ফড়েরা সব ছড়িয়ে আছে নানান নামে,
স্বাধীনতা কিনবে তোমার সস্তা দামে।
বেচবে তোমার ভাবনাগুলো, লক্ষ্মীসোনা?
করলে জিগেস বলবে জানি ‘কক্ষনো না!’
কিন্তু ভায়া, সিঁদ কাটেনা এসব চোরে,
বুক ফুলিয়ে দিব্যি তোমার সঙ্গে ঘোরে,
সব রয়েছে তোমার নিবিড় বন্ধু সেজে,
তুমি যে ওর দাস হয়েছো বুঝবে কে যে!
তথ্য যখন ভাবছো কোনো সত্যি কি গুল,
ফোনের বোতাম আলতো টিপে অমনি গুগল।
গুগল মানেই সত্যি এখন অভিধানে,
আর কিছু যে দেখবেনা কেউ, গুগল জানে।
কিন্তু গুগল হাজার হলেও ব্যবসা করে,
দেখবে সেও আসছে কত লাভের ঘরে।
অ্যালগরিদম ওপর তোলে পয়সা দিলে
উপায়বিহীন আমরা সবাই নিচ্ছি গিলে।
ঠিকটা জানার স্বাধীনতা নেই তো কারো,
গুগল তোমায় যা জানাবে জানতে পারো।
তৈরী যদি করছো কিছু বেচবে ভেবে,
অ্যামাজনের পিরানহারা পিছু নেবে।
‘অপনা দুকান’ দুকান ধরে টানবে কাছে
নিজের মতো বেচার মুরোদ কার আর আছে।
ওরাই তাবত বিক্রিবাটার আজকে মালিক,
নিজের জিনিস বেচতে গিয়ে বুঝবে তা ঠিক।
আর যদি হও ক্রেতা তবে ভাবনা কি আর
একটা ক্লিকেই সব প্রয়োজন মিটবে ডিয়ার।
ক্রেতার সাথে বিক্রেতার আর হয়না কথা,
হারিয়ে গেছে ব্যবসা করার স্বাধীনতা।
চিন্তাগুলোও নয় যে স্বাধীন আগের মতো
ভুল ফরওয়ার্ড করতে থাকি অবিরত।
হোয়াটসঅ্যাপ আর ফেসবুকময় ফোন-জগতে,
এলেম লাগে ভাবনা কিছু নিজের হতে।
লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করছি বটে,
মগজ যে যায় সেই সুযোগে ধর্মঘটে।
বিশ্লেষণের কলমরা আজ ভীষণ দুখী
দু একজনাই পড়তে সেসব মারবে উঁকি।
বরং যদি উস্কানো হয় ঘৃণার উনুন,
অমুক লোকের খারাপ স্বভাব সবাই দেখুন,
কিংবা মেতে ধর্ম এবং রাজনীতিতে,
তরজা বাঁধে সমর্থক আর বিরোধীতে,
আমরা তখন উহ্য রেখে বেবাক কাজই,
যে যার মতো পেশল কথায় মুগুর ভাজি।
দেখি যখন রোজনামচার হিসেব খুলে,
জল দিয়েছি অন্য কারো টবের ফুলে।
ভোটাধিকার মানেই কি আর স্বাধীনতা,
স্বাধীন মানে নিজেই ভাবা নিজের কথা।
নিজের মতো বেচা কেনা এবং জানা,
ই-দুনিয়ার ছকের খোপে সে সব মানা।
আমরা এখন অ্যালগরিদম-দাঁড়ের তোতা,
ই-দানাতে পেট ভরিয়ে চঞ্চু ভোঁতা।
বেশ বাঁচি সব বেচে দিয়ে স্বাধীনতা।
ছবি ঋণ স্বীকার: তৌসিফ হক