মৃত্যুর পরেও চারজনের জীবন বাঁচিয়ে দিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ডাঃ অমিয় ভূষণ সরকার।
করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় নিজেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। যদিও তা কাটিয়েও উঠেছেন। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যখন তাঁর মতো চিকিৎসকের আরও বেশি দরকার ছিল, তখনই ঘটল এক অঘটন। গত বৃহস্পতিবার এক পথ দুর্ঘটনায় তাঁর ব্রেন হ্যামারেজ হয়। মেদিনীপুরে চিকিৎসা শুরু হলেও পরে তাঁকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শুক্রবার ডাক্তাররা জানান, তাঁর ব্রেন ডেথ হয়ে গেছে। পরিবারের লোকেরা তখনই সিদ্ধান্ত নেন, ডাক্তার সরকারের অঙ্গ দান করা হবে। সেকথা জানানো হয় তাঁর চিকিৎসারত চিকিৎসকদের। সঙ্গে সঙ্গে সেই চিকিৎসকরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেন। ডাঃ সরকারের লিভার পাঠানো হয় গুরগাঁও-এর আর্টেমিস হাসপাতালে, কিডনি দুটো পাঠানো হয় কমান্ড হাসপাতাল ও আর এন টেগোর ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ কার্ডিয়াক সায়েন্সেস-এ। আর হার্ট পাঠানো হয় হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। স্কিন দেওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে ও কর্নিয়া দান করা হয় এক বেসরকারি হাসপাতালে।
পেশায় একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হওয়ায় বহু শিশু তার হাতে প্রথম পৃথিবীর আলো দেখেছে। মৃত্যুর পরেও চারজনকে অঙ্গদানের মাধ্যমে নতুন জীবন উপহার দিলেন তিনি। করোনা মহামারীর এই কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে চিকিৎসকদের কাছেও রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং ছিল নানা জায়গায় বিভিন্ন অঙ্গ পাঠানো এবং তা প্রতিস্থাপন করা। কিন্তু আমাদের দেশের ডাক্তাররা তা ভালোভাবেই করে দেখিয়েছেন। ওই চিকিৎসকের যোগ্য সন্তান জানান, বাবা সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। জীবনের এটাই ছিল তাঁর একমাত্র ধর্ম। সেই কারণে আমাদের ওঁর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিতে একটুও অসুবিধা হয়নি।