চারদিকে এতো রিলেট। এতো রিলেট। এতো রিলেটেবল হবার কথা ছিল কি জীবনটা? রিলের পর রিল এসে শুধু বলে, জীবন এটাও হতে পারে, জীবন এটাও হতে পারে, জীবন এটাও হতে পারে। তার চক্করে পড়ে জীবন কিছুই হয় না! রিল চলতে থাকে একের পর এক, বিভিন্ন জনের দুনিয়া এসে আমার দুনিয়াতে আছড়ে পড়ে। তার আঘাতে আমার দুনিয়া কবে ভেঙেচুরে গেছে, খেয়ালই রাখিনি। সেসময় রিল দেখছিলাম। ছোট্ট ভিডিও। কতো কষ্ট করে বানানো হয়, কতো পরিশ্রম করে। যাতে আমরা সেই রিলের কন্টেন্টের সঙ্গে রিলেট করি। এতো ‘কন্টেন্ট’ ছিল দুনিয়াতে, জানতাম আমরা? জানার দরকার ছিল?
সোশ্যাল মিডিয়াকে সমাজতত্ত্ববিদরা কীভাবে দেখেন, জানি না। এই পরিবর্তনকে কীভাবে দেখেন, জানি না। মানুষের ব্যক্তিগত মনস্তত্ত্বে যা পরিবর্তন অলরেডি এসে গেছে, সেগুলো তো সবাই বলছি, আলোচনা করছি। মনোযোগের সময় কমে আসছে, প্রমাণিত সত্য। এই মনোযোগ কমতে কমতে সোশ্যাল মিডিয়া করার মতো মনোযোগটুকু বেঁচে থাকতে থাকতেই কি রিলের সময় পেরিয়ে যাবে? অন্যকিছু আসবে? কী জানি। কিন্তু, প্রশ্নটা এটাই। এতো মানুষের সঙ্গে, এতো পরিস্থিতির সঙ্গে, এতো তথ্যের সঙ্গে ‘কানেক্ট’ হবার কথা ছিল কি মানুষের? মানুষের ক্যাপাসিটি আছে? ৫০-১০০-৫০০-১০০০ এর গণ্ডী ছাড়িয়ে ৫০০০-১০০০০-১ লাখ মানুষের আকর্ষণের-আলোচনার-গবেষণার-সমালোচনার হঠাৎ কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠার ক্যাপাসিটি? আর তারপর সেই ভরকেন্দ্র ধরে রাখার, বা তা থেকে ছিটকে গেলে মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করার ক্যাপাসিটি? আছে? রিল দুনিয়ায় ‘ভাইরাল’ হয়ে থাকতে গেলে কতো পরিশ্রম করতে হয়? কতোটা পরিবর্তন আনতে হয় মানসিকতাতে? তার আগামী দিনে বৃহত্তর পরিণতি কী হবে? পরিবারে, সমাজে? প্রশ্নগুলো সহজ, উত্তরগুলোও জানা, কিন্তু উত্তর লেখাটাই কঠিন।
দিন চলে যাবে, সময় পেরিয়ে যাবে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ পাল্টে অন্য কিছু আসবে। আসবেই। রিলস্ পাল্টে অন্য কিছু ট্রেন্ড হবে। তা থেকেও পয়সা হবে। কিন্তু….