ষার ওপরে একটি নোট তৈরি করেছিলেন। এতে সরকারি ঘোষণার অনেকগুলো ধারাই ছিল। কিন্তু শেষ ধারা ১৪ নম্বরে সুস্পষ্টভাবে বলেছিলেন – “That all the foundation pupils be expected to practise human dissection and perform operations upon the dead body, or be discharged.” (Philips, Correspondence, vol. 2, পৃঃ ১৪০৩)। মোদ্দা কথা হল, ডিসেকশনকে বাধ্যতামূলক করা হল। এবং এ শর্ত রাখা হল যে “হয় ডিসেকশন করো কিংবা বেরিয়ে যাও।” স্বয়ং গভর্নর জেনারেল যখন একথা বলছেন তখন সদ্য প্রতিষ্ঠিত মেডিক্যাল ডিসেকশন করার ক্ষেত্রে আর কোন প্রতিবন্ধকতাই রইল না। NMI-এ ভেড়ার ওপরে করা zootomy উত্তীর্ণ হল মেডিক্যাল কলেজের cadaveric dissection-এ। এশিয়ায় মেডিক্যাল শিক্ষার নতুন ইতিহাস রচিত হল।
কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ তৈরির সাথে সাথেই ডিসেকশন করা সম্ভব হয়নি। এর জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৮৩৫ (সেদিন থেকে কলেজের প্রকৃত পঠনপাঠন শুরু হয়) থেকে ২৮ অক্টোবর, ১৮৩৬ অব্দি অপেক্ষা করতে হয়েছে। এসময়ের মধ্যে ছাত্রদের auditory, ocular, verbal, psychic এবং moral acculturations-এর মধ্য দিয়ে নতুন মানুষ হিসেবে গড়ে নিতে হয়েছে। ইউরোপীয় পদ্ধতিতে মেডিক্যাল শিক্ষা গ্রহণের উপযুক্ত করে নিতে হয়েছে। ইউরোপীয় পদ্ধতিকে internalize করতে শিখতে হয়েছে ছাত্রদের।
বেন্থামের যে প্যানপ্টিকনের কথা বলেছিলাম (একটু স্থুল করে বললে সবাই রাষ্ট্রের নজরদারিতে থাকবে) মেডিক্যাল কলেজের ছাত্ররা সেই প্যানপ্টিকনের আওতায় চলে এল।
মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার মাসখানেকের মধ্যে ১৮৩৫ সালের মার্চ মাসে বেন্টিঙ্ক ইংল্যান্ডে ফিরে যান। ১৮৩৬ সালে পরবর্তী গভর্নর জেনারেল হয়ে আসেন অকল্যান্ড। এখানে গভর্নর জেনারেলের দায়িত্বে ছিলেন ১৮৪২ অবধি। ফলে মেডিক্যাল কলেজের গুরুত্বপূর্ণ সময়ের বৃদ্ধি ও বিকাশ অকল্যান্ডের শাসনকালের সাথে যুক্ত।
আমরা আগের কিস্তিতে এই কলেজ তৈরির ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক পটভূমি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছিলাম। আমরা এবার জানবো কোথায়, কখন কিভাবে পড়শুনো শুরু হল। এবং ধাপে ধাপে শবদেহ ব্যবচ্ছেদ অব্দি পৌঁছতে পারল।
শুরুর কথা
হিন্দু কলেজের পেছন দিকে যে বাড়িতে Petty-Court জেল ছিল সেটাকে সারিয়ে নিয়ে মেডিক্যাল কলেজের সূচনা হল। NMI-তে যে বইপত্র এবং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হত সেগুলো এখানে সরিয়ে আনা হল। অবলুপ্ত সংস্কৃত কলেজের মেডিক্যাল ক্লাস থেকে এলেন বৈদ্য মধুসূদন গুপ্ত। (Centenary, পৃঃ ১১)
অবশ্য, কোথায় শুরু হয়েছিল সে বিষয়ে ভিন্ন মতও আছে। পূর্ণচন্দ্র দে বঙ্গশ্রী পত্রিকায় ১৩৪২ বঙ্গাব্দ বা ইংরেজিতে ১৯৩৫-৩৬ সালে কয়েক কিস্তিতে “কলিকাতা মেডিক্যাল কলেজ” শিরোনামে মেডিক্যাল কলেজের আংশিক ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেন। তাঁর মতে – হিন্দুস্কুলের উত্তরদিকে বর্তমান অ্যালবার্ট ইন্সটিটিউটে (যে বাড়ির মালিক ছিলেন সেসময়ের কলকাতার নামজাদা ধনী বাবু রামকমল সেন) মাসিক ৬০ টাকা ভাড়ায় মেডিক্যাল কলেজের সূচনা। প্রিন্সিপাল জোসেফ ব্রামলি একই বাড়িতে বাস করতেন। (বিনয়ভুষণ রায়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসঃ উনিশ শতকে বাংলায় পাশ্চাত্য শিখার প্রভাব, পৃঃ ১০৭) আমাদের স্মৃতিতে NMI-এর সময়ে ব্রেটন কিংবা টাইটলারের জন্য ভাড়া করা বাড়িতেই NMI-এর ক্লাস হত। একেই বুঝি historical trace বলে! বাংলায় বললে মেডিক্যাল সূতিকাগৃহে NMI-এর জন্মদাগ থেকে গেল।
ইতিহাসের ক্ষেত্রে প্রাথমিক উৎস বা প্রাইমারি সোর্স এবং সেকেন্ডারি সোর্স বা অনুসারী উৎস দুটোকেই ব্যবহার করা হয়। আমি মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার পরে ক্লাসের সময়ে বা বিভিন্ন বিষয়ে গুডিভ কি বলছেন সেকথা যখন বিচার করব তখন সেটা এক অর্থে সেকেন্ডারি সোর্স। আবার মেডিক্যাল কলেজের গড়ে ওঠা, পঠনপাঠন এবং ছাত্রদের নিয়ে ব্রামলে তাঁর অকাল মৃত্যুর দরুন যে অসমাপ্ত রিপোর্ট (যদিও কার্যত সমাপ্ত – কেবলমাত্র কিছু চিঠি পাওয়া যায়নি এবং হঠাৎ করে রিপোর্টটি শেষ হয়ে গেছে) তৈরি করেন, যে রিপোর্ট মেডিক্যাল কলেজ তৈরির কয়েক মাসের মধ্যে কলেজের তত্ত্ববধায়ক হিসেবে প্রস্তুত করেন এবং যে রিপোর্ট General Committee of Public Instruction (সরকারের শিক্ষাবিভাগের তৈরি) ১৯৩৭ সালে “Report of the General Committee of Public Instruction of the Presidency of Fort William in Bengal, for the Year 1836” (এরপর থেকে GCPI, 1836 বলে লেখা হবে) হিসেবে প্রকাশ করে তখন খুব স্বাভাবিক যে ব্রামলের রিপোর্ট প্রাথমিক উৎস হিসেবে কাজ করবে। এই বিভাজনটি আমরা মাথায় রাখবো। তার সঙ্গে এটাও মাথায় রাখা দরকার, মেডিক্যাল কলেজ তথা ব্রামলের একমাত্র সহকারী অধ্যাপক হিসেবে গুডিভও নিশ্চয়ই এ রিপোর্ট দেখে থাকবেন। ফলে রিপোর্টে যদি কোন ভুলভ্রান্তি থেকে থাকে তাহলে সেগুলো তাঁর চোখ এড়িয়ে যাবার কথা নয়।
ব্রামলের সরকারিভাবে গৃহীত রিপোর্ট অনুযায়ী, ১লা মে, ১৮৩৫-এ জে সি সি সাদারল্যান্ডের (তৎকালীন Secretary to the Committee of Public Instruction) বাড়িতে ছাত্রদের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়। (GCPI, 1836, পৃঃ ৬৩) ব্রামলের রিপোর্ট জানাচ্ছে – প্রায় ১০০ জন ভর্তি হবার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়। বেশিরভাগই ছিল “Hindu youths of various denominations”। এদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ হিন্দু কলেজ, হেয়ার সাহেবের স্কুল এবং স্কচ অ্যাসেম্বলি স্কুলে পড়াশুনো করেছে। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৩) ফলে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা এবং উপনিবেশিক শাসকদের উপযোগী পরিমণ্ডলের একটি স্তরের মানসিক যোগাযোগ এবং পরিচিতি গড়ে উঠেছিল। এদের মধ্যে ২৫ জনকে “stipendiary students” হিসেবে বাছাই করা হয়। অর্থাৎ, শতকরার হিসাবে ২৫% বাছাই পরীক্ষায় পাস করে। এজন্য একটু লঘু করে এর আগে একে বর্তমানের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাময় জয়েন্ট এন্ট্রান্সের আদি রূপ বা proto-entrance পরীক্ষা বলেছিলাম।
যে কথাটি ওপরে আলোচনা করলাম সেদিকে ইঙ্গিত করেছেন বিনয়ভূষণ রায় – “ব্রামলির প্রতিবেদনের সাথে গুডিভের বক্তব্যের পার্থক্য দেখা যায়।” (রায়, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১০৭)
যাহোক, একটি বিষয় ভেবে দেখি। যদি ১লা মে ছাত্র বাছাই তথা নির্বাচন প্রক্রিয়া হয়ে থাকে তাহলে এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৮৩৫-এ কিভাবে ক্লাস শুরু হওয়া সম্ভব? ঐতিহাসিকভাবে এটা সম্ভব হবার কথা নয়। যখন কলেজ তৈরি হল তখন লাইব্রেরি, মিউজিয়াম, হাসপাতাল বা “Philosophical apparatus” তথা বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ইত্যাদি কিছুই ছিলনা। ইংল্যান্ড থেকে শীঘ্রই অ্যানাটমিক্যাল প্রিপারেশনস আনানো হয়। কলকাতার বাথগেট কোম্পানি ১,৫০০ টাকায় দুটি নরকঙ্কাল আনিয়ে দেয়। (Centenary, পৃঃ ১২) এখানে মনে রাখবো, ১৮২৬-এ NMI-তে যখন দুটি নরকঙ্কাল আনানো হয়েছিল তখন তার দাম পড়েছিল ৭৩০ টাকা। তাহলে হয় মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে কিংবা চাহিদা বেশি হবার দ্বিগুণ দাম হয়ে গেছে।
১৮৩৫-এর ৫ আগস্ট মেটেরিয়া মেডিকা এবং কেমিস্ট্রির অধ্যাপক হিসেবে উইলিয়াম ব্রুক ও’শনেসি (কলেরা রোগীর ক্ষেত্রে ইন্ট্রাভেনাস স্যালাইন ইনফিউসনের জনক) যোগ দেন। একই সাথে তত্ত্বাবধায়কের পরিবর্তে ব্রামলের পদটি অধ্যক্ষ হিসেবে গণ্য হয়। গুডিভকে মেডিসিন ও অ্যানাটমির অধ্যাপক পদে উন্নীত করা হয়। কিন্তু একেবারে শুরুর দিকে মেডিক্যাল কলেজে কতদূর ইউরোপীয় পদ্ধতিতে মেডিক্যাল শিক্ষাদান সফল হবে এ নিয়ে এদেশের সাহেবদের মধ্যেই সংশয় ছিল। এর প্রায় ১৫ বছর পরে কলেজের ১৮৪৯-৫০ সেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় বেথুন বলেছিলেন – “The institution consisted of an old house in the rear of the Hindu College, in which two young Assistant Surgeons, to whom a third was subsequently, and after much difficulty, added, were expected to teach the whole circle of medical science to a class of upwards of fifty students. There was neither library, museum, hospital, nor philosophical apparatus; and we had to combat national prejudices against the study of anatomy, which were considered so deeply rooted, that the greater part of the community laughed (at) the attempt to scorn as a vain chimera”। (General Report on Public Instruction in the Lower Provinces of the Bengal Presidency, from 1st October 1849 to 30th September 1850, পৃঃ ১২৩) অর্থাৎ, ইউরোপীয়দের মধ্যেও ধারণা ছিল এটা একটা “vain chimera” বা সহজ বাংলায় বললে বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া হবে।
কেমন হল ছাত্র বাছাই করার পরীক্ষা? ব্রামলে জানাচ্ছেন – “The examination was conducted chiefly by Mr. Sutherland, and the acquirements of the candidates were severally tested in the elementary branches of English knowledge, in Arithmetic, and in Bengali.” (GCPI, 1836, p. 63) আরও বলছেন – “It would seem that the election on this examination was limited to a moiety of the authorized number, an arrangement it was advisable to make, in order to fix the qualifying standard as high as possible, and as here was yet a full month before the college instruction would commence, it was thought that other candidates of more advanced attainments might present themesleves.” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৩-৬৪) অর্থাৎ, ১লা মের পরে আরও পুরো একমাস বাকী রয়েছে ক্লাস শুরু হবার জন্য। এবং এই সময়ের মধ্যে আরও কিছু ভালো ছাত্র সুযোগ পাবে। অবশেষে “shortly after the opening of the college on the 1st of June, forty-nine stipendiary students, had been selected.” ছাত্রের সংখ্যা ২৫ থেকে দ্বিগুণ বেড়ে ৪৯-এ এসে দাঁড়ালো। পাটিগণিত বা অঙ্কে যারা হিন্দু কলেজে পড়াশুনো করেছে তাদের ব্যুৎপত্তি ভালো ছিল। কিন্তু বাংলায়, সাদারল্যান্ড এবং মধুসূদন গুপ্ত উভয়ের মতেই, ২-৩ জন বাদ দিলে যথেষ্ট দুর্বল (slender)। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৪) বাংলা ভাষায় দুর্বলতার এই ট্র্যাডিশন এখনও চলছে – বোধহয় আরও তীব্রতা এবং গভীরতা পেয়েছে।
এধরনের দুর্বলতার কথা মাথায় রেখে ব্রামলে এবং ডেভিড হেয়ারের মাঝে কথা হয় “to continue their attendance at their school classes without interfering with their medical studies. This combination in general with special instructions had its advantages.” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৪)
মেডিক্যাল কলেজে ক্লাস শুরু হবার খবর দিয়ে সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয় পত্রিকায় (১০ জুন, ১৮৩৫ । ২৮ জৈষ্ঠ্য ১২৪২) সংবাদ প্রকাশিত হল – “নূতন বৈদ্যক পাঠশালা । – গত ৯ জৈষ্ঠ্য সোমবারে শ্রীযুত ডাক্তর ব্রেমলি সাহেব ইংরাজি ভাষায় বৈদ্যক শাস্ত্রাধ্যেতব্য ছাত্রেরদিগের প্রতি তাঁহার প্রথম উপদেশ প্রদান করিলেন ঐ উপদেশ বিলক্ষণরূপে এতদ্দেশীয় বালকেরা শ্রবণ করিলেন অনুভব হইল যে তৎকালে বর্তমান দুই তিন জন যুবা ব্যতিরিক্ত তাবতেই লভ্যজ্ঞানে শ্রবণ করিলেন।
শ্রীযুত ডাক্তর ব্রেমলি সাহাবের উপদেশ দ্বারা তাহার নিপুণতা ও বিশিষ্ট বিবেচনায় প্রতীত হইল যে ইহাতে তাঁহার ভবিষ্যকালে মঙ্গল হইবে এমত বিবেচনা করিতে আমরা বাধ্য হইলাম। … উপরোক্ত উপদেশকের নিকট জ্ঞাত হইলাম যে শ্রীলশ্রীযুত কোম্পানি বাহাদুর এক উত্তম অট্টালিকা নির্মাণ করিতেছেন ঐ অট্টালিকায় কেবল ছাত্রেরদিগের ইংরেজি বৈদ্যক শাস্ত্রাধ্যায়ন হইবে।” (ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সংবাদপত্রে সেকালের কথা, দ্বিতীয় খণ্ড, ১৮৩০-১৮৪০, পৃঃ ৬৮৫-৬৮৬। বানান ও যতিচিহ্ন অপরিবর্তিত।)
এই সংবাদ থেকে বোঝা যাচ্ছে ১ জুন, ১৮৩৫ থেকে মেডিক্যাল কলেজের ক্লাস শুরু হয়েছে, এবং মেডিক্যাল কলেজের স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে একটি নতুন বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ সেসময় পর্যন্ত হিন্দু স্কুলের পেছনদিকের বাড়িতেই ক্লাস চলছে। আমরা যেভাবে মেডিক্যাল কলেজের ইতিহাসকে বুঝতে চাইছি তাতে এ ধরণের দিনক্ষণ খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হল কোন প্রেক্ষিতে, ঐতিহাসিক কোন সময়ে মেডিক্যাল কলেজ মেডিক্যাল শিক্ষার ইতিহাসে কি কি ঐতিহাসিক রূপান্তর ঘটালো।
২০ জুন, ১৮৩৫-এ সমাচার দর্পণ পত্রিকায় “চিকিৎসা শিক্ষালয়” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে জানানো হল –
“শ্রীযুত দর্পণপ্রকাশক মহাশয় বরাবরেষু,
উপরিউক্ত পাঠশালাতে বর্তমান ছাত্রেরদের সংখ্যা ৪০। তাঁহারা পাটিস্টন সাহেবের পুস্তক পাঠ করিতেছেন।
ঐ ছাত্ররা এইক্ষণে মস্তকের অস্থিনিরূপণ বিষয়ে শিক্ষা করিতেছেন ছাত্ররা মৌখিক উপদেশ পাইয়া পরে গ্রন্থ দেখিয়া পাঠ করেন। পূর্ব ২ দিবসে শ্রীযুত ডাক্তার গ্র্যান্ট সাহেব ছাত্রেরদের পরীক্ষা লইলেন এবং তাহাতে অতি সন্তুষ্ট হইলেন।
ঐ সাহেব কহিলেন যে অত্যল্পকাল বালকেরা এই শিক্ষালয়ে আছে অতএব অল্পকালের মধ্যে অনেক শিক্ষা করিয়াছে। এবং আশ্বাস ও শিক্ষা শৈথিল্য না করে এ নিমিত্ত তাহারদিগকে কহিলেন যে যাঁহারা চিকিৎসাবিষয়ে নিপুণ তাঁহারা যে কোন অবস্থা বা যে কোন দেশ অর্থাৎ সভ্য বা অসভ্য দেশে থাকুন সর্ব্বপ্রকারেই তাঁহাদের দ্বারা উপকার আছে কিন্তু অন্যান্য বিদ্যা শিক্ষকেরা সামান্যাবস্থা ও সামান্য স্থানে তাদৃশ পরোপকার করিতে পারেন না। এবং সময় বিশেষে প্রাণপন করিলেও কোন প্রকার উপকারে সমর্থ হন না।” (হরিপদ ভৌমিক, সেকালের সংবাদপত্রে কলকাতাঃ সমাচার দর্পণ ১৮৩৫, পৃঃ ৮০-৮১। বানান ও যতিচিহ্ন অপরিবর্তিত।)
দুটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদন থেকে বোঝা যায় কলকাতার জনসমাজের এক উল্লেখযোগ্য অংশের মাঝে নতুন মেডিক্যাল কলেজের মান্যতা এবং গ্রহণযোগ্যতা রীতিমত নজর করার মতো।
উইলিয়াম ব্রুক ও’শনেসি ৫ আগস্ট, ১৮৩৫, অধ্যাপক পদে যোগ দেবার পরে সমাচার দর্পণ-এ “চিকিৎসা শিক্ষালয়” শিরোনামে আরেকটি সংবাদে (২২ আগস্ট ১৮৩৫) বলা হল – “শ্রীযুত ডাক্তার গুডিব সাহেব ও শ্রীযুত ডাক্তর ওসাখনেসি সাহেব প্রফেসর অর্থাৎ অধ্যাপক উপাধিতে খ্যাত হইবেন। উক্ত বিদ্যালয়ের প্রতি গবর্ণমেন্টের এতদ্রূপ অনুগ্রহ দৃষ্টিপাতে আমাদের পরমাহ্লাদ জন্মিয়াছে যেহেতুক আমরা নিশ্চয় বোধ করি যে অল্পকালের মধ্যে তদ্দ্বারা দেশের মহোপকার হইবে।” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৪৪)
মেডিক্যাল কলেজ তৈরির জন্য (২৮ জানুয়ারি, ১৮৩৫-এ) যে সরকারি নির্দেশ বিজ্ঞাপিত হয় তার ১১ এবং ১২ নম্বর ধারা নিয়ে বলা হল – “That the foundation pupils shall receive a monthly stipend from Government of Rs. 7” (১১ নম্বর ধারা)। এরপরে ১২ নম্বর ধারায় বলা হল – ছাত্রদেরকে first class (Rs. 7), second class (Rs. 9) এবং third class (Rs. 12)-এ ভাগ করা হবে পূর্ণত মেধা এবং অর্জিত বিদ্যার ভিত্তিতে। কেন স্টাইপেন্ড দেওয়া হবে এর কারণ বলতে গিয়ে চার্লস ট্রেভেলিয়ান বলেছিলেন – “the stipends, which had always been allowed medical students, must therefore be continued until the advantages to be derived from the college by persons wishing to qualify themselves for the medical profession become more generally evident. The professional training at that institution is carried so much beyond the period usually allotted to education in India, that, without this assistance, the poverty or indifference of the parents would often cause the studies of the young men, particularly when they come from a distance, to be brought to a premature close.” (Charles E. Trevelyan, On the Education of the People of India, 1838, পৃঃ ৩০-৩১)
এর সাথে আমরা তুলনা করতে পারি ১৮৩৪-এর লন্ডনের। পলিন মজুমদারের গবেষণা দেখাচ্ছে – “According to the 1834 Report on Medical Education, about one third of the London medical students went to a private school … Nine schools … were known as the “perfect” ones: they gave a medical education complete except for clinical instruction. There were others that taught only anatomy and surgery, and there were a few special courses offered by individuals in their own homes. The core of the private school’s teaching, however, was anatomy.” (Pauline M. H. Mazumdar, “Anatomy, physiology, and surgery: physiology teaching in early nineteenth-century London” in Can Bull Med Hist 1987; 4(2): 119-43(128).) উপনিবেশিক স্বার্থে এদেশে সাম্রাজ্যের মানবিক মুখ হিসেবে মেডিসিনের আবির্ভাব হবার জন্য স্টাইপেন্ড দিয়ে ছাত্রদের পড়তে উৎসাহিত করা হচ্ছে, কিন্তু সাম্রাজ্যের কেন্দ্র লন্ডনে শিক্ষা সেসময়েই ক্রয়সামগ্রী হয়ে উঠছে। পণ্য হিসেবে ছাত্রদের কিনে নিতে হচ্ছে। এ পার্থক্যটি আমাদের মাথায় রাখা দরকার।
শুরু হল মেডিক্যাল কলেজের ক্লাস
Report of the General Committee of Public Instruction of the Presidency of Fort William in Bengal, for the Year 1836-এ মেডিক্যাল কলেজের রিপোর্ট ৩১ থেকে ৬৭ পৃষ্ঠা জুড়ে। ৩২ পৃষ্ঠা থেকে ব্রামলের রিপোর্ট। রিপোর্টের শুরুতে ব্রামলে জানাচ্ছেন – “since the newly formed institution was hereby constituted neutral ground upon which all might meet, by which all might benefit, and on which none need be compromised.” (পৃঃ ৩৩) অর্থাৎ একটি secular social hierarchy গড়ে ওঠার ক্ষেত্র প্রস্তুত হল যেখানে সামন্ত সমাজের বংশ মর্যাদা বা সম্পদ নয়, মেধা এবং কুশলতা প্রধান বলে বিবেচিত হবে। পুঁজির কিছু স্ফুরণ বিকশিত হচ্ছিল বলে হুতোমের কলকাতার পাশাপাশি আরেকটি কলকাতা একই শহরের গর্ভে জন্ম নিচ্ছিল।
পরবর্তী সময়ে ১৮৪৬-৪৭ সালের মেডিক্যাল কলেজের অ্যানুয়াল রিপোর্ট থেকে নীচের হিসেব পাওয়া যায়।
The following is a list of the pupils in the English Class at the close of the session.
Stipendiary Students 36* (এর মধ্যে ৪ জন মুসলিম ছাত্র মাদ্রাসা থেকে এসে যোগ দিয়েছে)
Robertson Scholars, 2
Free and Ceylon Students, 34
Members of the এউরপেয়ান + Subordinate Medl. Dept., &c. 3
Total 75
Of the Hindu pupils there are—
Brahmins, 11
Koists, 15
Boyddows, . 3
Tantys, 3
সহজ বিষয়টি হল সমস্ত জাতের, বিশ্বাসের এবং ধর্মের মানুষ শুধু চিকিৎসকের পরিচয়ে সমাজে পরিচিত হবে।
এরপরে ব্রামলের প্রথম বছরের রিপোর্টে ৩৬ থেকে ৪৮ পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে কিভাবে ভারতীয় ছাত্রদের দৈহিক, নৈতিক এবং বৌদ্ধিকভাবে ইউরোপীয় শিক্ষাগ্রহণের উপযুক্ত করে তুলতে হবে। ব্রামলে বলছেন – “My intention being to render these, the first pupils, not only proficient in the usual routine of Medical Science, but also capable of exercising their minds freely upon general subjects, in order to the application, and not simple acquirements of knowledge.” (GCPI, 1836, পৃ; ৩৬) তাঁর ধারণায় ভর্তি হওয়া এদেশীয় ছাত্রদের চিন্তার ধরণে অবান্তর “natural precocity” রয়েছে, “speculative subjects”-এর দিকে প্রবণতা বেশি (প্র্যাক্টিক্যাল অ্যাপ্লিকেশনের বিপরীতে), “moral condition remained unimproved” দৈহিক শক্তি ও সক্ষমতার ক্ষেত্রে দুর্বল। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৩৬) এজন্য তাঁর লক্ষ্য “the extent of abstract rather than positive knowledge possessed by the recipients”-কে দূরীভূত করা। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৩৭) তাঁর বিচারে এ বিষয় “is vitally important to the interests of the great work of education.” (পৃঃ ৩৭) এছাড়াও তাঁর লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে “improving their bodily frames” এবং “pernicious effects in early life of sedentary habits” পূর্ণত রূপান্তরিত করা যাতে “knowledge is power” এই সত্যটি এরা বুঝতে পারে সর্বার্থে। তিনি ইংল্যান্ডের সাথে তুলনা করেছেন যেখানে বাড়ির পরিবেশ এবং কলেজের পরিবেশ পরস্পরের সম্পূরক, কিন্তু ভারতে এর পুরোপুরি বিপরীত। এখানে “Master’s authority is confined to the School-room”। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৩৯) ফলে যে মর্যাল, দৈহিক এবং বৌদ্ধিক দুর্বলতাগুলো তিনি চিহ্নিত করেছেন সেগুলোকে দূর করার দিকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে হবে। “মেণ্টাল প্রিকসিটি ইজ দ্য ক্যারেস্টিক ফিচার অফ দ্য নেটিভস অফ বেঙ্গল।” আরেকটি বিপদ হল “the mind only is cultivated, while the body is left altogether neglected.” (পৃঃ ৪১)
আমাদের মাথায় রাখতে হবে এশিয়ার প্রথম আধুনিক শিক্ষার প্রতিষ্ঠান তথা চিকিৎসাবিজ্ঞানের নতুন অধ্যায় “Hospital Medicine”-এর গর্ভগৃহের ছাত্রদের ইউরোপীয় শিক্ষার উপযোগী “strict code of moral, intellectual and habitual discipline”-এর আওতায় পূর্ণত নিয়ে আসার জন্য আপাতদৃষ্টিতে অনাবশ্যক যে কথাগুলো ব্রামলে পাতার পর পাতা জুড়ে লিখেছেন এবং একে কার্যকরী করেছেন, এবং যার ফলশ্রুতিতে পরবর্তী অধ্যক্ষদের আর একাজ করতে হয়নি। ভিত্তি তৈরি হয়েই ছিল। এজন্য তাঁর ছাত্ররা এবং বাংলার অধিবাসীরা কিভাবে বসে (“whatever posture he pleases”) একথাও তাঁকে আলোচনা করতে হয়েছে। (পৃঃ ৪৩) তাঁকে জোর দিতে হয়েছে “to educate natives so as to combine the communication of knowledge with the regulations of their minds and the directions of their habits of thought.” (পৃঃ ৪৫)
সর্বোপরি তিনি চেষ্টা করেছেন “to prove to them that I am not only their instructor but their anxious friend, ready to advise and assist them, and desirous not less of their moral improvements and their general welfare than to succeed”। (পৃঃ ৪৭-৪৮) এরপরে শুরু হবে প্রকৃত শিক্ষাক্রম।
General Instructions
এই শিক্ষার তালিকায় ১৮৩৫-৩৬-এ ছিল (১) জেনারেল এবং প্র্যাক্টিক্যাল অ্যানাটমির ওপরে লেকচার, (২) ফিজিওলজি, (৩) জেনারেল এবং প্রাক্টিক্যাল কেমিস্ট্রি, (৪) থিওরি অ্যান্ড প্র্যাকটিস অফ ফিজিক (অর্থাৎ মেডিসিন), (৫) “Elements of Medical Botany and Materia Medica”, (৬) প্র্যাক্টিক্যাল ফার্মেসি “together with hospital attendance”।
অ্যানাটমি
ক্লাস নিতেন স্বয়ং ব্রামলে এবং গুডিভ। এর লক্ষ্য ছিল “of establishing a systematic mode of teaching, and as far as means and circumstances would permit to frame the general Instruction of the College” (পৃঃ ৪৯) অর্থাৎ, সার্বজনীন এবং নৈর্ব্যক্তিক বিজ্ঞান ভারত তথা বাংলার ছাত্রদের উপযোগী হতে গিয়ে mutated and refracted হল। এটা যে করতে হবে এই সারসত্যটি শিক্ষকেরা বুঝেছিলেন।
মনে রাখা দরকার, সেসময়ে এদের কাছে কোন সিলেবাস ছিলনা। ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের জার্নাল এবং ইউরোপের স্ট্যান্ডার্ড টেক্সট বুক থেকে সিলেবাসের অবয়ব তৈরি হচ্ছে। এঁরা ১৭টি জার্নাল ব্যবহার করেছিলেন। এর মধ্যে ৯টি ফরাসী এবং ৮টি ব্রিটিশ জার্নাল ছিল।
আরেকটি বিপত্তি ছিল – “the first approach to which must necessarily be made amidst the gloom of prejudices, and the confusion of ignorance.” (পৃঃ ৪৯) যাহোক, ১ জুন, ১৮৩৫-এ অস্থিবিদ্যার (osteology) প্রাথমিক ধারণার ওপরে লেকচার দিয়ে ক্লাস শুরু হল। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সপ্তাহে ৩ দিন করে লেকচার দেওয়া হত। এরসাথে মানব দেহের পরিচয় ঘটানোর জন্য ক্লোকেট ও লিজারের প্লেটসমূহ (আগে আলোচনা করা হয়েছে) এবং “Tuson and Papier Mache models of the human frame” ব্যবহার করা হত। নীচে Papier Mache models-এর কয়েকটি চিত্র দেওয়া হল। ইংল্যান্ডে জন্ম নিলেও ফ্রান্সে ডাক্তারি পড়াশুনো করা Louis Aujoux (১৭৯৭-১৮৮০) কাগজ, আঠা এবং আরও কিছু রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে এই Papier-Mache অ্যানাটমিক্যাল প্লেট তৈরি করেন। ভারতের মাদ্রাজেও ১৮৩৪ সালে সার্জন জন মরিস এই মডেল ব্যবহার করেছিলেন। তবে ব্রামলে সে খবর জানতেন কিনা আমি জানিনা। Madras Journal of Literature & Science (১৮৩৪)-এ এ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। এডোয়ার্ড উইলিয়াম টুসন (১৮০২-১৮৬৫) লন্ডনের নামী প্র্যাক্টিশনার ছিলেন। তাঁর উদ্ভাবিত অ্যানাটমিকাল মডেল সেসময়ে ছাত্রদের কাছে খুব জনপ্রিয়। এখন অবশ্য কেউ নামই জানেনা।
(পেপিয়ের-মাশে অ্যানাটমিক্যাল মডেল)
(টুসনের অ্যানাটমিক্যাল মডেলের একটি নমুনা)
প্রতি শনিবার বাইরের পরীক্ষকদের উপস্থিতিতে কে কতটা শিখল তার পরীক্ষা নেওয়া হত নিয়ম করে – “they were not expected to be expert ostelogists, but it was satisfactory to observe that what they learnt they understood.” (পৃঃ ৫০) একটা দুর্বলতা হল, মূল বিষয়ের গভীরে না ঢূকে ছাত্ররা প্রতিশব্দ শিখতে বেশি ভালবাসত। গ্রীষ্মকালীন ক্লাসের পরে কলেজ বন্ধ হয়ে যায়, ক্লাসও বন্ধ থাকে। আবার ক্লাস শুরু হল ১ অক্টোবর, ১৮৩৫ থেকে। এসময়ের ক্লাসে হাড়গোড়ের যেমন আবার পরিচয় করানো হল কিন্তু এবার “muscles, and arteries, nerves, viscera of the thorax and abdomen. Brain and organs of sense were considered. A considerable portion of physiology was likewise included in the lectures …. Bones, plates and models, again formed the chief materials for illustrating the course, but occasionally portions of of animals lately dead, and in a few instances, parts of fresh viscera of the human subject were introduced for demonstration.” (পৃঃ ৫১)
এই পর্যায়ে ১ অক্টোবর, ১৮৩৫-এ ক্লাস শুরু হয়ে চললো ৩১ মার্চ, ১৮৩৬ অব্দি। ততদিনে ছাত্ররা বেশ ভালো করে হাড়গোড় এবং মাংসপেশি চিনেছে। যেকোন ছাত্রকে sterno-cleido-mastoideus-এর মতো খটোমটো শব্দ জিজ্ঞেস করলে নির্ভুলভাবে এই মাংসপেশির উৎপত্তি, অবস্থান ও বিস্তার বুঝিয়ে দিতে পারত। তাসত্ত্বেও, প্রায় ১ বছর পরেও, ব্রামলে আক্ষেপ করছেন – “we had not, and have not up to the present time, a single class-book in the Institution”। (পৃঃ ৫২) NMI-তে বইয়ের অভাব ছিলনা, কারণ ইংরেজি টেক্সটগুলোকে vernacularize করে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজে এসে শিক্ষাদানের শুরুর যুগে এদশের ছাত্রদের উপযোগী, যারা সবে ইউরোপীয় পদ্ধতিতে ইৎরজিতে শেখা শুরু করেছে, তাদের উপযুক্ত টেক্সট বই তখনো শিক্ষকেরা খুঁজে বের করতে পারছেন না।
এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সামার সেশনে কেমিস্ট্রি এবং “practice of physic” ও দ্বিতীয় পর্যায়ের অ্যানাটমির কোর্স নিয়ে লেকচার দেওয়া হল।
ব্রামলে বলছেন –“Up to this period actual dissection which was destined to be the chief feature of this course, had not been practised by the class.” (পৃঃ ৫৩) কিন্তু ছাত্রদের জন্য তাঁর এ সতর্কবাণীও মাথায় রাখতে হবে – “কোন অবস্থাতেই যে সমস্ত ছাত্ররা দেহের বিভিন্ন অংশের ব্যাপারে উপযুক্ত ধারণা তৈরি করে উঠতে পারেনি তাদের হাতে ডিসেকশনের জন্য ছুরি তুলে দেওয়া বিবেচনাপ্রসূত হবেনা। তাদের মর্যাল ট্রেনিং-ও এতটা পাকা হয়নি যে ডিসেকশনের কাজটি করতে পারবে।” এজন্য “it was determined to seize the first favourable opportunity for introducing them to the practical study of anatomy.” (পৃঃ ৫৩) কিন্তু সাথে এটাও বলছেন, “the superstitious fear of the dead which prevail in England did not exist here.”
এ প্রসঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার উল্লেখ করা যেতে পারে। ডিসেকশন নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে অ্যালেক্সান্ডার ডাফের ছাত্রদের ধারণা কি এটা বোঝার জন্য সেসময় (১৮৩৬-এ) একটি কমিটি তৈরি হয়েছিল। অ্যাপোথেকারি জেনারেল জন গ্র্যান্ট এই কমিটি তৈরি করেন। (বিস্তৃত আলোচনার জন্য দ্রষ্টব্য – জয়ন্ত ভট্টাচার্য, “The first dissection controversy: introduction to anatomical education in Bengal and British India”, Current Science, 2011, 101(9): 1227-1232)
“Duff supplied the old solution — solvitur ambulando (it is solved by walking). The commission visited his school”। (George Smith, The Life of Alexander Duff, 1879, পৃঃ ২১৪) এরপরে “the Apothecary General approach the dreaded subject of dissection, for the first thing he learned and indeed saw was that the lads were chiefly Brahmins … Would you approve or disapprove of such a measure (dissection), or how would it be viewed by the natives generally? “We certainly who have been taught European knowledge through the medium of English would cordially approve … “Most certainly,” said the head youth of the class, who was a Brahman; “I, for one, would have no scruples in the matter. It is all prejudice, old stupid prejudice of caste, of which I at least have got rid.” The others heartily chimed in with this utterance. The commissioners were highly gratified.” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ২১৪-২১৫)
এ কথোপকথন থেকে তৎকালীন ইংরেজি স্কুলের ছাত্রদের ইউরোপীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হবার দরুন ডিসেকশন বা অ্যানাটমিকে কি চোখে দেখছে সে সম্পর্কে সম্যক আঁচ পাওয়া যায়। এ ধরনের ছাত্ররাই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিল।
আমরা ব্রামলের রিপোর্টে ফিরে আসি। মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রদের বৃহৎ অংশ মূলত নেটিভ হাসপাতালে “had already witnessed with interest the examination of bodies which had died in the hospitals they visited. Many of them moreover had been accustomed to handle and examine the portion of the diseased structure they met with” (GCPI, 1836, পৃ; ৫৪) এসব ঘটনার সম্মিলিত ফলে ছাত্রদের বৌদ্ধিক স্তরে একইসাথে visual/ocular, auditory, verbal, psychic, moral এবং clock-time acculturations হচ্ছিল। সবমিলিয়ে ছাত্ররা “anxiously awaited the arrival of the period”।
ব্রামলে জানাচ্ছেন, “ইউরোপেও কদাচিৎ অপ্রশিক্ষিত বা অদীক্ষিতদের হাতে স্ক্যালপেল তুলে দেওয়া হয়, কারণ এ ব্যাপারে বিবমিষা কাজ করে, ফলে ঠিকমতো ডিসেকশন হয়না।” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৫৪) আরও একটি গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি – ডিসেকশনের গোপনীয়তা বজায় রাখা। কারণ ছাত্ররা তৈরি থাকলেও কলকাতার জনসমাজ এ ঘটনাকে মানসিকভাবে গ্রহণ করতে প্রস্তুত ছিলনা। ছাত্ররা “were naturally enough exceedingly averse to being exposed to the gaze of intruders”। এরা সমাজে “penalty of excommunication to themselves and their families”-এর ভয় করছিল। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৫৪)
ফলে কোনভাবেই যাতে এই খবর বাইরে না যায় এ ব্যাপারে “rigid observations of these precautions” নেওয়া হয়েছিল। অবশেষে “on the 28th October, all doubt was removed”। ব্রামলে একে “an eventful era in the annals of the Medical College” বলেছেন। এই দিন ৪ জন সবচেয়ে বুদ্ধিমান এবং শ্রদ্ধা করার যোগ্য ছাত্র “at their own solicitation undertook the dissection of the human subject” এবং কলেজের প্রফেসরদের ও তাদের ১৪ জন সহপাঠীর সামনে “demonstrated with accuracy and nicety, several of the most interesting parts of the body … At their first attempt, all their companions present assisted”। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৫৫) এসময়ের পরে, ব্রামলে জানাচ্ছেন, একটি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছাড়া সিনিয়র ক্লাসের সমস্ত ছাত্ররা নিয়মিত ডিসেকশন প্র্যাকটিস কারত। ব্রামলে আক্ষেপ করে বলছেন যে গোপনীয়তার জন্য তাঁর এই সরকারি রিপোর্টে ছাত্রদের নামোল্লেখ করতে পারছেননা।
সমসাময়িক সাক্ষ্য থেকে জানা যায় কি ধরনের গোপনীয়তা মেডিক্যাল কলেজে ২৮ অক্টোবর, ১৮৩৬-এ নেওয়া হয়েছিল – “The College gates were closed to prevent forcible interruption of that awful act”। (Pramatha Nath Bose, A History of Hindu Civilization during British Rule, vol. II, পৃঃ ৩২) শিবনাথ শাস্ত্রী তাঁর রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ গ্রন্থে বলছেন – “সেকালের লোকের মুখে শুনিয়াছি এই মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদ লইয়া সে সময়ে তুমুল আন্দোলন উপস্থিত হইয়াছিল। … নব্যবঙ্গের নেতৃবৃন্দ শব-ব্যবচ্ছেদকারী ছাত্রগণকে রীতিমতো উৎসাহ দিয়া এই নবপ্রতিষ্ঠিত কালেজকে সবল করিতে লাগিলেন।” (নিউ এজ পাবলিশার্স, ২০০৭, পৃঃ ১০৫)
এজন্য ব্রহ্মানন্দ গুপ্তের লেখা থেকে উদ্ধৃত করা ডেভিড আর্নল্ডের (কলোনাইজিং দ্য বডি, পৃঃ ৬) বক্তব্য – “The momentous event was duly celebrated, in rather militaristic fashion, by firing a fifty-round salute from the guns of Calcutta’s Fort William.” অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে হয়।
উপরে উল্লেখিত ৪ জন ছাত্রের নাম প্রথম জানা যায় মহেন্দ্রলাল সরকার সম্পাদিত The Calcutta Journal of Medicine-এর জুন, ১৮৭৩ সালের সংখ্যায়। মহেন্দ্রলাল তথ্যপ্রমাণ দিয়ে দেখিয়েছেন রাজকৃষ্ণ দে প্রথম শবব্যবচ্ছেদ করেন। তাঁর সাথী ছিলেন দ্বারকানাথ গুপ্ত, উমাচরণ শেঠ এবং আরেকজন ছাত্র, সম্ভবত নবীনচন্দ্র মিত্র। (“The Calcutta Medical College”, III, পৃঃ ২১১) Centenary of the Calcutta Medical College-এও এ তথ্যের উল্লেখ আছে। (পৃঃ ১২-১৩)
Theory and Practice of Physic
এই লেকচার সিরিজ অধ্যাপক গুডিভ শুরু করেন মে থেকে সেপ্টেম্বর, ১৮৩৫-এ। এসময়ে প্যাথলজি এবং, এর অনুসারী, organ localization of disease সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয়।
Hospital Attendance
১৮৩৬-এর সামার সেশনের পরে ছাত্রদেরকে হাসপাতালের শিক্ষার জন্য নিয়মিত নেটিভ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, Eye Infirmary এবং কলিঙ্গ ডিসপেনসারিতে পাঠানো হয় “observing closely the cases, noting carefully their symptoms and treatment, and receiving with great attention the remarks made to them upon the disease they witnessed … accustomed themselves to the disagreeable sights … sights which even to an experienced practitioner are frequently painful to the extreme”। (GCPI, 1836, পৃ; ৫৬-৫৭)
Practical Pharmacy
এই ক্লাসে ছাত্রদের শিক্ষকদের দেওয়া নোটের টেকনিক্যাল শব্দের অর্থ ব্যাখ্যা করতে হত। প্রয়োজনে অর্থের ব্যাখ্যায় সাহায্যের জন্য পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্ত এবং আরেকজন নেটিভ শিক্ষকের সাহায্য নেওয়া হত। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৫৮) ব্রামলে বলছেন, “To complete the course of instruction, the lectures on Surgery still remain.” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৫৮)
Chemistry and Materia Medica
জানুয়ারি ১৮৩৬ থেকে ডঃ ও’শনেসি সিরিজ অফ ইন্ট্রোডাক্টরি লেকচার দেওয়া শুরু করেন। তখনকার মেডিক্যাল কলেজের ওরকম অকিঞ্চিৎকর ল্যাবরেটরিতে ছাত্রদের হাতেকলমে ফিজিকস এবং কেমিস্ট্রির বিভিন্ন পরীক্ষা করে দেখান। এগুলো এতই চিত্তাকর্ষক এবং কার্যকরী ছিল যে বেশ কিছু ছাত্র নিজেদের পয়সায় দামী যন্ত্রপাতি কিনে নিজেদের বাড়িতে পরীক্ষাগুলো করা শুরু করেছিল – “the experiments they witnessed in the lecture rooms”। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৫৯) জুন ১৮৩৬-এ এই প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস শেষ হয়। স্থানীয় কর্মকার সম্প্রদায়কে দিয়ে ও’শনেসি বেশ কিছু অ্যাপারেটাস স্থানীয়ভাবে বানিয়ে নিয়েছিলেন। এগুলো ইংল্যান্ড থেকে আনাতে গেলে খরচ অনেক বেশি হত।
ব্রামলে বলছেন – “the system of concourse in all the medical institutions of France, and where it has been adopted in England … have induced me throughout to adopt it as one of the leading principles of the College, no promotion or reward can be obtained but by fairly conducted examination.” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬১) পুনরায় মেধা এবং কৃতকার্যতাকে প্রধান গুরুত্ব দেওয়া হল।
এরপরে ছাত্রদের কেমিস্ট্রির পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই পরীক্ষায় প্রতিটি ছাত্রকে আলাদা করে প্রশ্ন করা হয় এবং উত্তরের মানের ওপরে নির্ভর করে ১, ২, ৩ ইত্যাদি নম্বর দেওয়া হয়। এতে যে সর্বোচ্চ নম্বর পাবে তাকে নিরবাচিত করা হবে সেরা ছাত্রা হিসেবে। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬২) মেডিক্যাল কলেজে এই প্রথম এভাবে পরীক্ষায় প্রশ্ন ধরে ধরে নম্বর দেবার প্রথা চালু হল। একটি কলেজকে ভ্রূণাবস্থা থেকে পূর্ণত কলেজে রূপান্তরিত করার যাত্রাপথটি ঐতিহাসিকভাবে অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক – কি ঐতিহাসিক, কি শিক্ষিত সাধারণ পাঠকের কাছে। এবং একইসাথে মাথায় রাখতে হবে গোড়ার তিনজন অধ্যাপক কি বিপুল যত্ন এবং পরিশ্রম দিয়ে এই শিক্ষালয়টিকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন। ব্রামলে উচ্ছ্বসিত হয়ে ও’শনেসির এই ক্লাস এবং সেপ্টেম্বর মাসের (১৮৩৬) পরীক্ষা নিয়ে বলছেন – “I have no hesitation in saying that no chemical class in the world could have surpassed and few would have equalled the brilliant replies of these youths upon this occasion”। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬২)
সাপ্তাহিক পরীক্ষা ছাড়াও প্রথম দফার অ্যানাটমি শিক্ষার শেষে “a series of examination” নেওয়া হয়েছিল। অধ্যাপকেরা ছাড়াও অন্য নামী চিকিৎসকেরা এবং দেশীয় সমাজের মান্যগণ্য ব্যক্তিরা, যেমন দ্বারকানাথ ঠাকুর এবং রামকমল সেন, এই পরীক্ষার সময় উপস্থিত ছিলেন।
ব্রামলে দেশীয় ছাত্রদের ব্যবহারের জন্য একটি মেডিক্যাল ডিকশনারিও প্রস্তুত করেছিলেন। ৬৫ পৃষ্ঠায় এসে ব্রামলের রিপোর্ট শেষ হয়েছে। “হসপিটাল মেডিসিন”-এর ভিত্তি প্রস্তর তৈরি হল – রোগীর বেডের পাশে দাঁড়িয়ে রোগের হিস্টরি নেওয়া, মৃত্যুর পরে অটোপ্সি, এবং পরিসংখ্যান তৈরি করা – কিন্তু এর পূর্ণাঙ্গ চেহারা গঠিত হয়নি। এর জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল। পাস করা ছাত্রদের মধ্য থেকে ক্লিনিক্যাল ক্লার্ক হত। এরা রোগীরা ওয়ার্ডে ভর্তি হলে প্রথম দায়িত্ব নিত। কেস হিস্টরি নিত। এবং প্রয়োজনে ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসককে ডেকে পাঠাতো।
মেডিক্যাল কলেজের সেক্রেটারির দায়িত্ব নেন F J Mouat (১৮৪১-১৮৫১)। প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হবে, আন্দামান সেলুলার জেলের পরিকল্পনাও তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত। যাহোক, ১৮৪৭ সালে Third Report of the Committee for the Establishment of a Fever Hospital প্রকাশিত হয়। কমিটির সদস্যদের সামনে মেডিক্যাল কলেজের রোগী সংক্রান্ত কাজের বিশদ বিবরণ দিতে গিয়ে একটি অংশে তিনি জানান – “When the case terminates fatally the body will be examined by the Clinical Clerk before the Professor, the morbid changes noted, and the subject will be taken into the lecture room, and shewn to the assembled pupils, who will have the opportunity of observing the whole history of the case, and have admirable means of for the study of pathology and morbid anatomy. This subject will never be lost sight of” (Third Report, ১৮৪৭, পৃঃ ৩০)
“হসপিটাল মেডিসিন”-এর পূর্ণাঙ্গ অবয়ব তৈরি হল – এই প্রথমবার বাংলা তথা ভারত তথা এশিয়ায়।
পরের কিস্তিতে ১৮৩৭-এর Introductory Lectures থেকে ১৮৩৮-এ মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েট হবার প্রথম পরীক্ষা অব্দি আলোচনা করব।
Wonderful one sir and it’s very much interesting
Very very well written and informative
Dear Jayanta — you have surpassed Proverbial Magician Harry Houdini & our own PC Sorcar so far your way of presentation of Medical History is concerned. Everytime your well researched and documented essays on gestational history of Calcutta Medical College come as — Jumping Rabbit from a Magician’s — supposed to be empty — bowler hat. I am enthralled for its layer by layer unfolding scenario. Every rabbit look different from the previous one . Even on descriptions of Hindu College and Albert Hall — both of which were my intimately known visiting places ( Albert Hall was the place where Hare School’s Saraswati Pooja and Milad -e -Nabi celebrations and Lunches used to take place in an absolute secular convivial atmosphere –were known to have been a property of Kesab Sen. That it was – probably a property of Ram Comal Sen was not that I had been aware off. As you know from me –my mother late Komola Majumdar was – Great Grand daughter of Nabin Ch. Sen — elder brother of Kesab Ch.Sen ). Present Rabbit from your hat — looks prettier with white speckled skin coat. So keep revealing our Medicinal past — may be one day they would be as prized one as that of sparkling compositions of Arnold Toynbee or from Gibbon….Regards — n.da
I am speechless! My gratitude.
কয়েকটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা শুনলাম
“Master’s authority is confined to the School-room” – এটা তো এখনও চলছে – তাহলে কি অন্যরকম করে শিক্ষাকে সমাজসচেতন করা যায়?
“মেণ্টাল প্রিকসিটি ইজ দ্য ক্যারেস্টিক ফিচার অফ দ্য নেটিভস অফ বেঙ্গল।” আরেকটি বিপদ হল
“The mind only is cultivated, while the body is left altogether neglected.”
এই বিষয়টাও চিন্তার বিশেষতঃ বর্তমানে সবই যখন ভার্চুয়্যাল..
মেডিকাল কলেজের নতুন রূপে শুরুর ইতিহাস এত সুন্দর তথ্যভিত্তিক করে পেশ করেছেন ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য যে মুগ্ধ হয়ে যেতে হয়।
ভারতের চিকিৎসার ইতিহাসে যে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের শুরু মেডিকাল কলেজের প্রতিষ্ঠার সাথে তার চলমান ছবি যেন দেখতে পারছি। বাড়তি পাওনা কলেজ ষ্ট্রীট পাড়ার তৎকালীন চিত্র এবং সে সময়ের আলোকপ্রাপ্ত বাঙালী সমাজের সক্রিয় সহযোগিতার তথ্য।
ছাত্রসংখ্যার প্রথম যে তথ্য পেশ করেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে ৭৫ জন ছাত্রের মধ্যে ৩২ জন হিন্দু এবং অন্ততঃ ৪ জন মুসলমান। আমার নমস্কার এই ছাত্রদের এবং তাঁদের পরিবারদের প্রতি, কারণ তাঁরা এগিয়ে না আসলে এই আধুনিক চিকিৎসা বিলিতি চিকিৎসা হয়েই থাকত, ভারতীয়করণ আর হোত না।
ধন্যবাদ ডঃ জয়ন্ত। ইতিহাসের পরের অধ্যায়ের জন্য অপেক্ষা করছি সাগ্রহে।
Dear Jayanta
Once again, this article illustrates your deep love and passion towards the history of our Alma Mater. It must be a very hard work to dig out those intricate details with facts and figures about our Medical College. To think of it, your work will go as another chapter in the long history of medical education in Bengal. I along with other colleagues and friends will remain grateful to you for sharing your work. Thanks a lot.
আপনার লেখাগুলো বাংলা চিকিৎসা প্রবন্ধের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য হয়ে থাকবে, এই বিষয়ে আমার পড়াশোনা খুবই সীমিত কিন্তু, আপনার লেখা গুলো পড়ে প্রতিবার সমৃদ্ধ হয়ে উঠি