ভীষণ গরম, ভেতর থাকুন।
থামুন মশাই, বক্কা রাখুন,
বাইরে না বার হলে পাতে ভাতটা দেবে কে?
ঠাণ্ডাঘরের বাবুরা সব অমন হুকুম লেখে।
ভোরের থেকে ক্যানিং লোকাল, হাজার লোকের স্বরে ভোকাল,
ফিরিওয়ালা বেরোয় পথে , চাষীরা যায় মাঠে,
কারখানা আর রাস্তাঘাটে লক্ষ মজুর খাটে,
ঘরের ভেতর ছায়ার আড়াল ক’জন কেজো পায়?
তাপে শীতে বা বর্ষাতে,
মানুষ ঠেলে বাইরে পাঠায় তারই পেটের দায়।
ভীষণ গরম, ভেতর থাকুন,
গা মাথা মুখ ছায়ায় ঢাকুন.. থামুন মশাই, থামুন,
স্যুইচে না চললে এ সি, শক্ত করেন মুখের পেশী,
সোনার কেল্লা-জেল্লা ছেড়ে একটু নিচে নামুন।
চেয়ে দেখুন এই গরমে, কোথাও কোনো ভিড় কি কমে,
পিঠের ওপর স্যুইগি লিখে ওই যে যুবক যায়,
ভরদুপুরে কারা ওকে নামালো রাস্তায়?
বোরখা-সমান গা মুখ ঢেকে,
নামলো যে মেয়ে বাসের থেকে,
সেলসগার্লের জব করে সে চালায় কোনো ভাবে,
ওলা উবের নেই ক্ষমতায়, আর কীভাবে যাবে?
ভীষণ গরম, ভেতর থাকুন..
গরম না হয় করবে না খুন, কিন্তু পেটে খিদের আগুন
ঠাণ্ডা হবে কিসে,
সে প্রশ্নটা থাকে রোজের ঘামের সাথে মিশে,
কোথায় পথে পানীয় জল সরকারি খরচায়,
এই গরমে জানতে সেটাই অবাধ্য মন চায়।
জমির ওপর গাছের দাবী,
স্কোয়ারফুটে খাচ্ছে খাবি,
কয়’দশকের পাতার ছায়া আজকে স্মৃতি অলীক,
কচমচিয়ে গাছ খেয়েছে উন্নয়নের ম্যাজিক।
ভীষণ গরম ভেতর থাকুন..
থামুন মশাই, উল্টো বাঁকুন,
আমার দেশে খিদের আগুন সব গরমের অধিক,
কান্না চেপে যান না মশাই ঠাণ্ডাঘরের দিক।